১৯৮৪ সালের ৬ জুন, ঘড়ির কাঁটা প্রায় সাড়ে ৭টার ঘর ছুঁই ছুঁই করছে। ভারতের অন্যান্য অংশে যখন সবাই দিন শুরুর প্রাত্যহিক কাজে ব্যস্ত, ভারতীয় সেনাবাহিনী তখন ‘আকাল তখত’ খ্যাত শিখ মন্দির ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে ১০৫ মি.মি. অতি শক্তিশালী বিস্ফোরক স্কোয়াশ হেড শেল বিশিষ্ট ট্যাঙ্ক নিয়ে এগিয়ে চলেছে। তারা চলেছে ইতিহাস বিখ্যাত, বলা ভালো কুখ্যাত ‘অপারেশন ব্লু স্টার’ সফল করতে। সেনাবাহিনীর অবস্থান শিখদের প্রধান তীর্থস্থান অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের ঠিক উল্টো দিকে। মন্দিরের প্রধান দুটি ভবন দখল করে নিয়েছেন গোঁড়া এক শিখ গুরু, সান্ত জারনাইল সিং ভিন্দ্রানওয়ালে। শিখনেতা ভিন্দ্রানওয়ালের দাবি শিখদের জন্য আলাদা একটি স্বাধীন ভূখণ্ড গঠন করা, সে ভূখণ্ডের নাম হবে ‘খালিস্তান’। তার এই অন্যায় আবদার প্রতিহত করতে পাঁচ দিনব্যাপী যুদ্ধ করে প্রায় ৪৯২টি প্রাণের বিনিময়ে ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের স্বতন্ত্রতা বজায় রাখার সংগ্রামে লিপ্ত হয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। ৩৪ বছর আগের ভারতীয় ইতিহাসের সেই করুণ অধ্যায় নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।
১৯৮৪ সালে বিবিসির দিল্লী প্রতিনিধি স্যার মার্ক টালি শিখদের এ দাঙ্গার পুরো ঘটনাটি কভার করেন। চারদিকে তখন দুশ্চিন্তার দামামা বাজছে। জারনাইলের সমর্থকদের দিকে বয়ে যাচ্ছে রক্তের বন্যা। তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের সংস্থানও প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে উঠেছিল। প্রায় ছয় বছর ধরে জারনাইল শিখদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন, এভাবে হিন্দু অধ্যুষিত ভারতে গোলামের মতো বেঁচে থাকার কোনো মানেই হয় না। এতে না আছে সম্মান, না আছে ক্ষমতা। বাঁচতে হবে বীরের মতো। তার সে দীক্ষায় দীক্ষিত হয়ে এগিয়ে আসে টগবগে রক্তের তরুণ কিছু প্রাণ। গরম মাথা নিয়ে গুরুর কথায় তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে গোটা পাঞ্জাব জুড়ে। আক্রমণ চালায় পুলিশের উপর, ছিনিয়ে নেয় সরকারি অর্থ, অবাধে চালায় খুন-লুটতরাজ, আতঙ্কিত করে তোলে স্থানীয়দের। তাদের মাথায় তখন একটিই চিন্তা, স্বাধীন একটি ভূখণ্ড চাই-ই চাই। সে রাজ্যটির নামও ঠিক করে ফেলেছিল শিখরা, স্বপ্নের খালিস্তান। খালিস্তান সৃষ্টির জন্য পরিচালিত এই আন্দোলনকে বলা হয় ‘খালিস্তান মুভমেন্ট’।
তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী জারনাইল সিংকে তার মিত্র হিসেবেই দেখেছিলেন। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা জারনাইল রাজনৈতিকভাবে তার কাজে আসতে পারে বলে ভেবেছিলেন ইন্দিরা। কিন্তু বন্ধুত্বের সে হাত উপেক্ষা করে শিখ গুরু যখন তার বিরুদ্ধে চলে যায় তখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এমনকি শিখরা স্বর্ণমন্দির দখল করে নিলেও নিশ্চুপ থাকেন ইন্দিরা। পাঞ্জাবের সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে যখন টানাটানি পড়ে যায়, তখন তিনি বাধ্য হয়ে ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে মাঠে নামান। মার্ক টালির ভাষ্যমতে, কাজটি তিনি করেছিলেন যাতে ভারতীয়রা তার উপর থেকে বিশ্বাস না হারায়, শুধুমাত্র সেটি নিশ্চিত করতে। কাজেই স্বর্ণমন্দির এলাকায় তৎপর হয়ে ওঠে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিহার রেজিমেন্ট।
বিহার রেজিমেন্টের তৎপরতা দেখে চুপ করে বসে থাকার বান্দা জারনাইল নন। বেপরোয়া হয়ে আকাল তখতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি। ভারতীয়কে সেনাবাহিনীকে সমুচিত জবাব দিয়ে দেবেন, জানিয়ে দেন স্পষ্টভাবে। জারনাইল নমনীয় না হলে রক্তারক্তি শুরু হয়ে যাবে, তা টের পেয়েছিলেন সরকার। এদিকে পাঞ্জাবের ক্রমশ খারাপ হতে থাকা অবস্থা থেকে জনসাধারণকে মুক্তি দিতে তাড়াহুড়ো শুরু করে সেনাবাহিনী। সাংবাদিকদের সবাইকে পাঠিয়ে দেয়া হয় পাঞ্জাবের বাইরে। অমৃতসরের কাছ থেকে শোনা যাচ্ছিল, কিছুক্ষণ পর পর থেমে থেমে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি বর্ষণ করা হচ্ছে, মাঝে মাঝে দুয়েকটি মর্টারের আওয়াজও পাওয়া যাচ্ছিল। গোটা রাজ্যে কার্ফ্যু জারি করে সরকার। রাস্তার মোড়ে মোড়ে আর্মি চেক পোস্ট বসানো হয়। বাইরে থেকে কোনো অস্ত্র যেন গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোডে প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্যই এই বাড়তি সতর্কতা।
গ্রামের কুকুরগুলোও যেন আসন্ন বিপদ টের পেয়ে ভয়ে কুঁকড়ে ছিল। মার্ক বলেন,
“মনে মনে ভাবছিলাম, যেকোনো ধর্মের পবিত্র স্থানে আর্মি পাঠানোর মানে তাদের অশুচি করে দেয়া, জায়গাটির পবিত্রতা নষ্ট করা। শিখদের পুঞ্জিভূত এই ক্ষোভ ইন্দিরা গান্ধী সামাল দিতে পারবেন না, চিরদিন আটকেও রাখতে পারবেন না, বুঝতে পেরেছিলাম আমি।”
পদাতিক সেনাবাহিনীর পাঁচটি ব্যাটালিয়ন, দুই কোম্পানি কমান্ডো, ছয়টি ট্যাঙ্ক আর দুই কোম্পানি প্যারামিলিটারি পুলিশ জারনাইল সিংয়ের যেকোনো আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সম্পূর্ণ তৈরী হয়ে ছিল। মেজর জেনারেল কুলদীপ সিং ব্রার, ইন্দিরা গান্ধী যাকে অপারেশন ব্লু স্টারের ইন চার্জ ঘোষণা করেছিলেন, তার The Sikhs of the Punjab: unheard voices of State and Guerilla violence বইয়ে এ দাঙ্গা সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। ১০টি গার্ড রেজিমেন্ট নিয়ে স্বর্ণমন্দিরের উত্তরমুখী প্রবেশপথ দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই মেশিন গানের এলোপাথাড়ি গুলির সম্মুখীন হন তারা। সিঁড়ির গোড়া থেকে আসে প্রথম প্রতিরোধ পর্ব।
তরুণ শিখরা উত্থিত হয় ম্যানহোল থেকে। কেউ গুলি ছোঁড়ে, কারো হাতে দেখা যায় গ্রেনেড। পাতালে লুকানো প্যাসেজ থেকে বেরিয়ে নিজেদের কাজ শেষ করেই আবার গুপ্ত জায়গায় ফিরে যায় তারা। শুরুর দিকে সেনাবাহিনীকে এক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ার সুযোগও দেয়নি তারা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক এক অফিসার, শাবেগ সিং, স্বর্ণমন্দিরের অভ্যন্তরে প্রতিরোধ ব্যবস্থার পুরো পরিকল্পনা তৈরিতে সাহায্য করে জারনাইল সিংকে। সেনাবাহিনীর উপর তার আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল। দুর্নীতির দায়ে বহিষ্কারাদেশ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি সে। প্রতিশোধ নেয়ার এমন সুযোগ আর আসবে না তা-ও সে জানত। কাজেই আকাল তখত থেকে শিখ ব্যাটালিয়ন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল শাবেগ সিং। তাকে সার্বিক সহযোগিতা করছিলেন জারনাইল।
স্বর্ণমন্দির কমপ্লেক্সের পশ্চিমে প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে আকাল তখত। মেজর জেনারেল ব্রারের পরিকল্পনা ছিল উত্তর এবং দক্ষিণ উইং ধরে এগিয়ে নিয়ে যাবেন পদাতিক সৈন্যদের। আকস্মিক আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য তৈরি ছিল সিএস গ্যাস। আগে থেকে সেনাবাহিনীর কোনো উইং সেখানে পৌঁছাতে পারে, এ চিন্তাটিকে খুব একটা আমলে নেয়নি শিখরা। যার কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুহুর্মুহু গোলাগুলির সামনে টিকে থাকার মতো ব্যাকআপ প্ল্যান তাদের ছিল না। আকাল তখতের দিক থেকে অকস্মাৎ কমান্ডো হামলার মুখোমুখি হয়ে পিছু হঠতে থাকে শিখরা। হাতেগোনা কয়েকজন এগিয়ে গিয়ে গ্যাসের ক্যানিস্টার ফাটানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গোটা আকাল তখত ইট, বালির বস্তা দিয়ে ঘেরা। বন্দুক সেট করার জন্য কয়েকটা ছোট ছিদ্র রাখা হয়েছে কেবল।
কাজেই সিএস গ্যাসের টিন সেই বালির বস্তায় ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসে। পথিমধ্যে গ্যাস বিস্ফোরিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুই পক্ষই। ক্ষয়ক্ষতি হয় পাহাড়সম। ব্রারের ভাষ্যমতে, ঠিক সেই মুহূর্ত থেকেই শুরু হয় যুদ্ধ। পুরো পরিবেশটিকে তিনি ‘ম্যাসাকার’ বলে আখ্যায়িত করে আকাল তখতের নাম দেন ‘বধ্যভূমি’।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার সাত ঘণ্টা পরে সবকিছু যখন ধীরে ধীরে থেমে যাচ্ছিল, সেনাবাহিনীকে তখন ট্যাঙ্ক আর মেশিন গান নিয়ে মাঠে নামার আদেশ দেয়া হয়। দেখা মাত্রই গুলি ছোঁড়ার অনুমতি ছিল তাদের। আরও দুবার চেষ্টা চালানো হয় আকাল তখত দখল করার, কিন্তু শিখরা তখনো যথাসম্ভব যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ায় ব্যর্থ হয় সে প্রচেষ্টা। ততক্ষণে দিনের আলো ফুটে গেছে। ব্রার বুঝে গেলেন, সামনে দিয়ে আক্রমণ করে আর কোনো লাভ হবে না। কাজেই ট্যাঙ্কগুলোকে মূল অস্ত্র ব্যবহার করার আদেশ দেয়া হলো। কিছুক্ষণের মধ্যে অগ্নিশিখা ঘিরে ধরল আকাল তখতের ভবনগুলোকে। বিস্ফোরণের শব্দের সাথে সাথে ভেঙে পড়তে থাকে ইটের গাঁথুনি। ধীরে ধীরে কমে গেছে ভেতরকার গোলাগুলির আওয়াজ, কিছুক্ষণ পরে থেমে যায় একেবারে।
অপারেশনের পরে প্রথম প্রেস দলের সাথে মার্ক ফিরে আসেন অমৃতসরে। চোখে যা দেখেছেন, তা বর্ণনা করার মতো শব্দ বা পরিস্থিতি কোনোটিই ছিল না সাংবাদিকদের। স্বর্ণমন্দির তখনো ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, বুলেটের কিছু ক্ষতচিহ্ন রয়ে গেছে তার গায়ে। প্রতিরোধকারীরা স্বর্ণমন্দিরের ভেতর থেকে গুলি ছুঁড়লেও ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর নির্দেশ ছিল মন্দিরের গায়ে যেন কোনো গুলি না লাগে। সে আদেশ তারা যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করেছে। তবে আকাল তখতের অবস্থা ছিল শোচনীয়। আগুনের লেলিহান শিখা নিভে গেলেও রয়ে গেছে তার কালো দাগ; ইট, পাথরের ভাঙা টুকরো ছড়িয়ে আছে এখানে-সেখানে। পুরো মেঝেতে কার্পেটের মতো বিছিয়ে আছে খালি কার্তুজ। কমপ্লেক্সের চারদিকে পরিক্রমা বা শানবাঁধানো রাস্তার উপর লেগে আছে তাজা রক্তের দাগ। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে লাইব্রেরি। কমপ্লেক্সের ভেতর থেকে উদ্ধার করা ৪২টি মৃতদেহের মধ্যে একটি ছিল স্বয়ং জারনাইলের। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৩৩১ জন সদস্য আহত হয়।
অপারেশন ব্লু স্টারের অব্যবহিত পরে বিদ্রোহ করে বসে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুটিকতক শিখ সৈনিক। স্যার মার্ক টালি সম্প্রতি অমৃতসরে গিয়ে তাদের কয়েকজনের সাথে কথা বলেন। তাদেরকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়, সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কার করা হয়, পেনসন বাতিল করা হয়। তবুও কোনো আক্ষেপ নেই তাদের। তাদেরই একজন বলেন, “ধর্মের জন্য বিদ্রোহ করেছি আমরা। দেশের প্রতি বিশ্বস্ততার কোনো কমতি নেই আমাদের মধ্যে, তবে নিজের ধর্মকেই যদি রক্ষা করতে না পারি, দেশকে আর কী রক্ষা করব?” শিখ সম্প্রদায়ের সাথে সমঝোতা করার বদলে ইন্দিরা গান্ধী পুলিশ ও আর্মিকে খালিস্তান মুভমেন্ট নিষ্ক্রিয় করার কঠোর নির্দেশ দেন। আনুষ্ঠানিকভাবে শুধুমাত্র খালিস্তান মুভমেন্ট প্রতিহত করার কথা বলা হলেও, রাজ্য সরকারের গোপন নীতি ছিল শিখদের আত্মবিশ্বাস ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া। সে কারণে সন্দেহজনক শিখ দেখলেই গ্রেপ্তার করা বা গুম করা, তাদের স্ত্রী-কন্যাদের ধর্ষণ করা, অবাধে ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় পাঞ্জাব সরকারের অঘোষিত চ্যালারা।
এ ঘটনার ছয় মাস পরে, সে বছরেরই ৩১ অক্টোবর ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অপারেশন ব্লু স্টারের নির্দেশ দেয়া ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করা হয়। নিজের বাগানে দুই শিখ দেহরক্ষী খুন করে ইন্দিরা গান্ধীকে। গান্ধী নিহত হওয়ার পরপরই দিল্লীতে শিখ বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়। দেশের অন্যান্য অংশেও তা ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশি সময় লাগে না। শুধুমাত্র দিল্লীতেই তখন ২,০০০ এরও বেশি লোক মারা যায়, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল নিরীহ শিখ। তবে এই বিদ্রোহ পরিচালনার পেছনে যারা প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন, কংগ্রেস পার্টির সেই ক্ষমতাবান সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হয়নি। তারা রয়ে যায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
দুঃসহ সেসব স্মৃতি চট করে ভুলে যাওয়া তো সম্ভব নয়। অমৃতসরে জারনাইল সিংয়ের স্মৃতি চিরঞ্জীব করে রাখার কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে ডাল খালসার এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, খালিস্তান মুভমেন্ট এখন একেবারেই থেমে গেছে। অপারেশন ব্লু স্টার ভারতীয় সরকারের বিশাল বড় এক অর্জন বলা যায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন,
“১৯৮৪ সালে সংঘটিত রক্তক্ষয়ী এই দাঙ্গাটি বুঝিয়ে দিয়েছে ভারতের সার্বভৌমত্বের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু হতে পারে না। উগ্রবাদী কোনো দল স্বাধীন হতে চাইবে, আর ভারতের ভূখণ্ডকে এমনি করে টুকরো টুকরো করে দেয়া হবে, তা কখনোই সম্ভব না। ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলো সবাই এখানেই মিলেমিশে থাকবে, অন্যথায় তাদের পরিণতি হবে জারনাইল সিংয়ের মতো”।
ব্রিটিশ শিখদের সাথেও দেখা করেন স্যার মার্ক টালি। অপারেশন ব্লু স্টারের পুরো ঘটনাটিতে ভারতকে সহায়তা করেছে ব্রিটিশ সরকার। একটি রেডিও ডকুমেন্টারি বানানোর কাজে সাউথলের হেভলক স্ট্রিট গুরুদুয়ারায় যান তিনি। অপারেশন ব্লু স্টারের প্রসঙ্গ তুলতেই টের পাওয়া যায়, তাদের মধ্যকার অসন্তোষ এখনো প্রশমিত হয়নি। লন্ডনের ডাল খালসা অফিস থেকে স্যার মার্ক নিশ্চিত হন খালিস্তান মুভমেন্ট মোটেও থেমে যায়নি। তারা সময় নিয়ে, নিশ্ছিদ্র পরিকল্পনা করছে এবার। ২০১২ সালের দিকে মেজর জেনারেল ব্রার সেন্ট্রালে লন্ডনে চার শিখ যুবকের হাতে নৃশংসভাবে আহত হন, জানে ফিরে এসে সংবাদমাধ্যমগুলোকে শিখদের বলে যাওয়া শেষ বাণীগুলো জানান ব্রার। তারা বলে গেছে, “ব্রিটিশ আর ভারতীয় সরকার যেন ভুলে না যায় খালিস্তান মুভমেন্ট এখনো সক্রিয় আছে। পূণ্যভূমি আমাদের চাই-ই চাই, তার জন্য যা যা করতে হয়, সবই করব আমরা”।
ফিচার ইমেজ- staticflickr.com