রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও ষাট-সত্তরের দশকের কিছু বিতর্কিত ঘটনা

৭০ বছরের শাসনামলে অনেক অনেক সফলতার সঙ্গে অসংখ্য ব্যর্থতাও রয়েছে তার। রানী এলিজাবেথ তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করেন ১৯৬০ ও ৭০ এর দশকে।

রাজপরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিতর্কিত প্রেমের গুঞ্জনের কারণে সংবাদপত্রের শিরোনামে প্রায়শই রাজপরিবারের খবরাখবর ছাপানো হতো। অতঃপর কয়লাখনির শ্রমিকদের আন্দোলনে থমকে যায় গোটা লন্ডন শহর।

এর আগে বা পরে কখনোই ব্রিটিশ রাজপরিবারকে নিয়ে এত বেশি সমালোচনা হয়নি ব্রিটেনে। পরবর্তী জীবনে অনেকবার ঐ সময়টুকুর জন্য জবাবদিহি করেছেন রানী এলিজাবেথ।

ব্রিটিশ রাজপরিবারের দুঃসময় খ্যাত ১৯৬০ ও ৭০ এর দশকের এমনই কয়েকটি ঘটনাই বিস্তারিত আলোচিত হবে আজকের এই লেখায়। 

প্রিন্সেস মার্গেরেটের বিতর্কিত যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ

আদালতে বিতর্কের মধ্য দিয়ে রানী এলিজাবেথের বোন প্রিন্স মার্গারেট রাজপরিবারের সবচেয়ে খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন। ১৯৬৫ সালে তিনি ৩ সপ্তাহের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে যান।

মার্গেরেটের সফরটি এমন এক সময় হয়েছিল, যখন ব্রিটেন অর্থনৈতিকভাবে খুব খারাপ সময় পার করছে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্রিটিশ রাজপরিবারের কূটনৈতিক সম্পর্কও তেমন ভালো ছিল না। বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের উপনিবেশ হারানোয় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে ব্রিটিশ সরকার। এসব কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিকট ঋণ নেয়ার প্রস্তাব করেছিল তারা। একেই মার্গারেটের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের উদ্দেশ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির সঙ্গে মার্গারেট এবং তার স্বামী; Image Source: Bettmann Archive/Getty Images

প্রিন্সেস মার্গারেটের ভ্রমণটি বেশ ভালোভাবেই চলছিল। মার্গারেট ও তার স্বামী অ্যান্টনি আর্মস্ট্রং জোনস সান ফ্রান্সিসকোতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এছাড়াও তারা লস অ্যাঞ্জেলসে জুডি গারল্যান্ড ও আলফ্রেড হিচককের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিদের সঙ্গেও দেখা করেন, এবং অ্যারিজোনায় ঘুরে-ফিরে সময় কাটান।

পরবর্তীতে নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ শেষে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন এবং তার স্ত্রী লেডি বার্ড জনসনের আমন্ত্রণে হোয়াইট হাউজের অনুষ্ঠানে যোগদান করেন প্রিন্সেস মার্গারেট ও তার স্বামী। সেখানে সান্ধ্যকালীন ভোজের পাশাপাশি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নাচেন মার্গারেট।

প্রিন্সেস মার্গারেট এবং অ্যান্টনি আর্মস্ট্রং জোনস; Image Source: Express Uk

তার সফরটি নিয়ে সেকালে ইংরেজ পত্রপত্রিকায় ব্যাপক লেখালেখি হয়। কারণ, অর্থনৈতিক মন্দার দিনে ৩০,০০০ ইউরো ব্যয়ে মার্গারেটের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ জনসাধারণের পাশাপাশি রাজপরিবারের অনেকেই মেনে নিতে পারেনি।

পরবর্তীতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের আপ্যায়ন নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। ফলস্বরূপ ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ক্ষেত্রে মার্গারেটের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এই ঘটনার কারণে রানী এলিজাবেথ নিজেও বেশ সমালোচিত হন।

আবেরফান বিপর্যয়

১৯৬৬ সালের ২১ অক্টোবর রোজ শুক্রবার সকাল ৯টায় দক্ষিণ ওয়েলসের কয়লাখনি সমৃদ্ধ গ্রাম আবেরফানের স্কুলে শিশুরা সবেমাত্র বই খুলে পড়াশোনা শুরু করেছে। ঠিক তখনই মারাত্মক শব্দে কয়লাখনির মজুদ ভেঙে পড়তে থাকে।

পাহাড়ের চারপাশে কয়লা ছড়িয়ে পড়ে এবং আশপাশের সবকিছুই কয়লার নিচে চাপা পড়ে। এমনকি পাহাড়ের নিচে শ্রমিকদের ছোট ছোট ঘরগুলোও সৃষ্ট ভূমিধ্বসের কারণে ধ্বংস হয়ে যায়। ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের মতে, ঐ দুর্যোগের বেশ কিছুদিন আগে গ্রামটিতে টানা এক সপ্তাহ বৃষ্টিপাত হয়েছিল।

নিহতদের সমাধি; Image Source: Hulton-Deutsch Collection/CORBIS/Corbis / Getty

এতে করে ১,৪০,০০০ কিউবিক গজ কয়লা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সর্বমোট ১৪৪ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ১১৪ জনই শিশু। নিহত শিশুদের সবাই কয়লাখনির শ্রমিকদের শিশুসন্তান। এছাড়াও আরও অনেক শ্রমিক নিহত হন।

জাতীয় কয়লা বোর্ড তখন নিহতদের পরিবারকে ৫০ ডলার করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রস্তাব করে। সেই সাথে শহরের ওপর থেকে কয়লা মজুদের গুদামগুলো সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

এই ঘটনার ৮ দিন পর রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ আবেরফান সফরে যান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ পর রানীর আগমনকে সহজভাবে নিতে পারেনি ওয়েলসের লোকজন। এতে করে মারাত্মকভাবে সমালোচিত হন তিনি।

ডকুমেন্টারি

১৯৬০ ও ৭০ এর দশকের কিছুকাল পূর্বেই সম্প্রচার জগতে বিপ্লব সৃষ্টি হয়। বাণিজ্যিক সম্প্রচারের মাধ্যমে ততদিনে ইউরোপ এবং আমেরিকার রাজনীতিতে নানারকম উত্থান-পতনের পটভূমি তৈরি হয়।

তখন বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ক্যারিয়ার ভাঙাগড়ার ভূমিকা পালন করতো টেলিভিশন সম্প্রচার পদ্ধতি। জনসাধারণের মাঝে রাজপরিবার সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাবে তৈরি করতে টেলিভিশন সম্প্রচারকে বেছে নেন রানী এলিজাবেথ।

ক্যামেরায় ডকুমেন্টারির ভিডিও ধারণের দৃশ্য; Image Source: Hulton Archive/Getty Images

তখন ‘রয়্যাল ফ্যামিলি’ নামক ১০৫ মিনিটের ডকুমেন্টারি ধারণ করা হয়। সেখানে রানী এলিজাবেথ, প্রিন্স ফিলিপসহ রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালের ২১ জুন পুরো ইংল্যান্ডে এটি সম্প্রচার করা হয়।

ইতিহাসবিদদের মতে, ভিডিওটির মাধ্যমে রানী এলিজাবেথ ব্রিটিশ নাগরিকদের প্রতি রাজপরিবারের মানবিকতা তুলে ধরেন। এছাড়াও ২১ বছর বয়সী প্রিন্স চার্লসকে জনসম্মুখে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়। সেদিন এই ভিডিওটি একসঙ্গে ৩০ মিলিয়ন মানুষ উপভোগ করে।

কথিত আছে, বিরতির সময় সবাই একযোগে শৌচাগার ব্যবহার করায় লন্ডন শহরে পানির সংকট দেখা দিয়েছিল!

ডকুমেন্টারির দৃশ্য; Image Source: Fox Photos/Getty Images

রাজপরিবারের ওপর নির্মিত ভিডিওটি ব্রিটিশ নাগরিকরা ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করে। সেই সাথে এমন আরও ভিডিও সম্প্রচারের দাবি জানায়। এই ডকুমেন্টারি প্রকাশের এক মাস পর ২১ বছর বয়সী চার্লসকে প্রিন্স অব ওয়েলস হিসেবে পুনঃনিয়োগ দেয়া হয়।

গবেষকদের ধারণা, চলমান গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় তৎকালীন বৈশ্বিক রাজনৈতিক মহলে চার্লসের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করার জন্যই রানী এই সুকৌশল অবলম্বন করেন।

নভোচারীদের সঙ্গে সাক্ষাত

১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই গোটা বিশ্ব দেখেছিল প্রথম মানব হিসেবে নীল আর্মস্ট্রং এবং এডউইন ‘বাজ’ অলড্রিনকে চাঁদে পা রাখতে। ঐ মিশনে মহাকাশচারীরা বিশ্বের ৭২টি দেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্যস্বরূপ একটি রেকর্ডিং ডিস্ক সঙ্গে নেন।

রানী এলিজাবেথ নিজেও ব্রিটিশদের পক্ষ থেকে অ্যাপোলো ১১ মিশনে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য পাঠিয়েছিলেন। তিনি এই সফল অভিযানে বেশ খুশিও হয়েছিলেন।

মহাকাশচারীদের সঙ্গে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ; Image Source: Keystone-France/Gamma-Rapho/Getty Images

চন্দ্রাভিযান শেষে মহাকাশচারীরা যখন পৃথিবীতে পৌঁছান, তখন তারা বিশ্ব ভ্রমণের অংশ হিসেবে ব্রিটেনে পৌঁছে রানী এলিজাবেথের আমন্ত্রণে বাকিংহাম প্যালেসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। উক্ত অনুষ্ঠানে রানী ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন প্রিন্স ফিলিপ, প্রিন্স অ্যান্ড্রু, প্রিন্সেস অ্যানি এবং প্রিন্স এডওয়ার্ড।

ব্রিটেনে পৌঁছে নীল আর্মস্ট্রং মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনুষ্ঠানে তিনি অসাবধানতাবশত রানি এলিজাবেথের মুখে হাঁচি দেন। এতে করে অনুষ্ঠানে ব্যাপক হৈ-চৈ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে রাজপ্রাসাদে কী ঘটেছিল, তা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক রয়েছে।

অন্ধকারাচ্ছন্ন লন্ডন এবং খনি শ্রমিকদের ধর্মঘট

আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, খনি শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে কয়েকদিন গোটা লন্ডন শহর অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। মূলত এই ঘটনার সূত্রপাত হয় কয়লাখনির শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে।

১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথমদিকে জাতীয় কয়লা বোর্ডের সঙ্গে জাতীয় খনি শ্রমিক ইউনিয়ন শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে একমত হতে পারেনি। দফায় দফায় আলোচনার পর যখন শ্রমিক নেতারা ব্যর্থ, তখন ৯ জানুয়ারি লাখ লাখ ব্রিটিশ খনিশ্রমিক ধর্মঘটের ডাক দেয়।

ধর্মঘট চলাকালে শ্রমিকদের সহযোগী ফ্রেডি ম্যাথিউস নামের একজন নিহত হলে শ্রমিকদের ক্ষোভ কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

হাইজ অব কমন্সের সামনে আন্দোলনরত শ্রমিকরা; Image Source: PA Images/Getty Images

১৯২৬ সালে একটানা ৩২ সপ্তাহের ধর্মঘটের পর এটি ছিল তখনকার সময়ের দ্বিতীয় দীর্ঘতম ধর্মঘট। ব্রিটিশ সরকার খনি শ্রমিকদের দাবিকে অযৌক্তিক বলে ঘোষণা দিয়েছিল।

সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে দিন দিন কয়লার চাহিদা কমে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর মতো উপায় তাদের হাতে নেই। ভবিষ্যতে এর চাহিদা আরও কমবে বলেও ইঙ্গিত দেয় প্রশাসন।

অন্ধকারাচ্ছন্ন লন্ডন; Image Source: 2 sec.com

অতঃপর ৯ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ তিনদিনের সাপ্তাহিক কর্মদিবস ঘোষণা দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন। স্কুল, কলেজ ও দোকান বন্ধ হয়ে যায়। লন্ডন শহরের বেশিরভাগ নাগরিক দিনে ৯ ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ পেতেন না।

অবস্থা বেগতিক বুঝতে পেরে ১৯৭২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি শ্রমিকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করে ব্রিটিশ সরকার। শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য আর্থার স্কারগিল কনজারভেটিভ সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

কিন্তু তখনও এই ঘটনা নিয়ে রাজপরিবারের মতামত এবং রানী শ্রমিকদের পক্ষে ছিলেন কি না- সেটি ঠিকমতো জানা যায়নি। তবে লন্ডনের স্কুল, কলেজ, দোকানপাট এবং নাগরিকরা দিনের পর দিন এভাবে বিদ্যুৎবিহীন জীবনযাপন করায় রানী সমালোচিত হন।

প্রিন্সেস মার্গারেটের বিতর্কিত সম্পর্ক

১৯৭৬ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয় রাজপরিবার। প্রিন্সেস মার্গারেটকে তার থেকেও ১৭ বছরের ছোট রোডি লেভেলিন নামের এক যুবকের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটি দ্বীপে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় ক্যামেরাবন্দী করেন সাংবাদিকরা। জনসাধারণের করের অর্থ দিয়ে মার্গারেটের এমন বিলাসিতা নিয়ে সবার মাঝে ক্ষোভ তৈরি হয়।

যদিও এতকিছুর মাঝে রাজপরিবারে তখন বিচ্ছেদের আলোচনা তুঙ্গে। কারণ মার্গারেট তখন অবধি তার স্বামী অ্যান্টনি আর্মস্ট্রং জোনসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ বিচ্ছেদ করেননি। তবে ধারণা করা হয়, দ্য সানডে টাইমস পত্রিকার ফটোগ্রাফারদের অ্যান্টনি নিজেই মার্গারেটের পেছনে লেলিয়ে দিয়েছিলেন।

এসবের পর ১৯৬০ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া মার্গারেট-অ্যান্টনি দম্পতির বৈবাহিক সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটে। তাদের বিচ্ছেদকে ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত বিচ্ছেদ হিসেবে ধরা হয়। মার্গারেটের ব্যক্তিগত সহকারী লর্ড নেপিয়ার যখন তাকে বিচ্ছেদ সম্পর্কে অবহিত করেন, তখন মার্গারেট বলেছিলেন, “ধন্যবাদ। আমার মনে হয় তুমি আমাকে এযাবতকালের সবচেয়ে সেরা সংবাদটি দিলে।”

চার্লস এবং ক্যামিলার প্রেমের ঘটনা

প্রিন্স অব ওয়েলস খ্যাত প্রিন্স চার্লস ১৯৭০ সালে ক্যামিলা পার্কারের সঙ্গে প্রথবার পরিচিত হন। উইন্ডসর পার্কে একটি বিশেষ খেলা চলাকালীন পরিচয় হলেও আস্তে আস্তে তারা খুব ঘনিষ্ঠ হতে থাকেন। যদিও দিন দিন তাদের সম্পর্কটি অনিশ্চয়তার দিকে যেতে থাকে।

এর আগে ক্যামিলা ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা এন্ড্রু পার্কারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। যদিও পরবর্তীতে জানা যায়, এন্ড্রু পার্কার গোপনে প্রিন্সেস অ্যানির সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়েছেন।

প্রিন্স চার্লস এবং ক্যামিলা পার্কার; Image Source: Serge Lemoine/Getty Images

প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকার পরেও একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে ক্যামিলা রাজপরিবারের নিকট তেমন গুরুত্বপূর্ণ হতে পারেননি। বরং তার কাছ থেকে চার্লসকে দূরে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন। তারা চার্লসের জন্য নৌবাহিনীতে মর্যাদাপূর্ণ পদ খুঁজে বের করে সেখানে যোগদানের নির্দেশ দেয়।

যখন চার্লস নৌবাহিনীতে যোগ দেন, তখন সাবেক প্রেমিক অ্যান্ড্রু ক্যামিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ওয়েলিংটনের ব্যারাকে ১৯৭৩ সালের ৪ জুলাই দুজনের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এর মধ্য দিয়ে প্রিন্স চার্লস এবং ক্যামিলা পার্কারের বহুল আলোচিত প্রেমের সমাপ্তি ঘটে। এই ঘটনা নিয়ে সেকালের পত্রপত্রিকায় ব্যাপকভাবে লেখালেখি হয়েছিল।

This article written about the some real Stories Behind the Tumultuous 1960s and '70s of Queen Elizabeth II. The royal family entered the spotlight like never before

Featured Image: PA Images / Getty

 

Related Articles

Exit mobile version