‘মোনা লিসা’; আজ থেকে ৫০০ বছরেরও বেশি সময় আগে ছবিটির নিচে লুকিয়ে থাকা সাদা পপলার কাঠের উপর তেলরঙ দিয়ে শেষ আঁচড় দিয়েছিলেন রেনেসাঁর সব্যসাচী জাদুকর। তখনও কি দ্য ভিঞ্চি বুঝতে পেরেছিলেন লিসা ঘেরারদানির এই পোর্ট্রেটটিই হবে পৃথিবীর অন্যতম পরিচিত মুখ? গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ডের খাতায় সবচেয়ে বেশি দামে বীমাকৃত এই ছবিটিকে নিয়ে একটি কথাই বলা হয় –
“The best known, the most visited, the most written about, the most sung about, the most parodied work of art in the world.”
এবং কথাটাও মিথ্য নয়, প্রতিবছর প্রায় ৭০ লক্ষ লোক ল্যুভর জাদুঘরে উঁকি দিয়ে যান শুধু ‘ম্যাডাম লিসা’-কে দেখার আশায়!
কিন্তু অগণিত টিভি সিরিজ আর চলচ্চিত্রে দেখানো ‘মোনা লিসা’-কে সামনাসামনি দেখার পর অনেক দর্শনার্থীরই মনে খটকা লাগে, “মোনা লিসা এত ছোট!” মাত্র ৩০ ইঞ্চি বাই ২১ ইঞ্চির এই পোর্ট্রেটটি আসলেই রেনেসাঁ আমলের বিশালাকারের ছবিগুলোর তুলনায় নিতান্তই ক্ষুদ্র। আদপে ১৭৯৭ সালে ল্যুভর (ফ্রেঞ্চ উচ্চারণ ল্যুভে) জাদুঘরে যখন ‘মোনা লিসা’-কে নিয়ে আসা হয়, তখন অন্যান্য সাধারণ ছবির সাথেই একে রেখে দেওয়া হয়েছিলো, এখনকার মতো পুরো একটি দেয়াল জুড়ে থাকা স্পটলাইটের মধ্যে নয়!
যদিও ইতিহাসের অন্যতম সেরা চিত্রকর লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির অসাধারণ একটি ছবি এই ‘মোনা লিসা’, কিন্তু সবচেয়ে বিখ্যাত হওয়ার অন্তরালের গল্পটি কি শুধুই দ্য ভিঞ্চির দক্ষতা, নাকি অন্য কিছু? না, ‘মোনা লিসা’ বিখ্যাত হওয়ার পিছনে শুধু ভিঞ্চির দক্ষ হাত নয়, সাথে জড়িয়ে রয়েছে এক তরুণ দেশপ্রেমিক চোরের উপাখ্যান! তাহলে চলুন শুনে আসা যাক আজ থেকে ১০৬ বছর আগের সেই ঘটনা।
ল্যুভর জাদুঘরের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের কালো গোঁফে তা দিচ্ছে লোকটা। সন্দেহ করার মতো তেমন কিছু নেই তার মধ্যে, পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চির ছোটখাট শরীরটা ঢেকে রয়েছে একটা সাদা আলখেল্লায়, জাদুঘর কর্তৃপক্ষ কর্মচারীদের জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। সোমবারের সকাল, ল্যুভর এদিন পুরোটাই বন্ধ থাকে ধোয়া-মোছার জন্য। সকাল সাতটার দিকে অন্যান্য কর্মচারীদের সাথে সে-ও ঢুকে পড়লো ল্যুভরের মাখনরঙা দেয়ালের মধ্যে।
অাগস্ট ২১, ১৯১১, সকাল ৮টা; সঁভে নামের এক কর্মচারী এক আগন্তুককে দেখতে পেলো, কর্মচারীদের সাদা রঙের আলখেল্লা দিয়ে জড়ানো কিছু একটা তার হাতে। আগন্তুক সঁভেকে দরজার হাতলটি দেখিয়ে দিলো, হাতলটি খুলে পড়ে আছে দরজার সামনে, দরজা গিয়েছে আটকে। অনুগ্রাহী সঁভে তার যন্ত্রপাতি দিয়ে দরজা খুলে দিলেন। আগন্তুক সোমবারের শান্ত ল্যুভর থেকে বের হয়ে গেলো প্যারিসের রাজপথে, বগলের তলায় লুকিয়ে আছে ফ্রেঞ্চ ভাষায় ‘লা জকুঁদ’ নামে পরিচিত ‘মোনা লিসা’!
বারো ঘন্টা পরেও কেয়ারটেকারের চোখে তেমন কিছু ধরা পড়েনি, পড়েনি পরদিন সকালেও। ল্যুভ থেকে হঠাৎ করে ছবি উধাও হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়, ফটোগ্রাফাররা যেকোনো সময়ই কোনো ধরণের ইস্যু করা ছাড়াই নিজেদের সাথে নিয়ে যেতে পারেন মহামূল্যবান ছবিগুলো! পরদিন সকালে জনৈক আঁকিয়ে লুই বেরুঁ যখন মোনা লিসার স্কেচ আঁকার জন্য দেয়ালের সামনে দাঁড়ালেন, দেয়াল থেকে বের হয়ে থাকা চারটি হুক ছাড়া আর তেমন কিছু চোখে পড়েনি তার। বেরুঁও ভেবেছিলেন মোনা লিসা রয়েছে কোনো ফটোগ্রাফারের কাছে, তাই পাহারাদার পঁপাদাইনকে পাঠালেন ফটোগ্রাফারদের কাছে কখন ছবিটা ফেরত পাওয়া যাবে তা জানতে। ফটোগ্রাফারদের বক্তব্য শুনেই এবার টনক নড়ে উঠলো ল্যুভর কর্তৃপক্ষের, শুরু হলো গরুখোঁজা!
ল্যুভরের কর্মচারীদের জন্য সংরক্ষিত সিঁড়ির নিচে খুঁজে পাওয়া গেলো মোনা লিসার সোনালী ফ্রেম, সাথে এর গ্লাস ফ্রেমটিও নিজেদের হেডকোয়ার্টারে নিয়ে গেলো প্যারিস পুলিশ। মোনা লিসা চুরির ঘটনা ফলাও করে ছাপা হলো ফ্রান্স সহ ইউরোপের বড় বড় পত্রিকাগুলোতে, এমনকি ইউরোপ ছাড়িয়ে আমেরিকার বিখ্যাত নিউ ইয়র্ক টাইমসও তাদের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম তৈরি করলো এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে! প্যারিসের তৎকালীন বিখ্যাত পত্রিকা ‘লা পেতিত প্যারিসিয়েঁ’-এর শিরোনাম হলো, “অন্তত ফ্রেমটি এখনও আমাদের কাছে রয়েছে!” ডানপন্থী ফ্রেঞ্চ পত্রিকাগুলো চুরির দায় চাপালো ইহুদীদের ঘাড়ে।
মোনা লিসা চুরির পর উঠে পড়ে লাগলো ফ্রেঞ্চ পুলিশ আর গোয়েন্দারা। সমালোচকরা ল্যুভরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর এক ফ্রেঞ্চ সাংবাদিক মন্তব্য করেছিলো, “লা জকুঁদ চুরি হওয়ার একমাত্র কারণ, এটি যে চুরি হতে পারে তা কখনো কেউ কল্পনাও করেনি!”
মোনা লিসা চুরি হওয়ার ধাক্কা সামলানোর এক সপ্তাহ পর যখন ল্যুভরের দরজা আবার জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হলো, তখন প্যারিসবাসী হুমড়ি খেয়ে পড়লো শুধু এতদিন ধরে ‘মোনা লিসা’-র আড়ালে লুকিয়ে থাকা চারটি হুক দেখার জন্য! ল্যুভরের ইতিহাসে প্রথমবার দর্শনার্থীদেরকে লাইনে দাঁড় করাতে হলো। গায়কদের মুখ থেকে ভেসে এলো ‘মোনা লিসা’ নিয়ে রচিত নতুন গান, কৌতুকাভিনেতারা বলতে থাকলো, “এরপর কী আইফেল টাওয়ারের পালা?”
চুরি উদযাপন করতে ফ্রান্সের রাস্তায় বাজতে থাকলো বিখ্যাত গান “It couldn’t be stolen, we guard her all the time, except on Mondays“। প্যারিসের রাস্তা ছেয়ে গেলো মোনা লিসার পোস্টকার্ড দিয়ে! সিগারেট থেকে শুরু করে মেয়েদের অন্তর্বাস, কোথায় নেই মোনা লিসার ছবি? হঠাৎ করেই মোনা লিসা হয়ে গেলো ধনী সমাজের তৎকালীন ফ্যাশন! প্যারিসের অভিজাত শ্রেণীর বাড়িতে ঝুলতে থাকলো নকল ‘মোনা লিসা’, আসল ‘মোনা লিসা’ তখন মুচকি হাসছে প্যারিসের এক ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্টের কোণায় পড়ে থাকা এক ট্রাংকের মধ্যে!
এদিকে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মাস্টারপিস উদ্ধার করার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ আসতে থাকলো ফ্রেঞ্চ পুলিশের উপর। সভেঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে দরজার হাতলে পাওয়া আঙুলের ছাপ আর ‘মোনা লিসা’র শুন্যস্থানে থাকা কিছু আঙুলের ছাপ ছাড়া তেমন কিছুই পুলিশের কপালে জুটলো না। তারপর মিলিয়ে দেখা হলো জাদুঘরের কর্মচারীদের সাথে। কিন্তু বিধি বাম, মিললো না কারও সাথেই। এদিকে নতুন-পুরানো মিলিয়ে সব কর্মচারীদের ছবির বই তুলে দেওয়া হলো সভেঁর হাতে, কিন্তু ভুলোমনা কর্মচারীও ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়ে দিলেন।
জাদুঘরের অভ্যন্তরীণ কোনো ব্যাপার না হওয়ায় পুলিশ শেষমেশ হাল ছেড়ে দিয়ে নজর দিলো অন্য দিকে। জেরি নামের এক বেলজিয়ান চোর ল্যুভর থেকে চুরি করা দুইটি আইবেরিয়ান মূর্তি নিয়ে হাজির হয়েছিলো ‘লা জার্নাল’-এর অফিসে। সেই জেরিরই সূত্র ধরে পুলিশ পেয়ে গেলো এক নতুন সন্দেহভাজন, তৎকালীন সময়ের পরিচিত মুখ অ্যাপোলোনিয়েঁ। প্যারিসের এই বিখ্যাত সাহিত্যিক কোনো এক কারণে একবার হুমকি দিয়েছিলেন ল্যুভরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিবেন! জেরির চুরি করা আইবেরিয়ান মূর্তি তখনও নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন অ্যাপোলোনিয়েঁ, তার এক স্প্যানিশ বন্ধুও নিজের আঁকা ছবির মডেল হিসেবে ব্যবহার করার জন্য চুরি করা মূর্তি কিনেছিলেন। ছবিটির নাম হলো ‘Les Demoiselles d’Avignon’, আর ছবিটির আঁকিয়ে স্বয়ং পাবলো পিকাসো!
সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখ অ্যাপোলোনিয়েঁকে গ্রেফতার করা হলো। পুলিশের জেরার মুখে পিকাসোর নাম বলে দিলেন তিনি! শেষ সূত্র হিসেবে পুলিশের কাস্টোডিতে হাজির করা হলো বিখ্যাত স্প্যানিশ চিত্রকরকেও! কিন্তু এখানেও হতাশ হতে হলো পুলিশ বাহিনীকে। চুরির ব্যাপারে কোনো কিছুই জানেন না এই দুই শিল্প-বিশারদ। শেষমেশ হাল ছেড়ে দিতে হলো ল্যুভর কর্তৃপক্ষকেও, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ফাঁকা পড়ে থাকা মোনা লিসার শূন্যস্থান পূরণ করতে নিয়ে আসা হলো আরেক বিখ্যাত চিত্রশিল্পী রাফায়েলের আঁকা আরেকটি পোর্ট্রেট।
এক বছর পরের ঘটনা, পৃথিবী ভুলেই গিয়েছিলো মোনা লিসা-র কথা। হঠাৎ করেই ইতালির ফ্লোরেন্সের এক অ্যান্টিক ডিলার একটি চিঠি পেলেন, প্রেরকের নাম ‘লিওনার্দো’! “চুরি হওয়া ছবিটা আমার কাছেই রয়েছে। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি যেহেতু ইতালিয়ান, সেহেতু ছবিটিও ইতালির সম্পত্তি!” অ্যান্টিক ডিলার জেরি চিঠি পাওয়ার সাথে সাথেই দৌড়ে গেলেন কাছের উফফিজি গ্যালারির কিউরেটরের কাছে। অবশেষে কিউরেটর জিওভান্নি পোজ্জির পরামর্শে লিওনার্দোকে আমন্ত্রণ জানানো হলো ফ্লোরেন্সে, জেরির দোকানে।
৪০০ বছর আগে দ্য ভিঞ্চি যেখানে ‘মোনা লিসা’-কে এঁকেছিলেন, জেরির অ্যান্টিক দোকান সেখান থেকে খুব একটা বেশি দূরে নয়। ১৯১৩ সালের ১০ ডিসেম্বর, সূর্য প্রায় ডুবে যাবে এমন সময় হঠাৎ করেই অপ্রত্যাশিতভাবে জেরির দোকানের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো ৫ ফুট ৩ ইঞ্চির বেটেখাট এক ব্যক্তি। মোম মাখানো গোঁফে তা দিতে থাকা এই ব্যক্তিকে ল্যুভরের সামনে দেখা গিয়েছিলো ১৯১১ সালের ২১ আগস্ট, যেদিন তার চিরপরিচিত স্থান থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলো ‘ম্যাডাম লিসা’!
জেরির সাথে হাত মিলালেন ভদ্রলোক, দাবী করলেন নিজ হাত দিয়ে ল্যুভরের হুক থেকে ‘মোনা লিসা’-কে নিজ দেশে ফিরিয়ে এনেছেন তিনি! ইতিমধ্যেই ইতালিতে ফিরতে নিজের নগদ টাকা পয়সা শেষ করে ফেলেছেন এই দেশপ্রেমিক চোর! প্রমাণ করতে পকেটে থাকা তার শেষ সম্বলটুকুও দেখিয়ে দিলেন, মাত্র ১ ফ্রাংক, সাথে ৯৫ সেন্টাইম! ও হ্যাঁ, ফ্রান্স থেকে আরেকটি জিনিসও নিয়ে এসেছেন তিনি, এই বস্তুটিও তিনি দিয়ে যাবেন জেরির কাছে, তবে বিনিময়ে জেরিকে দিতে হবে ৫ লক্ষ ইতালিয়ান লিরা!
ছবিটিকে দেখার জন্য পরদিন ত্রিপোলি-ইতালিয়া হোটেলে হাজির হলেন জেরি এবং পোজ্জি। দুজনকে ভিতরে ঢুকতে দিয়েই দরজা আটকে দিলো ‘লিওনার্দো’ নামধারী চোর, বিছানার নিচ থেকে টেনে বের করলো ছোটখাট এক ট্রাংক। দীর্ঘ দুই বছর পর অবশেষে লিওনার্দো ছাড়া দ্বিতীয় ব্যক্তি ‘মোনা লিসা’-কে দেখতে পেলো! ‘মোনা লিসা’-কে পরীক্ষা করার জন্য উফফিজি গ্যালারিতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চাইলেন পোজ্জো, অনুমতি পেলেনও বটে। কাপড় দিয়ে মোড়ানো ছবিটিকে নিয়ে যখনই রাস্তায় নামতে যাবেন, তখনই এক হোটেল কর্মচারীর সন্দেহ হলো পোজ্জো সম্ভবত হোটেলের দেয়াল থেকে কোনো ছবি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন! ছবি নিয়ে টানাটানি করতেই বেরিয়ে পড়লো ‘মোনা লিসা’-র আসল চেহারা, খবরটা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে দেরি হলো না। সেদিন দুপুরেই হোটেল রুম থেকে গ্রেফতার হলো ভিনসেঞ্জো পেরুজ্জিয়া ওরফে লিওনার্দো।
পেরুজ্জিয়া প্যারিসে এসেছিলেন একটুখানি শিল্পের ছোঁয়া নিতে, কিন্তু হতাশ হতে হয়েছিলো তাকে। ‘সিটি অভ লাইটস’-এ ছবি এঁকে পেট চালানো মুখের কথা নয়, তাই বাধ্য হয়ে প্যারিসের রাস্তায় ম্যাকারোনি বিক্রি করতেন। সোমবারের দিনটা যেত ল্যুভরের অন্তরালে, শিল্পানুরাগী হিসেবে দিনটার জন্য অপেক্ষা করতেন তীর্থের কাকের মতো। পেরুজ্জিয়া ভেবেছিলেন, নেপোলিয়ন ইতালি থেকে লুট করেছিলেন ‘মোনা লিসা’-কে, দ্য ভিঞ্চি নিজেই যে রাজা ফ্রান্সিসকে ছবিটি দিয়েছিলেন তা জানা ছিলো না এই ইতালিয়ানের!
‘মোনা লিসা’-কে উদ্ধার করা যেতো অনেক আগেই, যদি না গোয়েন্দারা ভুল না করতেন! ‘মোনা লিসা’-কে যে গ্লাস ফ্রেমের সাথে আটকে রাখা হয়েছিলো, তার কারিগরই ছিলেন এই ভিনসেঞ্জো পেরুজ্জিয়া! ল্যুভরের দেয়ালেও পেরুজ্জিয়া তার বাম হাতের ছাপ ফেলে গিয়েছিলেন, কিন্তু গোয়েন্দারা শুধুমাত্র ডান হাতের আঙুলের ছাপ দেখেই ব্যর্থ মনোরথে ফিরে গিয়েছিলো!
যা-ই হোক, পেরুজ্জিয়ার বিচারকাজ শুরু হলো ইতালিতে এবং এজন্যেই হয়তো সাজাটাও কম পেয়েছিলেন। সাত মাস কারাদন্ড ভোগ করেই ফিরে গেলেন ইতালিতে, নাম লেখালেন ইতালির সেনাবাহিনীতে, যুদ্ধ করলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে। যুদ্ধের পর আবার ফিরে গিয়েছিলেন ফ্রান্সে, রঙের দোকান খুলে সেখানেই ছিলেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। অবশেষে নিজের ৪৪তম জন্মদিনেই সীসা বিষক্রিয়ায় পরলোকে পাড়ি জমান ‘মোনা লিসা’-কে বিখ্যাত করার পেছনের কারিগর।
ফিচার ইমেজ- Renaissance Factory