১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বের কাছে আরেকটি পাক-ভারত যুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করতে আগের দিন ভারতে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। পাল্টা জবাবে ভারত পাকিস্তানের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। মিসাইল মেরে করাচি বন্দরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এদিকে পূর্ব পাকিস্তানের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে আগস্ট মাসে কমান্ডো হামলা ‘অপারেশন জ্যাকপট’ চালিয়ে প্রায় অচল করে দিয়েছে বাংলার দামাল ছেলেরা। ভারতের সতর্ক নৌবাহিনীকে এড়িয়ে একই ধরনের হামলা করে তাদের বন্দর অচল করতে হলে আগে সরাতে হবে শক্তিশালী দাবার ঘুঁটি ‘আইএনএস ভিক্রান্ত’ কে। ভারতীয় এই এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানে নৌ অবরোধ দিয়ে রেখেছে তাদের নৌবাহিনী। ফলে মুক্তিবাহিনীর হাতে মার খেয়ে রসদের অভাবে শক্তিশালী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থা আরো শোচনীয়। তাই যেকোনো মূল্যে ভারতীয় এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারকে ধ্বংস করতে গোপন মিশনে পাঠানো হয় তৎকালীন পাকিস্তানের অন্যতম সেরা সাবমেরিন ‘পিএনএস গাজী’কে। কিন্তু ৪ ডিসেম্বর রাতে ভারত মহাসাগরের বুকেই সমাধি হয়েছিল সাবমেরিনটির। ফলে কোণঠাসা হতে থাকা পাকিস্তানের সব আশাই শেষ হয়ে যায়।
গাজী বৃত্তান্ত
ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতা লাভের পরপরই দুই শত্রুভাবাপন্ন প্রতিবেশী রাষ্ট্র একে অন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়েছে। পাকিস্তানের শাসকেরা তাই উন্নত, আধুনিক ও শক্তিশালী অস্ত্র কেনার প্রতি বাড়তি মনোযোগ দিয়েছিলেন। পাকিস্তান নৌবাহিনীকে আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বিস্তার করতে হলে ‘স্ট্রাটেজিক ওয়েপন’ হিসেবে সাবমেরিন কিনতেই হবে। এরই ধারাবাহিকতায় পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সামরিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ১৯৬৩ সালে পাকিস্তানকে ‘ইউএসএস ডিয়াবলো’ নামক ট্রেঞ্চ ক্লাস ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিনটি লিজ দেয়া হয়। স্প্যানিশ ভাষায় ডিয়াবলো বলতে ডেভিল বা শয়তানকে বোঝায়। ১৯৪৪ সালের ১১ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টসমাউথ ইয়ার্ডে এটি নির্মাণ করা হয়। একই বছরের ১ ডিসেম্বরে এই ডুবোজাহাজটি মার্কিন নৌবাহিনীতে যুক্ত করা হয়।
শেষ সময়ে নির্মিত হওয়ায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এটি তেমন একটা ভূমিকা রাখতে পারেনি। তবে পুরনো হলেও বেশ কার্যকর ছিল সাবমেরিনটি। তাই ১৯৬৪ সালের ১লা জুন একে ১.৫ মিলিয়ন (২০১৬ সালের হিসাবে ১১.১ মিলিয়ন) ডলারের বিনিময়ে কিনে পিএনএস গাজী নামে একে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। উর্দু গাজী শব্দের বাংলা অর্থ ‘বীর’। এটি ছিল পাকিস্তানের প্রথম সাবমেরিন। তাদের ৩ বছর পর ভারত সামরিক ভারসাম্য রক্ষায় সাবমেরিন কেনে। ৩১২ ফুট লম্বা এই সাবমেরিন পানির উপরে ঘন্টায় ৩৭.৫০ কিলোমিটার এবং পানির নিচে ঘন্টায় ১৬.২১ কিলোমিটার বেগে চলতে সক্ষম ছিল। এটি রিফুয়েলিং ছাড়া একটানা ২০ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে সক্ষম ছিল। সর্বোচ্চ ৪৫০ ফুট গভীরতায় ডুব দিয়ে একটানা ৪৮ ঘন্টা পানির নিচে থাকতে পারত। শত্রুর সোনার ফাঁকি দিতে ডিজেল ইঞ্জিন বন্ধ করে ব্যাটারি চালিত ইলেকট্রিক প্রপালশন সিস্টেমও ব্যবহার করতে পারত।
অস্ত্রশস্ত্রের দিক দিয়ে বেশ শক্তিশালী ছিল গাজী। এর সামনের দিকে ১০টি এবং পিছনের দিকে ৪টি টর্পেডো টিউব ছিল। ফলে এটি দুই দিক দিয়েই আক্রমণ করতে পারত। সব মিলিয়ে মোট ২৮টি টর্পেডো বহন করতে পারত। তবে পাকিস্তান তুরস্কে সাবমেরিনটি আপগ্রেড করার সময় এতে নেভাল মাইন বসানোর সুবিধা যোগ করে। এজন্য ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ‘অপারেশন দ্বারকা‘ চলাকালে পিএনএস গাজীকে মুম্বাই নৌঘাঁটি থেকে আগত ভারতীয় যুদ্ধজাহাজকে ফাঁদে ফেলার দায়িত্ব দেয়া হয়। এই অপারেশনের পর ৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৫ সালে আইএনএস বিয়াস সন্দেহজনক সাবমেরিনের উপস্থিতি টের পেয়ে বেশ কয়েকটি ডেপথ চার্জ ফায়ার করে। তবে সাবমেরিনটি নিরাপদে ঐ এলাকা ত্যাগ করে।
১৭ সেপ্টেম্বর আইএনএস ব্রহ্মপুত্র নামক আরেকটি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজের ডেপথ চার্জের হামলার শিকার হয় পিএনএস গাজী। এবার সাবমেরিনটি ৩টি টর্পেডো ছুড়ে পালিয়ে যায়। গাজীর সোনার তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ রেকর্ড করলেও ভারতের পক্ষ থেকে কোনো জাহাজডুবির কথা স্বীকার করা হয়নি। যুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রেখে ১০টি পুরস্কার পায় পিএনএস গাজী। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে স্পেশাল অপারেশনে পাঠানো হয়।
ভিক্রান্ত হবে আক্রান্ত
পূর্ব পাকিস্তানে নিজ দেশের নাগরিকদের উপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী হামলা করতেই বাঙালিদের সাহায্য করতে শুরু করে চিরশত্রু ভারত। তারাও আশঙ্কা করছিল যে আরেকটি পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হতে পারে। ভারতীয় এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার আইএনএস ভিক্রান্তকে বঙ্গোপসাগরে নেভাল ব্লকেড দিতে মোতায়েন করা হয়। এটি ছিল ভারতীয় নৌবাহিনীর ইস্টার্ন নেভাল কমান্ডের ফ্ল্যাগশিপ। তৎকালে এর সমকক্ষ কোনো যুদ্ধজাহাজ পাকিস্তান নৌবাহিনীতে ছিল না। এছাড়া বঙ্গোপসাগরের তীরেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চট্টগ্রাম বন্দর। গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরটি আগস্ট মাসের মুক্তিবাহিনীর অপারেশন জ্যাকপটের পর থেকে কোনোরকমে টিকে আছে। আইএনএস ভিক্রান্ত এর যুদ্ধবিমানগুলো বন্দরে হামলা করলে সেটি পুরোপুরিভাবে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় ছিল পাকিস্তানি হাইকমান্ড। ১৯৭১ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে পিএনএস গাজীকে বঙ্গোপসাগরে পাঠানো হয়। লক্ষ্য আইএনএস ভিক্রান্তকে ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করে যুদ্ধের বাইরে পাঠিয়ে দেয়া। তবে তখন পর্যন্ত ভারত-পাকিস্তানের সরাসরি যুদ্ধ শুরু হয়নি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সাবমেরিনটি ১৪ নভেম্বর, ১৯৭১ সালে রওনা দেয়। আরব সাগরের তীরে করাচি বন্দর পিএনএস গাজী পুরো পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারত পার করে শ্রীলঙ্কার জলসীমা দিয়ে ঢুকে পূর্বপ্রান্তে বঙ্গোপসাগরে পৌঁছে যায়। ৪,৮০০ কিলোমিটারের এই যাত্রার পুরোটা সময় তাদেরকে ভারতীয় নৌবাহিনীর চোখে ধরা পড়া থেকে বাঁচতে লুকোচুরি খেলতে হয়েছে। গাজীর কমান্ডার ছিলেন জাফর মহম্মদ খান। দলে মোট ৯২ জন নাবিক। তবে কমান্ডার জাফর বেশ চিন্তিত ছিলেন। তার সাবমেরিনের কিছু জরুরি মেরামতের দরকার ছিল। কিন্তু ‘৬৫ সালের যুদ্ধের পর অ্যাডমিরাল শরীফ খানের একের পর এক অনুরোধ সত্ত্বেও পূর্ব পাকিস্তানে কোনো সাবমেরিন ঘাঁটি তো দূরের কথা, মেরামত করার মতো ন্যূনতম ব্যবস্থাও তারা রাখেনি। দেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশকে সাময়িকভাবে অবহেলার ফলাফল তারা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিল ১৯৭১ সালে।
শিকারি যখন নিজেই শিকার
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর। পাকিস্তান ভারতে আক্রমণ শুরু করে। ফলে আরব সাগরের পর এবার বঙ্গোপসাগর দু’দেশের নৌ-যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। তখন আইএনএস ভিক্রান্ত অবস্থান করছিল মাদ্রাজ বন্দরে। ২৩ নভেম্বর থেকে গাজী ভিক্রান্তকে খুঁজতে শুরু করে। কিন্তু গোয়েন্দা তথ্যের অভাবে সে ছিল ১০ দিন পিছিয়ে। ভিক্রান্তের সম্ভাব্য অবস্থান এবার আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। কিন্তু তাকে খুঁজতে গেলে পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার মতো যথেষ্ট ফুয়েল থাকবে না। হেডকোয়ার্টারের নির্দেশ পেয়ে গাজী এবার তার দ্বিতীয় অবজেক্টিভ পূরণের কাজ শুরু করে।
২-৩ ডিসেম্বর রাতে বিশাখাপত্তনম বন্দর চ্যানেলে নেভাল মাইন পেতে রাখার কাজ শুরু করে। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা হলো- ঐ সময় আইএনএস ভিক্রান্ত অবস্থান করছিল বিশাখাপত্তনম বন্দরে। এরই মধ্যে পাকিস্তান নেভাল হেডকোয়ার্টারের সাথে গাজীর রেডিও যোগাযোগ টের পায় ভারতীয় নৌবাহিনী। ইন্টারসেপ্ট করা মেসেজ বিশ্লেষণ করে তারা বুঝতে পারে- গাজীর টার্গেট ভিক্রান্ত। শ্রীলঙ্কা উপকূলে সম্ভাব্য সাবমেরিন উপস্থিতি শনাক্ত হওয়ার পর ভারতের ডেস্ট্রয়ার শ্রেণীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস রাজপুতকে ব্যাপারটি তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়।
গাজী বিশাখাপত্তনম বন্দরের আশেপাশে আছে টের পেয়ে রাজপুতকে নতুন দায়িত্ব দেয়া হয়। ভারতীয় নৌবাহিনী এবার ভিক্রান্তের ছদ্মনামে রাজপুতের সাথে একাধিক ভুয়া রেডিও মেসেজ নিজেদের মধ্যে আদান-প্রদান করতে থাকে। যেমন- ‘এক নাবিকের মা গুরুতর অসুস্থ, তাকে মানবিক কারণে ছুটি দেয়া হবে কিনা’ এই ধরনের গুরুত্বহীন আলোচনা রেডিওতে করা হয়। এসব মেসেজে ভিক্রান্তের পরবর্তী অবস্থান কোথায় হবে সেটি সম্পর্কে ভুয়া তথ্য দেয়া হয়। এসব তথ্য বিশ্বাস করে ফাঁদে পড়ে পিএনএস গাজী।
১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর রাতে আইএনএস রাজপুতের নজরে আসে বিশাখাপত্তনম বন্দরের কাছে অস্বাভাবিক আলোড়ন। একাধিক বয়া ভাসমান ছিল বলে ব্যাপারটি সহজে চোখে পড়ে এক নাবিকের। রাজপুতের ক্যাপ্টেন সেদিকে ফুল স্পিডে ধেয়ে যান এবং দুটো সাবমেরিন বিধ্বংসী ডেপথ চার্জ ফায়ার করা হয়। চ্যানেলটি বেশ সরু ছিল, ডেপথ চার্জের কনকাশনে রাজপুত নিজেও সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায়নি। আশেপাশে কোনো সাবমেরিনের দেখা না পেয়ে রাজপুত এবার ভিন্ন কোর্সে গাজীকে খুঁজতে বের হয়।
কিছুক্ষণ পর বিশাখাপত্তনম উপকূলে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ৫ ডিসেম্বর সকালে স্থানীয় জেলেরা একটি জাহাজের নেভিগেশন চার্ট, লগবুক ও কিছু ছেঁড়া কাগজপত্র, এবং লাইফ জ্যাকেট পান। সন্দেহ হওয়ায় ভারতীয় নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ আইএনএস নিশতারকে সেই স্থানে পাঠানো হয়।
আশেপাশে খোঁজাখুঁজি করে ডুবুরিরা দেখেন সাগরতলে পাকিস্তানী সাবমেরিন গাজী পড়ে রয়েছে। বিস্ফোরণে দুমড়ে মুচড়ে গেছে ডুবোজাহাজটি। মৃত্যু হয়েছে ৯২ জন পাকিস্তানি নৌ-সেনার। ভেসে ওঠা কয়েকজন নাবিকের মৃতদেহ উদ্ধার করে সৎকার করে ভারত। আইএনএস রাজপুতকে এই মিশনের কৃতিত্ব দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন গাজীর ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করতে ভারতকে প্রস্তাব দিলে তারা অজ্ঞাত কারণে প্রত্যাখ্যান করে। তবে ২০০৩ সালে করা নতুন তদন্তে জানা যায়, বিস্ফোরণ ঘটেছিল ভেতর থেকেই। রাজপুতের ডেপথ চার্জে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সম্ভবত গাজীর ১০টি টর্পেডো একযোগে বিস্ফোরিত হয়। তাতেই সলিল সমাধি ঘটে ডুবোজাহাজটির। সাফল্যের আনন্দে আত্মহারা হয় ভারতীয় নৌবাহিনী। তবে গাজী ডুবে যাওয়ার পাঁচ দিন পর ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস খুকরিকে ডুবিয়ে আবার বিষাদ ডেকে আনে অপর পাকিস্তানি সাবমেরিন পিএনএস হাঙর। সেই আলোচনাও আসবে সামনে।
গাজীর ডুবে যাওয়া নিয়ে কিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব রয়েছে। পাকিস্তানপন্থী ঐতিহাসিকদের কেউ কেউ বলেন, গাজী নিজের পেতে রাখা মাইনের সাথে ধাক্কা খেয়ে ডুবে গিয়েছে। মাইন তত্ত্বের সমর্থক ভারতীয় ঐতিহাসিক কেউ কেউ বলেন, বন্দর চ্যানেলের নির্দিষ্ট অংশে অনাকাঙ্ক্ষিত জাহাজের উপস্থিতি রোধে ভারতের পেতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে গাজী ডুবে যায়। কেউ কেউ বলেন, অত্যন্ত পুরনো সাবমেরিনটি ডুবে যাওয়ার ঘটনা নিছকই দুর্ঘটনা, এখানে ভারতের হাত নেই। অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যার কারণে বিস্ফোরণ ঘটে। মার্ক১২ ম্যাগনেটিক নেভাল মাইনগুলো কোনো কারণে সাবমেরিনের ভেতরেই বিস্ফোরিত হয়েছে। লেড এসিড ব্যাটারি চার্জের সময় উৎপন্ন হাইড্রোজেন গ্যাস নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ না করলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই তত্ত্বে রয়েছেন জেনারেল জেএফআর জ্যাকব, ভাইস এডমিরাল ক্রিশনানসহ কয়েকজন ভারতীয় সামরিক ব্যক্তিত্ব।
গাজীর বেশ কিছু জরুরি মেরামতের দরকার ছিল তা আগেই আলোচনা করা হয়েছে। পানির নিচে ডেপথ চার্জের বিস্ফোরণ পানির চাপের হঠাৎ হেরফের করে দেয়। এই প্রচন্ড চাপ সহ্য করতে না পারলে সাবমেরিনের বডি ফেটে যাবে, পানি ঢুকে ডুবে যাবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এভাবে বহু সাবমেরিন ঘায়েলের নজির রয়েছে।