বৃষ্টি মানেই আকাশ থেকে জলধারার বর্ষণ। ফোটায় ফোটায় নেমে আসা সে জলধারায় সিক্ত হতে আনচান করে ওঠে মন। তাই তো পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে মুষলধারে বৃষ্টি হলেই আমরা ছুটে যাই ঘরের বাইরে, ভিজিয়ে নেই পুরো দেহ, এক অন্যরকম সজীবতা উপহার দেই যান্ত্রিক নাগরিক জীবনের চাপে পিষ্ট মনটাকে।
তবে ইতিহাস বলে যে, কখনো কখনো আকাশ থেকে জলধারার বদলে নেমে এসেছিলো মাকড়সা, ব্যাঙ, মাছ, মাংস, এমনকি পিঁপড়াও! সেই সময়গুলোতে ঘরের বাইরে থাকা মানুষগুলোর মানসিক অবস্থা যে কেমন হয়েছিলো তা তো সহজেই অনুমান করা যায়। ইতিহাসের বিচিত্র সেসব বৃষ্টিপাতের কথা শোনাতেই আজকের বিচিত্র এ লেখাটির অবতারণা।
মাকড়সা
২০১৩ সালের কথা। ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সান্তো আন্তোনিও দ্য প্লাতিনার নাগরিকেরা ব্যস্ত ছিলো যে যার কাজে। পথচারীদের কারো কারো উপর হঠাৎ করেই কোথা থেকে যেন মাকড়সা এসে পড়লো। ঘরে হলে নাহয় দেয়ালে বোনা মাকড়সার জালকেই এর উৎস হিসেবে ধরা যেত। কিন্তু খোলা আকাশে কোথা থেকে?
এই ভেবে যে-ই না তারা আকাশের দিকে তাকালো, তখনই তাদের চোখ কপালে ওঠার দশা। কেননা আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছিলো শত শত মাকড়সা! কিন্তু কিভাবে সম্ভব এটা?
সারা বিশ্বে থাকা প্রায় ৪০,০০০ মাকড়সার প্রজাতির মাঝে ২৩টির মতো প্রজাতি বেশ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস কর। এদের মাঝে একটি হলো Anelosimus eximius। এদের একেকটি কলোনীতে রয়েছে হাজার হাজার মাকড়সার বসবাস। সাধারণত বিকেল কিংবা সন্ধ্যার শুরুর দিকে কলোনীর সদস্যরা একত্রিত হয়ে জাল বুনতে থাকে। এই জালে ধরা পড়া পোকামাকড়েরাই হয় তাদের পরবর্তী আহারের জোগানদাতা। মাটি থেকে গাছের শীর্ষদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত এই জালগুলো কখনো কখনো ৬৫ ফুট অর্থাৎ প্রায় ৬ তলা ভবনের সমান উঁচু হয়ে থাকে!
জালে থাকা সেই মাকড়সাগুলোকে দেখলে মনে হবে যেন দিনের বেলাতেই আকাশের তারা দেখা যাচ্ছে। খুব শক্তিশালী বাতাসের আঘাত অবশ্য সহ্য করার ক্ষমতা থাকে না সেই জালগুলোর। তখন জালের সাথে সাথে সেখানে বসবাসকারী মাকড়সাগুলোকেও উড়িয়ে নিয়ে যায় দমকা হাওয়া। এরপর হাওয়ার বেগ কমে গেলে আস্তে আস্তে আকাশ থেকে টুপটাপ পড়তে থাকে মাকড়সারা!
ব্যাঙ
বর্ষাকালে ব্যাঙের ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ ডাক শোনার মাঝে একটা অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে। বৃষ্টির পরের বিশুদ্ধ বাতাসে শুনতে পাওয়া সেই ডাক অনেককেই নিয়ে যায় তাদের শৈশবের সেই রঙিন দিনগুলোতে। কিন্তু কেমন হবে যদি আকাশ থেকে বৃষ্টির বদলে থপ থপ করে ব্যাঙ পড়তে থাকে?
১৮৭৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস নগরীতে ঠিক এমন ঘটনাই ঘটেছিলো। ব্যস্ত নগরবাসী সেদিন ঝড়ো আবহাওয়ায় আকাশ থেকে নেমে আসতে দেখেছিলো অগণিত ব্যাঙ! নয় বছর পর ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিলো দেশটির আইওয়া অঙ্গরাজ্যের ডিবিউক শহরে।
উভয় ক্ষেত্রেই আশ্চর্যজনক বিষয় ছিলো যে, ঘটনাস্থলের কাছাকাছি তেমন কোনো জলাশয় ছিলো না যেখানে এত ব্যাঙ থাকতে পারে। তাহলে এমনটা ঘটলো কিভাবে? এ প্রশ্নের জবাবে বিশেষজ্ঞগণ ধারণা করেছেন যে, হয়তো শক্তিশালী কোনো টর্নেডো ব্যাঙগুলোকে তাদের আবাসস্থল থেকে উড়িয়ে নিয়ে এসেছিলো। পরবর্তীতে ১৮৭৩ এ কানসাস এবং ১৮৮২ সালে ডিবিউকের কাছে এসে তার শক্তি হ্রাস পেয়ে যায়। তখনই শহর দুটির নাগরিকেরা তাদের জীবনের অন্যতম অদ্ভুত একটি ঘটনার সাক্ষী হতে পেরেছিলেন।
সর্বশেষ ২০০৫ সালেও সার্বিয়ার একটি শহরে হাজার হাজার ব্যাংকে আকাশ থেকে ঝরে পড়তে দেখা গেছে। তখনও বেশ বড় রকমের ঝড় হচ্ছিলো। ফলে আবহাওয়াবিদেরা ঝড়ের সাথে ব্যাঙের যোগসূত্র দেখিয়েই তাদের দায়িত্ব সম্পন্ন করেছিলেন।
মাংস
ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টিয়ে এখন চলুন ঘুরে আসা যাক ১৮৭৬ সালে থেকে, ঘটনাস্থল যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকির অলিম্পিয়া স্প্রিংস। মিসেস অ্যালান ক্রাউচ বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে টুকটাক কাজ করছিলেন একাগ্র চিত্তে। হঠাৎ করে তার মনে হলো যে, তার পাশে বুঝি নরম কিছু একটা পড়লো উপর থেকে, তাকিয়ে দেখলেন মাংসের টুকরা!
এরপর তার চক্ষু চড়কগাছ হবার দশা। কারণ এরপর টুপটাপ মাংসের বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। সেই বৃষ্টিতে মোটামুটি তার উঠানটি মাংসে ভরে গেলো। ২x২ ইঞ্চি আকারের সেই মাংসগুলো গরুর বলে মনে হয়েছিলো মিসেস ক্রাউচের কাছে। কিন্তু পরিষ্কার আকাশ থেকে কেন এভাবে বৃষ্টি হবে, তাও আবার মাংসের, সেই রহস্য উদ্ধার করতে পারলেন না তিনি।
এমন অদ্ভুত ঘটনা শুনে সেখানে ভিড় জমান গবেষকেরা। সেই বছরই সায়েন্টিফিক আমেরিকানে এ বিষয়ে লিখেন লিওপল্ড ব্র্যান্ডিস নামক এক গবেষক। তার ভাষ্যমতে এগুলো ছিলো নস্টক (Nostoc)। নীলচে সবুজ বর্ণের এ শ্যাওলাগুলো পাওয়া যায় মিঠাপানিতে। তার মতে, কোনোভাবে ঝড়ের সাথে সেই শ্যাওলাগুলো উড়ে গিয়েছিলো এবং তারপর মিসেস ক্রাউচের বাড়ির উপর গিয়ে পড়ে। কিন্তু সেদিন কোনোরুপ বৃষ্টি না হওয়ায় ব্র্যান্ডিসের তত্ত্বটি বাতিল হয়ে যায়।
অন্যান্য বিজ্ঞানীরাও বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছিলেন। আমেরিকান জার্নাল অফ মাইক্রোস্কোপি এন্ড পপুলার সায়েন্সে এমনই এক জার্নাল পেপারে দেখা যায়, গবেষক দল সেখানে কার্টিলেজ, পেশী টিস্যু এবং ফুসফুসের টিস্যুর অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন।
এখন তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আকাশ থেকে পড়া কোনোকিছুর মাঝে এভাবে প্রাণীদেহের টিস্যু আসে কিভাবে। এ প্রশ্নটির উত্তর দেন লুইসভিল কলেজ অফ ফার্মেসির কেমিস্ট্রির প্রফেসর এল. ডি. কাস্টেনবাইন। তার মতে কানেক্টিভ ও ফ্যাটি টিস্যু এভং মাসক্যুলার ফাইবারের সেই জিনিসগুলো আসলে এসেছিলো একদল শকুনের পাকস্থলি থেকে যারা কিনা স্বেচ্ছায় বমি করেছিলো মিসেস ক্রাউচের বাড়ির উপর! কেন্টাকিতে আসলেই এমন দুটি প্রজাতির শকুন ছিলো যারা প্রতিরক্ষা কিংবা নিজেদের হালকা করার জন্য এভাবে বমি করে দিতো!
হলুদরঙা বৃষ্টি
চীন, ভিয়েতনাম, লাওস, মায়ানমার ও থাইল্যান্ডের পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী এক নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী হলো মং। ‘হলুদরঙা বৃষ্টি’ নামক এ শব্দগুচ্ছের উদ্ভাবক আসলে তারাই।
১৯৭৫ সালের কথা। মং জনগণ দাবি করথে থাকে যে, বিমান থেকে তারা এক প্রকার তৈলাক্ত, হলুদ বর্ণের পদার্থ তাদের ঘরের চালে পড়তে দেখেছে। এ জিনিসটিকেই তারা হলুদরঙা বৃষ্টি বলেছিলো। আর অদ্ভুত এ জিনিসটির সংস্পর্শে আসার কিছুদিনের মাঝেই তাদের শরীরে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। এর মাঝে রয়েছে হৃদরোগ, দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলা এবং নাক দিয়ে রক্ত ঝরা। এমনকি তাদের মাঝে কেউ কেউ মারাও গিয়েছিলো। একই রকম হলুদরঙা বৃষ্টির কথা শোনা গিয়েছিলো ১৯৭৯ সালে যখন আফগানরা সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলো। কাছাকাছি সময়ে কম্বোডিয়ার খেমার গোত্রের উপরও একই আক্রমণ চালানো হয়েছিলো।
প্রশ্ন হলো- “এ আক্রমণ আসলে চালিয়েছিলো কারা?”
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে এজন্য দায়ী করা হয় সোভিয়েত ইউনিয়নকে। তারা জানায় যে, সোভিয়েতরা ট্রাইকোথেসিন মাইকোটক্সিন নামক বায়োলজিক্যাল ওয়েপন ব্যবহার করে এমন কাজটি ঘটিয়েছে। ওদিকে স্বাভাবিকভাবেই সোভিয়েতদের পক্ষ থেকে এমন কোনোকিছু করার কথা সরাসরি অস্বীকার করা হয়। তাই আসলে এ হলুদ বৃষ্টি যে কোন দেশের পক্ষ থেকে ঝরেছিলো তা বলা মুশকিল।
পাখি
এখন বলবো পাখি বৃষ্টির কথা। ২০১০ সালের একেবারে শেষ দিন ছিলো সেদিন। আনুমানিক ৫,০০০ ব্ল্যাকবার্ড সেদিন আরকানসাসের আকাশ থেকে ঝরে পড়েছিলো। পাখিগুলোর অধিকাংশই হয় মারা গিয়েছিলো, নতুবা ছিলো মৃত্যুপথযাত্রী। কয়েকদিন পর লুইজিয়ানাতেও একই ঘটনা ঘটেছিলো। সেদিন প্রায় ৫০০ ব্ল্যাকবার্ড মারা গিয়েছিলো।
উপরে উল্লেখ করা উভয় ক্ষেত্রেই পাখিগুলো চরম আতঙ্কিত ছিলো কোনো একটা বিষয়ে। লুইজিয়ানার পাখিগুলোকে পাওয়া গিয়েছিলো বিদ্যুতের লাইনের কাছাকাছি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এত বিশাল সংখ্যক পাখির মৃত্যুর জন্য দায়ী এ লাইনই। ওদিকে আরকানসাসের ঘটনার সাথে তারা সম্পৃক্ত করেছেন নতুন বছরের আগমনকে। আর মাত্র একদিন পরেই ২০১১ সাল আসছে দেখে চারদিকে আতশবাজির মেলা বসেছিলো তখন। বিষ্ফোরণের শব্দে আতঙ্কিত পাখিরা তখন যে যেদিকে পারে, ছুটে পালাতে শুরু করে। প্রাণের ভয়ে পাখিগুলো বাড়ি, গাড়ি, এমনকি সরাসরি মাটির দিকেও উড়ে গিয়েছিলো।
পিঁপড়া
সারাজীবন ধরে পিঁপড়াকে সারিবদ্ধভাবে চলাচল করতে দেখেই অভ্যস্ত আমরা। তবে Cephalotes গণের পিঁপড়েরা এই নিয়মের কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটায় মাঝে মাঝেই। এ পিঁপড়াগুলো সাধারণত গাছে বসবাস করে। কখনো কখনো দেখা যায় যে, গাছের উপর থেকে শুরু হয়েছে পিঁপড়া বৃষ্টি। হাজার হাজার পিঁপড়া তখন ঝরতে থাকে গাছ থেকে। তবে এই পড়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণহীন হয় না।
পিঁপড়াগুলো যে অঞ্চলে বাস করে, সেখানে বনগুলো অধিকাংশ সময়েই জলাবদ্ধ থাকে। তাই গাছ থেকে পড়ে পানিতে ল্যান্ড করা মানেই নির্ঘাত মৃত্যু। তাই পিঁপড়াগুলো এমনভাবেই নিজেদের এই পতনকে নিয়ন্ত্রণ করে যাতে তারা গাছের গোড়াতেই ল্যান্ড করতে পারে। আর যদি বন শুকনাও থাকে, তবুও ভূমিতে নামলে দুটি বিপদ আছে। প্রথমত, পিঁপড়াভূক প্রাণিদের পেটে চালান হবার ভয়। দ্বিতীয়ত, দলছুট হয়ে নিজের কলোনী হারিয়ে ফেলার ভয়।
এখন তাহলে প্রশ্ন হলো, পিঁপড়াগুলো এভাবে গাছ থেকে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়বেই বা কেন?
এ পিঁপড়াগুলো তাদের খাবারের সন্ধানে সাধারণত গাছের শাখার একেবারে প্রান্তভাগ পর্যন্ত চলে যায়। ফলে বাতাসের ঝাপ্টা তাদের উড়িয়ে নেয়া অসম্ভব কিছু না। বানরদের দৌড়াদৌড়িও পিঁপড়াগুলোকে তাদের জায়গা থেকে ফেলে দিতে পারে। আবার কখনো যদি পিঁপড়াগুলো মনে করে যে, তারা এখন শিকারের পরিণত হতে যাচ্ছে, তাহলেও তারা আত্মরক্ষার্থে গাছ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে!
বিচিত্র এ পিঁপড়াগুলোর দেখা মেলে প্রধানত দক্ষিণ আমেরিকায়। এছাড়া আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়াতেও এদের কিছু প্রজাতির দেখা মেলে।
মাছ
মাকড়সা, ব্যাঙ, পিঁপড়ার মতো মাছ বৃষ্টির কথাও শোনা গেছে। ১৯৪৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার মার্কসভিলে এমন অদ্ভুত ঘটনার দেখা মেলে। ২-৯ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের মাছগুলো প্রায় প্রতি বর্গমিটারে একটি করে পড়েছিলো। ২০০৪ এবং ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়াতেও এমন অদ্ভুত বৃষ্টির কথা শোনা গেছে।
এ ব্যাপারটিকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন? বিজ্ঞানীদের মতে ঘূর্ণিঝড় যদি অত্যাধিক শক্তিসম্পন্ন হয় এবং তা কোনো জলাশয়ের উপর দিয়ে অতিক্রম করে, তাহলে তার সাথে সেখানকার মাছগুলোকে বাতাসের টানে নিয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। পরবর্তীতে যখন ঝড়টির শক্তি কমে আসে, তখনই ঝরে পড়তে থাকে মাছগুলো।
লাল বৃষ্টি
এখন যে ঘটনাটির কথা বলতে যাচ্ছি সেটি ঘটেছিলো আমাদের পাশের দেশ ভারতেই, ২০০১ সালে। কেরালাতে প্রায় মাস দুয়েক ধরে চলেছিলো বিচিত্র সেই বৃষ্টি। কখনো কখনো বৃষ্টির রঙ হলুদ কিংবা সবুজ হলেও লালের প্রাধান্য ছিলো লক্ষ্যণীয়।
লাল বৃষ্টির আগে কেউ কেউ নাকি বড় ধরনের একটি বজ্রপাত শুনেছিলো। এজন্য কেউ কেউ মনে করেছিলো যে, হয়তো কোনো উল্কার বিষ্ফোরণের ফলে এমনটা হয়েছে। কারো মতে, আরব এলাকার লাল বালির প্রভাবেই বৃষ্টির রঙ পাল্টে গিয়েছিলো। কিন্তু গবেষণা করে দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে থাকা দানাগুলো আরবদেশীয় লাল বালি না। বরং সেখানে কোনো প্রাণীকোষের অস্তিত্বই পাওয়া গিয়েছিলো।
কেরালার মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের গডফ্রে লুইস এবং তার গবেষণা সহকারী এ. সন্তোষ কুমার দায়ী করেছিলেন সেই উল্কার বিষ্ফোরণকেই। তাদের মতে, বিষ্ফোরিত সেই উল্কার টুকরোগুলো গিয়ে আটকে গিয়েছিলো মেঘের মাঝে। পরবর্তীতে বৃষ্টি হলে টুকরোগুলোতে থাকা জীবসত্তার প্রভাবেই বৃষ্টির রঙ অমন বদলে গিয়েছিলো।
সাধারণ কক্ষ তাপমাত্রায় বৃষ্টির পানি থেকে প্রাপ্ত লাল কোষগুলো নিষ্ক্রিয় থাকলেও ২৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় সেগুলো বংশবৃদ্ধি করে যা একেবারেই অস্বাভাবিক ঠেকে তাদের কাছে। সেখানে ডিএনএ-এর অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয় যে, স্থানীয় বিভিন্ন গাছের বায়ুবাহিত বীজের প্রভাবেই এমনটা হয়েছিলো। সর্বশেষ ২০১২ সালে আবারও কেরালাতে অমন লালরঙা বৃষ্টি হয়েছিলো।
তথ্যসূত্র
১) loc.gov/rr/scitech/mysteries/rainingfrogs.html
২) smithsonianmag.com/science-nature/its-raining-spiders-in-brazil-19885877/?no-ist
৩) blogs.scientificamerican.com/running-ponies/the-great-kentucky-meat-shower-mystery-unwound-by-projectile-vulture-vomit/
৪) daviddarling.info/encyclopedia/R/red_rain_of_Kerala.html
৫) daviddarling.info/encyclopedia/R/red_rain_of_Kerala.html
৬) berkeley.edu/news/media/releases/2005/02/09_ants.shtml
৭) hindustantimes.com/india/red-rain-in-kerala-again/story-aUj19JoTA3TtFmeZf3CabJ.html
৮) science.howstuffworks.com/nature/climate-weather/storms/10-times-it-rained-something-other-than-water.htm