ভাষার আন্দোলন ফলপ্রসূ হলে বিভাগের কাজে মনোযোগ দেন অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক। পূর্বেই বলা হয়েছে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নিউম্যানের সঙ্গে গবেষণা নিয়ে মনোমালিন্য চলে আসছিল আব্দুর রাজ্জাকের। এর মধ্যেই বিভাগের রিডার পদপ্রার্থী হন খালিদ বিন সাঈফ। নিউম্যানের সাথে সাইফের সম্পর্কও ছিল শীতল গোছের। নিউম্যান আব্দুর রাজ্জাককে উক্ত পদে প্রার্থী হতে বলেন। কিন্তু, আব্দুর রাজ্জাক স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে ভালো একাডেমিক কাজের জন্য ঐ পদ খালিদ বিন সাইফেরই প্রাপ্য। এসব মিলিয়ে আব্দুর রাজ্জাকের সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে নিউম্যানের।
এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে মোয়াজ্জেম হুসাইনের মেয়াদ শেষ হয়। নতুন উপাচার্য হয়ে আসেন অবিভক্ত বাংলার প্রাক্তন শিক্ষাসচিব ডব্লিউ এ জেকিনসন। ১৯৫৫ সালে নিউম্যান আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে তাকে চাবুক মারা ও মিথ্যাবাদী বলার অভিযোগ জানিয়ে উপাচার্যের কাছে নালিশ করেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি ছিল বেশ গুরুতর অভিযোগ। উপাচার্য এ ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাককে তলব করেন। আব্দুর রাজ্জাক উপাচার্যের কাছে স্বীকার করেন যে তিনি নিউম্যানকে মিথ্যাবাদী বলেছেন, কারণ তিনি সত্যিই একজন মিথ্যাবাদী।
সব বিবেচনায় উপাচার্য বলেন, তিনি নিজ অনুষদের একজন শিক্ষকের সাথে এরূপ আচরণ আব্দুর রাজ্জাকের কাছ থেকে প্রত্যাশা করেন না। তিনি আব্দুর রাজ্জাকের কাছ থেকে এই ঘটনার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমার চিঠি চান। আব্দুর রাজ্জাক উপাচার্যকে অবহিত করেন যে তিনি পূর্বেই এ ঘটনার জন্য তার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। তবুও, ঘটনাটি উপাচার্য পর্যন্ত গড়ানোয় আব্দুর রাজ্জাক একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠান উপাচার্যের দপ্তরে।
এর কিছুদিন পরই উপাচার্য আবার আব্দুর রাজ্জাককে ডেকে পাঠান। তিনি বলেন, আব্দুর রাজ্জাক এবং নিউম্যান একই বিভাগে থাকলে বিভাগের কাজ চলবে না। এ কারণে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের পরামর্শ হলো আপনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে যোগদান করুন। এ ঘটনায় আব্দুর রাজ্জাক স্বভাবতই রুষ্ট হন। তিনি এই প্রস্তাবে অসম্মতি জানান এবং উপাচার্যকে এটাও স্মরণ করিয়ে দেন যে বিভাগ পরিবর্তনের এখতিয়ার তার নেই।
এই ঘটনায় উপাচার্যের দপ্তরে দফায় দফায় আব্দুর রাজ্জাকের সাক্ষাৎ হয়। কিন্তু, সিদ্ধান্তে অনড় আব্দুর রাজ্জাক যুক্তি দেখান- তিনি ১৯৩৬ সালের একটি চুক্তির ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। সেই কারণে, তার বিভাগ পরিবর্তনের ক্ষমতা উপাচার্য কেন, অন্য কারো নেই। পরবর্তীতে, নিউম্যানের সাথে বিরোধের জের তুলে পুনরায় আব্দুর রাজ্জাককে নোটিশ পাঠানো হয়। তাকে এই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয় যে, নিজ অনুষদের শিক্ষকের সাথে এরূপ আচরণের পরও তাকে কেন চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না?
এবার বিষয়টি গুরুতর হয়ে ওঠে। আব্দুর রাজ্জাক কারণ দর্শানোর চিঠি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের অভিপ্রায়ে সাক্ষাৎ করেন সেকালের বিখ্যাত আইনজীবী পঙ্কজ ঘোষের সাথে। পঙ্কজ ঘোষ চিঠি দেখে সেই অনুযায়ী একটি উত্তর প্রস্তুত করে দেন। উপাচার্য জেনকিনস চিঠি হাতে পেয়েই বুঝতে পারেন, এটি আব্দুর রাজ্জাকের ভাষা নয়, এটি কোনো আইনজীবীর তৈরি করে দেওয়া উত্তর। ব্যাপারটি আদালত পর্যন্ত গড়ালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন হবে এই আশঙ্কায় তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান মিস আলসফকে ডেকে পাঠান। তিনি তাকে অনুরোধ করেন, মিস আলসফ যেন আব্দুর রাজ্জাককে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ যোগদানের জন্য বিশেষ অনুরোধ জানান।
মিস আলসফ আব্দুর রাজ্জাককে তার বিভাগে যোগদানের অনুরোধ জানালে আব্দুর রাজ্জাকের রুষ্টতা শীতল হয়। মূলত, বিভাগ পরিবর্তন তার কাছে বড় বিষয় ছিল না। কিন্তু, উপাচার্য জোরপূর্বক বিভাগ পরিবর্তন করানোর চেষ্টা করায় নিউম্যানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচারের পূর্বেই তিনি শাস্তির শিকার হচ্ছেন- এই ভাবনা থেকেই মূলত আব্দুর রাজ্জাক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে বদলিতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান মিস আলসফের অনুরোধের পর বিষয়টির মধ্যস্থতা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামের দিকটিও বিবেচনায় রেখে উভয়পক্ষ সম্মত হয়। উপাচার্য জেনকিনস আব্দুর রাজ্জাককে আশ্বস্ত করেন- তাকে পুনরায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ফেরত আনা হবে। এরপর আব্দুর রাজ্জাক মিস আলসফের মাধ্যমে উপাচার্যকে বিভাগ বদলির চিঠি পাঠান। উপাচার্য দ্রুতই সেই চিঠির জবাব দেন, “That the VC is pleased to transfer the services of Mr. Abdur Razzaq to the Department of International Relations.” ১৯৫৫ সালে আব্দুর রাজ্জাক তার নতুন কর্মস্থল আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ যোগদান করেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণেই উপাচার্য এক্ষেত্রে নিরুপায় ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জেনকিনসের মেয়াদের শেষের দিকে যখন তিনি ঢাকা থেকে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, আব্দুর রাজ্জাকের সাথে একান্তে আলাপ করেন। পূর্বের উদ্ভুত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল বলে আব্দুর রাজ্জাকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন উপাচার্য। সেই সাথে জেনকিনস আব্দুর রাজ্জাকের প্রশংসা করে বলেন, “আই স্টিল মেইনটেইন, ইট ওয়াজ মাই প্রিভিলেজ টু হ্যাভ নোন ইউ।”
উপাচার্য জেনকিনস ঢাকা ছাড়ার পূর্বে আব্দুর রাজ্জাককে লন্ডনে আমন্ত্রণ জানান, এবং কখনও লন্ডন এলে আব্দুর রাজ্জাক যেন তার সাথেই থাকেন সে বিষয়ে বিশেষ অনুরোধ করেন। প্রকৃতপক্ষে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ক’জন বিদেশি শিক্ষক এসেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আর কাজ করার মানসিকতা নিয়েই তারা লন্ডনের চাকচিক্য ছেড়ে ঢাকায় বসতি গড়েন। মানুষ হিসেবে জেনকিনস ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বড় শুভাকাঙ্ক্ষী। তবে, ঢাকায় আসা বিদেশি শিক্ষকদের মধ্যে ব্যতিক্রম ছিলেন একমাত্র নিউম্যান। পড়াশোনা জানা ব্যক্তি হলেও তার খামখেয়ালিপনা ও ক্ষমতার অপব্যবহার আদতে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিরূপ পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়। ১৯৫৫ সালে নিউম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যান। অতঃপর দ্বন্দ্বের অবসান আব্দুর রাজ্জাক ও নিউম্যানের। কিন্তু, নিউম্যান চলে গেলেও প্রশাসনের সাথে আব্দুর রাজ্জাকের সম্পর্ক দিন দিন খারাপই হতে থাকে।
১৯৫৯ সালের মার্চ মাসে আব্দুর রাজ্জাক ভিজিটিং ফেলো হিসেবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। সেখানে অবস্থানকালেই তাকে ১৯৫৯ সালের ৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে অর্থনীতি বিভাগে বদলি করা হয়। ১৯৬০ সালে হার্ভার্ড থেকে ফেরার পর আব্দুর রাজ্জাক অর্থনীতি বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৬১ সালের ১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ অর্থনীতি বিভাগের পাশাপাশি তাকে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগেও ক্লাস নিতে বলে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এরূপ সিদ্ধান্তও মেনে নেন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সপ্তাহে ৫ ঘণ্টা করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ক্লাস নিতে শুরু করেন।
এরপর আবার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের একটি অতিরিক্ত ক্লাসের রুটিন তাকে পাঠানো হলে তিনি জানান, “আমি বাপু তোমার ডিপার্টমেন্টে ক্লাস-টেলাস নিতে পারবো না।” অপরদিকে, বিভাগের প্রধান ও আব্দুর রাজ্জাকের ছাত্র ড. আব্দুল আজিজের বদ্ধমূল ধারণা ছিল যে, আব্দুর রাজ্জাকের থেকে তার বিভাগের ক্লাস পাওনা রয়েছে। তিনি তাই তাকে আরেকটি চিঠি পাঠান। কিন্তু, আব্দুর রাজ্জাক এ চিঠির কোনো জবাব দেননি। তার চিঠির উত্তর না দেওয়ায় আব্দুল আজিজ অবহেলা মানলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছেও জানালেন নালিশ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আবারও আব্দুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হলো, “হোয়াই ইউ শ্যুড নট বি ডিসমিসড?” এর পূর্বেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আব্দুর রাজ্জাককে চাকরি থেকে অপসারণের চিঠি দেয়। কিন্তু, আব্দুর রাজ্জাক আইনজীবী এ. কে. ব্রোহীর মাধ্যমে একটি জবাব পাঠান যেখানে চাকরি থেকে অপসারিত হলেও আব্দুর রাজ্জাক প্রভিডেন্ট ফান্ডের সকল টাকা পাবেন উল্লেখ করা হয়। কিন্তু, বরখাস্ত হলে আব্দুর রাজ্জাককে সেই টাকা দিতে হতো না বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাই, প্রশাসন সেই পথেই হাঁটে। ১৯৬৬ সালে হাই কোর্টে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে চলমান সংকট নিয়ে একটি রিট দায়ের করেন আব্দুর রাজ্জাক।
১৯৬৪ সালেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে মামলা-মোকদ্দমা পর্যন্ত গড়ায় আরেকটি বিষয়। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী কোনো শিক্ষক রাজনীতি করতে পারবেন না ঠিক করে আইয়ুব সরকার। আব্দুর রাজ্জাক এটি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন মানতেন। ফলে, তিনি শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আদালতে এই আইনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তিনি যুক্তি দেখান, ১৯৩৬ সালের একটি চুক্তির ভিত্তিতে তার নিয়োগ হয়েছিল। ফলে, চুক্তি-পরবর্তী কোনো বিধি তার উপর বলবত হবে না। কিন্তু, সমস্যা বাধে বাকি শিক্ষকদের ক্ষেত্রে। কারণ, বাকি সবারই নিয়োগ হয় পরবর্তীতে ভিন্ন আইন অনুসারে। ফলে, সেই মামলায় আব্দুর রাজ্জাক নিজের ব্যতিরেকে সামষ্টিক কোনো ফলাফল বয়ে আনতে পারেননি।
যা-ই হোক, ষাটের দশকেও এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে বদলি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝেও প্রচন্ড মানসিক শক্তি নিয়ে নিজের জ্ঞান সাধনার কাজ চালু রাখেন তিনি। ১৯৬৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান মুজাফফর আহমদ চৌধুরী তৎকালীন উপাচার্য ড. ওসমান গণির কাছে চিঠি লেখেন তাকে নিজ বিভাগে ফিরিয়ে আনার জন্য। কিন্তু, প্রশাসনের সাথে শীতল সম্পর্কে তা আর সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে, ১৯৬৬-৬৭ সালের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এনএসএফ-এর দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে ওঠা এনএসএফ-এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগ। মাঝে মাঝেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা। কিন্তু, সরকাপন্থী উপাচার্য ড. ওসমান গণি এসব বিষয়ে এনএসএফ-কে প্রত্যক্ষ মদদ দিয়ে যাচ্ছিলেন। শুধু তা-ই নয়, তার কারণে সেসময় মোহাম্মদ সিরাজউদ্দিন, এ আর খান, রেহমান সোবহানসহ বেশ কিছু মেধাবী শিক্ষক দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
১৯৬৮ সালের দিকে ওসমান গনির প্রশাসন আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধেও লেগে যায়। ১৯৬৬ সালে করা মামলার জের তখনও চলছিল। কিন্তু, ব্যক্তি বনাম প্রতিষ্ঠানের এই মামলায় ব্যক্তির পক্ষে পেরে ওঠা কঠিন ছিল। তাই, একসময় আপসের প্রশ্ন আসে। ড. কামাল হোসেনের মধ্যস্থতায় ঠিক হয় যে আব্দুর রাজ্জাক চাকরি ছেড়ে দেবেন, তার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রভিডেন্ট ফান্ডের প্রাপ্য টাকা দিয়ে দেবে। এই মধ্যস্থতার পর ড. কামাল হোসেন অক্সফোর্ডের বেলিয়ল কলেজে আব্দুর রাজ্জাকের এক বছর থাকার বন্দোবস্ত করে দেন।
১৯৬৮ সালে বিলেতের ফ্লাইট ধরে লন্ডন চলে যান আব্দুর রাজ্জাক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনধিকার চর্চার বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করেন আব্দুর রাজ্জাক, তার শেষ হয় এক ঘৃণ্য প্রহসনের মধ্য দিয়ে। কর্তৃপক্ষের প্রহসনে প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্বাসিত হন আব্দুর রাজ্জাক। সেদিনের স্মৃতি রোমন্থন করে আনিসুজ্জামান বলেন,
আমরা কয়েকজন তাকে বিদায় দিতে গেলাম তেজগাঁও বিমান বন্দরে। সকলের মুখ ভার। হঠাৎ কুলসুম হুদা স্যারের পরনের স্যুটের দিকে ইঙ্গিত করে জানতে চাইলেন, স্যার এতদিন এইগুলো রাখছিলেন কই? হাড়ির ভিতর? আমরা হাসলাম, স্যারও হাসলেন। তারপর তিনি আমাদের ছেড়ে ডিপার্চার লাউঞ্জের দিকে চলে গেলেন।