এই পৃথিবীতে জয় বাংলা নামে যে কোন রোগ থাকতে পারে তা জানা ছিলো না। এপাড় বাংলায় যে “জয় বাংলা” এক আবেগের স্লোগান ওপাড় বাংলায় তা একটি রোগের নাম? অবশ্য তাই বলে এটা ভাববার কোন সুযোগ নেই যে এর মাধ্যমে ওপাড়ে “জয় বাংলা” স্লোগানের অবমাননা করা হচ্ছে। বরং এর পিছনের ইতিহাস ঘাটলে মুক্তিযুদ্ধের অনেক ইতিহাস উঠে আসবে ও যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তদানীন্তন ভারত সরকারের এদেশের শরণার্থীদের আশ্রয়ের এক অজানা গল্প ফুটে উঠে।
কি অদ্ভুত! চোখ ওঠা রোগের নাম জয় বাংলা হয় কিভাবে? সেই উত্তর খুঁজতে গিয়েই পরিচিত হই হই এক অজানা ইতিহাসের সাথে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশে কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগ মহামারির মত ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগে মুক্তিযোদ্ধারা ভুগেছেন, ভুগেছে পাকিস্তানি সৈন্যরা। পাক বাহিনীর ভোগান্তিটা একটু বেশী ছিল, কারণ তারা এই রোগের সাথে পরিচিত ছিল না। অনাকাঙ্খিত এই মহামারি কোন কোন ক্ষেত্রে ট্যাকটিকালি গেরিলা যোদ্ধাদের কিছুটা সুবিধা এনে দিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধারা চোখ ওঠা রোগকে মজা করে বলতেন ‘জয় বাংলা রোগ’। এমনকি সীমান্তের ওপারে যেসব অস্থায়ী হাসপাতালে আহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দেয়া হত, সেখানকার ডাক্তাররাও কনজাংটিভাইটিসকে বলতেন জয় বাংলা রোগ।
১৯৭১ সালে মহামারী আকারে এই চোখ পশ্চিম বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছিলো। রোগটি পূর্ব বাংলায় চলা মুক্তিযুদ্ধের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসা বাঙালি শরণার্থীদের কারণেই ছড়িয়েছিলো বলে এর নাম দেয়া হয় ‘জয় বাংলা’ রোগ!