মাশরুমের উপকারিতা কেবল একটি নয়, অসংখ্য। তার মধ্যে কিছু নিয়ে এই লেখায় আলোচনা করা হবে।
১) মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে। এই পটাশিয়াম আমাদের উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও রক্তে সোডিয়ামের ক্ষতিকর দিকও কমিয়ে দেয়। ব্লাড ভেসেলের ঘনত্ব সঠিক রাখে পটাশিয়াম, যেটা পূরণ করবে মাশরুম। এছাড়াও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে, অন্যান্য মেটাবোলিক অসুস্থতা কমাতে সাহায্য করে।
২) ওজন কমানোর ক্ষেত্রে মাশরুম জাদুর মতো কাজ করে। স্বল্পকালীন ও দীর্ঘকালীন- দুটো ক্ষেত্রেই এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে। তবে কেবল মাশরুম খেলেই হবে না, দৈনন্দিন জীবনে আরো কিছু অদলবদল আনতে হবে। যেমন- খাবার গ্রহণে সতর্ক হওয়া, ব্যায়াম করা, জগিং করা ইত্যাদি।
৩) একটা গাড়ি ঠিকভাবে চলতে অনেক কিছুর দরকার। ঠিক সেভাবে মানবদেহের জন্য দরকার পুষ্টির। মাশরুমে আছে ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি, এন্টি অক্সিডেন্ট, কপার, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি। এসকল উপাদান আলঝেইমার, হৃদরোগ, ক্যান্সারসহ নানা রোগের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে।
৪) মাশরুমের ভিটামিন বি কমপ্লেক্স লোহিত রক্ত কণিকা তৈরিতে সাহায্য করে । এছাড়া প্যান্টথেনিক এসিড নার্ভাস সিস্টেম ঠিক রাখতে সাহায্য করে। মাশরুমের নিয়াসিন ত্বক ও ডাইজেস্টিভ সিস্টেম ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
৫) মাশরুমের সেলেনিয়াম এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি এন্টি-এজিং এবং শক্তিশালী ইমিউনিটি সিস্টেম তৈরিতে সাহায্য করে। প্রতিদিন যদি ১৮ গ্রাম মাশরুম গ্রহণ করেন, তাহলে ৪৫% ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যাবে। এই মাশরুম অ্যামাইনো এসিড, আরগোথিওনেইনের শক্তিশালী উৎস। সাথে সাথে আমাদের শরীরের সেলুলার ড্যামেজ কমাতে সাহায্য করে।
৬) মাশরুম রেড মিটের বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে। কারণ, এতে আছে লো ফ্যাট-লো ক্যালরি-লো কোলেস্টেরল। ইদানিং কোলেস্টেরলের বৃদ্ধির সমস্যা খুব দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে মাশরুম গ্রহণ রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৭) আমাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য সুস্থ রাখে এককাপ মাশরুম। নিয়মিত গ্রহণে আলঝেইমার থেকে রক্ষা পেতে পারেন। এছাড়াও আমাদের অন্ত্রের স্বাস্থ্যরক্ষায় চমৎকার কাজ করে এটি। আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মাশরুম অন্য অনেক প্রোটিন জাতীয় খাবারের থেকে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
মাশরুম নিয়ে যত কাজ করা হচ্ছে, ততই নতুন নতুন তথ্য বের হচ্ছে। শরীরের সুস্থতায়, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ- সব ক্ষেত্রে নিজের পুষ্টিগুণের ছাপ রেখে যাচ্ছে। প্রতিদিনের খাবারে তাই কিছু পরিমাণে হলেও মাশরুম যুক্ত করুন।