ইন্সটাগ্রাম বা ফেইসবুকের স্ক্রিনে আসা রিলস কিংবা শর্টস দেখতে দেখতে আমাদের সময় ভালোই কাটে। ৫ মিনিটের জন্য দেখব বলে সেটা ৫ ঘন্টা হয়ে যায়। এই নেশা মাদকের চেয়ে কম কিছু নয়। কিন্তু আপনি কি জানেন যে- এই অতিরিক্ত অনলাইনে থাকা আমাদের মানসিক আর শারীরিক অনেক অসুস্থতার কারণ! অতিরিক্ত টেকনোলজির জন্য আমাদের মানসিক চাপ-উদ্বেগ বাড়ে, ঘুমের সমস্যা হয়। এছাড়াও আছে নানা সমস্যা।
সেলফোন অ্যাডিকশন ডিজঅর্ডার
দৈনন্দিন প্রতিটি কাজের জন্য, কারণে-অকারণে যখন আমরা পুরোপুরি ডিভাইস-নির্ভর হয়ে পড়ি, চাইলেও আপনি এই বেড়াজাল ছেড়ে বের হতে পারছেন না, খারাপ দিক সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও সেটাকে গুরুত্ব না দিচ্ছেন না- সেটাই হলো সেলফোন বা অনলাইন অ্যাডিকশন ডিজঅর্ডার।
সেলফোন অ্যাডিকশনের লক্ষণ
১) আপনার সবসময় মেইল বা ম্যাসেজের উত্তর দেয়ার জন্য অস্থির লাগে। ম্যাসেজ আসতে দেরি, উত্তর দিতে দেরি নেই।
২) আর দশ মিনিটের জন্য মোবাইল হাতে থাকবে বলে সেটা দু’ঘন্টা পার হয়ে গেলেও সেদিকে নজর দেয়ার প্রয়োজন মনে করেন না।
৩) আজ থেকে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম কমিয়ে দেব বলার পরেও ছাড়তে পারেন না।
৪) অতিরিক্ত মোবাইল/ পিসি বা স্ক্রিন টাইমের জন্য সামাজিক-পারিবারিক সম্পর্ক ভালো যায় না।
৫) পড়াশোনা বা কাজে মনোযোগ কমে যায়।
৬) ঘুমের সমস্যা হয়, ঘুমের সময় হাতে মুঠোফোন থাকেই।
৭) মোবাইল ব্যবহার বা ইন্টারনেটে ব্রাউজিংয়ের সুযোগ না থাকলে অস্থির বোধ করেন।
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক লক্ষণ রয়েছে, যেমন- বন্ধুদের সাথে সরাসরি কথা না বলে মোবাইলে কথা বলতে চাওয়া, নিজেকে লুকিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় উপস্থাপন করা ইত্যাদি।
সমাধান
১) যখন খাওয়া দাওয়া করবেন, ঘুমাতে যাবেন, পড়াশোনা করবেন, কিংবা কাজ করবেন, চেষ্টা করুন মোবাইল বা ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকার।
২) বন্ধু-পরিবার-স্বজনদের সাথে দেখা-সাক্ষাতের সময়ে মোবাইলের ব্যবহার কমিয়ে দেয়া।
৩) অতিরিক্ত যেসকল অ্যাপ আপনার মনোযোগ বিঘ্নিত করে, তা মুছে দেয়া, যদি একান্ত প্রয়োজনীয় না হয়।
৪) রাতে ঘুমের সময় মোবাইল বন্ধ রাখুন, নেট কানেকশনও বন্ধ করে দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
৫) গাড়ি ড্রাইভ করার সময়, বাসের লাইনে কিংবা বাজারে যখন-তখন অকারণে মোবাইল হাতে নেবেন না।
ধীরে ধীরে এই কাজগুলো করতে করতে মোবাইল বা ডিভাইসের নেশা ক্রমশ কমতে শুরু করবে। তবে, এক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। রান্নাবান্না, বাগান করা অথবা বই পড়ার মতো কাজেও নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেন। এটাও অনেক সময় নেশা কাটাতে, মানসিক অবস্থা উন্নত করতে বেশ সাহায্য করে।