Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

শিশুর বুদ্ধির বিকাশে করণীয়

আমরা কিন্তু একদম ছোটবেলা থেকেই শিখি। পরিবেশ, পরিস্থিতি, সময় এবং সুযোগসহ অনেক প্রভাবক থাকে। মানবমস্তিষ্কের ওপরও নির্ভর করে অনেক কিছু। ওদিকে, ছোট থেকেই আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনেক কিছু চাপিয়ে দেয়া হয়। এতে আমাদের প্রতিভা বিকশিত হবার আগেই ঝরে পড়ে। তাহলে একজন শিশুর মানসিক বিকাশে কী করা যেতে পারে? যা চাইবে তা-ই করতে দিতে হবে? তাতে যদি হিতে বিপরীত হয়? তাহলে একজন অভিভাবক বা সচেতন মানুষ হিসেবে একজনের কী করা উচিৎ সেটা নিয়েই আজ কথা হবে।     

শিশুর বুদ্ধিমত্তা বিকশিত হবে যেভাবে

শিশুকাল থেকে তাদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশের জন্য দরকার সুস্থ পরিবেশ, তাদের সাথে সুস্থভাবে কথা বলা, ভালো কাজে সাহস দেয়া, ভুল শুধরে দেয়া, অতিরিক্ত চাপ না দেয়া ইত্যাদি। 

Image Source: Data. Tac

শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরি করুন

পারিবারিক অশান্তি, উপহাস কিংবা তাচ্ছিল্য, কটু কথা শোনা, পরিবারের সদস্যদের শিশুর প্রতি উদাসীনতা ইত্যাদির ফলে একটি শিশুর সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হবার আগেই ঝরে যায়। তাই তার মানসিক শক্তি, বুদ্ধিমত্তা আর প্রতিভা বিকাশের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন তার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। শিশুর সামনে ঝগড়া করা, উঁচু গলায় কারো সাথে কথা না বলা, কটু কথা না বলা, অন্যকে অসম্মান বা অপমান করে কথা না বলা- এগুলো মাথায় রাখা প্রয়োজন। 

শিশুদের সাথে কথা বলুন

শিশুরা পরিবারের কাছ থেকেই সব শেখে। ধরুন, শিশুর সাথে বাবা-মা কোনো কথা বলছেন না, সে ভুল করলেও শুধরে দিচ্ছেন না, কিংবা তার সুবিধা-অসুবিধার কথাগুলো শুনছেন না। এতে শিশুর নিজেকে অযাচিত মনে হবে। কোনো অসুবিধায় পড়লেও সে তার কথা শেয়ার করবে না। আগ্রহ নিয়ে সে কাজ করবে না। শিশু যদি ভালো কাজ করে, তবে তাকে বাহবা দিন। ভুল করলে বুঝিয়ে বলুন।   

শিশুদের সাথে খেলাধুলা করুন

Image Source: LEGO Foundation

শিশুর মানসিক প্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্রে অনেক বড় প্রভাবক হলো পরিবারের সদস্যের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। দিনে কিছু সময় শিশুদের সাথে খেলাধুলা করুন। সেটা হতে পারে ছবি আঁকা, গাছ লাগানো, কিংবা যেকোনো ধরনের কাজ করা, যা শিশু করে আনন্দ পায়, এবং যাতে কারো কোনো ক্ষতি না হয়।

বই পড়ার অভ্যাস করুন

অন্য সব ভাল অভ্যাসের মধ্যে অন্যতম হলো বইপড়ার অভ্যাস। ছোট শিশুদের জন্য নানা রঙচঙে বই মেলে। ছোটবেলা থেকে শিশুদের সাথে নিয়ে বই পড়ুন; তাদের বই পড়ে শোনান। তাদের সাথে গল্প করুন, তাদের হাতে বই তুলে দিন। কিন্তু অতিরিক্ত কোন চাপ দেবেন না, যেমন- কোনো গল্প বা ছড়া তাকে মনে রাখতেই হবে এমন চাপ দেয়া যাবে না। 

লেখা বা আঁকার অভ্যাস করুন

Kids writing Image source: Pixabay

শিশুর হাতে রঙপেন্সিল এবং খাতা তুলে দিন। নিজের মনের মতো সে লিখুক, ছবি আঁকুক। এতে তার কীসে আগ্রহ সেটা বুঝতে পারবেন। ভালো আঁকা বা লেখা স্কুলের ম্যাগাজিন বা পত্রিকায় দেবার, কিংবা বাসার দেওয়ালে লাগাতে উৎসাহ দিন। 

অতিরিক্ত চাপ দেয়া যাবে না

বর্তমানে একদম ছোট থেকেই আমাদের উপরে অনেক চাপের সৃষ্টি করা হয়। এর কিছুটা জেনে, কিছুটা না জেনে। এটা যে আমাদের কতটা ক্ষতি করছে, সেটা হয় আমরা বুঝি না, বা বুঝতে চাই না, কিংবা বুঝলেও না বোঝার ভান করি। এই একে একে চাপিয়ে দেয়া হয় স্কুলের রাজ্যের পড়া, কোচিং, আঁকা বা গানের স্কুল এবং আরও অনেক কিছু। একজন শিশু সব কিছুর চাপ কিন্তু নিতে পারে না। তাই সে যা করতে অনাগ্রহী তা চাপিয়ে দেবেন না, এমনকি পড়াশোনার ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত চাপ দেয়া অনুচিত।

শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের গড়ে তোলা না গেলে সেটা সমাজ এবং দেশের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেবে একটা সময়। দেশ কিংবা সমাজ এবং বিশ্বের ভবিষ্যৎ তাদের হাতে তুলে দেবার জন্য শিশুদের প্রস্তুত করতে হবে। তাদেরকে তাদের মতো করে বোঝাতে হবে, শেখাতে হবে, তাদের কথা শুনতে হবে। কিন্তু এমন কিছু করা যাবে না, যা তাদের একেবারেই বিপথে নিয়ে যায়। ভুল করলে শাসন যেমন করতে হবে, তেমনই তাদের নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে, কী ভালো আর কী মন্দ তা শেখাতে হবে। আবার উল্টো দিকে- একদম ছেড়ে দিলেও উল্টো ঘটনা ঘটবে। তাদের গড়ে তোলার জন্য, প্রতিভা-বুদ্ধিমত্তা সঠিকভাবে বিকাশের জন্য অভিভাবক, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক, সমাজের বহুমুখী দায়িত্ব আছে।

Language: Bangla
Topic: Steps for mental growth of children
References: Hyperlinked inside
Feature Image Source: Pixabay

Related Articles