Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

সহজে কাজ করার কিছু কৌশল

প্রতিদিন আমরা যখন কাজ করি, তখন অভিযোগের অন্ত থাকে না: “কাজ শেষ হচ্ছে না”, “সময় পাচ্ছি না”, “ইচ্ছা করছে না” এবং এমনই আরও কত কী! অনেকেই এই সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হন।

দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা, বিরতি না নেয়া, কাজে আনন্দ খুঁজে না পাওয়া ইত্যাদি কারণে আমাদের মনোযোগ হারিয়ে যায়। একসময় পুরোপুরি বিধ্বস্ত মনে হয় নিজেকে। তবে, জীবনে ছোট ছোট কিছু পদক্ষেপ নিলে এসব থেকে মুক্তি মিলবে।

আমরা মানুষ, দিনের ২৪ ঘন্টাই কিন্তু আমরা কাজ করতে পারব না, আমাদের দরকার বিশ্রাম। শক্তি ফিরে পেতে আর নতুন উদ্যমে কাজ করতে হলেও দরকার কিছু টিপস।

দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট কিছু বদল আনলেই, অভ্যাসে কিছু বদল আসলেই সহজে কাজ সমাধান করতে পারবেন। গাধার খাটুনি না খেটে একটু বুদ্ধি খাটান। তাহলেই দেখবেন আপনাদের জন্য সামগ্রিক পরিস্থিতি আরও সহজ হয়ে উঠছে।

১) সকল কাজের পূর্বপ্রস্তুতি রাখুন 

পরীক্ষার শেষমুহুর্তে পড়াশোনা করে যেমন কোনো লাভ হয় না, আফসোস করতে হয়, কাজের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই।

Kepp Track and make to do list

একদিন আগে থেকে অন্তত কাজের পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করুন। ঘুমাতে যাবার আগে টু ডু লিস্ট বানান, কী কী কাজ আছে, কোন কাজের শেষ সময় কখন, কোনটিকে বেশি প্রাধান্য দেয়া দরকার ইত্যাদি। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে স্ব স্ব ধর্মীয় প্রার্থনা সেরে কাজে নেমে পড়ুন। পড়াশোনা করুন কিংবা সংসারের কাজ হলেও একটা ছকে বেধে ফেলুন। 

২) তা-ই কর ভাই, যখন চাহে মন যা

যা ইচ্ছা তা-ই যদিও সব সময় করা যায় না, তবুও নিজেকে ভালো রাখতে, ভালো থাকতে দিনের কিছু সময় অন্তত নিজের খুশিমতো কিছু করুন। যেমন- পড়াশোনার ক্ষেত্রে কিছুটা বিরতি নিয়ে, কাজের ক্ষেত্রে লাঞ্চ ব্রেক বা স্ন্যাক্স ব্রেকে নিজের মতো সময় কাটাতে চেষ্টা করুন। 

সারাদিন পড়াশোনা বা কাজ করতে কারোরই ভালো লাগে না, এটা সত্যি। তাই বিরতি নিয়ে নিজের যেটা ভালো লাগে সেটাই করুন। সে হতে পারে কফি পান করা, গান শোনা, ছবি আঁকা অথবা শুধুই বসে থাকা!

৩) খাওয়া বাদ দেবেন না

আমাদের অনেক বড় একটা ভুল হলো আমরা কাজের চাপে, পড়াশোনার খাতিরে নিজেদের খাওয়াদাওয়া নিয়ে অবহেলা করি। প্রথমে এটা তেমন একটা সমস্যা মনে না হলেও পরবর্তীতে বেশ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। যেমন- আলসার বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। ক্ষুধার্ত অবস্থায় কাজে মনোযোগ দেয়াও বেশ দুরূহ।

Image Source: NBC News

তাই, সময়মতো খাবার অবশ্যই খেতে হবে; বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করে পুষ্টিকর খাবার, সবজি-ফল খেতে হবে। এতে শারীরিক শক্তি যেমন বাড়বে, তেমনই মানসিক শান্তিও আসবে। কাজে বা পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়বে।

৪) একসাথে বেশি কাজ করবেন না

ব্যস্ত এই জীবনে আমরা একসাথে অনেক কাজ করে অভ্যস্ত। যদিও অনেক সময় উতরে যাই, তবু বার বার সেটা কি সম্ভব? কাজের প্রায়োরিটি লিস্ট তৈরি করে যে কাজ আগে দরকার, সেটাই করবেন। সব কাজ একসাথে করতে গেলে অধিকাংশ শেষ তো হবেই না, বরং কাজের আগ্রহ একেবারেই হারিয়ে যাবে। এই মানসিক চাপের দরুন আমাদের প্রোডাক্টিভিটি ৪০% পর্যন্ত কমে যেতে পারে। মস্তিষ্ক বলুন আর শরীর বলুন, একসাথে বেশি কাজের চাপ নিতে পারে না কোনোটিই। তাই যে কাজের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি, সেটা আগে করতে হবে। 

৫) বড় কাজের জন্য মানসিক ও শারিরীক প্রস্তুতি রাখুন

ধরুন, সামনে আপনাকে অনেক বড় কাজ করতে হবে; এজন্য বেশ পরিশ্রম হবে, বুদ্ধি খাটাতে হবে। এজন্য আপনাকে প্রস্তুতি নিতে হবে। কাজটি করার জন্য কাজের আগে-পরে নিজেকে এবং কাজকে বেশ সময় দেয়া প্রয়োজন। ছোট ছোট বা অপ্রয়োজনীয় কাজে নিজেকে বেশি ব্যস্ত রাখবেন না।

Image Source: remote.co

আবার, শেষ মুহুর্তে করে ফেলব- এই ভাবনা মাথা থেকে পুরোপুরি ঝেড়ে ফেলুন। কাজ শেষ করে নিজের পিঠ নিজেই চাপড়ে বলুন, “অভিনন্দন! তুমি এটা করতে পেরেছ!

বোনাস

অনেক বড় বড় টিপস দেয়ার পর এবার ২ লাইনের কিছু টিপস দিচ্ছি। এগুলোও মেনে চলা প্রয়োজন; নিজের কর্মস্পৃহা বাড়াতে, কাজে মনোযোগী হতে, কিংবা পড়াশোনায় ভালো ফল করতে। 

১) যেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারবেন, আরাম পাবেন, সেখানেই কাজ করবেন। হতে পারে বারান্দা, লাইব্রেরি কিংবা বসার ঘর।

২) কাজের সময় অপ্রয়োজনীয় সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখুন, বা মোবাইল অফ করে রাখুন, যাতে কাজে ব্যাঘাত না ঘটে।

৩) কাজ ফেলে রাখবেন না, এমনকি মেইল বা মেসেজ প্রতিদিন চেক করবেন। সামান্য একটা মেইল ফরওয়ার্ড করার কাজ হলেও সেটা করে ফেলতে হবে। 

Image Source: Wallpaper Flare

৪) জোর করে কেউ কাজ চাপিয়ে দিলে সেটা করবেন না, “না” বলতে শিখতে হবে। সুন্দরভাবে বুঝিয়ে বলতে হবে যে আপনি এই কাজের জন্য পারদর্শী না কিংবা আপনার পক্ষে সম্ভব না।

৫) ডায়েরি বা নোটপ্যাড লেখার চেষ্টা করুন। কী কাজ করেছেন, কী কী বাকি আছে সেসব টুকে রাখুন। কাজের জন্য কী দরকার তা-ও লিখে রাখতে পারেন। 

এছাড়া পর্যাপ্ত ঘুম, প্রচুর পানি পান করা, আলো-বাতাসে থাকা, বন্ধুদের সাথে কথা বলা অর্থাৎ কেবল কাজকে জীবনের মূল লক্ষ্য না করে এগিয়ে চলা উচিত। দেখুন, কাজের প্রতি বেশি মনোযোগ দিলে শেষপর্যন্ত নিজে যেমন অসুস্থ হয়ে পড়বেন, তেমনই সামগ্রিকভাবে ক্ষতিই হবে বেশি। তাই শান্ত মাথায়, প্রশান্ত চিত্তে কাজ করুন। এই কৌশলগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন। আশা করা যায় অযথা বাড়তি পরিশ্রম ছাড়াই কাজে সফল হতে পারবেন। 

Language: Bangla
Topic: 5 tips to work smarter, not harder
Reference: Hyperlinked inside
Feature Image: bairesdev.com

Related Articles