আব্রাহামিক ধর্মগুলোর (ইহুদি ধর্ম, খ্রিষ্টধর্ম আর ইসলাম) মধ্যে ইহুদি ধর্মই সবচেয়ে প্রাচীন। এগুলো সেমিটিক ধর্ম নামেও পরিচিত। একেশ্বরবাদী সেমিটিক ধর্ম চিন্তা করলেও ইহুদিরাই সবথেকে পুরাতন। তাদের ধর্মগ্রন্থের অন্যতম তোরাহর অন্তর্ভুক্ত পাঁচটি বই, যার একটি হলো ব্রেশিট বা জেনেসিস। জেনেসিসে বর্ণিত ঘটনাই ইহুদি-খ্রিষ্টান ধর্মের সৃষ্টিগাথার মূল ভিত্তি। জেনেসিসের বর্ণনাই মূলধারার ইহুদি ও খ্রিষ্টান ধর্মে গ্রহণযোগ্য বলে ধরে নেয়া হয়। এই বর্ণনাকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। জেনেসিস ১:১ থেকে ২:৪a পর্যন্ত পৃথিবী সৃষ্টির কাহিনী বলা হয়েছে, আর ২:৪b থেকে ৪- নির্দিষ্টভাবে মানব সৃষ্টির উপর আলোকপাত করেছে। দু’ভাগের ঘটনায় কিছুটা বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়, তা মূলত মানুষ না প্রাণীকুল, কে আগে তৈরি হয়েছে- সেই ব্যাপারে।
সৃষ্টিকর্তার বেশ কয়েকটি নাম ইহুদি ধর্মে পাওয়া যায়। প্রাচীন গ্রন্থগুলোতে ‘ইয়াহওয়ে’ আর ‘এলোহিম’ নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ল্যাটিনে জিহোভা নামও পাওয়া যায়। তবে সৃষ্টিকর্তাকে প্রভু বা লর্ড নামেই বেশিরভাগ সময় সম্বোধন করা হয়েছে।
সৃষ্টির সাতদিন
প্রথম দিন
আদিতে সব ছিল অন্ধকারে ঢাকা। পৃথিবী বলতে ছিল এক সমুদ্র আর শূন্যতা। স্বর্গ থেকে প্রভু দৃষ্টিপাত করলেন। তার থেকে উচ্চারিত হলো “লেট দেয়ার বি লাইট”। ফলে আঁধার ভেদ করে সূত্রপাত হলো আলোকরশ্মির। আলো দিয়ে সূচনা হলো দিনের আর আঁধার স্থান করে নিলো রাত্রিতে। এ দুয়ের মধ্যে থাকল সকাল আর সন্ধ্যা।
দ্বিতীয় দিন
সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে এবার সমুদ্রের মাঝে তৈরি হলো এক ছাদ, পানিকে আলাদা করে ফেলল দু’ভাগে। ছাদ পানির একাংশ নিয়ে উঠে গেল উপরের দিকে, তৈরি করল আকাশের। শেষ হলো দ্বিতীয় দিন।
তৃতীয় দিন
আকাশের নিচে সমস্ত পানি মিলেমিশে পরিণত হলো এক সমুদ্রে। বাকি অংশে মাথা জাগাল শুষ্ক ভূমি। এরপর সেখানে উৎপন্ন হলো নানা প্রজাতির গাছপালা। ফলে-ফুলে ভরে উঠল পৃথিবী। সমাপ্তি ঘটল তৃতীয় দিনের।
চতুর্থ দিন
দিনের জন্য সৃষ্টিকর্তা বানালেন উজ্জ্বল সূর্য, আর রাতকে শাসন করার জন্য চাঁদ। গ্রহ-নক্ষত্র দিয়ে আকাশকে অলঙ্কৃত করা হলো। ঋতুবৈত্র্যের আবির্ভাব হলো পৃথিবীর বুকে।
পঞ্চম দিন
সমুদ্রের নিঃসীম শূন্যতা ভরে উঠল বহু জাতের প্রাণীতে। সাগরদানব থেকে শুরু করে একদম ক্ষুদ্রাকৃতির মাছ পর্যন্ত সবকিছুই সাগর তার বুকে ধারণ করল। এরপর আকাশে উড়ে বেড়াতে থাকল পাখিরা। তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠল নিস্তব্ধ চরাচর।
ষষ্ঠ দিন
গবাদি পশু, বন্য প্রাণী, সরীসৃপ, আরো যতরকম জীবজন্তু সবই সৃষ্টি হলো। এদের স্থান হলো মাটির পৃথিবীতে। এরপর সৃষ্টিকর্তা নিজের রূপে মানুষ সৃষ্টি করলেন। তিনি তাকে প্রভুত্ব দিলেন সাগরে সাঁতারকাটা মাছ, আকাশে ডানা মেলা পাখি আর মাটিতে বিচরণ করা সকল প্রকার পশুর উপর। তিনি তাদেরকে আদেশ দিলেন, পৃথিবীকে মানুষে পরিপূর্ণ করে তুলতে।
সপ্তম দিন
সৃষ্টিকর্তা দেখতে পেলেন, তার সৃষ্টি সম্পূর্ণ হয়েছে। এখন আর নতুন কিছু করার নেই। তিনি বিশ্রাম নিলেন। এই দিনটি হলো ইহুদিদের স্যাবাথ।
অ্যাডাম আর ইভ
জেনেসিসের দ্বিতীয় অংশে বলা হয়, স্রষ্টা পৃথিবী ও স্বর্গ বানালেন। পৃথিবীতে তখন ছিল একদিকে সাগর, আর অন্যদিকে শূন্য এক বিস্তীর্ণ ভূমি, কোনো গাছপালা, ফুল-ফল, পশুপাখি কিছুই ছিল না। পানি থেকে উৎপত্তি হওয়া ধোঁয়াশা মাটিকে ছেয়ে ফেলল। এরপর স্রষ্টা ধুলোর ছাঁচে ফেলে বানালেন প্রথম মানব- আদামাহ, হিব্রুতে যার অর্থ মাটি। বর্ণনার সুবিধার্থে আমরা তাকে অ্যাডাম বলেই ডাকব।
স্রষ্টা এক বাগান তৈরি করলেন, যার অবস্থান ছিল ইডেনে। এখানে তিনি বহু ফলবতী গাছের সৃষ্টি করলেন। বাগানের মাঝখানে ছিল জীবনবৃক্ষ বা ট্রি অভ লাইফ। আর জ্ঞানবৃক্ষ বা ট্রি অভ নলেজ।
তিনি বাগানের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত করলেন এক নদী, যা আবার চার ভাগে ভাগ হলো। পিশন নদী চলে গেল হাভিলাহ নামক এক স্থানের দিকে, যাকে ঘিরে এটি বয়ে যেতে লাগল। সেখানকার মাটিতে ছিল স্বর্ণ। দ্বিতীয় শাখা গিহন, যা কুশ নামে এলাকার দিকে চলে গেল। তৃতীয় আর চতুর্থ শাখা যথাক্রমে টাইগ্রিস আর ইউফ্রেটিস।
স্রষ্টা এবার অ্যাডামকে নির্দেশ দিলেন বাগানের পরিচর্যা করবার জন্য। তিনি তাকে অনুমতি দিলেন, যেকোনো গাছের ফল খাওয়ার; কেবল বাগানের মাঝখানের গাছ দুটি ছাড়া। অ্যাডাম অক্ষরে অক্ষরে সে নির্দেশ পালন করতে থাকলেন। তিনি বাগানের যত্ন নিচ্ছিলেন একাগ্রচিত্তে, কিন্তু তার সবসময় মনে হতো, কীসের যেন অভাব! নিজেকে তার অসম্পূর্ণ মনে হচ্ছিল। স্রষ্টার মনে হলো, তাকে সাহায্য করবার জন্য হয়তো কাউকে প্রয়োজন। তিনি পশুপাখি বানিয়ে দিলেন। অ্যাডামকে বললেন, এদের প্রত্যেকের নাম দিতে। কিন্তু তারা অ্যাডামের যোগ্য সহকারী হয়ে উঠতে পারল না। এবার স্রষ্টা অ্যাডামকে ঘুম পাড়িয়ে দিলেন। ঘুমন্ত মানবের পাঁজরের থেকে তিনি তুলে নিলেন একটি হাড়, তা দিয়ে সৃষ্টি করলেন নারী- ইভ। ইভ হয়ে উঠলেন অ্যাডামের যোগ্য সঙ্গী। প্রথম মানব সম্পূর্ণ হলেন প্রথম মানবীর জন্ম দিয়ে।
এদিকে সমস্ত পশুপাখির মাঝে সবথেকে কুটিল ছিল সাপ। সে ইভকে প্ররোচনা দিল জ্ঞানবৃক্ষের ফল খেতে। “তুমি কি জান, কেন প্রভু তোমাদের এ ফল খেতে নিষেধ করেছেন?” সে প্রশ্ন করল। ইভ উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সে তাকে বলল, “এই ফল খেলে তোমাদের জ্ঞানচক্ষু খুলে যাবে, তোমরা স্রষ্টার সমপর্যায়ের জ্ঞান লাভ করবে। তুমি কি তা চাও না?” তার মন্ত্রণায় শেষপর্যন্ত অ্যাডাম আর ইভ নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল পেড়ে খেয়ে ফেললেন। সাথে সাথেই তাদের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হল। তারা আবিষ্কার করলেন, দুজনেই বস্ত্রহীন। ফলে লজ্জা ঢাকতে তারা গাছের পাতা ছিঁড়ে নিজেদের আবৃত করতে লাগলেন। ঠিক এমন সময়ই স্রষ্টা বাগানে প্রবেশ করলে তারা লুকিয়ে পড়লেন। কিন্তু তিনি তাদেরকে ঠিকই দেখে ফেললেন।
সব ঘটনা প্রকাশ পেলে এবার স্রষ্টা সাপকে ডেকে পাঠালেন। প্রত্যেক পক্ষের জন্য শাস্তি নির্ধারিত হলো। যেহেতু সাপের কুমন্ত্রণায় মানুষ নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণ করেছে, তাই বলা হলো, যখনই মানুষ সাপ অথবা তার সন্তান-সন্ততিকে দেখতে পাবে, তখনই তারা তাদের হত্যা করার জন্য তাড়া করবে। মানুষ তাকে মাথায় আঘাত করে মারতে চেষ্টা করবে, আর সে মানুষের গোড়ালিতে কামড়ে দিতে চাইবে। ইভকে বলা হলো, তার কাজের জন্য প্রসববেদনা বহুগুনে বেড়ে যাবে এবং নারীরা হয়ে থাকবে পুরুষের অধীন। সর্বশেষ অ্যাডামকে জানানো হলো, বাগানে থেকে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন আপাতত তার জন্য আর নয়। ইভ আর তাকে বাগান থেকে বেরিয়ে গিয়ে কষ্ট করে খাবার জোগাড় করে জীবনধারন করতে হবে। এভাবেই চলবে, যতদিন না তার মৃত্যু হয় এবং যে ধুলো থেকে উৎপত্তি, সেই ধুলোতেই সে ফিরে না যায়।
লিলিথ: দ্য লেডি অফ দ্য নাইট
স্বীকৃত ধারা থেকে বের হয়ে এবার আসুন একটু অপ্রতিষ্ঠিত কিছু ধারণার এগিয়ে যাই। এ ধারার সমর্থকদের দাবি হচ্ছে, জেনেসিসে প্রথমে বলা হয়েছে ষষ্ঠ দিনে ধুলা থেকে সৃষ্টিকর্তা মানব-মানবী বানালেন, আবার পরে অ্যাডামের পাঁজরের হাড় থেকে ইভকে সৃষ্টি করা হলো। তাহলে প্রথম ধুলো থেকে যে মানবীর উৎপত্তি হলো- তিনি কোথায়? এখান থেকেই তারা লিলিথের কথা টেনে আনেন। বলা হয়, তিনি ছিলেন সেই মানবী, যাকে অ্যাডামের পাশাপাশি ধুলা থেকে তৈরি করা হয়েছিল, এবং ইভের আগে তিনিই ছিলেন অ্যাডামের স্ত্রী। জেনেসিস র্যাব্বাহ, যা খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় ৩০০-৫০০ বছর আগে লিখিত জেনেসিসের বিচার-বিশ্লেষণ, সেখানেও এরকম একটি ধারণা দেয়া হয়েছে, যদিও অ্যাডামের প্রথম স্ত্রীর নাম উল্লেখ করা হয়নি।
এখনকার দিনে লিলিথ পরিচিত নারীরূপী এক দানব, বা দুরাচার আত্মা হিসেবে। হিব্রু ভাষাতে প্রথম লিলিথ নামের উল্লেখ পাওয়া যায় সুমেরিয়ান অ্যাডভেঞ্চার কাহিনী গিলগামেশে, প্রায় ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। সেখান থেকে লিলিথের নাম জড়িয়ে ফেলা হয় হিব্রু শব্দ লায়লা, বা রাত্রির সাথে। বাইবেলে ইসরায়েলের নবী ইসাইয়াহের কথা আলোচনার সময় সম্ভবত একবারই এক দানবী হিসেবে তার নাম আসে। ইহুদি মিস্টিসিজমের ধারা কাব্বালাহর অন্তর্ভুক্ত ধর্মীয় বর্ণনা জোহারে তার নাম সরাসরি লিপিবদ্ধ না হলেও তাকে সামায়েল, বা ‘মৃত্যুর ফেরেশতা স্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এমনকি অন্যান্য সভ্যতায়ও লিলিথের বিবরণ পাওয়া যায়। সুমেরিয়ান গল্পে তাকে চিত্রিত করা হয়েছে পেঁচার পা আর ডানাবিশিষ্ট এক সত্ত্বা হিসেবে, যে মানবের কাছ থেকে আলো ছিনিয়ে নিয়ে তাকে ছুঁড়ে ফেলেছিল অন্ধকারে। সিরিয়ায় উদ্ধারকৃত খ্রিষ্টপূর্ব ৭০০ অব্দে রচিত এক মাটির ট্যাবলেটে লিলিথ এসেছে ডানাওয়ালা স্ফিংক্সের আকারে। নর্স, গথ, স্যাক্সন আর নানা জার্মান উপকথায় লিলিথ এক অপরূপ সুন্দরী ডেমন, যার শরীরের নিচের অংশে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। কপটিক, ইথিওপিয়ান, আর্মেনিয়ান, সিরিয়ান এমনকি রাশিয়ান উপকথাতেও লিলিথের কথা বলা আছে।
বেন সিরা বর্ণমালা
৭০০-১০০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে রচিত অ্যালফাবেট অভ বেন সিরা বা বেন সিরা বর্ণমালা মূলত প্রবাদের আকারে লিখিত উপদেশমূলক গল্পের সংকলন। এখানে লিলিথের এক বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। অনেকটা স্যাটায়ার আকারে এই সংকলন খ্রিষ্টের জন্মের পরে লিপিবদ্ধ হলেও যে ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে, তা বহু আগের, লোকমুখে যা শতাব্দীর পর শতাব্দী চলে আসছিল।
ব্যবিলনের রাজা নেবুচাঁদনেজারের ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি বেন সিরাকে ডেকে আনলেন। “ওকে সুস্থ করে তোলো”- তিনি হুমকি দিলেন, “নাহলে তোমার গর্দান যাবে”। বেন সিরা কীসব লিখে তাবিজের আকারে রাজপুত্রের গায়ে ঝুলিয়ে দিলেন, তিনি সেরে উঠলেন। রাজা জানতে চাইলেন, বেন সিরা কী লিখেছেন। তিনি উত্তর দিলেন, এগুলো হলো চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা তিন অ্যাঞ্জেলের নাম, সনভি, সন্সভি আর মংলফ (Snvi, Snsvi and Smnglof)। এরপর তিনি অবতারণা করলেন লিলিথের কাহিনী।
বেন সিরা রাজাকে বললেন, অ্যাডামের মতোই মাটি থেকে লিলিথকে সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু লিলিথ ছিলেন অত্যন্ত স্বাধীনচেতা। অ্যাডামকে তিনি নিজের থেকে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করতেন না, কারণ দুজনে একইভাবে সৃষ্টি। অ্যাডামের সাথে তার প্রায়ই মতের অমিল হয়, ফলে দুজনের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। তুমুল মতবিরোধের এক পর্যায়ে লিলিথ স্রষ্টার নিষিদ্ধ এক নাম উচ্চারণ করলে তার ডানা গজায়, সে ডানা দিয়ে লিলিথ উড়ে ইডেন থেকে বেরিয়ে যান।
অ্যাডাম এবার স্রষ্টার কাছে অভিযোগ করলেন, ফলে তিনি সনভি, সন্সভি আর মংলফকে পাঠালেন লিলিথকে ফিরিয়ে আনতে। লোহিত সাগরে এসে তারা লিলিথের দেখা পেলেন। লিলিথ ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে তারা তাকে সাগরে ডুবিয়ে দিতে চাইলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত লিলিথ তাদের থেকে নিষ্কৃতি আদায় করে নিলেন। রফা হলো, জন্মের পর যেকোনো ছেলে সন্তানের উপর আট দিন আর মেয়ে সন্তানের উপর বিশ দিন লিলিথের অধিকার খাটবে। এ সময় সে তাদের রোগাক্রান্ত করবে, কিন্তু কেউ যদি সনভি, সন্সভি আর মংলফের নাম তাদের গায়ে লিখে দেয়, তাহলে তারা বেঁচে যাবে। তারা লিলিথকে এটাও স্মরণ করিয়ে দিলেন, এখন থেকে প্রতিদিন তার একশো দানবসন্তানের মৃত্যু হবে। এভাবে বেন সিরার গল্পে লিলিথকে প্রতিষ্ঠা করা হয় সর্বপ্রথম দুরাচার সত্ত্বা এবং পরবর্তী এরকম সকল অস্তিত্বের মাতা হিসেবে।
মূলধারার সৃষ্টিগাথাতে অবশ্যই লিলিথের কোনো বর্ণনা নেই, সেখানে অ্যাডাম আর ইভের কথাই আব্রাহামিক সব ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থে বলা হয়েছে। মূলত আধুনিক সময়ে লিলিথের কাহিনী নিয়ে প্রচুর গবেষণা আরম্ভ হয়েছে, আর কিছু না হোক চমকপ্রদ এক গল্প হিসেবে এ কাহিনী পাঠ করা যায়।
এই সিরিজের পূর্বের লেখাগুলো পড়তে ক্লিক করুন নিচের লিঙ্কে:
১) প্রাচীন সভ্যতার সৃষ্টিগাথা (পর্ব-১) : পার্সিয়ার উপাখ্যান
২) প্রাচীন সভ্যতার সৃষ্টিগাথা (পর্ব-২) : সুপ্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতার গল্প
৩) প্রাচীন সভ্যতার সৃষ্টিগাথা (পর্ব-৩): রা, ওসাইরিস আর আইসিসের উপাখ্যান