Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

সূর্য উপাসনা: বিভিন্ন সংস্কৃতিতে এক বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি

পরমাত্মাকে সূর্যের সাথে মিলিয়ে ফেলার ইতিহাস প্রাচীন। বুশম্যান এবং পিগমিদের কাছে সূর্য হলো দেবতার চোখ। দক্ষিণ-পশ্চিম অস্ট্রোলিয়ার কামিলারই জনগোষ্ঠীর কাছে প্রধান সৃষ্টিকর্তার সন্তান সূর্য। উরুকভারা নামের আদি আমেরিকানরা দক্ষিণায়নের উৎসব পালন করতো সূর্যকে কেন্দ্র করে। চুকচি জাতিগোষ্ঠী সূর্যকে সরাসরি দেবতা গণ্য করেই অনেক কিছু উৎসর্গ করতো। আফ্রিকা এবং ইন্দোনেশিয়ার বহু জনগোষ্ঠীর মধ্যে এখনো বিদ্যমান সূর্যের উপাসনার চিহ্ন।

বস্তুত সৃষ্টির গোড়া থেকেই মানুষ প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। কৃষিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার উত্থানে সেই নির্ভরতা বেড়েছে বৈ কমেনি। প্রাকৃতিক শক্তির প্রতি দূর্বলতা ধীরে ধীরে গিয়ে ঠেকেছে উপাসনায়। প্রাধান্য বিস্তার করেছে নানা কিসিমের দেবদেবী। আবার প্রকৃতির সমস্ত কিছুই যেহেতু সূর্যের প্রতি প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে নির্ভর করে বেঁচে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই সূর্য পেয়েছে এক অত্যুচ্চ অবস্থান। দুইটি সংস্কৃতি সব দিক থেকে ভিন্ন হলেও একটা বিষয় স্থির, একই সূর্যের আলো-উষ্ণতায় জীবন যাপন। ফলে, পৃথিবীর নানা প্রান্তে সূর্যকে কেন্দ্র করে গঠিত হয়েছে মানুষের ধর্মবোধ।

বংশধর

ইন্দোনেশিয়া এবং মালাক্কাতে সৌরদেবতার উপাসনা ছিল বিক্ষিপ্ত। তিমুরে সৌরদেবতা উসি-নিনোকে মনে করা হয় ভূমিদেবীর স্বামী। তাদের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করে উসি-আফু এবং অন্যান্য সমস্ত কিছু। অবশ্য মানুষের কুরবানির বেশিরভাগই হয় পৃথিবী দেবীর উদ্দেশ্যে। পূর্ব তিমুরে সূর্যদেবতার নাম উপুলেরা। সেখানে সূর্য জীবনিশক্তি এবং উর্বরতার উৎস হিসাবে পরিগণিত হয়। পালিত হয় উৎসব।

অনেকেই নিজেদের সূর্যদেবতা উপুলেরার বংশধর মনে করতো; Image Source: indonesiaartantique

উপুলেরার সন্তান ছিল। বিশেষ করে কিছু কিছু গোত্রের প্রধানরা নিজেদের সূর্যের বংশধর মনে করতো। মানুষ সৃষ্টির সাথে পানি, আগুন, মাটি কিংবা বৃক্ষকে যুক্ত করার প্রচেষ্টা বিভিন্ন সংস্কৃতিতেই দেখা যায়। তবে সৌরদেবতার সাথে সংযুক্তিটা একটু বিশ্লেষণের দাবি রাখে। এর মধ্যে দিয়ে কতিপয় মানুষ প্রতীকি সূর্যের ক্ষমতা লাভ করে। পরিগণিত হয় উষ্ণতা এবং জীবন সঞ্চারি আশির্বাদ হিসাবে। প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি কিংবা পরিবার।।

অস্ট্রেলিয়ার অ্যারান্দা গোষ্ঠীর মধ্যে সূর্য আর মানুষের সম্পর্ক স্বাভাবিক। তবে, সূর্যকে নারী হিসেবে উপস্থিত করা হয়েছে সেখানে। মানুষ কিছু নির্দিষ্ট উপাসনার মধ্য দিয়ে সূর্যের অবস্থানে পৌঁছাতে পারে। মাথায় লাল রং মেখে, দাঁড়ি-গোঁফ কামিয়ে প্রতীকি মৃত্যু অতিক্রম করে পরের দিন জেগে উঠে। সূর্য যেভাবে আগের দিন অস্তমিত হয়ে উদিত হয় পরের দিন। আদি ভারতীয় কোরকুস গোত্রের বিশ্বাস, তারা সূর্য আর চন্দ্রের মিলনের ফসল। প্রায় কাছাকাছি ধারণা বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠলেও সেই সম্পর্ক সীমাবদ্ধ ছিল অভিজাত এবং রাজাদের সাথে।

পুরোহিত কিংবা নির্দেশক

অস্ট্রেলিয়ার উইরাজুরি এবং ক্যামিলারই গোষ্ঠীতে সূর্যকে ভাবা হয় প্রধান দেবতার সন্তান। ধর্মীয় আচারাদিতে মানুষ যেন হয়ে উঠতো সূর্যেরই প্রতিরূপ। অর্থাৎ পরম দেবতার সন্তান। মৃত্যু আর পুনরুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিটা আত্মাই যেন সূর্যে পরিণত হয়। বিপরীতভাবে প্রতি সকালের সূর্য প্রতীকায়িত করে মৃত মানুষের পুনরুত্থিত হওয়াকে। এভাবে রাত আর দিন হয় ইহকালীন এবং পরকালীন জীবনের চিরন্তন এক চক্র। তার মানে কিন্তু সূর্যাস্তের অর্থ সবসময়ই মৃত্যু না। অস্তমিত সূর্য সারা রাত্রি জুড়ে মৃত্যুপুরী ভ্রমণ করে সকালে পুনরায় আগমন করে। এই ভ্রমণে মৃত্যু পূর্বশর্ত না।

আদিবাসীদের আঁকা সূর্যদেবতা বাইয়ামে-এর একটি গুহাচিত্র; Image Source: wikipedia

বিষয়টাকে আরেকটু খোলাশা করা যাক। চাঁদের হ্রাস বৃদ্ধির কারণে মৃত্যুর ব্যাপারটা তার সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। কিন্তু প্রাচীন বিশ্বাসে সূর্য চিরন্তন। তার ডুবে যাওয়ার মানে একটা ভ্রমণের প্রস্তুতি। সূর্য ডুবে যায়; সাথে নিয়ে যায় দুনিয়ার মানুষের মৃত আত্মা। সে-ই পরবর্তীতে পথ দেখিয়ে দেয় সকালের আলোর। সূর্য তাই মৃতের জন্য পরকালীন পথনির্দেশক এবং নবাগতের জন্য বরণকারী পুরোহিত। নিউজিল্যান্ডের আদিবাসীদের মধ্যে এই বিশ্বাস দেখা যায়।

টরেস প্রণালির আদিবাসীরা মনে করতো পশ্চিমের কোথাও কিবু নামে স্থান আছে। বাতাস মৃতের আত্মাকে সেখানে উড়িয়ে নিয়ে যায়। হারভে দ্বীপের আদিবাসীরা ভাবতো মৃত্যুর পরে আত্মাগুলো জমা হয়ে থাকে। বছরে দুইবার উত্তরায়ণ এবং দক্ষিণায়নের সময় তারা সূর্যকে অনুসরণ করে পাতালে যায়। অবশ্য যুদ্ধে মৃত্যুবরণকারীরা সূর্যের সাথে তৎক্ষণাৎ স্বর্গে গিয়ে পৌঁছায়। পলিনেশিয়া, মাইক্রোনেশিয়া এবং আফ্রিকাতে কাছাকাছি ধরনের বিশ্বাস বেশ প্রভাবশালী।

মিশরীয় বিশ্বাস

মিশরীয় ধর্মবিশ্বাস অন্য যেকোনো সংস্কৃতির চেয়ে সূর্য দ্বারা প্রভাবিত ছিল বেশি। সূর্যদেবতা পরিচিত রা নামে। আমুন, আটেন কিংবা হোরাসের মতো দেবতাদের সাথে মিলিত হয়ে চলতো সূর্যের উপাসনা। আমুন-রা, রা-হোরাখতি, খনুম, আটেন-রা, মন্তু-রা নামগুলো তারই প্রমাণ বহন করে। পঞ্চম রাজবংশের পর থেকে এই বৈশিষ্ট্য খুব স্বাভাবিক রূপ লাভ করে। আর্দ্রতার দেবতা শু এবং আকাশদেবতা আতুমও পরবর্তীতে পর্যবসিত হয় রা এর উপাসনায়।

মিশরীয় সভ্যতায় সূর্যদেবতার আধিপত্য ছিল সবচেয়ে বেশি; Image Source: elementalbeings.co.uk

রা এর এই প্রধান্য প্রতিষ্ঠার পেছনে দুইটা কারণ সনাক্ত করা যায়। ওই অঞ্চলের মানুষের সূর্যনির্ভর ধর্মতত্ত্ব এবং শাসকদের মধ্যে সার্বভৌমত্বের ধারণা। নীলনদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা কৃষিভিত্তিক জীবনব্যবস্থায় সূর্য নিয়ন্ত্রণ করতো চিন্তা। অন্যদিকে গোড়া থেকেই সূর্য সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বিদ্রোহী আর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এই মনস্তত্ত্ব দারুণভাবে কাজে দেয়। যেহেতু সূর্য পৃথিবীর একপ্রান্তে অস্তমিত হয়ে অপর প্রান্তে উদিত হয়; রা এর সাম্রাজ্য তাই আদিগন্ত। সম্রাটরা এই দৃষ্টিকোণেই সূর্যের মতো অবিনশ্বর এবং সকলের উপর সার্বভৌম অভিভাবকে পরিণত হতেন। তার একটা বড় উদাহরণ হতে পারে ওসিরিসের পাতাল গমন।

ব্যবিলন থেকে রোম

মেসোপটেমীয় সভ্যতায় সূর্যদেবতা শামাস ছিল চন্দ্রদেবী সিনের চেয়েও কম গুরুত্বপূর্ণ। মৃত্যু পরবর্তীদের সাথে যুক্ত করে বিচারক হিসাবে উপস্থাপন করা হতো তাকে। তার মন্দিরকে বলা হতো ‘বিচারকের ঘর’। তাছাড়া পরিগণিত হতো মৃত আর জীবিতদের জগৎকে যুক্তকারী হিসেবে।

গ্রিস এবং রোমে সূর্য খুব বেশি প্রাধান্য বিস্তার করতে পারেনি। যতোটুকু করেছে; তাও প্রাচ্য প্রভাবের কারণে। যতোটুকু হয়েছে; তাও সম্রাটদের মহিমান্বিত কিংবা উপাস্যে পরিণত করার জন্য। গ্রীসে হেলিয়োসের সাথে যুক্ত করে পাতাল জগতের মিথ পাওয়া যায়। হেলিয়োস একজন টাইটান এবং জাদু শক্তির উৎস। আলোর চেয়ে অন্ধকারের সাথেই যেন তার সম্পর্ক অনেক বেশি। নাতনী মিডিয়ার বিখ্যাত রথটা তিনিই উপহার দেন। নির্ধারিত উৎসব হেলাইয়াতে তার সম্মানে উৎসর্গ করা হতো চারটি ঘোড়া। তারপর সেগুলো ছুড়ে ফেলা হতো সমুদ্রে।

 হেলিয়োস গ্রীক পুরাণে অনেকটাই অপ্রধান দেবতা হিসাবে; © Hans Adam Weissenkircher

হোমারের যুগে পাতালদেবতা হেডেসকে বলা হতো এ-ইডেস বা সূর্যের দরজা। বিষয়টা অদৃশ্য এবং অনুপস্থিত কিছুর প্রতি ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে সূর্য নেহায়েত দুনিয়াবি দেবতাতে পরিণত হয়েছেন। এভাবে আলো থেকে অন্ধকার এবং আকাশ থেকে মাটিতে নেমে আসায় দেখা দেয় নয়া বিশেষত্ব।

ভারত

বৈদিক দেবতাদের মধ্যে সূর্যের অবস্থান দ্বিতীয় কাতারে। দ্যৌস দেবতার পুত্র সূর্য পরিচিত দেবতা মিত্র, বরুণ আর অগ্নির চোখ হিসাবে। গোটা বিশ্বের উপর নজর রাখেন তিনি। কৃষ্ণ যজুর্বেদে বলা হয়েছে, আদিত্যই বিশ্বের প্রাণ স্বরূপ, আদিত্য থেকেই প্রাণের সৃষ্টি। গ্রহ নক্ষত্রের মধ্যে সূর্য সবচেয়ে দ্যুতিমান। বেদে পশ্চিম আকাশে অস্তগামী সূর্যকে সুন্দরদেহী দিব্যকান্তি যুবকের সাথে তুলনা করা হয়।

সূর্যদেবতাকে বহন করে আকাশে তুলে আনে সাতটি ঘোড়া। রথবহনকারী ঘোড়াগুলো অতি কল্যাণময়। এ কারণে তাদেরকে ভদ্রা বলে সম্বোধন করা হয়েছে। সূর্য যখন রথে চড়ে আকাশে ভ্রমণ করবে; তখন কোনো শক্তিই তাকে রোধ করতে পারবে না। বেদের মন্ত্র অনুসারে সূর্যের আকৃতি দুই প্রকার- কৃষ্ণ এবং শ্বেত। দিনের উজ্জ্বল আলোয় ভরা সূর্য শ্বেত এবং রাত্রির আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়া সূর্য কৃষ্ণাকার। গৌতম বুদ্ধকে আগে সূর্যের সাথে তুলনা করা হতো।

সূর্যদেব ভারতে বরুণ, মিত্র এবং অগ্নির চোখ হিসাবে পরিগণিত; Image Source: deviantart

তারপরেও ভারতীয় ধর্মগুলোতে সূর্য প্রধান হিসাবে চিত্রিত হয়নি। অতীন্দ্রিয়বাদ চর্চায় সূর্যকে ব্যাখ্যা করা হয় শারীরতাত্ত্বিক ভাবে; যেখানে চন্দ্রের অবস্থান মহাজাগতিক। ঋগ্বেদ অনুসারে, স্বর্ভাবু নামক এক দৈত্য সূর্যকে ঢেকে ফেলে। বিশ্বজগৎ ডুবে যায় অতল অন্ধকারে। অবশেষে ইন্দ্র সেই দৈত্যকে পরাজিত করে সূর্যকে উদ্ধার করেন। অনুমান করতে কষ্ট হয় না, এখানে চিত্রিত করা হয়েছে সূর্যগ্রহণ।

নায়কগণ

জাপানে একটা উৎসব বেশ পরিচিত। কয়েকজন যুবক নিজেদের ‘সূর্যদানব’ এর সাজে সজ্জিত করে। তারপর ছুটে যায় এক খামার থেকে আরেক খামারে। এতে করে পরবর্তী বছরে জমিতে উর্বরতা আসবে বলে বিশ্বাস। প্রতীকায়িত করা হতো তাদের সৌর পূর্বপুরুষদের। ইউরোপীয় উপাসনায় দক্ষিণায়নের সময় সূর্যের প্রভাব দেখা যায়। বস্তুত উত্তর গোলার্ধের সংস্কৃতিতে সূর্যের মৃত্যুকে অসম্ভব মনে করা হয়নি। এজন্য পৃথিবী ধ্বংসের আলামত হিসেবে সূর্যের আলো এবং পথ পরিক্রমার সমাপ্তি টানা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

মেক্সিকোর স্থানীয় ধর্মবিশ্বাসে সূর্যকে চিরন্তন রাখার চেষ্টায় উপাসনা চলতো। নিয়মিতই বন্দীদের বলি দেয়া হতো সেই উদ্দেশ্যে। বলির রক্ত যাতে সূর্যের প্রতিদিনের ক্ষয়ে যাওয়া শক্তিকে পূর্ণতা দেয়। তারপরও ভয় ছিল; পৃথিবী একদিন ধ্বংস হবে। যতই রক্ত উৎসর্গ হোক, নিভে যাবে সমস্ত স্পন্দন।

পারসিক এবং রোমান সংস্কৃতিতে মিথ্রাসের প্রভাব ছিল দীর্ঘসময়; Image Source: ancient-origins.net

ইন্দো-ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে সূর্যের সাথে সম্পর্কিত নায়কদের সাক্ষাৎ পাওয়া যায় সহজেই। লোককথা এবং ঘুম পাড়ানির গানে অব্দি তাদের বিবরণ উদ্ধৃত হয়। সেই নায়কেরা সূর্যের অবতার কিংবা প্রত্যক্ষ উপকথায় সম্পর্কিত না। বরং সম্পর্কিত মৃত্যু, উর্বরতা এবং পরবর্তী জীবনের সাথে। উদাহরণ হিসেবে মিথরাসের নাম উল্লেখ করা যায়। প্রথমদিকে মিথরাস আকাশদেবতা ছিল। পরবর্তীতে সূর্যদেবতায় পরিণত হয় এবং আরো পরে রক্ষাকর্তা। মধ্যযুগের আইরিশ যাজকদের মধ্যে যীশু খ্রিষ্টকে সূর্যদেবতা গণ্য করে উপাসনার নজির দেখা যায়।

অবশেষ

মোঙ্গলরা সূর্যদেবতা টেংরির পূজা করতো। সূর্যের আধিপত্য ছিল চীন থেকে পেরু, গ্রীনল্যান্ড থেকে আদি অস্ট্রেলিয় সংস্কৃতি অব্দি। বাংলাদেশের মুণ্ডা জনগোষ্ঠীদের মধ্যে শিং বোঙ্গা নামে সূর্যদেবতার উপাসনা বিদ্যমান। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে সূর্যের উপাসনা ও অবস্থানের সারাংশ টানা কঠিন। কারণ ধর্মবিশ্বাসের সাথে যুক্ত থাকলেও সকলের ধর্মবোধে সূর্যের অবস্থান একরকম ছিল না। এটা সত্য, বেশিরভাগ সময়েই প্রতিটা সংস্কৃতিতে গুরুত্ব পেয়েছে সার্বভৌমত্ব, উর্বরতা, জীবনীশক্তির মতো বিষয়াদি। রাজা, বীর কিংবা দার্শনিকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সূর্য। এরকম প্রাচীন গ্রিসের সূর্যবাদী এক দার্শনিকের নাম হেরাক্লিটাস।

রাষ্ট্রের উৎপত্তি বিষয়ক বহু তত্ত্ব ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়। যাযাবর মানুষ যেখান থেকে স্থায়ী সভ্যতাতে পরিণত হলো। প্রকৃতি নির্ভরতার দরুণ সেখানে ধর্ম নিয়েছে নতুন মাত্রা। আরো দৃশ্যমান হয়েছে সূর্যের গুরুত্ব। চিরন্তন, সার্বভৌম আর জীবনদায়ী সূর্যের সাথে সম্পর্কিত দাবিকারী মানুষেরা আবির্ভূত হয়েছে সমাজের নিয়ন্ত্রক ও ত্রাতা হিসেবে। অর্থাৎ মানুষের প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র যদি দীর্ঘ বিবর্তনের ফসল হয়; সেখানে গোড়া থেকে লম্বা পথ হাতে ধরে এগিয়ে দিয়েছে ধর্মচিন্তা। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে গড়ে উঠা সূর্যপুরাণ তা-ই প্রমাণিত করে।

This Bengali article is about `The Sun and Sun Worship in different Cultures', A reach tradition of human history from the agricultural revolution. 

References:

1) Patterns in Comparative Religion, Mircea Eliade, Translated by- Rosemary Sheed, Sheed and Ward, New York, 1958, Pages: 124

2) A History of Religious Ideas, Vol-1, Mircea Eliade, Translated by- Willard R. Trask, University of Chicago Press, 1981, Pages: 187

3) Image and Symbols, Mircea Eliade, Translated by- Philip Mairet, Sheed and Ward, New York, 1952, Pages: 128

and which are hyperlinked.

Featured Image: 'Irish Monks worship Jesus as the Sun God' taken from medium.com

Related Articles