Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি বিতর্কিত নির্বাচন

গত নভেম্বর মাসের ৩ তারিখ অনুষ্ঠিত হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। প্রায় সপ্তাহখানেক লেগেছিল বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যের ভোট গণনা এবং ফলাফল পেতে। শেষরক্ষা হয়নি বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের। গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোটের পাশাপাশি নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থক থাকা রাজ্যগুলোতেও সমর্থন হারিয়েছেন এই রিপাবলিকান নেতা। অনানুষ্ঠানিকভাবে হলেও বলা যায় যে, দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন। ৪৬ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে অল্প কিছুদিন পরই হোয়াইট হাউসে পদার্পণ করবেন ৭৮ বয়সী এই রাজনীতিবিদ। এর আগে তিনি ওবামা প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।

অতীতের নির্বাচনগুলোর দিকে নজর দিলে দেখা যায়, নির্বাচনের আগে ব্যাপক উদ্দীপনা ছিল মার্কিনিদের মাঝে। একই সাথে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মাঝেও প্রচারণাকেন্দ্রিক প্রতিযোগিতাও ছিল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট পুরোপুরি ভিন্ন। মেইল ভোটের কারণে শেষের দিকে শোচনীয় পরাজয়ের মুখোমুখি হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষপর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। তার দাবি, শেষদিকে গণনাকৃত মেইল ভোটে কারচুপি হয়েছে এবং নির্বাচনী সময়ের পর সেগুলো গণনা করা একেবারেই অযৌক্তিক। যদিও তার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল।

ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেন; Image Source: MarcaEnglish

ডোনাল্ড ট্রাম্প কিংবা রিপাবলিকানরা কারচুপির অভিযোগ সামনে এনে একে ইতিহাসের সবথেকে বিতর্কিত নির্বাচন হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে- এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো নির্বাচনে কারচুপি হয়নি? অবশ্যই হয়েছে। তবে সেগুলো মার্কিন সংবাদমাধ্যম অন্যান্য সংবাদের মতো ফলাও করে প্রকাশ করে না। আর এটাও মোটামুটি স্পষ্ট যে ব্যক্তিবিশেষে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে পছন্দ-অপছন্দের একটি বিষয় রয়েছে। যা-ই হোক, আজ আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত কয়েকটি নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

১৮০০ সালের নির্বাচন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার তখনও তিন দশক পার হয়নি। আর ঠিক সে সময় বিতর্কিত এবং পক্ষপাতমূলক নির্বাচন দেখে দেশটির নাগরিকেরা। ১৮০০ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী থমাস জেফারসন এবং অ্যারন ব্যুর জনসন সমান সংখ্যাক ৭৩টি করে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু নিয়মানুযায়ী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন যেকোনো একজন। যদিও এই সমস্যার সমাধানের জন্য যেতে হতো হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে। আর ঠিক তখনই আসে নিয়মের মারপ্যাঁচ।

থমাস জেফারসন; Image Source: GETTY IMAGES

সে সময়ের নির্বাচনী নিয়মানুযায়ী প্রতিটি রাজ্যে সিনেটের জন্য একটি ইলেক্টোর এবং হাউজের কংগ্রেসম্যান নিয়োগের জন্য অন্য আরেকটি ইলেক্টোর বরাদ্দ ছিল। যদিও কিছু কিছু রাজ্যের জনসংখ্যা আধিক্যের কারণে ইলেক্টোর কম-বেশি হতো। আর সেটি শুধুমাত্র কয়েকটি রাজ্যের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ছিল। এছাড়াও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইলেক্টোরাল ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থীকে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার নিয়ম ছিল সে সময়। যা-ই হোক, জেফারসন এবং অ্যারন ব্যুর জনসনের মধ্য থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে জরুরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

অধিবেশনে সদস্যরা সর্বমোট ৩৬টি ভোট দিয়ে জেফারসনকে সমর্থন জানায়। নিয়মানুযায়ী প্রেসিডেন্ট না হয়ে বরঞ্চ ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন অ্যারন ব্যুর। এই ঘটনার পর তিনি প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রচার করতে থাকেন। সেই সাথে পরাজয়ের কারণ হিসেবে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম স্থপতি আলেক্সান্ডার হ্যামিল্টনকে দায়ী করেন। কারণ জেফারসন নিজেও ছিলেন স্বাধীনতা ইতিহাসের অন্যতম ব্যক্তিত্ব। আর তাই অ্যারন ব্যুর মনে করেন তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে হাউজের ভোটে পরাজিত হয়েছেন।

শিল্পীর তুলিতে হ্যামিল্টন খুনের দৃশ্য; Image Source: Photo by Kean Collection/Getty Images

যদিও রাজনৈতিক আদর্শগতভাবে জেফারসন ছিলেন ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকান, অন্যদিকে হ্যামিল্টন ছিলেন ফেডারেলিস্ট। অ্যারন ব্যুরের মতে, হ্যামিল্টনের ইচ্ছায় মেরিল্যান্ড এবং ভারমন্টের ফেডারেলিস্ট সদস্যরা হাউজের ভোটে জেফারসনকে সমর্থন জানায়। জেফারসন নির্বাচিত হওয়া এবং অ্যারন ব্যুরের নানারকম প্রচার-প্রচারণায় ফেডারেলিস্টদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি হয় যা একসময় ডেমোক্রেট রিপাবলিকান দলেও ছড়িয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় প্রেসিডেন্ট জেফারসন জাতীয় ঐক্যের ডাক দেন এবং ‘সবাই রিপাবলিকান, সবাই ফেডারেলিস্ট’ ঘোষণা করেন।

তবে নির্বাচন পদ্ধতি বিতর্কিত হওয়ায় এটি নিয়েও প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেন জেফারসন। শেষপর্যন্ত সংবিধান সংশোধনীর পক্ষে মতামত দেন প্রতিনিধিরা। ১৮০৪ সালে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মধ্যদিয়ে প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য আলাদা আলাদা ব্যালটের ব্যবস্থা করা হয়। যদিও ঐ বছরই খুন হন হ্যামিল্টন। ১৮০৪ সালের ১১ জুলাই তারিখে নিউ জার্সিতে অ্যারন ব্যুর জুনিয়রের পিস্তলের গুলিতে নিহত হন তিনি।

১৮২৪ সালের নির্বাচন

সেবারের নির্বাচনে সর্বাধিক পপুলার ভোট এবং ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়েছিলেন পশ্চিমাঞ্চলের জনপ্রিয় নেতা অ্যান্ড্রু জ্যাকসন। যদিও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য সংবিধান অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেতে হতো তাকে। সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী অনুযায়ী এবারও সমস্যার সমাধানের জন্য যেতে হবে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে। সেখানে অ্যান্ড্রু জ্যাকসনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন দ্বিতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এডামসের পুত্র জন কুইন্সি এডামস, উইলিয়াম ক্রফোর্ড এবং হেনরি ক্লে। হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে প্রথম ভোট অনুষ্ঠিত হয় অ্যান্ড্রু জ্যাকসন ব্যতীত বাকি ৩ জনকে নিয়ে। সেখানে সর্বপ্রথম বাদ পড়েন হেনরি ক্লে, যিনি ছিলেন একাধারে হাউজের স্পিকার। এরপর বাদ পড়েন উইলিয়াম ক্রফোর্ড।

অ্যান্ড্রু জ্যাকসন এবং জন কুইন্সি এডামস; Image Source: Emaze

আর শেষেদিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গিয়ে দাঁড়ায় জ্যাকসন এবং এডামসের মধ্যে। হাউজের প্রতিনিধিদের ভোটে পরাজিত হন অ্যান্ড্রু জ্যাকসন। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হেনরি ক্লেকে সেক্রেটারি অব স্টেট হিসেবে নিয়োগ দেন জন কুইন্সি এডামস। এর মধ্য দিয়ে টানা ষষ্ঠবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করে ডেমোক্রেট রিপাবলিকান প্রার্থীরা। অন্যদিকে, হাউজের পদ্ধতিতে দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ তুলে পপুলার ভোটে জয়লাভের বিষয়টি সামনে আনার চেষ্টা করেন পরাজিত অ্যান্ড্রু জ্যাকসন। যদিও তখন কিছুই করার ছিল না তার। পরের নির্বাচনে অবশ্য এডামসকে পরাজিত করে জয়লাভ করেছিলেন জ্যাকসন। সেবারের জয়ে সর্বমোট দুই দফায় ক্ষমতায় ছিলেন এই প্রাক্তন যোদ্ধা এবং রাজনীতিবিদ।

১৮৬০ সালের নির্বাচন

১৮৬০ সালের নির্বাচনকে বিভিন্নভাবে দেখেন ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকানরা। একাধিক প্রার্থী এবং দাসত্ব নিয়ে উত্তর, দক্ষিণাঞ্চলীয় লোকেদের মতপার্থক্যের কারণে একে অনেক ইতিহাসবিদ আমেরিকার ইতিহাসে সর্বাধিক বিতর্কিত নির্বাচন বলে থাকেন। সেবার মূল প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী আব্রাহাম লিংকন এবং ডেমোক্রেট নেতা জন ব্রেকেনরিজ। যদিও রাজনৈতিক ক্যারিয়ার অনুযায়ী লিংকনের তুলনায় ব্রেকেনরিজের অর্জন এবং অভিজ্ঞতা ছিল বেশি। এখন অবধি জন ব্রেকেনরিজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট। ১৮৫৬ সালের নির্বাচনে জেমস বুচান্যান জয়লাভ করলে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করেন ব্রেকেনরিজ।

যদিও সে সময় মার্কিনিদের মাঝে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন আব্রাহাম লিংকন। ১৮৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত নতুন রিপাবলিক পার্টির হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পূর্বেই তার পরিচিতি ছিল। কারণ তিনি পশ্চিমাঞ্চলে দাসত্ব সম্প্রসারণের বিরোধিতা করছিলেন আগে থেকেই। নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করায় সাউথ ক্যারোলিনাসহ মোট ৬টি রাজ্যে বিচ্ছিন্নতা শুরু হয়। মূলত দক্ষিণাঞ্চলে দাসত্বের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে নিজের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ঘোষণা করেন লিংকন। আর তাই নির্বাচনে তার জয়লাভের বিষয়টি দক্ষিণের নেতারা নেতিবাচকভাবে দেখতে শুরু করে।

আব্রাহাম লিংকন; Image Source: Bettmann Archive/Getty Images

ব্রেকেনরিজ ডেমোক্রেট সমর্থক হলেও দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন পান স্টিফেন ডগলাস। অন্যদিকে, দক্ষিণের ডেমোক্রেটরা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ব্রেকেনরিজকে দাঁড় করায়। তিনি তার রানিংমেট হিসেবে বেছে নেন নবগঠিত ইউনিয়ন পার্টির নেতা এবং টেনেসির সিনেটর জন বেলকে। এতে দক্ষিণের ভোটগুলো ডেমোক্রেটদের বাক্সে না ঢুকে গিয়েছিল ব্রেকেনরিজ-জন বেলের পক্ষে। অন্যদিকে, প্রকৃত ডেমোক্রেট প্রার্থী স্টিফেন ডগলাস সীমান্ত অধ্যুষিত মিসৌরি ব্যতীত দক্ষিণের কোনো রাজ্যেই জয়লাভ করেননি।

রিপাবলিকানদের জয় অর্জনকে দাসত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ক্ষতিকর মনে করায় ক্ষমতার মসনদ হারিয়েছিল ডেমোক্রেটরা, যা দক্ষিণাঞ্চলে দীর্ঘদিনের বিচ্ছিন্নতার জন্ম দেয়। অন্যদিকে, ৪০ শতাংশ পপুলার ভোটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন আব্রাহাম লিংকন।

১৮৭৬ সালের নির্বাচন

আমেরিকায় গৃহযুদ্ধের আগে এবং পরে দীর্ঘদিন যাবত দক্ষিণাঞ্চলের লোকজন রিপাবলিকান ফেডারেল সরকারের অধীনে নিয়ন্ত্রিত ছিল। এতে করে তারা রাজ্যগুলোকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্গঠন এবং উত্তরাঞ্চলের মতো অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনবোধ করে। ১৮৭৬ সালের পূর্বে মধ্যপন্থী এবং উগ্র শ্বেতাঙ্গদের কারণে এমন চেষ্টা বার বার ব্যর্থ হয়েছিল। অন্যদিকে, স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে রিপাবলিকান সরকার দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগে বার বার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আসছিল। আর এই দুর্নীতিতে সেখানকার রাজনৈতিক লোকেরাও জড়িয়ে পড়ে।

শিল্পীর ছবিতে নির্বাচনের ভয়ঙ্কর চিত্র; Image Source: The New York Historical Society—Getty Images

দক্ষিণের এমন সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে ১৮৭৪ সালে হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে ডেমোক্রেটদের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। ১৮৭৬ সালের নির্বাচনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ডেমোক্রেট পার্টির নেতা স্যামুয়েল জে. টাইলডেন। তিনি তখন নিউ ইয়র্কের ২৫ তম গভর্নর ছিলেন। অন্যদিকে, জনপ্রিয়তা এবং ভোটের হিসেবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের প্রতিনিধি এবং ওহিওর গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা রাদারফোর্ড হায়েস। ফ্লোরিডা, লুসিয়ানা এবং সাউথ ক্যারোলিনায় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও ওরেগনের একটি ইলেক্টোরাল ভোট টাইলডেনের বিপক্ষে পড়ে। চারটি রাজ্যের ভোটের ফলাফল যখন অনির্ধারিত তখন এর সমাধান করতে কংগ্রেসের শরণাপন্ন হতে হয়।

কংগ্রেস অধিবেশনের চিত্র; Image Source: Bettmann Archive/Getty Images

১৮৭৭ সালে কংগ্রেসের অধিবেশনে একটি দ্বিপাক্ষিক কমিশন গঠনের মাধ্যমে সাংবিধানিক সংকট সমাধানের চেষ্টা করেন রাজনৈতিক নেতারা। যদিও পর্দার আড়ালে ঘটেছিল অন্য ঘটনা। দক্ষিণের নেতারা একটি চুক্তির মধ্য দিয়ে তিনটি রাজ্যের ইলেক্টোরাল ভোট রিপাবলিকান প্রার্থী রাদারফোর্ডকে প্রদান করেন। এই চুক্তির অংশ হিসেবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর দক্ষিণের ঐ সকল রাজ্য থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেন। যদিও ১৮৭৭ সালের এই সমঝোতার কারণে দ্বিতীয় আরো একটি গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা করছিলেন অনেক নেতা। এজন্য বড়সড় দাম দিতে হয়েছিল দক্ষিণের কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের। তাদেরকে বাদ দিয়েই শ্বেতাঙ্গদের প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে পরীক্ষা এবং পোল ট্যাক্সের নিয়ম প্রণয়ন করে রিপাবলিকান প্রশাসন। অন্যদিকে, শহরগুলোতে গণপরিবহন থেকে শুরু করে জনজীবনে শ্বেতাঙ্গ ডেমোক্রেটরা শ্বেতাঙ্গ সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে জন্য পৃথকীকরণ আইন পাশ করায়।

১৯৬০ সালের নির্বাচন

একাধারে ধনকুবের পরিবারের সন্তান, অপরদিকে রাজনৈতিক জীবনে জনপ্রিয়তার কমতি ছিল না জন এফ কেনেডির। ১৯৬০ সালের নির্বাচনে রিচার্ড নিক্সনের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় অনেক আমেরিকান তাকে পছন্দ করেননি। এছাড়াও তার পরিবার ছিল ক্যাথলিক খ্রিস্টান। যা-ই হোক, পপুলার ভোটের ৪৯.৯ শতাংশ নিয়ে এগিয়ে থাকেন জন এফ কেনেডি। অন্যদিকে, রিপাবলিকান প্রার্থী রিচার্ড নিক্সন ৪৯.৮ শতাংশ ভোট লাভ করেন। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক্সন বেশিরভাগ রাজ্যে এগিয়ে থাকলেও শুধুমাত্র ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে পরাজিত হন।

জন এফ কেনেডি; Image Source: Bettmann Archive/Getty Images

কেনেডির দুর্দান্ত বিজয়ের পথ সুপ্রসারিত করে ইলিনয় এবং টেক্সাসের ভোট। সেবারের সুইং স্টেট হিসেবে পার্থক্য গড়ে দেয় রাজ্য দুটি। একই সঙ্গে গুজব রটে কেনেডির বিলিয়নিয়ার বাবা জোসেফ, মাফিয়াদের দিয়ে ভোটারদের ভোটদানে প্রভাবিত করেন। টেক্সাসে কেনেডির পছন্দের সিনেটর লিন্ডন জনসন কৃষ্ণাঙ্গ ভোটগুলো ডেমোক্রেটদের পক্ষে আনার কাজে সাহায্য করেছিলেন বলে গুজব রটে। তথ্যানুযায়ী, স্থানীয় নেতারা কাউন্টি অঞ্চলের ভোটগুলো নিজেদের পছন্দমত প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখতেন।

নিক্সন এবং কেনেডি; Image source: Bettmann Archive/Getty Images

একই সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে চলমান উত্তেজনায় নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বেশি ব্যস্ততা দেখানোর সুযোগ পাননি রিচার্ড নিক্সন এবং ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান নেতারা। তবে তারা অভিযোগ এনেছিলেন ইলিনয়ে রিপাবলিকান বিরোধীরা ভোটে কারচুপি করে ফলাফল পাল্টে দিয়েছে। এই জয়ের পর জন এফ কেনেডি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম ক্যাথলিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তবে এখানেই শেষ হয়নি রিচার্ড নিক্সনের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। ১৯৬৯ সালে দেশটির ৩৭ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন রিপাবলিকান এই সফল রাজনীতিবিদ।

This article written about controversial US elections ever. These presidential elections brought out the wild side in our nation's ... was declared illegal and replaced, with controversial results.

Feature Image Source: BBC

Related Articles