
আজকে তোমায় দেখতে এলাম জগৎ আলো নূর-জাহান!
সন্ধ্যা রাতের অন্ধকার আজ জোনাক পোকায় স্পন্দমান।
বাংলা থেকে দেখতে এলাম মরুভূমির গোলাপ ফুল,
ইরান দেশের শকুন্তলা! কই সে তোমার রূপ অতুল?
(সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, কাব্য সঞ্চয়ন)
পদক পুরষ্কার অনেকেই পায়, কিন্তু গণিতের নোবেল খ্যাত ফিল্ডস পদক পাবার মেধা ও ভাগ্য খুব কম মানুষেরই হয়। ফিল্ডস পদক অনেক মেধাবীই পায় কিন্তু এখন পর্যন্ত নারী বিজয়ী একজনই আছেন। তিনি ইরান দেশের মরিয়ম মির্জাখানি। একটি ধারণা প্রচলিত আছে, মেয়েরা গণিত ও তাত্ত্বিক বিজ্ঞানে ছেলেদের তুলনায় খুব বেশি ভালো করতে পারে না। ধারণাটা একদিক থেকে সত্য, কারণ ইতিহাস ও পরিসংখ্যান এমনই বলছে। ইতিহাসে অনেক দিন পর্যন্ত নারীরা সীমাবদ্ধ ছিল, এখন যে খুব বেশি স্বাধীন হয়েছে তা না, কিন্তু তারপরেও আগের তুলনায় অবস্থা অনেক ভালো।
নারীরাও যে গণিতের মতো উচ্চমর্গীয় বিষয়ে জটিলতর গবেষণা করতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে তা দেখিয়ে দেবার সময় এখন এসেছে। প্রফেসর মরিয়ম মির্জাখানি তেমনই দেখিয়ে দিয়েছেন।
জন্ম ও শিশুকাল
১৯৭৭ সালে ইরানের তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। ইরানের রাজনৈতিক অবস্থাও তেমন একটা ভালো না। সামগ্রিকভাবে জাতিকে হিসেব না করে শুধু একজন ব্যক্তিকে নিয়ে আলোচনা করলে রাজনৈতিক অবস্থার চেয়ে সামাজিক অবস্থাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা দেবে। আর যা-ই হোক, অন্তত মেয়েদের জন্য ইরানের পরিবেশ খুব একটা ভালো ছিল না তখন। প্রতিকূল সমাজ ব্যবস্থার মাঝেই যতটুকু পেরেছেন ততটুকুই কাজে লাগিয়েছেন। প্রতিকূল পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও বলতে হবে তার ভাগ্য প্রসন্ন ছিল। তিনি যখন প্রাথমিক পর্যায়ে পড়তেন, তখন ইরাক-ইরান যুদ্ধ চলছিল। প্রাথমিকের গণ্ডি পার হবার পর যুদ্ধ শেষ হয়ে পরিস্থিতি শিথিল হয়। তখন সামাজিক অবস্থার কিছু উন্নতি হয়। এই সময়টাকে তিনিও ব্যবহার করেছেন নিজের প্রতিভার বিকাশের কাজে।

শিশুকালে মরিয়ম মির্জাখানি; Source: Quanta Magazine/Courtesy of Maryam Mirzakhani
গণিতের সর্বোচ্চ সম্মানজনক পদক অর্জনকারী হলেও শিশুকালে তার মাঝে গণিতবিদ হবার কোনো চিহ্ন দেখা যায় না। বইয়ের প্রতি প্রবল ভালোবাসা ছিল। বইয়ের দোকানে দোকানে ঘুরে বেড়াতেন এবং অল্প দামে বই পেলে লাফিয়ে লাফিয়ে কিনে ফেলতেন। একদম নিখাদ বইপোকা। সেসব গল্প-উপন্যাস পড়তেন এবং মুগ্ধ হতেন। গণিতবিদ হবার চিন্তা মাথার ধারেকাছেও মনে হয় তখন আসেনি। লক্ষ্য ছিল যতগুলো বই সংগ্রহ করবেন সবগুলো বই ধরে ধরে পড়ে শেষ করে ফেলবেন। লেখক হবার একটি সুপ্ত ইচ্ছে হয়তো তখন ছিল।
লেখক হোক আর যা-ই হোক, চমৎকার কিছু একটা করে দেখাতে হবে, অসাধারণ কিছু একটা হয়ে দেখাতে হবে এমন ইচ্ছে ছোটবেলা থেকেই ছিল। ঐ সময় বই পড়ার পাশাপাশি টেলিভিশনে বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তির জীবনীর প্রামাণ্যচিত্র (ডকুমেন্টারি) দেখতেন। সেসব বিখ্যাত ব্যক্তির মাঝে নারী বিজ্ঞানী মেরী কুরি এবং নারী লেখক হেলেন কেলারও ছিল। এই প্রামাণ্যচিত্র দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন তাকেও এমন বড় কিছু হতে হবে।
মির্জাখানির বন্ধুভাগ্যও বেশ ভালো। স্কুলে থাকা অবস্থায় একজন বান্ধবী জুটিয়ে ফেললেন। এই বান্ধবীও তার মতো বইয়ের পোকা। সারা জীবনব্যাপী ছিল তাদের বন্ধুত্ব। বান্ধবীও পরবর্তীতে গণিত নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং অনেক বড় হন। বর্তমানে তিনি ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে গণিতের প্রফেসর হিসেবে আছেন। তার নাম রয়া বেহেশতী।

মরিয়ম মির্জাখানির বান্ধবী ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির গণিতের প্রফেসর রয়া বেহেশতী; Source: Washington University
গণিত
গণিতে যে মির্জাখানির খুব বেশি আগ্রহ ছিল না তার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থাতেই। গণিত পরীক্ষায় খুব খারাপ করলেন। পরের বছর ভাগ্যক্রমে চমৎকার একজন শিক্ষক পেলেন যার প্রভাবে তিনি গণিতে আগ্রহ পেয়ে বসলেন। উন্নতি হতে লাগলো দ্রুত। অল্পতেই ক্লাসের মাঝে বিখ্যাত হয়ে গেলেন।
পরে গেলেন উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে থাকা অবস্থায় একদিন তার এবং তার বান্ধবী বেহেশতীর হাতে আসে সে বছরের জাতীয় পর্যায়ের ইনফরমেটিকস অলিম্পিয়াডের প্রশ্ন। এই প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রোগ্রামিং দক্ষতা যাচাই করা হয়। জাতীয় পর্যায়ের এই প্রশ্নে মোট সমস্যা ছিল ছয়টি। প্রতিযোগিতায় এর উত্তর দিতে হয় মোট তিন ঘণ্টায়। মির্জাখানি ও তার বান্ধবী মিলে দুই দিন লাগিয়ে খেটেখুটে তিনটি সমস্যার সমাধান করলেন।
যেখানে একটি সমস্যার সমাধান করতে পারলেই তারা খুশি, সেখানে তারা করে ফেললেন তিন তিনটি। তিনটির সমাধান করতে পেরে বেশ উৎফুল্ল হয়ে দুজনে মিলে চলে গেলেন স্কুল প্রধানের কাছে। তখন মেয়েদের জন্য বিশেষভাবে প্রবলেম সলভিং করানো হতো না। তখনো ইরান থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো মেয়ে গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করেনি। তারা স্কুল প্রধানের কাছে দাবী করলেন, ছেলেদের মতো করে তাদেরকেও প্রবলেম সলভিংয়ের বিশেষ ক্লাস করাতে হবে।
তাদের ভাগ্য ভালো ছিল, কারণ স্কুল প্রধান বেশ ইতিবাচক ছিলেন। দাবী মতো উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তাদের জন্য। কিন্তু তারপরেও কিছুটা শংকা রয়ে গিয়েছিল, এর আগে ইরান থেকে কোনো মেয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গণিত অলিম্পিয়াডে যায়নি, তারা যেতে পারবে তো? তবে তিনি ইতিবাচক ছিলেন, তাদেরকে উৎসাহ দিয়েছিলেন, এর আগে কোনো মেয়ে যায়নি তো কী হয়েছে? আগে কোনো মেয়ে অংশগ্রহণ করেনি তার মানে এই না যে তোমরা অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তোমরাই হবে মেয়েদের মাঝে প্রথম অংশগ্রহণকারী, কাউকে না কাউকে তো প্রথম হতেই হবে। কোয়ান্টাম ম্যাগাজিনের এক সাক্ষাৎকারে মির্জাখানি বলেছেন, তার পরবর্তী জীবনে এই কথাগুলো সুদূরপ্রসারী প্রভাব রেখেছে- “I think that has influenced my life quite a lot.”

আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে মেয়েরা অংশগ্রহণ করতো না তখন; Source: M. Sadegh Riazi/Rice University
১৯৯৪ সালে মির্জাখানির বয়স তখন ১৭। মির্জাখানি এবং বেহেশতী দুজনেই আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করেন। সে বছর প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় হংকং-এ। প্রতিযোগিতায় মোট পয়েন্ট থাকে ৪২। ৪২-এর মাঝে ৪১ তুলে সে বছর স্বর্ণ পদক অর্জন করেন মির্জাখানি। এটা বেশ ভালো ফলাফল। পরের বছর প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় কানাডায়। সেখানেও মির্জাখানি অংশগ্রহণ করেন এবং ৪২ এর মাঝে ৪২ পয়েন্ট অর্জন করেন। দ্বিতীয়বারের মতো সেখানেও অর্জন করেন স্বর্ণ পদক।

কানাডায় স্বর্ণপদক বিজয়ী মরিয়ম মির্জাখানি (ডান থেকে তৃতীয়); Source: ABC
উচ্চশিক্ষা
১৯৯৯ সালে তেহরানের শরিফ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি থেকে গণিতে স্নাতক সম্পন্ন করার পর স্কলারশিপ নিয়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে। সেখান থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন ২০০৪ সালে। ২০০৮ সালে মাত্র ৩১ বছর বয়সে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেন।
গণিতে তরতর করে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এই যাত্রা যে একদম সাবলীল ছিল তা না। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে যখন আসেন তখন কার্টিস ম্যাকমুলানের সেমিনারে অংশগ্রহণ করছিলেন। ম্যাকমুলানও অনেক বিখ্যাত গণিতবিদ। ১৯৯৮ সালে তিনি গণিতের ফিল্ডস পদক পেয়েছিলেন। মির্জাখানি প্রথম প্রথম যখন সেমিনারে অংশগ্রহণ করছিলেন, কিছুই বুঝতে পারছিলেন না তেমন। সেমিনার হচ্ছিল অধিবৃত্তিক জ্যামিতি (hyperbolic geometry)-র উপর। ম্যাকমুলানের কথার কিছু না বুঝলেও অধিবৃত্তিক জ্যামিতি নামক বিষয়টির বিষয়বস্তু তাকে মুগ্ধ করতে থাকে। এমনিতেও জ্যামিতির এই শাখাটি সূত্রের দিক থেকে দেখতে কঠিন হলেও বাইরের দিক থেকে বেশ সুন্দর!

১৯৯৮ সালে ফিল্ডস পদক জয়ী গণিতবিদ কার্টিস ম্যাকমুলান; Source: University of Washington
সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মির্জাখানি ম্যাকমুলানের অফিসে যাওয়া শুরু করলেন এবং এই সংশ্লিষ্ট নানা ধরনের প্রশ্ন করতে থাকেন। এক সাক্ষাৎকারে ম্যাকমুলান বলছেন- “মির্জাখানির কল্পনা ছিল বাধহীন ও নির্ভীক। কল্পনায় গণিতের অসাধারণ কিছু তৈরি করে তাদেরকে সূত্রবদ্ধ করতো। আমার কাছে সেগুলো উপস্থাপন করার পর যখন জানতে চাইতো ‘এগুলো ঠিক আছে কিনা?’ তখন অন্যরকম অভিভূত হতাম। সে মনে করেছিল আমি হয়তো এগুলো সম্পর্কে জানি!”
মির্জাখানি অধিবৃত্তিক তল নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠলেন। সাধারণ জ্যামিতির সাথে এই তলের জ্যামিতির মাঝে বেশ পার্থক্য। নিচের ছবিতে ডোনাট আকৃতির বক্র একটি তল দেখা যাচ্ছে যার মাঝে তিনটি গর্ত আছে। এটি একটি অধিবৃত্তিক তল।

অধিবৃত্তিক তল; Source: Wikimedia Commons
আরো কিছু ব্যাপার মির্জাখানিকে প্রচলিত গণিতের বাইরের এই জগৎ সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলে। যেমন সরল রেখা ও জিওডেসিক। এই জ্যামিতিতে দেখা যায় বাঁকানো রেখাও সরল রেখা হতে পারে। আসলে কোন রেখা বাঁকানো আর কোন রেখা সোজা তা দিয়ে সরল রেখার সংজ্ঞা নির্ধারিত হয় না। কোনো তলে দুটি বিন্দুর মাঝে সর্বনিম্ন দূরত্বকে সরল রেখা বলে। বিন্দু দুটি যদি সমতলে অবস্থান করে তাহলে সংযোগ রেখাটি সোজা হবে আর বিন্দু দুটি যদি বক্র তলে অবস্থান করে তাহলে সংযোগ রেখা বাঁকা হবে। যেমন পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আঁকা কাল্পনিক অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা রেখা। এরা সরল রেখা।

এখানের লম্বালম্বি করে আঁকা রেখাগুলো বক্র দেখালেও আসলে তারা সরল রেখা। সমতলের পরিবর্তে বক্র তলে অবস্থান করছে বলে তাদেরকে বক্র বলে মনে হচ্ছে; Source: icsm
গোলকীয় তলের উপর আঁকা আপাত বক্র কিন্তু আসলে সরল রেখাকে বলে জিওডেসিক। ২০০৪ সালে মির্জাখানি জিওডেসিকের উপর পিএইচডি সম্পন্ন করেন। গণিতের সেরা সেরা জার্নালে তার গণিত সংক্রান্ত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এদের মাঝে আছে অ্যানালস্ অব ম্যাথমেটিকস, ইনভেনশনস ম্যাথমেটিকা, জার্নাল অব দ্য আমেরিকান ম্যাথমেটিকাল সোসাইটি প্রভৃতি।
ব্যক্তিজীবনে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন ইয়ান ভনড্রেক নামে একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানীকে। তিনি পরবর্তীতে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির এসোসিয়েট প্রফেসর হন। তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানও হয়। কন্যার নাম আনাহিতা।

মির্জাখানির কোলে কন্যা আনাহিতা; Source: Payvand News Of Iran
ফিল্ডস পদক প্রাপ্তি
তাকে যখনই জিজ্ঞেস করা হয় গণিতে আপনার গুরুত্বপূর্ণ অবদানটি সম্পর্কে কিছু বলবেন কি, তখন তিনি লজ্জা মিশ্রিত গলায় উত্তর দেন- আমার কাজ আসলে গণিতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। আমার কাছে কখনো তেমন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়নি। আসলেই, জ্ঞানী মানুষরা নিজেদেরকে এবং নিজেদের কাজকে এভাবেই ব্যক্ত করেন- তার কাজ তেমন মূল্যবান কিছু না।
২০১৪ সালে যখন তাকে ইমেইল করে জানানো হয় যে তিনি ফিল্ডস পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন, তখন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। প্রতি চার বছর পর পর গণিতে অবদানের জন্য ফিল্ডস পদক প্রদান করা হয়। গণিতের জন্য নোবেল পুরষ্কার বরাদ্দ নেই। সেজন্য গণিতের সর্বোচ্চ এই পদকটিকেই গণিতের নোবেল বলা হয়।

২০১৪ সালে ফিল্ডস পদক গ্রহণের মুহূর্তে; Source: ams
ভিন্নরকম খেয়াল ছিল মির্জাখানির। খাতায় দলছুট হিজিবিজি আঁকাআঁকি করতেন। এসব আঁকাআঁকি আবার হতো গণিতকেন্দ্রিক। গণিতের যে ভাবনাগুলো তার মাথায় আসতো তাদেরকে যেন একটা শৈল্পিক রূপ দিয়ে দিতেন আঁকার কাগজে।

মির্জাখানির হিজিবিজি গণিত; Source: Quanta Magazine/Thomas Lin
মৃত্যু
২০১৩ সালে তার স্তন ক্যানসার ধরা পড়ে। তখন বয়স মাত্র ৩৫ এর কোঠা পার হয়েছে। এমন মেধাবী গণিতবিদ যদি চল্লিশ বছর হবার আগেই এমন মরণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে যান, তখন খুবই খুবই দুঃখ লাগে। এ ধরনের মেধাকে কম করে হলেও একশো বছর প্রয়োজন এই পৃথিবীর। চিকিৎসা চলছিল, কিন্তু সেরে উঠতে পারেনি। চার বছরে সেটা বেড়ে অস্থিমজ্জা (বোনম্যারো) পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। ক্যানসারের সাথে যুদ্ধ করে মাত্র ৪০ বছর বয়সে গত ১৫ তারিখ (১৫/০৭/২০১৭) তিনি পরলোকগত হন।

ইরানের ইস্পাহান ভ্রমণে বাবা মায়ের সাথে; Source: Quanta Magazine/Courtesy of Maryam Mirzakhani
গণিতকে প্রথাগতভাবে পুরুষদের বিষয় বলে ভাবা হতো। নারীদেরকে নাকি এই ক্ষেত্রে ভালো মানায় না। কিন্তু মরিয়ম মির্জাখানি সেই প্রথার শক্ত জবাব দিয়েছেন গণিতের সর্বোচ্চ অর্জনের মাধ্যমে। তিনি হয়তো অল্প বয়সে গত হয়েছেন, কিন্তু তার প্রভাব বিদ্যমান থাকবে আরো শত শত বছর। তার পদাঙ্কে অনুপ্রাণিত হয়ে এগিয়ে আসবে আরো অনেক অনেক নারী।