দীর্ঘদিন একটা জায়গায় থাকার পর হঠাৎ সেটা ছেড়ে দিতে চাইলে আমাদের সবারই মনটা একটু খারাপই হয় বৈকি। মানুষের এই আবেগগুলো সত্যিই অকৃত্রিম। পুরনো স্মৃতিঘেরা জায়গা থেকে তবু মানুষ নতুন জায়গায় যায় পরিবর্তনের অমোঘ আকাঙ্ক্ষা থেকেই। জীবন বদলে যায় প্রতিমুহূর্তে, জীবনে ঘটনা প্রবাহ আর কুশীলবেরাও তেমনি বদলায় সময়ের সাথে সাথে।
প্রতিটি পরিবারের জীবনেই বাসা-বাড়ি দারুণ এক আবেগপ্রবণ কুশীলব। সেকারণেই যদি কখনও সিদ্ধান্ত হয় বাসা বদলে ফেলার, স্বাভাবিকভাবেই পরিবারের সবার মধ্যেই কাজ করে কিছু হাহাকার কিংবা সুতো ছেঁড়ার বেদনা। তবে মেঘের পেছনে সূর্যের আলোর মতো আনন্দটা আসে এই বদলে ফেলার গোছগাছের সময়।
সবাই মিলে যখন বাসার জিনিসপত্র গোছাতে শুরু করে দেয়, তখন যেন এই বেদনার গাড় প্রলেপটুকু ধীরে ধীরে ম্লান হতে শুরু করে। কেউ এখান থেকে একটা পুরনো ছবি খুঁজে পায় তো, কেউ ওখান থেকে বের করে আনে একটা স্মৃতিমাখা চাদর। কত হারিয়ে যাওয়া ছোটখাটো জিনিস যে আবার ফেরত আসে বাসার একোণা-সেকোণা থেকে! সবাই মিলে এমন আনন্দের সাথে বাসার গোছগাছ চলতে থাকে, পরিবর্তনের প্রস্তুতি হতে থাকে পুরোদমে।
তবে গোছানোর কাজটা কিন্তু সবসময় যে এমন আনন্দঘন হয়, তা-ও না। কারণ, এই প্রচণ্ড ব্যস্ততার মাঝে ঘরের এসব কাজের জন্য সময় খুঁজে বের করা তো আর সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। সেকারণে দেখা যায়, তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে সবকিছু ঠিকভাবে গোছানো হয়ে উঠে না, নতুন বাসায় যাওয়ার আগে যেভাবে সবকিছু ঠিকঠাক করে নেওয়ার কথা ছিল, ঠিক সেভাবে আর যাওয়া হয়ে উঠে না। আবার সবাই দায়িত্ব নিতে না পারার কারণে হোক, কিংবা সবার সবকিছুতে অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে হোক, বাসার সবরকমের জিনিসপত্র ঠিকমতো গোছানোর কাজটা কিন্তু মাঝে মাঝে ঝামেলারই হয়ে দাঁড়ায়। হুট করে দেখা গেল, কাচের একটা জিনিস ভেঙে গেল, আবার হয়তো দেখা গেল ভারী কিছু তুলতে গিয়ে ঘরের বয়স্ক কারও কোমর ধরে গেল— এমন ধরনের ঘটনাও খুবই স্বাভাবিক।
সব একরকম করে গুছিয়ে নিয়ে ফেলার পরের ধাপটা অবশ্য সবসময়ই সত্যিই বেশ ঝামেলার। সেটা হলো, সবকিছু নতুন বাসায় নিয়ে যাওয়া। স্বাভাবিকভাবেই কাউকে দায়িত্ব নিতে হয় পিক-আপ ট্রাক বা রিকশা ভ্যান ভাড়া করার। সব জায়গায় তো আর সেগুলো পাওয়াও যায় না। আবার নানা জায়গা খুঁজে পছন্দসই যানবাহন পাওয়াটাও সবসময় হয় না। ট্রাক পছন্দমতো হলে হয়তো দেখা যায়, দরদামে কিছুই মিলছে না। কিংবা যারা ট্রাকের দায়িত্ব নিয়ে আসছেন, তাদেরকেও ঠিক মনমতো মনে হচ্ছে না।
কোনোমতে মোটামুটি সব মিলিয়ে একটা ভ্যান বা ট্রাক আর মানুষজন নিয়ে এলেও সব শেষ হয় না। পুরোটা সময় তাদের সাথে থেকে সতর্ক নজর রাখতে হয় কাজের দিকে। কিছু একটা ভেঙে গেল কিনা কিংবা ঠিকমতো সব গাড়িতে উঠল কিনা সেগুলো খেয়াল রাখতে হয়। আবার নতুন বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কাজটা ঠিকমতো হলো কিনা, সেটাও নিজেদের দায়িত্ব নিয়েই দেখে রাখতে হয়।
এই যখন একটা বাসা পাল্টানোর জন্য আজকের সময়ের মোটামুটি স্বাভাবিক চিত্র, তখন যদি এমন কিছু পাওয়া যায় যে, বাসা পাল্টানোর জন্য কাউকে কিছু গুছিয়ে দিতে হবে না, খাট-পালঙ্ক খুলে দিতে হবে না, খুঁজে খুঁজে দরদাম করে ট্রাক ঠিক করতে হবে না, যারা পাল্টাতে আসবে তাদের দিকেও সারাক্ষণ নজর রাখতে হবে না, জিনিসপত্রের সুরক্ষা নিয়েও ভাবতে হবে না- তাহলে তো সবাই নিশ্চয়ই ভাববেন, এটা কি আসলেই সম্ভব?
হ্যাঁ, সম্ভব। Sheba.xyz নামের একটি অনলাইন সার্ভিস মার্কেট বাংলাদেশে এমন একটি অ্যাপ নিয়ে এসেছে, যেটার মাধ্যমে আপনি শুধু মোবাইল থেকে দেখে কোনো একটি শিফটিং প্রতিষ্ঠানকে বাসায় ডেকে নেবেন। তারা ফোনে আপনার কাছে জেনে নেবে কী কী ধরনের জিনিস নিয়ে আপনি বাসা পাল্টাতে চাচ্ছেন, দরকারে তারা বাসায় এসেই একবার সবকিছু দেখে যাবে। সেগুলো গুছিয়ে নিয়ে যেতে কিংবা আপনি গোছানোর পর শুধু নিয়ে যেতে কত খরচ হতে পারে, সেটাও জানিয়ে দেবে তারা। ব্যস এটুকুই। আপনি তাদের কনফার্ম করে ফেললে, নির্ধারিত দিনে এসে তাদের লোকজন নিজ দায়িত্বে সবকিছু গুছিয়ে গাড়িতে তুলে পৌঁছে দেবে আপনার নতুন বাসায়। আপনাকে বিন্দুমাত্র চিন্তা করতে হবে না সেবার মান নিয়ে, কারণ আপনি আগেই অ্যাপের মধ্যে দেখে নিতে পারবেন কোন সার্ভিসদাতা সম্পর্কে এর আগে অন্যান্য গ্রাহক কী কী বলেছেন।
মোবাইল আর ইন্টারনেট প্রযুক্তি যেভাবে দুনিয়া বদলে দিচ্ছে, ঘরে বসে মোবাইলের একটি অর্ডারেই আপনি পেয়ে যাচ্ছেন দক্ষ সেবাদাতা। জিনিসপত্র প্যাকেজিং থেকে শুরু করে ট্রাক খোঁজা, দরদাম করা, বাসা পাল্টানো- সবকিছুই মাত্র একটা অ্যাপের মাধ্যমেই যদি হয়ে যায়, তাহলে এর চেয়ে দারুণ সহজ আর কী আছে! বাসা হোক, কিংবা অফিস, যেকোনো রকমের শিফটিংয়ের কাজের জন্যই দক্ষ মানুষদের আপনি পাবেন এই অ্যাপে। তাহলে আর কী? বাসা পাল্টে দিক Sheba.xyz, আপনি থাকুন নিশ্চিন্ত!