দানে দানে তিন দান।
পাকিস্তান-ভারতের পর দক্ষিণ আফ্রিকা — সেই মৌসুমটা ছিল বাংলাদেশের জন্যে মধুচন্দ্রিমার মতো। এমন এক বছর, এমন এক মৌসুম পাওয়ার জন্যে যেকোনো ক্রিকেটদলের সমর্থকই চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় থাকবে। আমরা অবশ্য অপেক্ষায় ছিলাম না, বরং তার আগের বছরটা আমাদের জন্যে ছিল ভুলে যাওয়ার মতো এক বছর। কিন্তু হুট করেই কোচ বদল হলো, বদলে গেল অধিনায়কের আর্মব্যান্ড বাঁধা থাকে হাতটাও। বাংলাদেশ দলটা বিশ্বকাপেও দারুণ পারফর্ম করলো। বিভীষিকার মতো এক বছর শেষ করে একটা দল বিশ্বকাপে গিয়েই উঠে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে। তবে কোয়ার্টার ফাইনালেই বিতর্কিতভাবে থেমে গেলেও বাংলাদেশ দলের জয়রথের সবচেয়ে বড় গল্পটাই তখনও লেখা বাকি ছিল।
এতক্ষণে হয়তো বুঝে ফেলেছেন, ঠিক কোন বছরটার কথা বলছি আমি। অবশ্য বুঝবেন না-ই বা কেন! অন্ধের যষ্টির মতো গল্প করার মতো বছর তো আমাদের ঐ একটাই আছে, ২০১৫-১৬ মৌসুম। বিশ্বকাপের পর পাকিস্তান এল, পাকিস্তানের পর ভারত, আর শেষপাতে দক্ষিণ আফ্রিকা। একেকটা রথী-মহারথীরা মিরপুরে আসে, আর ব্যর্থমনোরথে ফিরে যায়।
বাংলাদেশ সেই প্রথম বোধহয় দেশের মাটিতে প্রতাপশালী হয়ে উঠল। আমরাও তখন মনে করতে লাগলাম, বাংলাদেশ ক্রিকেটের বহু প্রতীক্ষিত সুদিনের গাছটা বোধহয় এবার আস্তে আস্তে ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। কিন্তু অনুপম রায়ের ঐ গানটার মতো আমাদের আর বিশ্বাস হলো না,
“সব পেলে নষ্ট জীবন”
কিংবা হয়তো আপনার অধিকারও আছে বিশ্বাস না করার। সব পেলে হয়তো নষ্ট জীবন, কিন্তু কিছুই না পেলে? ভাবছেন ভুল বকছি? একেকটা দল এসে মাথা নিচু করে ফিরে যাচ্ছে, সেখানে আবার না পাওয়ার হিসাব আসে কোথা থেকে?
আসে। প্রবল প্রাপ্তির জোয়ারে কখনো কখনো বুকের কোণে ডালপালা মেলে অপ্রাপ্তির খোঁজ, বিরাট প্রতিপত্তির জীবনেও কখনো কখনো উঁকি মেরে জানান দেয় কেউ কেউ — কী একটা যেন নেই আমাদের। একই রকম এই অপ্রাপ্তির অনুভূতি আমাদেরও হয়েছিল। দেশের মাঠে যখন আমরা তৃপ্ততার অবগাহনে ভেসে যাচ্ছি, দেশের বাইরে আমরা তখনও দুগ্ধপোষ্য শিশু। আর তাই অনুসিদ্ধান্তের মতো দলটা তখন আস্তে আস্তে অনুভব করছে, ঘর জয়ের পর দেশের বাইরেও জয় চাই। জিওফ বয়কটের মতো কিংবদন্তীরাও একই সুরে সুর মেলাচ্ছেন তখন,
“তাদের কয়েকটা ওয়ানডে জিতলেই হবে না। তাদের দেশের বাইরে যেতে হবে, আর অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের বিপক্ষে জিততে হবে।”
বাংলাদেশের সামনে এই উপলক্ষ্যও এসেছিল। ২০১৬ সালেই বাংলাদেশ গেছিল নিউ জিল্যান্ডে। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চ আর নেলসনে হওয়া সে তিন ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ৭৭ রান, ৬৭ রান, আর ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে। দেশের বাইরে জেতা যে খুব একটা সহজ না, সেটা আমরা অনুধাবন করলাম। আমাদের অনুধাবনকে অবশ্য পুরোপুরি সত্যি হতে দিল না শ্রীলঙ্কা, দ্বীপদেশটিতে গিয়ে আমরা সেবার একটা ওয়ানডে জিতে ফেলেছিলাম। তাহলে দেশের বাইরেও কি জিততে শুরু করেছি আমরা?
হয়তো হ্যাঁ, কিংবা হয়তো না। কারণ আমরা তখন ছিলাম এক শূন্য দোলাচলের মধ্যে। দেশের বাইরে আমরা কখনও কখনও দারুণ খেলে ফেলি, আবার কখনও কখনও ফিরে আসি শূন্য হাতে। এই যেমন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির কথাই ধরুন। বৃষ্টির আশীর্বাদ আর কার্ডিফের সেই মহাকাব্যের পর আমরা তো সেমিফাইনালেই চলে গেছিলাম। কিন্তু, তাও! দেশের বাইরে জেতার যে দাম্ভিকতা, সেটাও কি ঠিক আমাদের ছিল? কিংবা যদি থাকেও, তা কি আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি?
আমাদের সামনে সেই সুযোগ ছিল। বিশ্ব ক্রিকেট যখন দ্বিধায় আছে, বাংলাদেশ নামক দেশটা ওয়ানডেতে সত্যিই দেশের বাইরে জিততে শুরু করেছে কি না, আমদের সামনে সুযোগ চলে এল, এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার। ২০১৭ সাল, দক্ষিণ আফ্রিকা সফর!
দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০১৭
বাংলাদেশের যেকোনো ক্রিকেটভক্তই ২০১৭ সালের ঐ সফরটা ভুলে যেতে চাইবে। সেই সফরের আগে দল ভেবেছিল, অন্তত এবার দক্ষিণ আফ্রিকার জুজুটা তারা কাটাতে পারবে। জুজু কাটাতে না পারুক, অন্তত চিরায়ত অপমানের সাক্ষী হতে হবে না। আর কিছু না হোক, একটা ম্যাচ! অন্তত একটা ম্যাচ জিততে পারবে দল। কিন্তু বিধি বাম। সেবার এমনভাবে অপদস্থ হয়েছিল বাংলাদেশ, যেটা নিকট ভবিষ্যতে দল কবে হয়েছিল কেউ বলতে পারে না।
কিম্বার্লির ঐ প্রথম ম্যাচটার কথাই ধরুন। মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে বাংলাদেশ করেছিল ২৭৮। ২৭৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা সে ম্যাচে যা করেছিল, সেটাকে আসলে ছেলেখেলা বললেও কম বলা হয়। ৪২.৫ ওভারে তারা ম্যাচটা জিতে নিয়েছিল কোনোরকম উইকেট না হারিয়েই! হ্যাঁ, ভুল পড়েননি। সাতজন বোলার মিলে ৪২.৫ ওভার বল করেও সেবার দক্ষিণ আফ্রিকার একটা উইকেটও ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। এতটাই অসহায় ছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
কিম্বার্লি রেখে আপনি ঘুরে আসতে পারেন ‘পার্ল’ কিংবা ‘ইস্ট লন্ডন’-এ। কিন্তু তাতেও অপদস্থ কিংবা ইংরেজিতে ঐ ‘হিউমিলিয়েশন’-এর মাত্রা এতটুকুও কমবে না। কেননা, দ্বিতীয় ম্যাচে ১০৪ রান আর তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ দল হেরেছিল ২০০ রানের বিশাল ব্যাবধানে। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মুশফিক কিংবা ইমরুল কায়েস কিছু মান বাঁচানো ইনিংস খেলেছিলেন বটে, কিন্তু বোলারদের হাল ছিল এক্কেবারে যাচ্ছেতাই। পার্লে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকা করেছিল ৩৫৩, আর ইস্ট লন্ডনের শেষ ওয়ানডেতে প্রোটিয়ারা স্কোরবোর্ডে তুলেছিল ৩৬৯ রানের বিশাল সংগ্রহ। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপের সামনে এতটাই অসহায়, এতটাই নখদন্তহীন ছিল বাংলাদেশী বোলাররা! অথচ, এর আগের বছরটাও কি দুর্দান্তই না কেটেছিল বাংলাদেশের। সাদা পোশাকে তারা প্রথমবারের মতো হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। আর তাই যখন ঘর বদলে ঘরের বাইরে গিয়ে এমন বিভীষিকাময় এক সফর করল বাংলাদেশ, ওটার বিশেষণ দিতে গেলে আসলে ইএসপিএন ক্রিকইনফোর বাংলাদেশকে নিয়ে করা রিপোর্টের ঐ হেডলাইনটাই দিতে হবে –
“From the heights to hell”
আসলেই যেন তাই। সুউচ্চ রাজসিংহাসন থেকে বাংলাদেশ যেন মুহূর্তেই পতিত হলো নরকের নিম্নভূমিতে!
বৈদেশিক ব্যর্থতা এবং এরপর…
দক্ষিণ আফ্রিকার সেই সিরিজের পর অনেকটা সময় কেটে গেছে। কত কত চন্দ্রভুক অমাবস্যা পার হয়ে গেছে, বড় হতে হতে কবির মাথা ফুঁড়ে গেছে সিলিংয়ের ছাদ, কিন্তু নাদের আলীর মতো কথা রাখেনি বাংলাদেশও। কিংবা হয়তো কথা রাখার সামর্থ্যই দেশটির ক্রিকেটের ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকার ঐ সিরিজের পর বাংলাদেশ দেশের বাইরে প্রতিপক্ষের মাঠে ওয়ানডে খেলেছে আরো ১৭টা। এই ১৭টা ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে মাত্র ৬টা ম্যাচে। সেই ছয়টা ম্যাচের চারটের প্রতিপক্ষ আবার জিম্বাবুয়ে আর আয়ারল্যান্ড। এমন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দেশে জিতলেই কী, আর দেশের বাইরে জিতলেই কী — অমন করে তো আর স্বাদ পাওয়া যায় না। বাংলাদেশও পায়নি। মাঝে অবশ্য উইন্ডিজের সাথে দুটো ম্যাচে জিতে সিরিজ জয়ের স্বাদ পাওয়া গেছে, সাথে আবারও একটা প্রশ্ন উদয় হয়েছে মনে — দেশের বাইরে কি জিততে শিখেছে বাংলাদেশ?
কিন্তু যতবারই এই প্রশ্ন এসেছে, ততবারই বাংলাদেশকে উত্তর দিয়েছে নিউ জিল্যান্ড কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্ত প্রতিপক্ষরা। উইন্ডিজের সাথে জয়টাকে হয়তো উপভোগ্য বলা যায়, দারুণ একটা সফর বলা যায়, কিন্তু অবচেতন মনে আপনিও জানেন — ঘরের মাঠে হলেও উইন্ডিজ আর ওয়ানডেতে সেই অভিজাত কোনো দল নয়। বাংলাদেশকে তাই জিততে হতো বড় কোনো দলের বিপক্ষে। নিউ জিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরের মাঠের একটা জয় — বাংলাদেশ কি এই একটা মাত্র জয় আনতে পারবে?
শেষটাকে অবশ্য এখন আর প্রশ্নবোধক বাক্যে বলার সুযোগ নেই। বরং ব্যাকরণ পাল্টে বাক্যের গঠন আমরা বিবৃতিতেই দিতে পারি। সহজ আর সাবলীল একটা বাক্যেই আমরা উত্তর দিতে পারি — দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ম্যাচ জিততে পেরেছে বাংলাদেশ।
ক্যালেন্ডারের পাতায় দাগ দিয়ে রাখতে পারেন। কিংবা শক্ত কোনো স্মৃতিশক্তির ধারক হলে মনের কোণে গেঁথে নিতে পারেন আজকের তারিখটা — বাংলাদেশ এদিন জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, তাদেরই মাটিতে। ২০১৭ সালে যে দলটা স্রেফ পাত্তাই দেয়নি বাংলাদেশকে, বাংলাদেশ আজ তাদের বিপক্ষে জিতে গেছে আয়েশি ভঙ্গিতে। আর তাই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের রিভিউতে সাড়া দিয়ে আম্পায়ার যখন নিজের সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেললেন, তখন আরেকবার ২০১৭তে তো তারা ফিরে যেতেই পারেন। যে দলটার একটা উইকেটও ফেলতে পারেনি এমন ম্যাচও গেছে বাংলাদেশের, সেই দলটার গোটা দশেক উইকেটের সব ক’টি তুলে নিয়েই ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। এর চাইতে ভালো চিত্রনাট্য কি কেউ লিখতে পারত?
দক্ষিণ আফ্রিকার জট
ঘরের বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকা বরাবরই বাংলাদেশের জন্যে শক্ত প্রতিপক্ষ। পচেফস্ট্রুমে সেই যে ২০০২ সালের ৩রা অক্টোবর থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদের আর হারাতেই পারছে না তারা। এর মধ্যে আজকের ম্যাচের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদের বিপক্ষে যে ৯ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, তার মধ্যে তিনটে ম্যাচেই হারতে হয়েছে ১০ উইকেটের ব্যবধানে। এই তিনটে ম্যাচ বাদ দিকে বাকি ৬ ম্যাচেও আছে মাথা নিচু করা ইতিহাস। চারটে ম্যাচেই যে হারের ব্যবধান ছিল একশ’ রানের বেশি, যার একটা আবার ছুঁয়ে ফেলেছে দুইশ’ রান। আর যে দুটো ম্যাচের গল্প বাকি রয়ে গেল, তাতে হারের ব্যাবধান ছিল ৭ উইকেট ও ৬১ রান। বুঝতেই পারছেন, বাংলাদেশের জন্যে দক্ষিণ আফ্রিকা কি অসম্ভব এক দুর্গ হয়েই না ছিল। আর সেই দুর্গ যখন আজ জয় করা গেছে, এ আনন্দ কি আকাশে কিংবা বাতাসেও ঠাঁই দেওয়া যায়?
তাসকিন আহমেদ
তাসকিন আহমেদ নতুন করে ফিরে এসেছেন, ছাই থেকে ফিনিক্স পাখির মত জেগে উঠে নবরূপে সাজিয়েছেন নিজেকে। দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে তিনি ওয়ানডে খেলেছিলেন চট্টগ্রামে, ২০২১ সালের ২৫শে জানুয়ারিতে। কিন্তু এই যে তাসকিন বাদ পড়লেন, তার আগে ‘নিয়মিত’ সদস্য হিসেবে শেষ সিরিজ খেলেছিলেন কার বিপক্ষে? মনশ্চক্ষুতে দেখতে পাচ্ছি, আপনার কপাল কুঁচকে গেছে। চোখ দুটিকে সরু করে আস্তে আস্তে মনে করার চেষ্টা করছেন, দীর্ঘকাল আগে যখন তাসকিন নিয়মিত সদস্য ছিলেন, কার সাথে খেলার পর বাদ পড়েছিলেন দল থেকে?
থাক, মস্তিষ্কের ওপর চাপ দেবেন না। আপনাকে আমিই মনে করিয়ে দিচ্ছি। ২০২১-এ ফিরে আসার আগে তাসকিন সবশেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই! ইস্ট লন্ডনের সেই ম্যাচে দুটো উইকেট নিলেও তাসকিনের ইকোনমি রেট ছিল আকাশছোঁয়া – ৯.৪২! সেই ম্যাচ পর অবশ্য তাসকিনের বাদ পড়াটা অবধারিতই ছিল। সিরিজের শেষ ম্যাচে দুটো উইকেট বাগিয়ে নিলেও প্রথম দুই ম্যাচে তাসকিনের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই। উইকেট তো একদমই পাননি, বরং তাসকিনের ইকোনমি রেট ছিল যথাক্রমে ৭.৬২ এবং ৭.৮৮! আর সেই তাসকিন আজ যখন ৬০ বলের ৪০টিই করেছেন ডট বল, নামের পাশে লেখা আছে আজকে তাসকিনের ইকোনমি রেট ৩.৬০ – তাসকিন আজ নস্টালজিয়ায় ভুগতে বাধ্য। যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাজে বল করে তাকে দীর্ঘদিন থাকতে হয়েছে ওয়ানডে দলের বাইরে, সেই দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে একরকম মাটিতে নামিয়ে এনেছেন তিনি। জীবন আসলে বড্ড বেশি অনিশ্চিত। বিজ্ঞানী ডাফনে কোলারের সেই উক্তিটা তাই ভুলে যাবেন না,
“The world is noisy and messy. You need to deal with the noise and uncertainty.”
আসলেই তো তাই। বিশৃঙ্খলায় পরিপূর্ণ এই জীবন এমন সব অনিশ্চয়তার দেখা পাইয়ে দেয়, অবাক বিস্ময়ে চেয়ে থাকতে হয়। আর সেই অনিশ্চয়তাই আজ এই চৈত্রের রাতে আমাদের এনে দিয়েছে এমন এক অভাবিত জয়। রবি ঠাকুরের সেই লাইনটাই যেমন,
“প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস। ”
নাহ, পরের লাইনটা আর আমাদের বলা মানায় না। দক্ষিণ আফ্রিকাই বরং বাংলাদেশকে উৎসর্গ করতে পারে,
“তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।”