১.
শিবনারায়ণ চন্দরপল ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২১ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছিলেন। মাত্র ২০ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পর প্রায় ৪১ বছর বয়স পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের মিডল-অর্ডার আগলে রেখেছিলেন তিনি। সীমিত ওভারের ক্রিকেটের চেয়ে সাদা পোশাকে তার আধিপত্য ছিলে বেশি। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে ব্রায়ান লারাসহ অন্যান্য সমসাময়িক ব্যাটসম্যানদের ছায়া হয়ে থাকা চন্দরপল ঠিকই তার দায়িত্ব যথাযথ পালন করতেন। তিনি তার সেরা সময় কাটিয়েছিলেন শেষ বয়সে এসে। যে বয়সে ক্রিকেটাররা বিদায় জানানোর জন্য উপযুক্ত সময় খোঁজে, তিনি সেই বয়সে এসে রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছিলেন। লারার বিদায়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভঙ্গুর ব্যাটিং লাইনআপের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন তিনি।
ভিন্নধর্মী স্টাইলে ব্যাট করা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান যখনি দল বিপদের মুখে পড়তো, তখনি ত্রাণকর্তা হিসাবে দলকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতেন। ১৯৯৪ সালের ১৭ মার্চ জর্জটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটেছিল চন্দরপলের। অভিষেকের ২১ বছর পর একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ব্রিজটাউনে ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি মোট ১৬৪টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন। ওয়ানডে ক্রিকেটেও অভিষেক ঘটেছিল ১৯৯৪ সালে। ভারতের বিপক্ষে ফরিদাবাদে ১৭ই অক্টোবর নিজের অভিষেক ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। অভিষেক ম্যাচে ব্যাট কিংবা বল, কোনো ডিপার্টমেন্টেই ভারতকে হারাতে প্রয়োজন পড়েনি তার।
টি-টোয়েন্টির যুগে পায়ে পা মিলিয়ে চলতে না পারার কারণে তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে। ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে দশ উইকেটের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমে ব্যাট করা উইন্ডিজ মাত্র ১১২ রানে সবকটি উইকেট হারিয়েছিল। রান সংখ্যা আরও কম হতে পারতো, যদি না চন্দরপল একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে সম্মানজনক সংগ্রহ এনে দিতে প্রাণপণ চেষ্টা না করতেন। তিনি শেষপর্যন্ত ১০৬ বল মোকাবেলা করে ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। এটিই ছিল রঙিন পোশাকে তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজের শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১০ সালে।
২.
আদর্শ টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসাবে চন্দরপলের নামডাক রয়েছে। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটেও তিনি বেশ সফল ব্যাটসম্যান ছিলেন। ২৬৮ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১১টি শতক এবং ৫৯টি অর্ধশতকের সাহায্যে ৮,৭৭৮ রান করেছেন। যা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান। তার উপরে আছেন শুধুমাত্র ক্রিস গেইল এবং ব্রায়ান লারা। ৪০ বার নট আউট থাকার কারণে তার ব্যাটিং গড় ছিল ৪১.৬০। যা ওয়ানডে ক্রিকেটের পরিপ্রেক্ষিতে অসাধারণ ব্যাটিং গড়। ওয়ানডেতে সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শচীন টেন্ডুলকারের ব্যাটিং গড় ৪৪.৮৩। সে তুলনায় চন্দরপল খুব একটা পিছিয়ে নেই।
চন্দরপল তার ক্যারিয়ারের শুরুতে উদ্বোধনীয় ব্যাটসম্যান হিসাবেই খেলতেন এবং এই দায়িত্ব পালনে তিনি সফল ছিলেন। ওয়ানডেতে ৭৭ বার ইনিংস গোড়াপত্তন করতে নেমে সাতটি শতকের সাহায্যে ৪৩.৩৬ গড়ে ২,৯৪৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ওয়ানডেতে তার ব্যাটিং পজিশন সবসময় উঠানামা করতো। দলের প্রয়োজনে সবজায়গাতেই মানিয়ে নিতেন তিনি। দুই থেকে ছয় নাম্বার পজিশন পর্যন্ত কমপক্ষে ২২ ইনিংস করে ব্যাট করেছেন তিনি।
বিশ্বকাপে ৪০.৪১ ব্যাটিং গড়ে ৯৭০ রান, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ৫৩.৩৬ গড়ে ৫৮৭ রান কিংবা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ বলে ছয় হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেওয়ার কারণে চন্দরপলের রঙিন পোশাকের শোভা আরও বর্ধন হয়েছে। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে শেষ বলে ছয় হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেওয়া ব্যাটসম্যানের সংখ্যা কম নয়। জাভেদ মিয়াঁদাদ, ল্যান্স ক্লুজনার এবং ব্রেন্ডন টেইলরের মতো ব্যাটসম্যানরা শেষ বলে ছয় হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন। এই তালিকায় নাম আছে আরও কয়েকজনের। তবে শেষ বলে ঠিক ছয় রান প্রয়োজন জয়ের জন্য, এমন সময়ে ছয় মেরে দলকে জেতানো এখন পর্যন্ত একমাত্র ব্যাটসম্যান শিবনারায়ণ চন্দরপল। তিনি চামিন্দা ভাসের শেষ দুই বলে চার এবং ছয় হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন।
৩.
শিবনারায়ণ চন্দরপল তার টেস্ট ক্যারিয়ারে এক ম্যাচের সিরিজ বাদ দিয়ে মোট ৫৭টি টেস্ট সিরিজ খেলেছিলেন। যারমধ্যে মাত্র ১৬ সিরিজে তার ব্যাটিং ৩০-এর কম ছিল। ধারাবাহিকতার দিক দিয়ে তিনি ছিলেন সেরাদের একজন। তিনি সবসময় নিজের উইকেটের কদর করতেন, টেস্ট ক্রিকেটে তিনি ৪৯ ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন। সেরা সাতের মধ্যে ব্যাট করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি নট আউট থাকতে পারেননি আর কোনো ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৪ ইনিংসে নট আউট ছিলেন স্টিভ ওয়াহ।
চন্দরপল ১৬৪ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩০টি শতক এবং ৬৬টি অর্ধশতকের সাহায্যে ৫১.৩৭ ব্যাটিং গড়ে ১১,৮৬৭ রান সংগ্রহ করেছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তার অবস্থান অষ্টম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে দ্বিতীয়। তার চেয়ে মাত্র ৮৬ রান বেশি করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসাবে শীর্ষে অবস্থান করছেন ব্রায়ান লারা।
তার ২১ বছরের দীর্ঘ টেস্ট ক্যারিয়ারকে বেশ কয়েকটি ধাপে ভাগ করা যায়। একেক সময়ে তার পারফরমেন্স একেকরকম। তিনি অভিষেকের পর থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ২৪টি টেস্ট খেলে ৪৮.৬৯ ব্যাটিং গড়ে ১,৬০৭ রান করেছিলেন। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ২৫ ম্যাচে ৩১.৪৩ ব্যাটিং গড়ে ১,২২৬ রান করেছিলেন। তিনি তার প্রথম ৪৯ টেস্টে ২৪ বার পঞ্চাশ রানের গণ্ডি অতিক্রম করলেও মাত্র দুবার তিন অংকের রান করেছিলেন। এই অধ্যায় বাদ দিলে তিনি তার শেষ ১১৫ টেস্টে ২৮টি শতক হাঁকিয়েছিলেন।
৪.
ব্রায়ান লারার বিদায়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন চন্দরপল। তিনি একপ্রান্ত আগলে রেখে নিয়মিত রান করলেও অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানরা তাকে সমর্থন জোগাতে ব্যর্থ হয়েছিল। তিনি ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। এই আট বছরে তিনি ৫৭ ম্যাচ খেলে ১৬টি শতক এবং ২৫টি অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৭১.৭১ ব্যাটিং গড়ে ৪,৯৪৮ রান করেছিলেন। তার এমন অসাধারণ ফর্মের পরেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল হিসাবে সফলতা পায়নি। কারণ তার সতীর্থরা তাকে যথাযথ সমর্থন দিতে পারেনি। উদাহরণস্বরূপ ধরা যায় ২০০৭ সালে ইংল্যান্ড সিরিজকে। ঐ সিরিজে চন্দরপল যথাক্রমে ৭৪, ৫০, ১১৬*, ১৩৬* এবং ৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তবুও সিরিজে ইংল্যান্ডের কাছে ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই সিরিজ ছাড়াও ঐসময় বেশ কয়েকটি সিরিজে তিনি ধারাবাহিকভাবে রান করলেও তার দল শেষ হাসি হাসতে পারেনি। যার কারণে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে পরাজিত ম্যাচগুলোতে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহের কীর্তিটি তার দখলে। তার খেলা ১৬৪ ম্যাচের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭৭ ম্যাচে পরাজিত হয়েছিল, এতে তিনি নয়টি শতক এবং ৩২টি অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৪০.০৭ ব্যাটিং গড়ে ৫,৩৭০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। পরাজিত ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রায়ান লারা করেছিলেন ৫,৩১৬ রান।
চন্দরপল ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তার সেরা সময় অতিবাহিত করেছিলেন। এই সময়ে তিনি ৬৯.১৬ ব্যাটিং গড়ে ৪,৯৮০ রান সংগ্রহ করেছিলেন। এই সময়ে কমপক্ষে ৩,৫০০ রান করেছে এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার ব্যাটিং গড় ছিল সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কুমার সাঙ্গাকারা ৬৫.৩৮ ব্যাটিং গড়ে ৬,৯৩১ রান করেছিলেন। এই দুজন ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং গড় ৬০ এর ঘরে পৌঁছায়নি।
৫.
টেস্ট ক্রিকেটে ১১ হাজার রানের ক্লাবের সদস্য সংখ্যা দশজন। যার মধ্যে বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান টপ-অর্ডারে ব্যাট করে সফলতা পেয়েছিলেন। এদিক দিয়ে চন্দরপল অন্যান্য ব্যাটসম্যানের চেয়ে অনন্য। তিনি তার ৭৯% রান করেছেন পাঁচ এবং ছয় নাম্বার পজিশনে ব্যাট করে। ব্রায়ান লারার বিদায়ের পরেও চার নাম্বারে ব্যাট না করে এই পজিশন ছেড়ে দিয়েছিলেন ড্যারেন ব্রাভো এবং মারলন স্যামুয়েলসদের কাছে। পাঁচ ও ছয় নাম্বারে মাইকেল ক্লার্ক এবং এবি ডি ভিলিয়ার্সও সফল ছিলেন, কিন্তু তারা রিকি পন্টিং এবং জ্যাক ক্যালিসের অবসরের পর উপরে উঠে এসেছিলেন। চন্দরপল তা করেননি, মিডল-অর্ডারে ব্যাট করে দলকে বিপদের হাত থেকে বাঁচানোই ছিল তার প্রথম কাজ কিংবা এই পজিশনেই তিনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
টেস্ট ক্রিকেটে পাঁচ ও ছয় নাম্বারে ব্যাট করে তারচেয়ে বেশি রান সংগ্রহ করেছিলেন শুধুমাত্র স্টিভ ওয়াহ। ওয়াহ ২২১ ইনিংস ব্যাট করে ৫৪.৫০ ব্যাটিং গড়ে ৯,৯১৯ রান সংগ্রহ করেছিলেন। চন্দরপল তার চেয়ে ২১ ইনিংস কম খেলে ৫৮.৪৫ ব্যাটিং গড়ে ৯,৪১১ রান করেছিলেন। তার ৩০টি টেস্ট শতকের মধ্যে ২৬টি এসেছে এই দুই পজিশনে ব্যাট করে। স্টিভ ওয়াহ এবং চন্দরপল ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যান পাঁচ ও ছয়ে দুইশ ইনিংস ব্যাট করেনি।
৬.
চন্দরপল লারা পরবর্তী যুগে নিজের ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন না করলেও রান সংখ্যা ঠিকই পরিবর্তন করেছিলেন। দায়িত্ব বেড়ে যাওয়ার পর তার রানের ক্ষুধাও বেড়ে যায়। তিনি ব্রায়ান লারার সাথে ১৪৬ ইনিংস খেলে ৪৩.৬৭ ব্যাটিং গড়ে ৫,৬৩৪ রান করেছিলেন। শতকের সংখ্যা ছিল ১২টি এবং অর্ধশতক ৩৫টি। লারা বিহীন ১৩৪ ইনিংস ব্যাট করে ১৮টি শতক এবং ৩১টি অর্ধশতকের সাহায্যে ৬১.১০ ব্যাটিং গড়ে ৬,২৩৩ রান সংগ্রহ করেছিলেন চন্দরপল।
উইকেটে বেশি সময় ধরে টিকে থাকার ক্ষেত্রে তিনি শুরু থেকেই পারদর্শী ছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটে ২৭,৩৯৫ বল মোকাবেলা করে তারই জানান দিয়েছিলেন। টেস্টে তার চেয়ে বেশি বল মোকাবেলা করতে পেরেছিলেন শুধুমাত্র রাহুল দ্রাবিড়, শচীন টেন্ডুলকার এবং জ্যাক ক্যালিস। দায়িত্ব বেড়ে যাওয়ার পর বেশি পার্টনারশিপও গড়তে শুরু করেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি ৭৭১টি ভিন্ন জুটি বেঁধেছিলেন, যা এখন পর্যন্ত শীর্ষে আছে, দ্বিতীয় স্থানে থাকা রাহুল দ্রাবিড় ৭৩৪টি ভিন্ন জুটি গড়েছিলেন।
৭.
একটা কথা প্রচলিত আছে যে, ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। ক্রিকেটের সাথে কথাটা ভালোভাবেই মিলে যায়। ক্রিকেটাররা অনেক সময় বয়সের ভার সামলাতে না পেরে ক্রিকেটকে বিদায় জানায়। বেশিরভাগ ক্রিকেটাররা বয়স ৩৫ হওয়ার আগে ক্রিকেট থেকে বিদায় জানানোর উপযুক্ত সময় খোঁজে। কেউ কেউ ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে খেলা চালিয়ে গেলেও ছন্দ হারিয়ে ফেলে। এদিক থেকে চন্দরপল ছিলেন অনন্য। তিনি ৩৫ বছরে পা দেওয়ার পর থেকে আরও বেশি ব্যাটিং গড়ে রান করতে থাকেন। তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ব্যাটিং গড় যেখানে ৫১.৩৭। সেখানে তিনি ৩৫ বছর বয়সের পর রান করেছেন ৫৭.৭৩ ব্যাটিং গড়ে।
তিনি ৩৫ বছর বয়সের পর ৪৩ ম্যাচ খেলে নয়টি শতক এবং ১৪টি অর্ধশতকের সাহায্যে ৫৭.৭৩ ব্যাটিং গড়ে ৩,২৯১ রান করেছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটে ২৫ জন ব্যাটসম্যান ৩৫ বছর বয়সের পর দুই সহস্রাধিক রান করেছে, তার মধ্যে দ্বিতীয় সেরা ব্যাটিং গড় চন্দরপলের। তার উপরে আছেন ২৩ ম্যাচে ৬০.১৯ ব্যাটিং গড়ে ২,৫২৮ রান করা কুমার সাঙ্গাকারা। বয়স চন্দরপলের জন্য বাধা হয়ে না দাঁড়ালেও একসময় ঠিকই বয়সের কাছে হার মানতে হয় তাকে। ২০১৪ সালের শেষদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাঁচ ইনিংসে ৯১ রান এবং ২০১৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছয় ইনিংসে ৯২ রান করার পর তাকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পরবর্তী সিরিজে আর ডাকেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড।
চন্দরপলের টেস্ট ক্যারিয়ার থেমে যায় ব্রায়ান লারার চেয়ে ৮৬ রান পিছিয়ে থেকে। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থেমে গেলেও ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ৩৮৫টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ৭৭টি শতক এবং ১৪৪টি অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৫৩.১৭ ব্যাটিং গড়ে ২৭,৫৪৫ রান করা শিবনারায়ণ চন্দরপল প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটকে বিদায় জানান তার ছেলে তেজনারায়ণ চন্দরপলের সাথে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলে।
ক্রিকেট নিয়ে আরও জানতে আজই পড়ে নিন এই বইগুলো
২) A Biography of Rahul Dravid: The Nice Guy Who Finished First
৩) সাকিব আল হাসান – আপন চোখে ভিন্ন চোখে
৪) শচীন রূপকথা