Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ক্রিস গেইল: ক্রিকেটের এক নির্ভেজাল বিনোদনদাতা

– ১৪৬ রানের ইনিংস খেলার পর কি নিজেকে টি-টোয়েন্টির ব্র্যাডম্যান বলবেন?

– নো, আই এম দ্য গ্রেটেস্ট অব অলটাইম।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) রংপুর রাইডার্সের হয়ে শিরোপাজয়ী ইনিংস খেলার পর এভাবেই সংবাদ সম্মেলনে উত্তরটা দিয়েছিলেন উইন্ডিজ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল। ক্রিকেটের তিনটি ফরম্যাট মিলিয়েই যাকে বলা হয় ব্যাটিং দানব। শুধু বিপিএলই নয়, এই মুহূর্তে উইন্ডিজ জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই ক্রিকেটার সারা বিশ্বের সবগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্টেই নিজের ব্যাটিং পারফরম্যান্সকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। নিজেই নিজেকে নাম দিয়েছেন টি-টোয়েন্টির ‘ইউনিভার্স বস’! এসবের পিছনে অবশ্যই কৃতিত্বটা লুকাস ক্লাবের। জ্যামাইকার এই ক্রিকেট ক্লাব নিয়ে একবার এক সাক্ষাৎকারে গেইল বলেছিলেন, “লুকাস ক্লাব না থাকলে আজ আমি এই অবস্থানে আসতে পারতাম না। হয়তো রাস্তায় থাকতাম।” পরবর্তীতে এই লুকাস ক্লাবের গেইলের নামে নামকরণ করা হয়।

পাগলাটে ক্রিস গেইল; Source: BCCI

তার পুরো নাম ক্রিস্টোফার হেনরি গেইল। সবকিছুর শুরুটা এতো সহজ ছিল না। ছয় ভাই-বোনের পরিবারে তিনি ছিলেন পঞ্চম। বাবা পুলিশে কাজ করলেও পরিবার ছিল অসচ্ছল। মা প্রতিবেশীদের কাছে বাদাম বিক্রি  করতেন। সেই অবস্থান থেকে ক্রিকেটে আসা এবং বিশ্বজয় করা; গেইল বলেই হয়তো পেরেছিলেন। ক্রিকেটটা রক্তের সঙ্গে অনেক আগেই মিশে ছিল গেইলের। দাদা ক্লাব ক্রিকেট খেলতেন। সেই ধারাবাহিকতায় নিজেও ক্রিকেটে এসেছেন। সেই সাফল্যের বরাত দিয়ে অনুপ্রাণিত করেছেন বিশ্বের লাখো তরুণ ক্রিকেটপ্রেমীকে।

এবারের বিপিএলে শুরুটা ভালো হয়নি গেইলের। কিন্তু এলিমিনেটর রাউন্ডে তার ব্যাটেই খুলনা টাইটান্সকে হারালো রংপুর। ১২৬ রানের ইনিংস খেললেন গেইল, যা কিনা বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস হয়ে গেল। ফাইনালে অবশ্য সেই রেকর্ডও ভাঙলেন। যা-ই হোক, সংবাদ সম্মেলনে আসলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। গেইলের পারফরম্যান্স নিয়ে আলাপকালে একটি প্রশ্ন উড়ে এল গণমাধ্যমকর্মীদের পক্ষ থেকে। রানে ফিরতে কী করেন গেইল?

উত্তরে মাশরাফি বললেন,

“কিছুই না। ও সবসময় রিল্যাক্সড থাকতে পছন্দ করে। রুমে সবসময় ঘুমায়। এটাই হয়তো মাঠে ওকে সুবিধা দেয়। আমি শেষ ৮-১০ ম্যাচ ধরে গেইলকে দেখছি। আগেও খেলেছি তার সাথে। কখনোই মানসিকভাবে পরিবর্তিত হতে কিংবা ব্যাটে রান আসছে না বলে তাড়াহুড়ো করতে দেখিনি।”

এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করেছিলেন অমিত মিশ্র। আম্পায়ারের মন গলেনি। তাই নিজেই সান্ত্বনা দিচ্ছেন গেইল; Source: BCCI

মাশরাফি যেন গেইলের গোমর ফাঁস করলেন। গেইল শুধু ঘুমায়! অনেকে আবার তার ব্যাটিং দেখেও বলতে পারে, গেইলের মনে হয় দৌড়ে রান নিতে খুব কষ্ট হয়। সে কারণেই কিনা ঝড়ের গতিতে পেটাতেই পছন্দ করেন। মোদ্দা কথা, গেইল অলস। কিন্তু এই কথা গেইল শুনতে পেলে রাগ করবেন না, তা হলফ করে বলা যায়।

কারণ বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া ক্যারিবীয় সাগরপাড়ের এই ক্রিকেটার ছোটবেলা থেকেই অলস ছিলেন বলে শোনা যায়। সে কারণেই কিনা বন্ধুরা তার নাম দিয়েছিল ‘ক্র্যাম্পি’, অর্থাৎ প্রচণ্ড রকমের কুঁড়ে! বড় হয়েও যেন সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছেন ‘সিক্স মেশিন’।

একবার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলার সময় ব্যাট করছিলেন ব্যাঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। একখানা ছক্কা হাঁকালেন, বল সোজা গিয়ে পড়ল গ্যালারিতে। পরে শুনলেন, ওই বল নাকি ১০ বছরের এক শিশুর নাক ভেঙে দিয়েছে। যারপরনাই মন খারাপ হয়ে গেল গেইলের। ম্যাচ শেষ করেই চলে গেলেন হাসপাতালে। গায়ে-গতরে বড় হলেও, মানসিকভাবে তিনি দয়ালু, এর প্রমাণ আরও আছে।

গেইলের হাঁকানো ছয়ে নাক ভেঙেছিল ছোট্ট সমর্থকের; Source: MTV India

অভাবকে খুব সামনে থেকে দেখেছেন বলেই অভাবীদের কষ্ট বুঝতে পারেন গেইল। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলে আয়টাও নেহাত কম নয়। মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। সেসব দিয়ে গরিব-দুঃখীদের ভালোর জন্যও কিছু করার চেষ্টা করছেন। উইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডে খুলেছেন ‘দ্য ক্রিস গেইল একাডেমিস’ নামের একটি দাতব্য সংস্থা, যেখানে ইংল্যান্ড ও জ্যামাইকার গরীব বাচ্চাদের জন্য শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্র তৈরির কাজ করা হয়। এমনকি নিজের দেশের একাধিক দাতব্য সংস্থায় তার উপার্জিত অর্থ যায়।

দেশের সেরা ক্রিকেটার, সমাজের জন্য কাজ করছেন; এতো কিছুর পরও উইন্ডিজ সরকার তাকে কিছু ব্যাপারে সাহায্য করেনি বলে আক্ষেপ রয়েছে তার। এ নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে নিজের ক্ষোভও ঝেড়েছেন তিনি। একবার ইংল্যান্ড ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,

“জ্যামাইকার সরকারের প্রতি আমি খুবই হতাশ। আমি খুব ছোট্ট একটা স্বীকৃতির জন্য যোগ্য কিনা,  সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছিলাম। আমি দু’বার ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছি কিন্তু বিমানবন্দরে আমার জন্য একটিও ক্যামেরা দেখিনি। এটি খুব কষ্টদায়ক। আমি আমাদের দেশের জন্য অনেক কিছু করেছি। হাসপাতাল, স্কুল, ক্রীড়া ক্ষেত্রে আমি আমি দেশের প্রতিনিধি। তারপরও আমি কোনো সুবিধা পাইনি। কিন্তু আমি দেখেছি, যে জ্যামাইকার জন্য কিছুই করেনি সে কিন্তু অনেক  সুবিধা পাচ্ছে। আমি আমার লাখ লাখ টাকার কর দেই। আমি আর কখনোই সরকারের কাছে কিছু চাইব না। আমাকে নিচে নামানোর তৃতীয় কোনো সুযোগ আর দেব না।”

ক্রিকেটে যদি একজন আমুদে লোকও থাকে, তবে সেটি গেইল। অবশ্য উইন্ডিজ ক্রিকেটার মানেই ব্যাট-বলের লড়াইয়ের বাইরেও বিনোদন। পোলার্ড-ব্রাভোর মতো সেই তালিকায় গেইলও আছেন।  এ নিয়ে এতো গল্প আছে যে, লিখে শেষ  করা যাবে না। হার হোক- জয় হোক, ক্রিকেট হোক, ক্রিকেটের বাইরে হোক; গেইলের মজা করার কোনো শেষ নেই। বিশেষ করে তার উদযাপন যেন  তার পারফরম্যান্সে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা। সেবার ‘গ্যাংনাম’ স্টাইলের খুব চল যাচ্ছে। মাঠে গেইল-ব্রাভোরা সমানে উদযাপন  করছেন গ্যাংনাম স্টাইলকে অনুসরণ করে। কিন্তু বিপত্তিটা হলো, বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের কাছে হেরে গিয়ে। র‍্যাংকিংয়ের শেষের দিকে থাকা একটি দল উইন্ডিজকে হারালো, সেটিও আবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে; এটি যেমন সমর্থকরাও মানতে পারেনি, ক্রিকেটাররাও মানতে পারেনি। তাতে কী, আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা জয় পেয়ে উইন্ডিজ দলের সামনে সেই গ্যাংনাম স্টাইলের নাচ শুরু করল। একদিক থেকে মাথা নামিয়ে  মাঠ ছাড়ছে ড্যারেন স্যামির দল, অন্যদিকে নেচেকুঁদে অস্থির মোহাম্মদ  নবীরা। কী লজ্জা! কী লজ্জা!

উইন্ডিজকে হারানোর পর আফগানিস্তান। তাদের সাথেই উদযাপনে পরাজিত দলের ক্রিস গেইল! Source: cricket.com.au

কিন্তু গেইলের কাছে কীসের লজ্জা! হেরে গিয়েও আফগানিস্তানের উদযাপনে যোগ দিলেন তিনি! নাচতে শুরু করলেন প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে। পুরো বিশ্ব দেখল, পরাজিত একটি দলের সদস্য জয়ী দলের সঙ্গে মাঠেই নেচে বেড়াচ্ছে। চোখ কপালে তোলার মতো কাণ্ড হলেও, সেটিই করেছিলেন গেইল। ব্যাটসম্যান হিসেবে যতই কঠোর হন, মানুষ হিসেবে ততটাই সাদামাটা ক্রিস গেইল। তার ওই নাচের ঘটনা দারুণ আলোচিত হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্বে। নাচ শেষে আফগানিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে সেলফি তুলে রাতারাতি ক্রিকেট বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। প্রমাণ করেছিলেন, ক্রিকেট আসলেই ভদ্রলোকের খেলা।

আমুদে বলেই হয়তো বারবার বিতর্কে পড়েন। একাধিকবার নারীদের অসম্মানের কারণে অভিযুক্ত হয়েছেন। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে বিগ ব্যাশ টি-টোয়েন্টি লিগে টিভি উপস্থাপিকাকে আপত্তিকর মন্তব্য করে বিপাকে পড়েন। শাস্তি হিসেবে তাকে ১০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার জরিমানা করা হয়। মেলবোর্ন রেনেগেডসের হয়ে সেবার খেলেছিলেন। পরেরবার দলই পাননি।

‘ডোন্ট ব্লাশ বেবি’ কেলেঙ্কারি; Source: Hindustan Times

বছর পার হতে না হতেই তার বিরুদ্ধে এক নারী মাসাজ থেরাপিস্ট যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফায়ারফক্স মিডিয়া। অস্ট্রেলিয়ান উপস্থাপিকা কাণ্ডে খুব একটা উচ্চবাচ্য না করলেও ফায়ারফক্সের উপর চটেছিলেন গেইল। সংবাদমাধ্যমটির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন তিনি। তিনি দাবি করেন, ফায়ারফক্স তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করেছে।

শুধু তা-ই নয়, নিজের দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে স্পন্সরশিপ নিয়ে অন্য ক্রিকেটারদের মতো তিনিও ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন। এ কারণে দল থেকে বাদও পড়তে হয় তাকে। আরেকবার চাপের কারণে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করবেন না মন্তব্য করে বিপাকে পড়েন তিনি। পরে ক্ষমা চেয়ে ফিরে আসেন এবং দলের দায়িত্ব নেন। ২০০৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে তৎকালীন অজি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে ম্যাচ ফি’র ৩০ শতাংশ জরিমানায় পড়েন। ২০০৭ সালে প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমের কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সমালোচনা করেন। এ ঘটনায় বোর্ডের সঙ্গে নতুন করে ঝামেলা শুরু হয় তার।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের পর উদযাপনে গেইল; Source: Getty Image

২০০৯ সালে তিনি মন্তব্য করেন, টি-টোয়েন্টির কারণে যদি টেস্ট ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যায়, তাতে কিছু যায়-আসে না। এ নিয়ে চরম ক্ষেপেছিলেন দুই ক্রিকেটীয় কিংবদন্তি গ্যারি সোবার্স ও ভিভ রিচার্ডস। পরে গেইল এ নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি দাবি করেন, গণমাধ্যম তার বক্তব্যকে উল্টোভাবে ব্যবহার করেছে।

২০১১ সালের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের কথা। নিলামে কেউ কিনলই না গেইলকে! পরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ডির্ক নানেসের বদলি হিসেবে গেইলকে দলে টানে। সেবার নিজের জাত চিনিয়েছিলেন গেইল। যেখানে তাকে কেউ দলেই নেয়নি, সেই গেইল পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে সবচেয়ে বেশি রান করলেন। এভাবেই সমালোচনার জবাবটা ব্যাট হাতে দিয়ে এসেছেন গেইল। সব মিলিয়ে রেকর্ডের ঝুলিটাও বেশ ভারী তার। সেই তালিকা থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু তুলে ধরা হলো-

  • টি-টোয়েন্টিতে ১১ হাজার রান।
  • টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরি (৩০ বলে, আইপিএলে)।
  • টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছয় (বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে, ১৮টি)।
  • ক্রিস গেইল বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার যার টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি, ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরি ও টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি আছে।
  • সব ধরনের টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে তার সেঞ্চুরি ২০টি, যা বিশ্ব ক্রিকেটে একমাত্র।
  • প্রথম উইন্ডিজ ক্রিকেটার, যিনি ওয়ানডেতে ৭,০০০ রান করার পাশাপাশি ১৫০ উইকেট নিয়েছেন।
  • টেস্টের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডও তার। (বাংলাদেশের বিপক্ষে, ২০১২ সালে। বোলার ছিলেন সোহাগ গাজী)।
  • ১০৩ টেস্টে ৪২.৩৩ গড়ে তার মোট রান ৭,২১৪। সেঞ্চুরি ১৫টি, হাফ সেঞ্চুরি ৩৭টি।
  • খেলেছেন এখন পর্যন্ত ২৭৩ ওয়ানডে ম্যাচ। ৩৭.৪২ গড়ে সংগ্রহ করেছেন ৯,৩৯৪ রান। সেঞ্চুরি ২২টি, হাফ সেঞ্চুরি ৪৮টি।
  • বল হাতে ৭৩ টেস্ট উইকেট, ১৬৩ ওয়ানডে উইকেট ও জাতীয় দলের জার্সিতে ১৭ টি-টোয়েন্টি উইকেট নিয়েছেন এই ডানহাতি স্পিনার।

বিশাল দেহের এই মানুষটি ছোটবেলা থেকেই হৃদযন্ত্রের অসুখে ভুগেছেন। বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে খেলার সময় ভারতে এসেছিলেন। সেই সফরের একটি ম্যাচে ব্যাট করা অবস্থায় রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। কারণ, তার হৃদযন্ত্র মাঝে মাঝে অনিয়মিতভাবে কাজ করত।

স্ত্রী নাতাশার সঙ্গে ক্রিস গেইল; Source: DNA India

২০০৫ সালের ঘটনা, অস্ট্রেলিয়ায় সফর করছে উইন্ডিজ দল। সেবার অধিনায়ক ছিলেন কিংবদন্তী ব্রায়ান লারা। মাঠে যখন কোণঠাসা হয়েও লড়ছে ক্যারিবীয়রা, তখন ফিল্ডিংয়ের সময় অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন গেইল। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। পরবর্তীতে অস্ত্রোপচার করা হয়। তারপর পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন।

টিভির পর্দায় কিংবা পত্রিকার পাতায় নারীদের প্রতি ‘আগ্রহ’ থাকলেও, ঘরে তিনি পুরোপুরি ‘ফ্যামিলি ম্যান’। স্ত্রী নাতাশা ব্রিজ ও একমাত্র মেয়ে ব্লাস ও বাবা-মা, ভাইদের নিয়েই তার সবকিছু। পাগলাটে মানুষটিকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কয়টি ছয় মারতে চান ক্যারিয়ারে? উত্তরে ক্যারিবিয়ান গেইল বলেছিলেন, ‘সবগুলো’! সে কারণেই কিনা একবার ধোনি বলেছিলেন, “জীবনে অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু গেইলের ছক্কা হাঁকানো দেখে মনে হয়েছে, আমার উইকেটরক্ষক হওয়ার সিদ্ধান্তটা সেরা ছিল!

ফিচার ইমেজ: BCB

Related Articles