![](https://assets.roar.media/assets/ywIsXPlpsMIXcER8_ফিচার-ইমেজ Getty Images.jpg?w=1200)
ইয়োন মরগান সানডে টাইমসকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,
“১৩ বছর বয়স থেকেই আমি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখতাম। যেটা আমি করতে চেয়েছিলাম, সেটা বলতে কখনও আমি অপমানবোধ করিনি।
আমার পরিবারের যেসব সদস্য ক্রিকেটের সাথে যুক্ত ছিলেন, তারা এমনটাই বলতেন, “এটা অবিশ্বাস্য হবে, যদি তুমি সেটা করতে পারো।”
তাই আমি এটা নিয়ে কখনো লজ্জিত ছিলাম না। এবং আমার বাবারও এটা নিয়ে কোনো সমস্যা ছিলো না।
সেইসময় ইংল্যান্ড দশটি টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে একটি ছিলো। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ড তখনও আইসিসির সহযোগী দেশ হিসেবে ক্রিকেট খেলছিলো। টেস্ট ম্যাচ খেলার স্বপ্ন সব ক্রিকেটারেরই থাকে। সেটা পূরণ করার জন্য ইয়োন মরগানও নিজ জন্মভূমি ছেড়ে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মাত্র ১৩ বছর বয়সেই।
১৩ বছর বয়সী আইরিশ বালক ইয়োন মরগানের ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে ২০০৯ সালের ২৪শে মে। ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেক ঘটার নয় বছর পর ওয়ানডে ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসাবে নিজের নাম লেখাবেন, সেটা হয়তো তখন তার কাছে আকাশকুসুম স্বপ্ন ছিলো। সেই স্বপ্ন সত্যি হলো নয় বছর পর ২০১৮ সালের ১৯শে জুন।
১
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে জিতে সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে নটিংহ্যামে তৃতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামে ইংল্যান্ড।
২০১৮ সালের ১৯শে জুন অনুষ্ঠিত ম্যাচে টসে জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টিম পেইন।
তার এই সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের কাছে বেধড়ক পিটুনি খাচ্ছিলেন অজি বোলাররা।
![](https://assets.roar.media/assets/Qsod1rolWnSUf4G5_%E0%A6%85%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A7%87%20%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%20%E0%A7%A8%E0%A7%A7%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%87%20%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A7%E0%A6%B6%E0%A6%A4%E0%A6%95%20%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%A8%20%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20Image%20Source%20Getty%20Images.jpg)
উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে জেসন রয় এবং জনি বেয়ারস্টো মাত্র ১৯.৩ ওভারে ১৫৯ রান যোগ করেন। জেসন রয় ৬১ বলে সাতটি চার এবং চারটি ছয়ের মারে ৮২ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে গেলে এই জুটি ভাঙে।
রয় ফিরে যাওয়ার পরেও থেমে থাকেনি ইংল্যান্ডের তাণ্ডবলীলা। অ্যালেক্স হেইলসকে সাথে নিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের নতুন রেকর্ড গড়ার দিকে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটি যাচ্ছিলেন জনি বেয়ারস্টো। মাত্র ৯২ বলে ১৫টি চার এবং পাঁচটি ছয়ের মারে ১৩৯ রান করে যখন সাজঘরে ফেরেন, তখন ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ৩৪.১ ওভারে দুই উইকেটে ৩১০ রান। তিন নাম্বারে ব্যাট করতে নামা অ্যালেক্স হেইলস ৯২ বলে ১৬টি চার এবং পাঁচটি ছয়ের মারে ১৪৭ রান করলে ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের নতুন রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ড।
নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ইংল্যান্ড ছয় উইকেটে ৪৮১ রান সংগ্রহ করে। ইংল্যান্ডের পাহাড় সমান স্কোরে হেইলস, বেয়ারস্টো এবং রয়ের পাশাপাশি অবদান রেখেছিলেন অধিনায়ক ইয়োন মরগান। এই ম্যাচের মধ্য দিয়েই ওয়ানডেতে তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসাবে নিজের নাম লেখান। ইংল্যান্ডের ইনিংসের ৩৭.৩ ওভারে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে জস বাটলার সাজঘরে ফিরে গেলে ব্যাটিংয়ে আসেন মরগান। ইয়ান বেলকে টপকে ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা রান সংগ্রাহক হওয়ার জন্য তখন তার প্রয়োজন ছিলো ৪১ রান।
![](https://assets.roar.media/assets/5AGex2hue5LVrdVt_%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20Image%20Source%20Getty%20Images.jpg)
মাত্র ৩০ বলে তিনটি চার এবং ছয়টি ছয়ের মারে ৬৭ রানের ইনিংস খেলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে অনায়াসে পৌঁছে যান মরগান। এই ইনিংসের মধ্য দিয়ে তিনি আরেকটি কীর্তি গড়েন। মাত্র ২১ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়ে ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে কম বলে অর্ধশতক হাঁকানোর নতুন রেকর্ড গড়েন। পূর্বের রেকর্ডটি ছিলো জস বাটলারের দখলে। ২০১৬ সালের আগস্টে এই নটিংহ্যামেই পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ২২ বলে অর্ধশতক হাঁকিয়েছিলেন জস বাটলার।
২
ইয়োন মরগান ইংল্যান্ডের হয়ে এখন পর্যন্ত ১৮২টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ১৮২ ম্যাচের ১৬৯ ইনিংসে ব্যাট করে ৩৭.৩৮ ব্যাটিং গড় এবং ৯১.৭৯ স্ট্রাইক রেইটে ৫,৪৫৮ রান করেছেন। ওয়ানডেতে তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে দশটি শতক এবং ৩২টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন।
তিনি বর্তমানে ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। এই রেকর্ড গড়তে তিনি ইয়ান বেলকে পেছনে ফেলেছেন।
![](https://assets.roar.media/assets/6pLsaxeLp2kgDGSt_%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A82%20Image%20Source%20Getty%20Images.jpg)
ইয়ান বেল ১৬১ ম্যাচে ৩৭.৮৭ ব্যাটিং গড়ে ৫,৪১৬ রান করেছেন। ওয়ানডেতে তার শতকের সংখ্যা চারটি এবং অর্ধশতক ৩৫টি। ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের হয়ে ইয়োন মরগান এবং ইয়ান বেল ছাড়া আর মাত্র একজন ক্রিকেটার পাঁচ সহস্রাধিক রান করেছেন। অলরাউন্ডার পল কলিংউড ১৯৭ ম্যাচে পাঁচটি শতক এবং ২৬টি অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৩৫.৩৬ ব্যাটিং গড়ে ৫,০৯২ রান করেছেন।
ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের দৌড়ে ইয়োন মরগানের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক জো রুট। তিনি ১১৩ ম্যাচে ৪৯.১২ ব্যাটিং গড়ে ৪,৫৮৪ রান করেছেন। শতক হাঁকিয়েছেন ১১টি এবং অর্ধশতক ২৮টি।
এছাড়া জস বাটলারও তিন সহস্রাধিক ওয়ানডে রান করেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে।
৩
![](https://assets.roar.media/assets/VkImBGPuwxKT98CP_%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A83%20Image%20Source%20Getty%20Images.jpg)
১৯৮৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে জন্মগ্রহণ করেন ইয়োন মরগান। শৈশব থেকেই ইংল্যান্ডের হয়ে ক্রিকেট খেলার আগ্রহ ছিল। মাত্র ১৬ বছর বয়স থেকেই মিডলসেক্সের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা শুরু করেন তিনি। ইংলিশ কাউন্টিতে নিয়মিত খেলার কারণে আয়ারল্যান্ডের পাশাপাশি ইংল্যান্ডের হয়েও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যোগ্যতা অর্জন করেন মরগান।
ইংল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন নিয়ে বড় হওয়া মরগানের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে জন্মভূমি আয়ারল্যান্ডের হয়ে। ২০০৬ সালের ৫ই আগস্ট স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচ খেলেন তিনি। অভিষেক ম্যাচেই নিজের জাত চেনান মরগান। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা আয়ারল্যান্ডের হয়ে তিন নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে ১৩২ বলে সাতটি চার এবং একটি ছয়ের মারে ৯৯ রান করে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে অভিষেক ম্যাচে শতক হাঁকানো থেকে বঞ্চিত হন তিনি। নিজে শতক হাতছাড়া করলেও তার ইনিংসের উপর ভর করে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে স্কটল্যান্ডকে ৮৫ রানে পরাজিত করে আয়ারল্যান্ড।
আয়ারল্যান্ড জার্সি গায়ে শতক হাঁকানোর জন্য খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি মরগানকে। ক্যারিয়ারের ৫ম ওয়ানডেতে আইসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগের প্রথম বিভাগে কানাডার বিপক্ষে ১০৬ বলে দশটি চার এবং দুটি ছয়ের মারে ১১৫ রান করেন তিনি। ঐ টুর্নামেন্টে নিজেদের পরবর্তী ম্যাচে আবারও শতকের খুব কাছে গিয়ে ফিরে আসেন মরগান। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৯১ বলে করেছিলেন ৯৪ রান। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের আগে অনুষ্ঠিত হওয়া এই টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন মরগান।
![](https://assets.roar.media/assets/Khfk0XdkoVOzVRmx_%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A5%E0%A6%AE-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%9F%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%20%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%9F%E0%A6%BF%20%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%AA%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A7%87%20%E0%A6%B6%E0%A6%A4%E0%A6%95%20%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%A8%20%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20Image%20Source%20RTE.jpg)
আইসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগে দুর্দান্ত সময় কাটানোর পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলে আয়ারল্যান্ড। ঐ ম্যাচে প্রথম আইরিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে দ্বিশতক হাঁকিয়েছিলেন ইয়োন মরগান। শেষপর্যন্ত ২০৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
ছন্দে থাকা ইয়োন মরগান আয়ারল্যান্ডের প্রথম বিশ্বকাপের স্কোয়াডেও জায়গা করে নেন। কিন্তু বিশ্বকাপে এসে ছন্দপতন ঘটে তার। নয় ম্যাচে মাত্র ৯১ রান সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
ইয়োন মরগান আয়ারল্যান্ডের হয়ে ২৩টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। ২৩ ম্যাচে ৩৫.৪২ ব্যাটিং গড়ে ৭৪৪ রান করেছিলেন। শতক হাঁকিয়েছিলেন একটি এবং অর্ধশতক পাঁচটি। তিনি আয়ারল্যান্ডের হয়ে শেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন ২০০৯ সালের ৬ই এপ্রিল। কানাডার বিপক্ষে ঐ ম্যাচে অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মরগান। এর আগের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৬ বলে তিনটি চার এবং চারটি ছয়ের মারে ৬০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
৪
৬ই এপ্রিল কানাডার বিপক্ষে খেলার পর মাত্র একমাসের ব্যবধানে ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে মাঠে নামেন ইয়োন মরগান। মাত্র ১৬ বছর বয়স থেকে মিডলসেক্সের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট এবং ইংল্যান্ড লায়ন্সের হয়ে নিয়মিত ম্যাচ খেলার কারণে ইংল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি তাকে।
২০০৯ সালের ২৪ মে ব্রিস্টলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেক ঘটে মরগানের। অভিষেক ম্যাচে ছয় বলে অপরাজিত দুই রান করে দলের জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন তিনি। ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম বছর খুব একটা খারাপ কাটেনি মরগানের। ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে ১৫টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ৩৬.৩ ব্যাটিং গড়ে ৩৬৩ রান করেছিলেন।
![](https://assets.roar.media/assets/dXFNIFo8otKfnv0o_%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A4%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A7%9F%20%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%20%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%82%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%87%20%E0%A6%B6%E0%A6%A4%E0%A6%95%20%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20Images%20Source%20Zimbio.jpg)
পরের বছর ২০১০ সালেই টেস্ট ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন পূরণ হয় ইয়োন মরগানের। ক্যারিয়ারের তৃতীয় ইনিংসেই টেস্ট শতকের দেখা পান তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২১৬ বলে ১৯টি চার এবং একটি ছয়ের মারে ১৩০ রান করেন মরগান। টেস্ট ক্রিকেটের চেয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে বেশি নজর কেড়েছেন তিনি। ২০১২ সালে শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলা মরগান মোট ১৬টি টেস্টে ৩০.৪৩ ব্যাটিং গড়ে ৭০০ রান করেছিলেন।
২০১০ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটার পাশাপাশি ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে শতক হাঁকিয়ে ইংল্যান্ড দলে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেন। ঐ বছরে ১৭ ম্যাচে ৫৩.১৫ ব্যাটিং গড়ে ৬৯১ রান করেছিলেন। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি আইরিশ বংশদ্ভূত এই ইংলিশ ব্যাটসম্যানের।
৫
![](https://assets.roar.media/assets/pLbJQLfMqJOHWOO7_%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%BE4%20Image%20Source%20Getty%20Images.jpg)
২০১৫ সালের কয়েকমাস আগে অ্যালিস্টার কুককে সরিয়ে ইয়োন মরগানকে ইংল্যান্ডের ওয়ানডে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম ম্যাচেই ১৩৬ বলে ১১টি চার এবং তিনটি ছয়ের মারে ১২১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
তার নেতৃত্বে ইংল্যান্ড ওয়ানডে দল ভয়ভীতিহীন ক্রিকেট খেলছে। জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, অ্যালেক্স হেইলস, জস বাটলার, বেন স্টোকসের মতো বিধ্বংসী ব্যাটসম্যানদের পাশাপাশি জো রুট এবং ইয়োন মরগানকে নিয়ে গড়া ব্যাটিং লাইনআপ বোলারদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক।
ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে ইংল্যান্ড এখন পর্যন্ত ইনিংসে ৩৫০ বা ততোধিক রান সংগ্রহ করেছে মোট ১৩ বার। যার মধ্যে ২০১৫ সালের পর স্কোরবোর্ডে ৩৫০ রান জমা করেছে ১১ বার।
ইংল্যান্ড তাদের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চার শতাধিক রানের স্কোর গড়েছিল ৯ই জুন ২০১৫ সালে।
বার্মিংহামে প্রথম ব্যাট করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নয় উইকেটে ৪০৮ রান সংগ্রহ করেছিল ইংল্যান্ড। স্বাগতিকদের হয়ে জো রুট ১০৮ রান এবং জস বাটলার ১২৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। অধিনায়ক ইয়োন মরগানের ব্যাট থেকে এসেছিলো ৫০ রান৷ তিনি ৪৬ বলে একটি চার এবং তিনটি ছয়ের মারে এই রান করেছিলেন।
২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট নটিংহ্যামে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়েছিল ইংল্যান্ড। সেদিন প্রথমে ব্যাট করে তিন উইকেটে ৪৪৪ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। ওপেনার অ্যালেক্স হেইলসের ১৭১ রান এবং জো রুটের ৮৫ রান ও জস বাটলারের অপরাজিত ৯০ রানের ইনিংসের পাশাপাশি অধিনায়ক ইয়োন মরগানের মাত্র ২৭ বলে অপরাজিত ৫৭ রানের ইনিংস ইংল্যান্ডকে রেকর্ড গড়তে সাহায্য করে।
![](https://assets.roar.media/assets/2mwVuGMi70vPWOKl_%E0%A6%86%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%A5%E0%A7%87%20%E0%A6%87%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%95%20%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%A8%20%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%20Image%20Source%20Zimbio.jpg)
ইয়োন মরগান ২০১৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে অধিনায়কের দায়িত্ব পান৷ কিন্তু এর আগেও ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন ২০১১ সালের ২৫ আগস্ট। নিজ জন্মভূমি ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
আইরিশদের বিপক্ষে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ পায় ইংল্যান্ড। স্বাগতিকদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৪২ ওভারে আট উইকেটে ২০১ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের হয়ে জোনাথন ট্রট ৬৯ রান এবং ইয়োন মরগান ৫৯ রান করেন। শেষপর্যন্ত বৃষ্টি আইনে আয়ারল্যান্ডকে ১১ রানে পরাজিত করে ইংল্যান্ড। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন অধিনায়ক ইয়োন মরগান।
দুই বছর পর আবারও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ড ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব দেন ইয়োন মরগান। এবারও প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিলো আয়ারল্যান্ড। ডাবলিনের দ্য ভিলেজ স্টেডিয়ামে ২০১৩ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর ম্যাচটি মাঠে গড়ায়। ইয়োন মরগান টসে জিতে আয়ারল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান৷ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক পোর্টাফিল্ডের শতকের উপর ভর করে সাত উইকেটে ২৬৯ রান সংগ্রহ করে আয়ারল্যান্ড।
২৭০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৪৮ রানে চার উইকেট হারিয়ে বসে ইংল্যান্ড। সেখান থেকে রবি বোপারাকে সাথে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মরগান। তার ১০৬ বলে আট চার এবং চার ছয়ের মারে সাজানো ১২৪* রান এবং বোপারার ১০১* রানের ইনিংসের উপর ভর করে শেষপর্যন্ত ছয় উইকেটের সহজ জয় পায় ইংল্যান্ড।
![](https://assets.roar.media/assets/gVxex5NuJkq7pwhe_%E0%A6%87%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A7%AE%E0%A7%A9%E0%A6%9F%E0%A6%BF%20%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%87%20%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AC%20%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%9B%E0%A7%87%E0%A6%A8%20%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A7%8B%E0%A6%A8%20%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20Image%20Source%20Getty%20Images.jpg)
ইয়োন মরগান এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডকে ৮৩ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ৫০ ম্যাচে জয় এনে দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে মাত্র ২৯টি ওয়ানডেতে পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে ইংল্যান্ড। অধিনায়ক হিসেবে ব্যাট হাতেও সফল ছিলেন তিনি। ৮৩ ম্যাচের ৭৭ ইনিংসে ব্যাট করে ছয়টি শতক এবং ১৯টি অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৪০.৯০ ব্যাটিং গড়ে ২,৯০৪ রান করেছেন।
মরগান ওয়ানডে ক্রিকেটের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টিতেও ইংল্যান্ডের সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। এখন পর্যন্ত ৭৩টি টি-টোয়েন্টিতে ২৯.৭০ ব্যাটিং গড়ে ১,৬৯৩ রান করেছেন।
শৈশবে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখে বেড়ে ওঠা মরগান স্বপ্ন দেখে থেমে থাকেননি। স্বপ্নের পেছনে ছুটে ইংল্যান্ডের অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পাশাপাশি সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাদের সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হিসেবে নিজের নাম লেখান।
ফিচার ইমেজ: Getty Images