ইউরোপ চ্যাম্পিয়নের ট্রফিটা রয়েছে মাত্র এক ক্রোশ দূরে। সামান্য একটু হাত বাড়ালেই যেন ছুঁয়ে দেখা যাবে। ফরাসিরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করছে ট্রফিটা নিজের করে নেবার। তবে তার জন্য প্রয়োজন একটিমাত্র গোল। কিন্তু ৯০ মিনিট শেষ, অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ১০৮ মিনিট পার হয়ে গেছে, কোনো গোলের দেখা নেই। আচমকা ১০৯ মিনিটে এলো সেই আরাধ্য গোল। কিন্তু হায়, নেচে উঠল পর্তুগিজ শিবির। কারণ গোলটা যে এসেছে এডারের পা থেকে, স্ট্রাইকারের ভূমিকায় যিনি খেলেন পর্তুগাল দলে!
সেদিন সেইন্ট ডেনিসে ১৬ বছরের শিরোপাখরা ঘোচানো হয়নি দেশমের দলের। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার ইউরো-সেরার শিরোপা সেদিন তুলে ধরেছিলেন পর্তুগালের প্রাণভোমরা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। সে ম্যাচে গ্রিজমান ছিলেন, ছিলেন লরিস, পগবা, জিরু, সিসোকোরা। সেদিন ফাইনালের হারের পর তারাই জিতেছেন বিশ্বকাপ এবং ন্যাশনস লিগ। কিন্তু এত কাছে গিয়েও ইউরো হেরে আসার সেই কষ্ট কি ভুলে গেছেন দেশমের শিষ্যরা?
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ফ্রান্স শিরোপা জিতেছে দুইবার। ২০০০ সালে শেষবার ফ্রান্স যখন এই ট্রফি ঘরে তোলে, সেবার দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন খোদ বর্তমান কোচ দিদিয়ের দেশম। দলে আরও ছিলেন থুরাম, জিদান, বার্থেজরা। খেলোয়াড় হিসেবে ইউরো জেতার পর কোচ হয়ে আবার এই ট্রফি তুলে ধরার অন্যতম সুযোগ এসেছিল ২০১৬ সালে, সেবারের ব্যর্থতার পর আবারও নতুন সুযোগ পেলেন দেশম। এবার প্রত্যাশা তাই আকাশচুম্বী। কারণ, সেবারের দল থেকে এবারের দল ঢের পরিণত ও ক্ষুধার্ত।
দলগত আলোচনার প্রথমেই কোচ দেশমের প্রসঙ্গে আসা যাক। ৫২ বছর বয়সী এই ফরাসি কোচ দেশের ফুটবল দলের দায়িত্বে আছেন ২০১২ সাল থেকে। প্রথমদিকে ভিন্ন ছক ও কৌশল ব্যবহার করলেও বর্তমানে তিনি স্থায়ী হয়ে গেছেন ৪-২-৩-১ ছকে। কারণ খুবই পরিষ্কার, বিশ্বকাপ ও ন্যাশনস লিগে সাফল্য এসেছে দলকে এই ছকে খেলিয়েই। তাই আরও একটি বড় প্রতিযোগিতাকে সামনে রেখে দেশম যে তার ছকে কোনো বদল আনবেন না, বলাই বাহুল্য।
দল বাছাই করতে গিয়ে দেশম কোনো ভুল করেননি। এবারের ট্রফি ঘরে তুলতে তিনি কেমন মরিয়া, তার প্রমাণ সবাই পেয়েছে হাতেনাতে। ইউরোর জন্য তিনি যে দল ঘোষণা করেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি কোনো। এমনকি বেনজেমার জন্য যে দুয়ার প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেই দুয়ার আবার খুলে দিয়ে ফ্রান্স দলে আবার ডেকেছেন বেনজেমাকে। আদ্রিয়া রাবিওকে তেমন পছন্দ করেননি কখনোই, কিন্তু এবারের দলে তিনিও আছেন। ফর্মে আছেন এবং দলে প্রয়োজন – এমন কোনো খেলোয়াড়কে রেখেই তিনি দল ঘোষণা করেননি। দলে জায়গা পাওয়ার যোগ্য সবাইকেই ডেকে এনেছেন ২১ বছরের স্বপ্নপূরণ করতে।
দেশম তার দলকে মূলত খেলান ৪-২-৩-১ ছকে। যদিও ম্যাচে উইঙ্গার ও ফুলব্যাকদের জন্য মাঝে মাঝে তা বদলে ৪-৩-১-২ ছকে বদলে যায়। আবার অনেক সময় রক্ষণে বেশি মনোনিবেশ করতে গিয়ে দলকে ৪-৫-১ ছকেও বদলে যেতে দেখা যায়, তবে তা ক্ষণস্থায়ী। মূলত রাশিয়া বিশ্বকাপে যে ছকে ফ্রান্সকে দেখা গিয়েছিল, এবারও তেমনই দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও একাদশের ক্ষেত্রে শেষ ইউরো থেকে কয়েকজন থাকলেও অধিকাংশই ছিলেন রাশিয়া বিশ্বকাপজয়ী দলে।
গোলবারের নিচে সেই পুরনো সৈনিক হুগো লরিস। ক্যারিয়ারের একদম শেষ সময়ে এসে ফর্মের সাথে কিছুটা লড়তে হলেও তিনিই এখনও ফরাসিদের আস্থা। কোচ দেশম নিজেও লরিসকে প্রথম পছন্দ হিসেবেই দেখেন। তাই ইনজুরি বা অন্য কোনো সমস্যা তৈরি না হলে ইউরোতে প্রথম থেকেই মাঠে থাকবেন তিনি।
রাশিয়াতে ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন উমতিতি ও ভারান জুটি। উমতিতির এবার আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়া হয়নি। বিশ্বকাপের পর থেকে ক্রমাগত চোটে পড়ে ক্লাব ফুটবলে অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি, ফর্ম ও ফিটনেসেরও অভাব আছে তার। তবে ভারান থাকছেন। তারও ফর্ম যে খুব ভালো, বলা যায় না। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গড়পড়তা মানের একটি মৌসুম পার করেছেন। ধারাবাহিক ভালো খেলাটা এবার তার হয়ে ওঠেনি। তাই রক্ষণের এই অন্যতম মুখ যদি ইউরোতেও তার ক্লাবের মধ্যমানের ফর্ম টেনে আনেন, তবে ফরাসি রক্ষণে কিছুটা চিড় ধরা অসম্ভব কিছু নয়। ভারানের সঙ্গী হিসেবে থাকবেন পিএসজির প্রেসলেন কিম্পেম্বে। ২৫ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার ক্লাবের হয়ে খুব সফল একটি মৌসুম পার করেছেন, সেটা ঠিক বলা যায় না। তবে ফর্মে থাকলে ভারান ও কিম্পেম্বের রক্ষণজুটি ভাঙা বেশ কঠিন হবে।
ফ্রান্স দল যেদিকে সবচেয়ে এগিয়ে থাকবে, তা হলো স্কোয়াড ডেপথ। দলে প্রত্যেক পজিশনের জন্য রয়েছে দু’টি করে খেলোয়াড়। এবং প্রত্যেকেই প্রধান একাদশে খেলার যোগ্য। ভারানের বিকল্প হিসেবে থাকবেন সেভিয়ার হয়ে দুর্দান্ত মৌসুম কাটানো তরুণ ডিফেন্ডার জুলেস ক্যুন্দে। এছাড়াও থাকছেন জুমা ও ক্লেমেন্ত লংলে।
রাশিয়া বিশ্বকাপের শুরুতে দেশমের প্রথম পছন্দের দুই ফুলব্যাক ইনজুরিতে পড়েন। ফলে তাকে ব্যবহার করতে হয় বিকল্প খেলোয়াড়দেরকে। কিন্তু তারা নেমে যে ঝলক দেখান, দেশম তাদের আর পাল্টাতে সাহস পাননি। তাই এবারও ফুলব্যাক হিসেবে দেখা যাবে বেঞ্জামিন পাভার ও লুকাস হার্নান্দেজকে। বায়ার্ন মিউনিখে খেলা পাভার বেশ আক্রমণাত্মক ফুলব্যাক। কাউন্টার অ্যাটাকে মাঝে মাঝেই প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে আচমকা শট নিয়ে বসেন। এছাড়াও তার পাসিং অ্যাকুরেসি ও সলো রানও বেশ চমকপ্রদ। বিপরীতে লুকাস বেশ রক্ষণাত্মক। আক্রমণের সময়ে তাকে বাম পাশে উপরের দিকে দেখতে পাওয়া গেলেও তার মনোযোগ বেশি রক্ষণেই। তাই দুই ঘরানার ফুলব্যাক দেশমের ৪-২-৩-১ ছকে বেশ কাজে দেবে। লুকাসের বিকল্প হিসেবে থাকবেন এভারটনের লুকাস দিনিয়ে, খেলার দিক থেকে যিনি লুকাসের একদম উল্টো।
তবে দলে সব পজিশনে বিশ্বমানের খেলোয়াড় থাকলেও রাইটব্যাকে তা নেই। পাভারের ব্যাকআপ হিসেবে আছেন লিও দ্যুবো। খেলোয়াড় হিসেবে তিনি মধ্যমমানের, তাই পাভারের কোনো ইনজুরি হলে ফরাসিদের রক্ষণের ডানপাশের দৃঢ়তা কমে যাবার আশংকা থেকেই যাচ্ছে।
৪-২-৩-১ ছকে মধ্যমাঠের দুই মিডফিন্ডারকে মূলত ডাবল পিভটের ভূমিকার খেলানো হয়। তবে দেশম মধ্যমাঠে দুইজন মিডফিন্ডার নামালেও তারা আসলে ডাবল পিভটের ভূমিকায় খেলেন না। ফ্রান্স দলের বামপাশে লেফট উইঙ্গারের ভূমিকায় যে খেলোয়াড়কে দেখা যায়, এখানে কোনো উইঙ্গারকে নামান না দেশম। সেই ২০১৬ সালের ইউরো থেকেই দেখা যাচ্ছে, সেখানে একজন সেন্ট্রাল-মিডফিল্ডারকে নামানো হয় যিনি বল পায়ে পারদশী, ডায়াগোনাল পাস বা থ্রু বল দিতে পারেন এবং দরকার হলে লেফট উইং থেকে আক্রমণও তৈরি করতে পারেন। তাই আদতে এখানে তিনজনের মিডফিল্ড তৈরি হয়ে থাকে।
মধ্যমাঠে কান্তে ও পগবার সাথে রাশিয়া বিশ্বকাপে এই পজিশনে খেলতেন ব্লেইস মাতুইদি। ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে তিনি আর সেভাবে ফর্মে নেই। জুভেন্টাস ছেড়ে চলেও গেছেন ইন্টার মায়ামিতে। তাই এই পজিশনে খেলবেন জুভেন্টাসের মিডফিল্ডার আদ্রিয়ান রাবিও। পুরো মাঠে দৌড়ে খেলতে জানেন, কৌশলও ভালো। তাই কান্তে ও পগবার মতো ক্রিয়েটিভ মিডফিন্ডারের পাশে তিনি যোগ্য খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারেন।
এখানে প্রশ্ন আসতে পারে, ফ্রান্সের মাঝমাঠে কোনো বল উইনার মিডফিল্ডার নেই কেন? কান্তে আছেন, তবে তিনি পুরো মাঠ দৌড়ে খেলতে পছন্দ করেন। পগবা একজন মিডফিল্ডারের তুলনায় বেশ আক্রমনাত্মক। তাহলে মাঝমাঠে বল ঠেকাবে কে?
এখানেই ফ্রান্স দলের সার্থকতা, তাদের দলে একজন কান্তে আছেন। পুরো মাঠ চষে ফেলা এই মিডফিল্ডার যেমন খেলা গড়ে দেন, তেমনি প্রতিপক্ষের আক্রমণ ভাঙতেও পারেন। ইন্টারনেট দুনিয়াতে তো এমন একটা কৌতুকই চালু হয়ে গেছে, কোনো খেলোয়াড় ড্রিবল করে কান্তেকে পিছনে ফেলে সামনে এগোলেও কান্তেকেই আবার পাবেন। কথাটা খুব মিথ্যে নয় বৈকি!
প্রয়োজনে আক্রমণ ভাঙাগড়ার কাজটা কান্তের পাশে পগবাও করবেন। এছাড়াও প্রায়ই সেকেন্ড স্ট্রাইকারের ভূমিকায় খেলা গ্রিজমানকে নিচে থেকে খেলা গড়তে দেখা যায়। এখানে রাবিও ছাড়াও গ্রিজমানের মতো একজন অতিরিক্ত খেলোয়াড় পেয়ে যাচ্ছে তারা। তাই এই কৌশল সবসময়ের মতোই ব্যাটে-বলে হলে ফ্রান্সের মধ্যমাঠ একদম দুর্দমনীয় হয়ে উঠবে।
আক্রমণের একদম মাঝে থাকবেন গ্রিজমান। দেশম একাধারে তাকে সেকেন্ড স্ট্রাইকার এবং অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে ব্যবহার করেন। বার্সেলোনার হয়ে ব্যক্তিগতভাগে সফল একটি মৌসুম পার করা গ্রিজমান এবারও থাকবেন দেশমের অন্যতম অস্ত্র হয়ে। তবে আক্রমণের ডানপাশ দিয়ে ত্রাস ছড়াবেন এমবাপে। তার গতি, ড্রিবলিং ও গোল করার দক্ষতার কারণে প্রতিপক্ষকে সবসময় থাকবে হবে তটস্থ।
দেশম মধুর সমস্যায় পড়বেন স্ট্রাইকার নির্বাচন করতে গিয়ে। শেষ বিশ্বকাপ ও পরবর্তী ম্যাচগুলোতে স্ট্রাইকারের ভূমিকায় খেলতেন জিরু। দেশমের ট্যাকটিক্সে স্ট্রাইকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তাদের দায়িত্ব কেবল গোল করা নয়, গোলের পরিবেশ তৈরি করাও। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে নিজের দিকে টেনে নিয়ে গ্রিজমান বা এমবাপেকে শূন্যস্থান তৈরি করে দেবার মতো দায়িত্ব জিরু হরহামেশাই করেন।
কিন্তু এবার রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে প্রশংসনীয় এক মৌসুম পার করে আসা বেনজেমাকে না খেলানোটাই হবে বোকামি। তবে তিনি দলে দীর্ঘদিন পরে ফিরেছেন, দলের বাকি খেলোয়াড়রা নিয়মিত জিরুর পাশে খেলেই অভ্যস্ত। ফলে তার সাথে সতীর্থদের যেমন মেলবন্ধন, বেনজেমার এখনও সেটা ঠিক গড়ে ওঠেনি। তাই স্ট্রাইকারের ভূমিকায় বেনজেমাকে খেলানো হলে তা কতটুকু কাজে দেবে, তা নিয়ে একটা সংশয় থেকেই যায়।
দিদিয়ের দেশম কৌশলগত দিক থেকে আহামরি কোনো কোচ নন। তবে তিনি নিজের কাজটা বেশ ভালোই বোঝেন। তাই ম্যাচ চলাকালীন সময়ে চাইলেই তিনি তার কৌশল পালটে ফেলতে পারেন। সে সুযোগ তার হাতে আছে। ৪-৩-৩ বা প্রথাগত ৪-২-৩-১ ছকে তিনি চাইলেই দলকে খেলাতে পারেন। ক্যোমান, থুরাম, দেমবেলের মতো উইঙ্গার, লেমারের মতো অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার যখন দলের বেঞ্চে থাকেন, তখন খেলোয়াড় নিয়ে চিন্তা করার অবকাশ বিশেষ নেই। তাই প্রতিপক্ষের অবস্থা বুঝে কৌশল পালটে ফেলার বড় সুযোগ থাকছে দেশমের জন্য। তবে এমন কিছু করলে তিনি আদৌ সফল হবেন কি না, ফ্রান্সের ইউরো-যাত্রা শুরু হবার আগ পর্যন্ত প্রশ্নটি তোলাই রইলো।
গ্রুপ অফ ডেথে পর্তুগাল ও জার্মানির সাথে থাকার পরও এবারের ইউরোতে ফ্রান্সই ফেভারিট। কারণ, তাদের মতো ভারসাম্যপূর্ণ দল, খেলোয়াড়দের মেলবন্ধন অন্য কোনো দেশের নেই। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক শিরোপাগুলোও কথা বলছে তাদের পক্ষেই। শেষমেশ যদি সেটাই হয়ে যায়, খেলোয়াড় এবং কোচ দুই ভূমিকাতেই দেশমের ঝুলিতে থাকবে ইউরো-সেরার খেতাব। আর ফ্রান্সের অর্জনের খাতার লেখা হবে, ফরাসিরা প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ জেতার পর ইউরোর শিরোপাও ঘরে তুলেছিল।
সম্পূর্ণ স্কোয়াড
গোলরক্ষক: হুগো লরিস, মাইক মাইগনান, স্তেভ মান্দান্দা
ডিফেন্ডার: রাফায়েল ভারান, প্রেসনেল কিম্পেম্বে, কুত জুমা, জুলেস ক্যুন্দে, ক্লেমেন্ত লংলে, বেঞ্জামিন পাভার, লিও দ্যুবো, লুকাস দিনিয়ে, লুকাস হার্নান্দেজ
মিডফিল্ডার: এনগোলো কান্তে, পল পগবা, মুসা সিসোকো, কোরেন্তিন তোলিসো, আদ্রিয়ান রাবিও
ফরোয়ার্ড: আঁতোয়া গ্রিজমান, উসমান ডেমবেলে, কিলিয়ান এমবাপে, করিম বেনজেমা, মার্কাস থুরাম, কিংসলে ক্যোমান, অলিভিয়ের জিরু, বেন ইয়েদের, টমাস লেমার
সম্ভাব্য লাইনআপ
লরিস, লুকাস, কিম্পেম্বে, ভারান, পাভার, কান্তে, পগবা, রাবিও, গ্রিজমান, বেনজেমা, এমবাপে
যাদের দিকে থাকবে নজর
কান্তে, এমবাপে, গ্রিজম্যান