একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পথচলা শুরু হয় ১৯৭১ সালের ৫ই জানুয়ারি। ঐতিহ্যবাহী দুই দল ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭ দল ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে, যার মধ্যে ২৩টিই দেশ। বাকি দলগুলোর একটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আর বাকি তিনটি দল হলো আফ্রিকা একাদশ, এশিয়া একাদশ এবং আইসিসি বিশ্ব একাদশ। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলা দলগুলোর মধ্যে পূর্ব আফ্রিকা, নামিবিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বাকি সব দলের কমপক্ষে একজন ক্রিকেটার ওয়ানডেতে শতক হাঁকিয়েছেন।
আজকের লেখায় থাকছে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা দেশগুলোর প্রথম সেঞ্চুরিয়ানদের কথা।
ডেনিস অ্যামিস (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ডের ওপেনার ডেনিস অ্যামিস ইতিহাসের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলেননি, তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই ঠিকই একাদশে ছিলেন। আর এতেই বহু রেকর্ডের পাশে নিজের নাম লেখিয়েছিলেন নিজের ব্যাট দিয়ে। তিনি প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে ওয়ানডেতে শতক হাঁকিয়েছিলেন। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে অভিষেক ওয়ানডেতে শতক হাঁকানোর রেকর্ডের পাশেও তার নাম চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।
ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান সীমিত ওভারের ক্রিকেটে প্রথম কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ছিলেন। সেসময় ওয়ানডেতে শতক হাঁকানো অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের কাছে আকাশছোঁয়ার মতো কঠিন ছিল, কিন্তু ডেনিস অ্যামিস ইংল্যান্ডের হয়ে মাত্র ১৮ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে চারটি শতক হাঁকিয়েছিলেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর শেষ ম্যাচেও শতক হাঁকিয়েছিলেন তিনি।
১৯৭২ সালের ২৪শে আগস্ট ম্যানচেস্টারে ৫৫ ওভারের ওয়ানডে ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। আগে ব্যাট করে ইয়ান চ্যাপেল এবং এডওয়ার্ডসের অর্ধশতকের উপর ভর করে আট উইকেটে ২২২ রান করেছিল অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ইংল্যান্ড ৩৫ বল বাকি থাকতে ছয় উইকেটের জয় তুলে নেয়। তাদের সহজ জয়ে বড় অবদান রাখেন ওপেনার ডেনিস অ্যামিস। তিনি ১৩৪ বলে নয়টি চারের মারে ১০৩ রান করেছিলেন। তার এই শতকটি ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম শতক ছিল এবং স্বাভাবিকভাবেই ইংল্যান্ডের হয়েও প্রথম শতক এটিই।
রয় ফ্রেডেরিক্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
পাল্টা আক্রমণ করার ক্ষেত্রে রয় ফ্রেডেরিক্সের বেশ নামডাক ছিল, কিন্তু জীবনযুদ্ধে ক্যান্সারের আক্রমণে হার মেনে মাত্র ৫৭ বছর বয়সেই পরলোকগমন করেছিলেন। রয় ফ্রেডেরিক্স ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১২টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন। এর মধ্যে শতক হাঁকিয়েছিলেন একটি। এই শতকটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে, কারণ তার এই শতকটিই ওয়ানডেতে কোনো ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে আসা প্রথম শতক।
১৯৭৩ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর দ্য ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে নবম এবং রয় ফ্রেডেরিক্সের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ ছিল সেটা। ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫৫ ওভারে নয় উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান সংগ্রহ করেছিলো ইংল্যান্ড। জবাবে ফ্রেডেরিক্সের ১২২ বলে দশটি চার এবং একটি ছয়ের মারে সাজানো ১০৫ রানের ইনিংসের উপর ভর করে ৭৬ বল এবং আট উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নিয়েছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন ফ্রেডেরিক্সই।
কেন ওয়ার্ডসওয়ার্থ (নিউ জিল্যান্ড)
নিউ জিল্যান্ডের সাবেক উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান কেন ওয়ার্ডসওয়ার্থ মাত্র ২৯ বছর বয়সে পরলোকগমন করেছিলেন। ১৯৭৬ সালের ১৯শে আগস্ট তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। তিনি মৃত্যুবরণ করার মাত্র পাঁচ মাস আগে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলে শতক হাঁকিয়েছিলেন। যে বয়সে সাধারণত ক্রিকেটাররা নিজের সেরা সময় কাটান, সে বয়সে তিনি দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেছিলেন। তিনি নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ৩৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলে সহস্রাধিক রান করার পাশাপাশি ৯৬টি ডিসমিসালও করেছিলেন। তিনি খুব আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাটিং করতেন, যার ফলে খুব বেশি বড় ইনিংস খেলতে পারতেন না।
ওয়ার্ডসওয়ার্থ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে একটি শতক হাঁকিয়েছিলেন, যা ছিল কোনো কিউই ব্যাটসম্যানের ওয়ানডেতে প্রথম শতরানের ইনিংস। ১৯৭৪ সালের ৩১শে মার্চ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে ছয় নাম্বারে ব্যাট করতে নেমে ৯৮ বলে ১৬টি চারের মারে ১০৪ রানের ইনিংসে খেলেছিলেন তিনি। ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৬৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৮৩ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়েছিলো স্বাগতিক নিউ জিল্যান্ড। সেখান থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে না পারলেও অসাধারণ শতক হাঁকিয়ে অনেকটা সময় ধরে দলকে জয়ের পথে রেখেছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার ২৬৫ রানের জবাবে নিউ জিল্যান্ড শেষ পর্যন্ত ছয় উইকেটে ২৩৪ রান সংগ্রহ করেছিলো।
মজিদ খান (পাকিস্তান)
ওয়ানডেতে পাকিস্তানের হয়ে প্রথম শতক হাঁকান মজিদ খান। ১৯৭৪ সালের ৩১শে আগস্ট নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই তিনি শতক হাঁকান। তার ঝড়ো শতকের উপর ভর করে ইংল্যান্ডকে সাত উইকেটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলো পাকিস্তান।
এই ম্যাচে পাকিস্তানের দুই কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইমরান খান এবং জহির আব্বাসের ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। নটিংহ্যামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ইংল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে ডেভিড লয়েডের অপরাজিত ১১৬ রানের উপর ভর করে চার উইকেটে ২৪৪ রান সংগ্রহ করেছিল স্বাগতিকরা, সে সময়ে যা বেশ চ্যালেঞ্জিং স্কোর ছিল।
ইংল্যান্ডের দেওয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ঝড়ো ব্যাটিং করেন ওপেনার মজিদ খান। তিনি মাত্র ৯৩ বলে ১৬টি চার এবং একটি ছয়ের মারে ১০৯ রানের ইনিংস খেলেন, যা ওয়ানডেতে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে প্রথম শতক ছিল। তার ১০৯ রান, সাদিক মোহাম্মাদের ৪১ রান এবং জহির আব্বাসের ৩১ রানের উপর ভর করে সাত উইকেট এবং ৪৩ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।
অ্যালান টার্নার (অস্ট্রেলিয়া)
ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রথম শতক হাঁকান উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান অ্যালান টার্নার। তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ছয়টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন, যার মধ্যে পাঁচটি ম্যাচ ছিল ১৯৭৫ সালের বিশ্বকাপে। তিনি নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১১৩ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলার মধ্য দিয়ে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান হিসাবে ওয়ানডেতে শতক হাঁকানোর কীর্তি গড়েন।
১৯৭৫ সালের ১১ই জুন লন্ডনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলো অস্ট্রেলিয়া। শ্রীলঙ্কা টসে জিতে প্রথমে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করানোর জন্য অজিদের দুই ওপেনার টার্নার এবং ম্যাককস্কার উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে ১৮২ রান যোগ করেছিলেন, যার মধ্যে টার্নার একই করেন ১০১ রান। তিনি ১১৩ বলে নয়টি চার এবং একটি ছয়ের মারে এই ইনিংস খেলেন। তাদের শুভসূচনার পর মিডল-অর্ডারের ব্যাটসম্যানরাও রানের দেখা পেয়েছিলো, যার ফলে শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে ৫২ রানে পরাজিত করেছিল অস্ট্রেলিয়া।
রয় ডায়াস (শ্রীলঙ্কা)
শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ানডেতে প্রথম শতক হাঁকিয়েছিলেন রয় ডায়াস। ১৯৮২ সালে ১৫ই সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে দিল্লীতে শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ডায়াস ১১৪ বলে ১০২ রানের ইনিংস খেলেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের দেখা পেতে শ্রীলঙ্কাকে প্রায় সাত বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। ডায়াস প্রথম শতক হাঁকানোর পর পরের ইনিংসেও শতক হাঁকিয়েছিলেন।
দিল্লীতে ভারতের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সফরকারী শ্রীলঙ্কা। ব্যাট করতে নেমে তিন নাম্বারে নামা রয় ডায়াসের ১১৪ বলে আট চারের মারে খেলা ১০২ রানের উপর ভর করে আট উইকেটে ২৭৭ রান সংগ্রহ করেছিলো তারা। ২৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে সহজ জয় পায় ভারত। মাত্র পাঁচ রানের জন্য শ্রীকান্ত ভারতের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসাবে নিজের নাম লেখাতে পারেননি ঐদিন। তিনি মাত্র ৬৬ বলে ১৩টি চার এবং একটি ছয়ের মারে ৯৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। শতক হাঁকাতে না পারলেও দলের বড় জয়ে অবদান রাখেন তিনি। ভারত ৫৫ বল এবং ছয় উইকেট হাতে রেখে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছিলো।
কপিল দেব (ভারত)
ভারত নিজেদের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলো ১৯৭৪ সালে। তাদের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিয়ানের জন্য অপেক্ষা করতে হয় প্রায় নয় বছর। ভারতের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার কপিল দেব ভারতের হয়ে ওয়ানডেতে প্রথম শতক হাঁকিয়েছিলেন। ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অপরাজিত ১৭৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলার পথে তিনি ভারতের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিয়ান হিসাবে নিজের নাম লেখান।
১৯৮৩ সালের ১৮ই জুন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল ভারত। মাত্র ১৭ রানে পাঁচ উইকেট ও ৭৮ রানের মধ্যে সাত উইকেট হারানো ভারত লজ্জাজনক পরাজয়ের প্রহর গুনছিল। তখনি ত্রাণকর্তা হিসাবে আবির্ভাব হয় কপিল দেবের। এই অলরাউন্ডার ঐদিন ভারতকে শুধুমাত্র সম্মানজনক স্কোরই এনে দেননি। এনে দিয়েছিলেন জয় তুলে নেওয়ার মতো পুঁজি। তিনি মাত্র ১৩৮ বলে ১৬টি চার এবং ছয়টি ছয়ের মারে অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। যার ফলে ভারত শেষপর্যন্ত ২৬৬ রান সংগ্রহ করে ৩১ রানের জয় পায়। কপিল দেবের এই দুর্দান্ত ইনিংসটির কল্যাণেই ভারত ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জেতার অনুপ্রেরণা খুঁজে পেয়েছিল। তার এই ঐতিহাসকটি ইনিংসটি শুধুমাত্র ভারতের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি হিসাবেই ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে না, লেখা থাকবে বিশ্বকাপ জিতানো এক ইনিংস হিসাবে।
ডেভ হটন (জিম্বাবুয়ে)
টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে জিম্বাবুয়ের হয়ে প্রথম শতক হাঁকিয়েছিলেন ডেভ হটন। ঐতিহাসিক প্রথম ম্যাচেই শতক হাঁকিয়েছিলেন তিনি। জিম্বাবুয়ের টেস্ট ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন তিনি। এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান জিম্বাবুয়ের হয়ে প্রথম ওয়ানডে শতকও হাঁকিয়েছিলেন। ১৯৮৭ সালের ১০ই অক্টোবর বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে শতক হাঁকিয়েছিলেন তিনি। তার ১৪২ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের পরেও জয়ের দেখা পায়নি জিম্বাবুয়ে।
হায়দরাবাদে ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপের চতুর্থ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিলো জিম্বাবুয়ে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো জিম্বাবুয়ে। ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ পেয়ে নিউ জিল্যান্ড নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেটে ২৪২ রান তুলেছিলো। জবাবে দুই বল বাকি থাকতে অল আউট হওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে ২৩৯ রান সংগ্রহ করেছিলো। এক পর্যায়ে মাত্র ১০৪ রানে সাত উইকেট হারিয়েছিলো জিম্বাবুয়ে। সেখান থেকে নয় নাম্বার ব্যাটসম্যান ইয়ান বুচার্টকে সাথে নিয়ে ৮ম উইকেট জুটিতে ১১৭ রান যোগ করেছিলেন হটন। দলীয় ২২১ রানের মাথায় ৮ম ব্যাটসম্যান হিসাবে আউট হওয়ার আগে ১৩৭ বলে ১৩টি চার এবং ছয়টি ছয়ের মারে ১৪২ রান করেছিলেন। তিনি সাজঘরে ফেরার পর জয় থেকে মাত্র তিন রান দূরে থাকতে থেমে যায়। দলকে শেষ হাসি হাসাতে না পারলেও জিম্বাবুয়ের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিয়ান ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছিলেন।
অ্যান্ড্রু হাডসন (দক্ষিণ আফ্রিকা)
বর্ণবাদের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রায় ২২বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে ছিল। যার কারণে তাদের ওয়ানডে ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয় ১৯৯১ সাল থেকে। এর এক বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে ক্রিকেটে তাদের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের দেখা পায়। ভারতের বিপক্ষে ব্লুমফন্টেইনে ওপেনার অ্যান্ড্রু হাডসন এই কীর্তি গড়েন। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে পুনরায় দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটে ফিরলে তিনি প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে টেস্ট ক্রিকেটেও শতক হাঁকিয়েছিলেন। নিজের অভিষেক ম্যাচে শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫১৯ মিনিট ব্যাটিং করে ১৬৩ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
অ্যান্ড্রু হাডসন বেশ কয়েকবার বোলিংবান্ধব উইকেটে প্রতিপক্ষের সামনের প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। তেমনি ১৯৯২ সালের ১৫ই ডিসেম্বর ভারতের বিপক্ষে ব্লুমফন্টেইনে দলের এবং নিজের অভিষেক ওয়ানডে শতক হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেছিলেন। ব্লুমফন্টেইনে টসে জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট করতে নেমে পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে চার উইকেট হারিয়ে ২০৭ রান সংগ্রহ করে। জবাবে হাডসনের ১৪৭ বলে আট চার এবং এক ছয়ের মারে খেলা ১০৮ রানের অনবদ্য ইনিংসের কল্যাণে আট উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
দীপক চূড়াসামা (কেনিয়া)
কেনিয়া প্রথম আন্তর্জাতিক একদিনের ম্যাচ খেলেছিল ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক আঙিনা থেকে অনেকটা দূরে চলে গেলেও একসময় সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে সেরা দল ছিলো তারা। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলেছিল তারা। বিস্ময় জাগানিয়া দলটি ২০১৪ সালে ওয়ানডে স্ট্যাটাস হারায়। কেনিয়া ক্রিকেট দলের একটি বৈশিষ্ট্য ছিল, তাদের দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটার অন্যান্য পেশার সাথেও জড়িত ছিলো। এমন একজন ক্রিকেটার হলেন দীপক চূড়াসামা। তিনি পেশায় একজন বিশেষজ্ঞ দন্ত-চিকিৎসক ছিলেন। কেনিয়া ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার বহু আগে থেকেই তিনি প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলতেন। ১৯৮০ সালে অভিষেক হওয়ার পর ১৯৯০, ১৯৯৪ এবং ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফিতেও খেলেছিলেন।
কেনিয়ার হয়ে ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন দীপক চূড়াসামা। ১৯৯৭ সালের ১০ই অক্টোবর প্রেসিডেন্টস কাপের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনি শতক হাঁকিয়েছিলেন। নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত যে সম্পূর্ণ ভুল ছিল, সেটি প্রমাণ করেন দুই ওপেনার দীপক চূড়াসামা এবং কেনেডি ওটিয়েনো। সে সময়ে উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে রেকর্ড ২২৫ রান যোগ করেন তারা। দুইজনই শতক হাঁকিয়েছিলেন। এর মধ্যে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে শতক হাঁকান চূড়াসামা। তিনি ১১৩ বলে ১৬টি চারের মারে ১২২ রান করেছিলেন। কেনিয়ার হয়ে প্রথম শতক হাঁকানোর পর দলীয় ২২৫ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন তিনি। তার বিদায়ের পর ওটিয়েনোও শতক হাঁকান, তিনি ১৪৬ বলে ১৪৪ রান করেছিলেন। দুই ওপেনারের জোড়া শতকের উপর ভর করে কেনিয়া তিন উইকেটে ৩৪৭ রান সংগ্রহ করেছিলো। জবাবে বাংলাদেশ ১৯৭ রানে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ১৫০ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলো।
মেহরাব হোসেন অপি (বাংলাদেশ)
বিশেষ বিবেচনায় ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেয়েছিলো। এরপর ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জেতার পর স্থায়ীভাবে ওয়ানডে স্ট্যাটাস পায় বাংলাদেশ। কিন্তু নিজেদের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ১৯৯৯ সালের ২৫শে মার্চ পর্যন্ত। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ আসরে অংশগ্রহণ করার আগ মুহূর্তে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মেহরাব হোসেন অপি বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে শতক হাঁকানোর কীর্তি গড়েছিলেন। কাকতালীয়ভাবে তার চাচা আজহার হোসেন বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম অর্ধশতক হাঁকান।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে শতরানের ইনিংস ছিল সোনার হরিণের মতো। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ৩০তম ম্যাচে অপি শতক হাঁকানোর প্রায় ছয় বছর পর শতক হাঁকানো দ্বিতীয় ব্যাটসম্যানের দেখা পায় বাংলাদেশ। সেটা ছিল ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ১০৮তম ম্যাচ। ঢাকাতে ১৯৯৯ সালের ২৫শে মার্চ শক্তিশালী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার মেহরাব হোসেন অপি এবং শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ উদ্বোধনী উইকেট জুটিতে ১৭০ রান যোগ করেছিলেন। শাহরিয়ার ৬৮ রান করে ফিরে গেলেও অপি ১১৬ বলে নয়টি চার এবং দু’টি ছয়ের মারে ১০১ রান করেছিলেন, যা ছিল ওয়ানডেতে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের প্রথম শতক।
দুই ওপেনারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পরেও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার কারণে শেষ পর্যন্ত পাঁচ উইকেটে ২৫৭ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। জবাবে জিম্বাবুয়েকে একপর্যায়ে ব্যাকফুটে ঠেলে দিতে পারলেও অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের ৯৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের সুবাদে শেষ হাসি হাসতে পারেনি বাংলাদেশ। তিন বল এবং তিন উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে।
জন ডেভিসন (কানাডা)
আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০০৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে আইসিসির সহযোগী দেশগুলো ক্রিকেটবিশ্বকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেছিলো। এমনই একটি ম্যাচ ছিল কানাডা বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচটি। ২০০৩ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি মাঠে গড়ানো ম্যাচটির শুরুতেই সবাইকে চমকে দিয়ে ব্যাটিং তাণ্ডব চালান ওপেনার জন ডেভিসন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম শতক হাঁকানোর রেকর্ড গড়ে মাত্র ৬৬ বলে শতক পূর্ণ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তার ঝড়ো ইনিংস থামে ১১১ রানে। তিনি মাত্র ৭৬ বলে আটটি চার এবং ছয়টি ছয়ের মারে এই রান সংগ্রহ করেছিলেন। তার বিদায়ের পর সহজেই জয় তুলে নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিনি যখন সাজঘরে ফিরেছিলেন, তখন কানাডা তিন উইকেটে ১৫৫ রান করেছিলো, সেখান থেকে মাত্র ২০২ রানে গুটিয়ে যায় তারা। জবাবে ১৭৭ বল এবং সাত উইকেট হাতে রেখে সহজ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জন ডেভিসনের হাঁকানো শতকটি ওয়ানডেতে কানাডার হয়ে কোনো ব্যাটসম্যানের হাঁকানো প্রথম শতক ছিল। এই আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেও ঝড়ো ব্যাটিং করেছিলেন। কিউইদের বিপক্ষে মাত্র ৬২ বলে নয়টি চার এবং ছয়টি ছয়ের মারে ৭৫ রান করেছিলেন। একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ৩১ বলে নয়টি চার এবং একটি ছয়ের মারে ৫২ রান করেছিলেন। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও বেশ কার্যকরী ছিলেন ডেভিসন। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহ করার পাশাপাশি বল হাতেও সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি।
ফেইকো ক্লপেনবার্গ (নেদারল্যান্ড)
ওয়ানডে ক্রিকেটে নেদারল্যান্ডের হয়ে প্রথম শতক হাঁকান উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ফেইকো ক্লপেনবার্গ। নামিবিয়ার বিপক্ষে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে তিনি ১২১ রানের ইনিংস খেলে নেদারল্যান্ডের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে শতক হাঁকানোর কীর্তি গড়েছিলেন। একই ম্যাচে শতক হাঁকিয়েছিলেন নুর্টিউইকও। তিনি খেলেছিলেন অপরাজিত ১৩৪ রানের ইনিংস। ক্লপেনবার্গ নেদারল্যান্ডের হয়ে ছয়টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন, এর মধ্যে নিজের শেষ ম্যাচে এসে নেদারল্যান্ডের হয়ে প্রথম শতক হাঁকান।
ব্লুমফন্টেইনে ২০০৩ সালের ৩-ই মার্চ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে নামিবিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল নেদারল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে ২৫ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন ক্লপেনবার্গ এবং নুর্টিউইক। এই দুইজন দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২২৮ রান যোগ করেছিলেন। এই ম্যাচের আগে ওয়ানডেতে নেদারল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের শতক ছিলো না। এই ম্যাচে দুইজন-ই শতক হাঁকিয়েছিলেন। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে শতক হাঁকিয়েছিলেন ক্লপেনবার্গ। তিনি ১৪২ বলে ছয়টি চার এবং চারটি ছয়ের মারে ১২১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। নুর্টিউইক খেলেছিলেন অপরাজিত ১৩৪ রানের ইনিংস। জোড়া শতকের সুবাদে নেদারল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে চার উইকেটে ৩১৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। ৩১৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নামিবিয়া ২৫০ রানে গুটিয়ে যায়। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও উজ্জ্বল ছিলেন ক্লপেনবার্গ। ৪২ রানের বিনিময়ে তিনি চার উইকেট শিকার করে নেদারল্যান্ডকে ৬৪ রানে জয় পেতে সাহায্য করেন।
আরভিং রোমাইনি (বারমুডা)
বারমুডা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছিলো ২০০৬ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত। ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের গ্রুপে পড়েছিলো দলটি। তাদের আবির্ভাব যেমন হুট করে হয়েছিলো, বিদায়টাও খুব অল্প সময়েই হয়েছিলো। তারা মোট ৩৭টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলো। এই ৩৭ ম্যাচে তাদের দুইজন ব্যাটসম্যান দু’টি শতক হাঁকিয়েছিলেন। এর মধ্যে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে শতক হাঁকিয়েছিলেন আরভিং রোমাইনি। টরোন্টোতে কানাডার বিপক্ষে তিনি ১০১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
২০০৬ সালের ২১শে আগস্ট আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লিগে কানাডার বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বারমুডা। ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক আরভিং রোমাইনির ১১১ বলে ১৩টি চার এবং পাঁচটি ছয়ের মারে সাজানো ১০১ রানের ইনিংসের উপর ভর করে সাত উইকেটে ২৭২ রান সংগ্রহ করেছিলো তারা। রোমাইনির শতকটিকে বিফলে যেতে দেয়নি বারমুডার বোলাররা। কানাডাকে ২৬১ রানে অলআউট করে ১১ রানের জয় এনে দেয় তারা। এই জয়টি কানাডার বিপক্ষে বারমুডার টানা তৃতীয় জয় ছিল।
রায়ান ওয়াটসন (স্কটল্যান্ড)
স্কটল্যান্ড প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলো ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে। তাদের বিপক্ষেই বাংলাদেশ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিয়েছিল। ঐ বিশ্বকাপের সবক’টি ম্যাচে পরাজিত হওয়ার পর তারা নিজেদের পরবর্তী ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ২০০৬ সালে। এরপর আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লিগে টানা পাঁচ জয়সহ মোট ছয়টি ম্যাচ জিতে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের টিকেট পেয়েছিলো তারা। আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লিগেই ওয়ানডেতে তাদের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের দেখা পেয়েছিলো স্কটল্যান্ড। কানাডার বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো শতক হাঁকিয়েছিলেন স্কটল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান রায়ান ওয়াটসন।
২০০৭ সালের ১৮ই জানুয়ারি নাইরোবিতে কানাডার মুখোমুখি হয়েছিলো স্কটল্যান্ড। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কানাডা পাঁচ উইকেটে ২৯২ রান সংগ্রহ করেছিলো। জবাবে ৪৭ রানে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ওয়াটসের উইকেট হারালে ক্রিজে আসেন রায়ান ওয়াটসন। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে নবদ্বীপ পুনিয়ার সাথে ৯৯ রান যোগ করেন তিনি। পুনিয়া দলীয় ১৪৬ রানের মাথায় ৬৭ রান করে সাজঘরে ফিরে গেলে দলের হাল ধরেন ওয়াটসন। আর কোনো ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও তার ১২০ বলে দশটি চার এবং দু’টি ছয়ের মারে সাজানো অপরাজিত ১২৩ রানের উপর ভর করে স্কটল্যান্ড শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে এক বল এবং দুই উইকেট হাতে রেখে জয় পায়।
জেরেমি ব্রে (আয়ারল্যান্ড)
আয়ারল্যান্ড ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেয়েছিলো ২০০৬ সালের ১৩ই জুন। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই জয়ের মুখ দেখেছিলো তারা। এরপর চতুর্থ ওয়ানডেতেই প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিয়ানের দেখাও পেয়ে যায় আইরিশরা। আয়ারল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডেতে সর্বপ্রথম শতক হাঁকান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান জেরেমি ব্রে। তিনি স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৬ রানের ইনিংস খেলার পথে এই কীর্তি গড়েন। ব্রে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপও দুর্দান্তভাবে শুরু করেছিলেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই অপরাজিত ১১৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এই ইনিংসের পর খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। পুরো বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে নিষ্প্রভ থাকার ফলে বিশ্বকাপের পর আর কখনও আয়ারল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডে খেলা হয়নি তার। আয়ারল্যান্ডের হয়ে ১৫টি ওয়ানডে খেলে কোনো অর্ধশতক হাঁকাতে না পারলেও দু’টি শতক হাঁকিয়েছিলেন জেরেমি ব্রে।
২০০৭ সালের ৩০শে জানুয়ারি নাইরোবিতে আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লিগের প্রথম বিভাগের ম্যাচে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হয় আয়ারল্যান্ড। ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আয়ারল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে ওপেনার জেরেমি ব্রে’র ১৩৬ বলে দশটি চার এবং চারটি ছয়ের মারে ১১৬ রানের ইনিংসের পাশাপাশি ইয়োন মরগানের ৪১ রান এবং অধিনায়ক ট্রেন্ট জন্সটনের ১৯ বলে একটি চার ও চারটি ছয়ের মারে অপরাজিত ৪৫ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেটে ২৮০ রান সংগ্রহ করেছিলো আইরিশরা। শেষপর্যন্ত যা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিলোনা। শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকলেও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান নেইল ম্যাককালামের ৯২ বলে ১০০ রানের ইনিংসের সুবাদে জয়ের পথে ছিলো স্কটল্যান্ড। তিনি যখন দলের সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসাবে সাজঘরে ফেরেন, তখনও স্কটল্যান্ডের জয়ের জন্য ২১ বলে ৩৩ রানের প্রয়োজন ছিলো। অধিনায়ক ক্রেইগ রাইট এবং উইকেটরক্ষক কলিন স্মিথ ৮ম উইকেট জুটিতে ২১ বলে ৩৬ রানের জুটি গড়ে শেষ বলে স্কটল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন। রাইট মাত্র ১১ বলে ২৩* রান এবং স্মিথ ৪৯ বলে ৪৯* রানের ইনিংস খেলে তিন উইকেটের জয় নিশ্চিত করেছিলেন।
মোহাম্মদ শাহজাদ (আফগানিস্তান)
খুব দ্রুত ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের অবস্থান তৈরি করা আফগানিস্তান সাময়িক ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেয়েছিল ২০০৯ সালের ১৯শে এপ্রিল। এরপর আর কখনও ওয়ানডে স্ট্যাটাস হারাতে হয়নি তাদের। নিজেদের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেই স্কটল্যান্ডকে ৮৯ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছিল আফগানিস্তান। নিজেদের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচেই প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের দেখা পেয়েছিল তারা। আফগানিস্তানের হয়ে ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শাহজাদ। নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১১০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন, এরপরের ম্যাচেও কানাডার বিপক্ষে ১১৮ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেছিলেন শাহজাদ।
আফগানিস্তান নিজেদের প্রথম ওয়ানডে সিরিজ খেলে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে। দুই ম্যাচের সিরিজে প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডের কাছে আট রানে পরাজিত হয়েছিলো আফগানিস্তান। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় আফগানরা। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে স্বাগতিক নেদারল্যান্ড সাত উইকেটে ২৩১ রান সংগ্রহ করেছিলো। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন রায়ান টেন ডেসকাট। প্রথম ওয়ানডেতে ১৮৯ রানের লক্ষ্য অতিক্রম করতে ব্যর্থ হওয়া আফগানিস্তান ইনিংসের শুরু থেকেই লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনায় ব্যাটিং করেছিলো। ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদের ১১১ বলে ১১টি চারের মারে ১১০ রানের ইনিংসের উপর ভর করে নেদারল্যান্ডকে ২০ বল এবং ছয় উইকেট হাতে রেখে পরাজিত করেছিল আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের হয়ে ওয়ানডেতে প্রথম শতক হাঁকানো শাহজাদের হাতেই ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছিল।
লেগা সিয়াকা (পাপুয়া নিউ গিনি)
পাপুয়া নিউ গিনি নিজেদের প্রথম আন্তর্জাতিক একদিনের ম্যাচ খেলেছিল ২০১৪ সালের ৮ই নভেম্বর। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হংকংয়ের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল তারা। এরপরের দিন একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় তুলে নেওয়ার পাশাপাশি প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের দেখাও পেয়ে যায় তারা। পাপুয়ানিউগিনির হয়ে ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান লেগা সিয়াকা। তিনি হংকংয়ের বিপক্ষে ১০৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। পাপুয়া নিউ গিনি এখন পর্যন্ত ১৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে, এরমধ্যে তিনি ১৬টি ম্যাচ খেলে এই একবারই শতাধিক রানের ইনিংস খেলেছিলেন, এছাড়া তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নেই আর কোনো অর্ধশত রানের ইনিংস।
হংকংয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের পর ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর মাঠে নেমেছিল পাপুয়া নিউ গিনি। ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৬১ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল হংকং। ২৬২ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে লেগা সিয়াকার ১১৪ বলে নয়টি চার এবং দুটি ছয়ের মারে সাজানো ১০৯ রানের ইনিংসের সুবাদে জয়ের পথেই ছিল পাপুয়া নিউ গিনি। কিন্তু সিয়াকা দলীয় ১৯৩ রানের মাথায় ১০৯ রান করে রান আউট হয়ে ফিরে গেলে খানিকটা চাপে পড়ে তারা। তবে অধিনায়ক ভানি মরেয়ার অপরাজিত ৬৫ রানের কল্যাণে চার বল এবং তিন উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাপুয়ানিউগিনি।
খুররাম খান (সংযুক্ত আরব আমিরাত)
সংযুক্ত আরব আমিরাত সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক একদিনের ম্যাচ খেলেছিলো ১৯৯৪ সালের এশিয়া কাপে। নিজেদের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের দেখা পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয় প্রায় ২০ বছর। তবে এই সময়ে তারা মাত্র ১৬টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিল। ২০১৪ সালের ৩০শে নভেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে অপেক্ষার প্রহর শেষ করেন খুররাম খান। তিনি আফগানিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ১৩২ রানের ইনিংস খেলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে শতক হাঁকানোর কীর্তি গড়েন।
২০১৪ সালের ৩০শে নভেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে চার ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় আরব আমিরাত। সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে ১-০ তে এগিয়ে ছিলো স্বাগতিকরা। দুবাইতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টসে জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলো আরব আমিরাত। ব্যাট করতে নেমে নওরোজ মঙ্গলের ১২৯ রান এবং আফসার জাজাইয়ের ৫১ রানের উপর ভর করে আট উইকেটে ২৮০ রান সংগ্রহ করেছিলো আফগানিস্তান। ২৮১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩২ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় আরব আমিরাত। এরপর আর কোনো অঘটন ঘটতে দেননি মোহাম্মদ শাহজাদ এবং খুররাম খান। মোহাম্মাদ শাহজাদ ৭৯ রান করে ফিরে গেলেও খুররাম খান ১৩৮ বলে ১৭টি চার এবং একটি ছয়ের মারে অপরাজিত ১৩২ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। তার অনবদ্য ইনিংসের সুবাদে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দশ বল এবং ছয় উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত।
মার্ক চ্যাপম্যান (হংকং)
এশিয়া কাপ খেলার সুবাদে হংকং প্রথম আন্তর্জাতিক একদিনের ম্যাচ খেলে ২০০৪ সালে। ঐবছর অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের মধ্য দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা। তবে তাদের প্রথম ওয়ানডে জয় এবং প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিয়ানের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত। আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেট লিগ চ্যাম্পিয়নশিপে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে জয়ের পাশাপাশি প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের দেখাও পেয়েছিল হংকং। অভিষিক্ত মার্ক চ্যাপম্যান অপরাজিত ১২৪ রানের ইনিংস খেলে হংকংয়ের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসাবে নিজের নাম লেখান। বর্তমানে তিনি নিউ জিল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন। হংকংয়ের হয়ে মাত্র দু’টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। দু’টিতেই জয় পেয়েছিল হংকং।
২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো হংকং। ব্যাট করতে নেমে মার্ক চ্যাপম্যানের ১১৬ বলে ১১টি চার এবং দুটি ছয়ের মারে সাজানো অপরাজিত ১২৪ রানের পাশাপাশি বাবর হায়াতের ৪৫ ও অংশুমান রাঠের ৩৬ রানের উপর ভর করে হংকং নির্ধারিত ওভারে চার উইকেটে ২৯৮ রান সংগ্রহ করেছিল। এর জবাবে ব্যাট করতে নেমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০৯ রানের মধ্যে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ৮৯ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়। হংকংয়ের হয়ে অংশুমান রাঠ এবং হাসিব আমজাদ তিনটি করে উইকেট শিকার করেছিলেন।
পরশ খাড়কা (নেপাল)
লেগস্পিনার সন্দীপ লামিচানের কল্যাণে খুব দ্রুতই ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ হিসাবে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছে নেপাল। ২০১৮ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে নবম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে পাপুয়া নিউ গিনিকে হারিয়ে ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেয়েছিল তারা। ২০১৮ সালের পহেলা আগস্ট নিজেদের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলার পর এখন পর্যন্ত ছয়টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে নেপাল। এখন পর্যন্ত দু’টি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে নেপাল। এরমধ্যে প্রথমটি ছিলো নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে। নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে নেপাল ১-১ এ সিরিজ ড্র করেছিলো। এরপরের সিরিজ খেলেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে প্রথম ম্যাচে পরাজিত হলেও শেষ দুই ম্যাচে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে নেপাল। সিরিজ নির্ধারণী শেষ ওয়ানডেতে পরশ খাড়কার শতকের উপর ভর করে চার উইকেটের জয় পেয়েছিল নেপাল। পরশ খাড়কার শতকটি ছিলো ওয়ানডেতে নেপালের প্রথম শতক।
২০১৯ সালের ২৮শে জানুয়ারি দুবাইতে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নেপাল। ব্যাট করার আমন্ত্রণ পেয়ে শুরুতেই দুই ওপেনারের উইকেট হারায় আরব আমিরাত। আশফাক আহমেদ এবং সিরাগ সুরি দুইজনেই শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন। এরপর সাইমান আনোয়ারের ৮৭ রান এবং মোহাম্মদ বুটার অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংসের উপর ভর করে ছয় উইকেটে ২৫৪ রান সংগ্রহ করেছিলো সংযুক্ত আরব আমিরাত। সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পরশ খাড়কার ১০৯ বলে ১৫টি চার এবং একটি ছয়ের মারে ১১৫ রানের ইনিংসের সুবাদে ৩২ বল এবং চার উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নিয়েছিল নেপাল।
এই দেশগুলো ছাড়া দল হিসাবে খেলা আফ্রিকা একাদশের হয়ে প্রথম এবং একমাত্র শতক হাঁকিয়েছিলেন শন পোলক, আইসিসি বিশ্ব একাদশের হয়ে একমাত্র শতক হাঁকিয়েছেন রিকি পন্টিং এবং এশিয়া একাদশের হয়ে প্রথম শতক হাঁকিয়েছিলেন মাহেলা জয়াবর্ধনে।