শরীরটা তার ভালো যাচ্ছে না বেশ কয়েকবছর ধরেই। মলাশয়ে টিউমার দেখা দিয়েছিল ২০১৩ সালে, পারকিনসনের সঙ্গে বসবাসও তখন থেকেই। স্ট্রোকের পরে কথা বলতেও সমস্যা হচ্ছিল কয়েকদিন। বয়স ছাড়িয়েছে পঁচাত্তরের কোটা, এসব সমস্যাকে তাই অস্বাভাবিকও বলা যাচ্ছে না। রোগ-শোক, অসুস্থতা তো আর গ্রায়েম পোলকের পরিচয় জানে না! কিন্তু, গ্রায়েম পোলকের পরিচয়টা আপনিও জানেন কি?
এমনিতে মোটে ২৩ টেস্ট খেলা ক্রিকেটারকে না চেনাটা কোনো অপরাধ তো নয়ই, তাকে ঘটা করে পরিচয় করিয়ে দেবারও কিছু নেই। তার নিজের দেশ দক্ষিণ আফ্রিকাতেই তার চেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছেন ৫৮ জন ক্রিকেটার। তবুও নামটি যখন গ্রায়েম পোলক, তখন তাকে নিয়ে আস্ত এক লেখা লিখে ফেললেও তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া যাচ্ছে সামান্যই।
***
জন্মটা হয়েছিল ক্রিকেট পরিবারেই। বাবা অ্যান্ড্রু ম্যাকলিন পোলক ছিলেন প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার, প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছিলেন মামা রবার্ট হাউডেনও। বড় ভাই পিটার পোলক তো বাবা-মামাকে ছাড়িয়ে গিয়ে খেলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্ট ক্রিকেটই। ১৯৪৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীতে আসার সঙ্গে সঙ্গে গ্রায়েম পোলক তাই নিয়ে এসেছিলেন আরও একটি দৈববাণীও, ‘গ্রায়েম পোলক ক্রিকেটারই হবেন।’
বাবা অ্যান্ড্রু পোলকও ক্রিকেট খেলেছিলেন বলে বোধহয় গ্রায়েমের সেই ছোট্টবেলাতেই বুঝেছিলেন, ছেলে তার ক্রিকেটার হতে পারে! ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন পোর্ট এলিজাবেথের বিখ্যাত গ্রে স্কুলে, শিক্ষা-দীক্ষার চেয়ে ক্রীড়া সাফল্যেই যাদের খ্যাতি ছিল বেশি। আর দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়া ইতিহাস বলে, বিখ্যাত ক্রীড়াবিদদের শুরুটা হয় স্কুল মাঠেই।
***
দক্ষিণ আফ্রিকার আর সব ক্রীড়াবিদের মতোই গ্রায়েম পোলক তাই স্কুলে গিয়ে যতটা না ইংরেজি, আফ্রিকান, গণিত শিক্ষায় নিজেকে জাহির করছিলেন, তার চেয়েও বেশি ছাপ রেখেছিলেন নিজের ভেতরে বয়ে চলা ক্রিকেটীয় সত্ত্বার। গ্রে স্কুলের অনূর্ধ্ব-১১ দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন ৯ বছর বয়সেই। এবং শুরুর ম্যাচেই যা করেছিলেন, তেমন কিছুর অনুরূপ খুঁজে পেতে ফিরে যেতে হচ্ছে খ্রিস্টপূর্ব ৪৭ সালে, জুলিয়াস সিজারের শাসনামলে। ‘Veni, Vidi, Vici’ প্রবাদটির চল তো ছিল সে সময়ই।
গ্রে স্কুলের হয়ে প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই গ্রায়েম তুলেছিলেন প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন হাই স্কুলের দশ উইকেটের সবগুলোই। ইনিংসে দশ উইকেট প্রাপ্তির কীর্তি টেস্ট ক্রিকেটেও গড়েছেন দুজন, এ বলে গ্রায়েমের কৃতিত্বকে খাটো করতে চাইলে পরবর্তী তথ্যটি কেবলই আপনার জন্য। ব্যাটিংয়ে নেমে পোলক রান করেছিলেন ১১৭, একপর্যায়ে গ্রে স্কুলের তোলা ১২০ রানের ১১১ রানই এসেছিল গ্রায়েমের ব্যাটে। শোনা যায়, ওই ১১৭ রানের ইনিংসে এত বেশি ছয় মেরেছিলেন যে, শেষমেশ প্রতিপক্ষ ফিল্ডারদের বদলে তিনি নিজেই বল কুড়িয়ে আনতে শুরু করেছিলেন।
অমন ইনিংসের পরে মূল স্কুল দলে ডাক না পেলে অন্যায়ই হতো, তবে অতটুকু শিশুকে কৈশোরোত্তীর্ণ ছেলেদের ভিড়ে নামিয়ে দিলে তা দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাড়াতো। গ্রায়েম পোলককে তাই মূল স্কুল দলে সুযোগ পেতে অপেক্ষা করতে হয় আরও বছর চারেক। এবং, ভাগ্যের কী নিদারুণ পরিহাস, গ্রায়েম পোলকের সামনে সে সুযোগটি আসে লেগ স্পিনার হিসেবে!
তা জুনিয়র দলে যিনি লেগ স্পিনে দশ উইকেট নিয়েছিলেন, মূল দলের হয়ে ততগুলো না হোক, অন্তত এর অর্ধেক তো নেয়া চাই-ই চাই! গ্রায়েম পোলক সে চাহিদাও পূরণ করেছিলেন, একদম শুরুর ম্যাচেই। পাঁচ রানেই তুলেছিলেন প্রতিপক্ষের ছয় উইকেট। তখন তিনি ১৩।
দক্ষিণ আফ্রিকা স্কুল বয়েজ দলের হয়েও খেলতে শুরু করে দিয়েছিলেন এর বছরখানেক বাদেই, ১৫ বছর বয়সে। জীবনের এই রোলার কোস্টার যাত্রায়, ইস্টার্ন প্রভিন্সের হয় প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে গিয়েছিল ১৬ বছর বয়সে। তখনো তিনি গ্রে হাই স্কুলের চৌহদ্দি পেরোতে পারেননি।
***
আগের মতো অমন ‘পোলকীয়’ অভিষেক অবশ্য প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে হয়নি। প্রথম ইনিংসে ৫৪ রান করে হয়ে গিয়েছিলেন রান-আউট, লেগ স্পিনে দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছিলেন দুই উইকেট। গ্রায়েম পোলক যে পরিসংখ্যান দেখে নিঃসন্দেহে বলেছিলেন, ‘এ আর এমন কী!’
১৯৬০-৬১ মৌসুমে এরপর পোলক খেলেছিলেন আরও চার ম্যাচ। সব মিলিয়ে ৪৮ গড়ে রান করেছিলেন ৩৮৪, যার মাঝে ছিল ট্রান্সভাল দলের বিপক্ষে করা শতকও। তবে নিজের সেরাটা যেন জমিয়ে রেখেছিলেন পরের কারি কাপের জন্যে। ১৯৬২-৬৩ (সম্পূরক তথ্য হিসেবে জানিয়ে রাখছি, ১৯৬১-৬২ মৌসুমে কারি কাপ আয়োজিত হয়নি) মৌসুমের সে আসরে গ্রায়েম পোলক ম্যাচ খেলেছিলেন ৮ টি। ব্যাট করেছিলেন যে ১৫ ইনিংসে তার ভেতরে অপরাজিত ছিলেন ৩ বার। তিন শতক আর তিন অর্ধশতকে ৬৯.৬৬ গড়ে রান করেছিলেন ৮৩৬।
বিশেষ হয়ে থাকবার জন্যে উপরের পরিসংখ্যানেই তো চলতো, তবে তাতে কি আর ইন্টারন্যাশনাল ক্যাভেলিয়ার্সের বিপক্ষে করা ২০৯ রানের মাহাত্ম্য প্রকাশ পেতো! প্রতিপক্ষ দলে থেকেও যে ইনিংস দেখে রিচি বেনো বলে ফেলেছিলেন, ‘ম্যাগনিফিসেন্ট’। পরবর্তীতে গ্রায়েম পোলকের আরও নানা কীর্তিতে রিচি বেনো যা নিয়ে গরিমা করার সুযোগ পেয়েছিলেন আরও কয়েকবার। একবার তো বলেই ফেলেছিলেন,
“আমি তো সেদিন-ই জানতাম, একজন চ্যাম্পিয়ন আসছে ক্রিকেটে!”
গ্রায়েম পোলক ওই কীর্তিটা গড়েছিলেন ১৯ বছর ২০ দিন বয়সে। তার চেয়ে কম বয়সে দ্বিশতক রান করার কৃতিত্ব নেই আর কোনো দক্ষিণ আফ্রিকানের!
***
অমন ইনিংসের পরে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াটা ছিল কেবলই সময়ের অপেক্ষা। মাঝে কোনো খেলা না থাকায় সে অপেক্ষা ফুরোলো সে বছরেরই ডিসেম্বরে। অস্ট্রেলিয়ার বিমানে চড়া দক্ষিণ আফ্রিকান দলের সঙ্গী হয়েছিলেন গ্রায়েম পোলক।
শুরুটা হয়েছিল রীতিমতো জঘন্য। প্রথম টেস্টে ব্যাট করতে পেরেছিলেন এক ইনিংস, তাতে করেছিলেন ২৫। দ্বিতীয় টেস্টের দুই ইনিংস মিলিয়ে তো এর চেয়েও কম, মাত্র ১৮। তা নতুন আঙিনায় গিয়ে পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পেতেও তো কিছুটা সময় লাগে!
সেই মাটির সন্ধান পেয়েছিলেন সিডনিতে, সিরিজের ৩য় টেস্টে পেয়েছিলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের দেখা। ইনিংসটি কেমন ছিল, কয়টি চার-ছক্কার মার ছিল, এমন সব জিজ্ঞাসা যদি ঘুরপাক খায় আপনার মনে, তবে উত্তরের খোঁজে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের শরণাপন্ন হতেই হচ্ছে। ‘ব্যাটিংয়ের শেষ কথা’ বলে সর্বজনস্বীকৃত এই ভদ্রলোক গ্রায়েম পোলকের ওই ইনিংস দেখে মন্তব্য করেছিলেন,
“Next time you decide to play like that, send me a telegram.”
এমন মন্তব্যের পরে আর কোনো প্রশ্নের সুযোগ তো থাকে না।
***
ক্যারিয়ারজুড়ে অবশ্য এমন টেলিগ্রাম পাঠানোর মতো ব্যাটিংয়ের উদাহরণ কম রেখে যাননি গ্রায়েম পোলক। ওই সিরিজেরই পরের টেস্টে যেমন। অ্যাডিলেড ওভালে সেদিন এডি বার্লোর সঙ্গে জুটি বেঁধে দক্ষিণ আফ্রিকার রানটাকে নিয়ে গিয়েছিলেন ক্যাঙারুদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুজনে মিলে ২৮৩ মিনিটে গড়েছিলেন ৩৪১ রানের জুটি, সাজঘরে ফেরার আগে পোলক রান করেছিলেন ১৭৫। যে ইনিংস দেখতে দেখতেই সাবেক অজি অধিনায়ক ভিক্টর রিচার্ডসন বলেছিলেন,
“Let me just watch him. I’m too full of joy to talk.”
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পরের সিরিজেও অবশ্য এমন ব্যাটিংই করেছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৫৩ রানের ২০৯-ই এসেছিল তার ব্যাটে, চারের মার ছিল ৩০টি। সংখ্যার এত সব দৌরাত্ম্য ছাপিয়ে অমর হয়ে আছে তো এই গল্পটি, কাভার দিয়ে গ্রায়েম পোলককে একের পর এক চার মারতে দেখে তৎকালীন অজি অধিনায়ক ববি সিম্পসন তার উইকেটরক্ষক আর বোলার ছাড়া বাকি সবাইকেই নিয়ে গিয়েছিলেন কাভারে। গ্রায়েম পোলক চার মেরেছিলেন এরপরেও, ওই কাভার দিয়েই।
কাভার দিয়ে গ্রায়েম পোলকের মুগ্ধতা ছড়ানোর গল্পের শেষ নয় এখানেই। ইংরেজ-ভূমে গিয়ে এর আগের বছরেই করে এসেছিলেন ১২৫, তার নিজের বিবেচনাতে যা তার ক্যারিয়ার-সেরা। ক্রিজে এসেছিলেন ২ উইকেট হারিয়ে দলের রান ১৬ এমন অবস্থায়, বল বাতাসে সুইং করছিল যাচ্ছেতাইভাবে, সেখান থেকে দলকে টেনে নিয়েছিলেন ১৭৮ রানে, যার ভেতরে ১২৫ রানই এসেছিল তার ব্যাটে, শেষ ৯১ রান তুলেছিলেন মাত্র ৭০ মিনিটে, পরিস্থিতি বিবেচনায় গ্রায়েম পোলক এই ইনিংসকে সেরা বলতেই পারেন। সেরা বলেছিলেন ডেনিস কম্পটনও।
“I’ve seen them all. Don Bradman, Walter Hammond, Stan McCabe, but I don’t believe I have seen a better innings.”
***
ভারত সফর শেষ করে অস্ট্রেলিয়া দল দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিল ১৯৬৯ সালের শেষ মাসে। পাঁচ বছরের পরিক্রমায় গ্রায়েম পোলক তখন অব্দি ম্যাচ খেলেছিলেন ১৯টি, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যেবার ২০৯ করেছিলেন, সে সিরিজের পরে খেলতে নেমেছিলেন প্রথমবার। ব্যারি রিচার্ডস নামের এক অত্যাশ্চর্যও দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলে এসেছিলেন সেবারই প্রথম।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুজন জুটি গড়তে পারেননি, যে সুযোগ পেয়েছিলেন দ্বিতীয় ম্যাচে। টেস্ট ক্রিকেটে সেটিই প্রথম, সেটিই তাদের শেষ!
মাঝে যে ক্ষণকালের জন্য এসেছিলেন, রাঙিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন ততক্ষণেই। নিজেদের মধ্যেকার প্রথম জুটিটিই ছিল শতরানের। ব্যারি রিচার্ডস আউট হয়ে ফেরার কিছুক্ষণ পরে আউট হয়ে ফেরত গিয়েছিলেন আলী বাখেরও। ড্রেসিংরুমে গিয়ে সেই আলী বাখের যা বলেছিলেন, তা হয়ে গিয়েছে ক্রিকেটের বাণী অমৃতেরই একটি।
“After the Lord Mayor’s show, there was no room for me out there. I was embarrassed. Those two have made a mockery of batting.”
সম্ভবত ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো গ্রায়েম পোলক ঢাকা পড়েছিলেন অন্য কারো স্ট্রোক-প্লেতে। পোলককে দর্শক বানিয়ে, ক্যাঙারু বোলারদের মেরেকেটে একাকার করে ব্যারি রিচার্ডস করেছিলেন ১৬৪ বলে ১৪০। যার ভেতর ৮৬-ই এসেছিল বাউন্ডারি থেকে। সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম সেশনেই সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার। মাত্র ৬ রানের জন্যেই যা পারেননি!
রিচার্ডসের ওই ইনিংস দেখে পোলকের অহমে আঘাত না লেগে পারেই না! তাতে ক্ষতিটা অবশ্য হয়েছিল অজি বোলারদের। প্রথমদিনের মাঝ অব্দি দর্শকসারিতে ধুনা উঠেছিল রিচার্ডসের নামে, দিনের শেষবেলায় আসতেই যা বদলে গিয়েছিল পোলকে। দিনের মাঝামাঝি ব্যাট করতে নেমেও পোলক ততক্ষণে তুলে নিয়েছিলেন ১৬০ রান। ব্যারি রিচার্ডসকে উদ্দেশ্য করে গ্রায়েম পোলক কিছু না বললেও, পল শিহানের ওই কথাটিকে মনে হয় খুবই প্রাসঙ্গিক।
“You have seen the apprentice. Now look at the master.”
সে ইনিংসে পোলক শেষ অব্দি থেমেছিলেন তৎকালীন দক্ষিণ আফ্রিকান সর্বোচ্চ ২৭৪ রান আর ৪৩ চারে। তেমন বড় রান করতে পারেননি সিরিজের বাকি দুই টেস্টেও। সে সিরিজ শেষে গ্রায়েম পোলকের গড় দাঁড়িয়েছিল ৬০.৯৭, তখন অব্দি গিয়েছিলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের সবচেয়ে কাছাকাছি।
***
গ্রায়েম পোলক স্যার ডনের রেকর্ড ভাঙতে পারেননি। বর্ণবাদের কালো থাবা দক্ষিণ আফ্রিকাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল আরও আগে থেকেই, বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনও দক্ষিণ আফ্রিকাকে বয়কট করছিল হরহামেশাই। তবে সেই বয়কটের চূড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটেছিল ১৯৭০ সালের ওই অস্ট্রেলিয়া সফরের পরে, দক্ষিণ আফ্রিকা নিষিদ্ধ হয়েছিল আইসিসি কর্তৃক। এক ধাক্কায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্রিকেট হারিয়ে যায় ২৩ বছরের জন্যে।
গ্রায়েম পোলক তাই আর টেস্ট খেলতে পারেননি। ওই ২৩ বছরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলংকা কিংবা ইংল্যান্ডে ১৭টি ম্যাচ খেললেও সেগুলো কোনোদিনই আইসিসির স্বীকৃতি পায়নি। অমন রাজকীয় এক ক্যারিয়ারের এপিটাফ তাই লেখা হয়ে যায় ২৩ টেস্টেই।
***
কিন্তু ওই ২৩ টেস্টেই কত-শত অর্জন! উইজডেনের বর্ষসেরা হয়েছিলেন ১৯৬৬ সালে, আইসিসির হল অব ফেমেও জায়গা করে নিয়েছেন ২০০৮ সালে। ডন ব্র্যাডম্যান তো তার প্রশংসায় বরাবরই ছিলেন উচ্চকিত। গ্রায়েম পোলককে ‘বাঁহাতি ব্র্যাডম্যান’ বলতেও দ্বিধা করতেন না অনেকেই, স্বয়ং ব্র্যাডম্যানই যে আলোচনার পালে হাওয়া দিয়েছেন জোর। ‘বাঁহাতিদের মধ্যে স্যার গ্যারি সোবার্স আর গ্রায়েমই সেরা,’ ব্র্যাডম্যান কাউকে নিয়ে এমন কিছু বললে সেই ক্রিকেটারকে নিয়ে তো মাতামাতি করাই যায়!
তবে সব ছাপিয়ে দিনশেষে তো গ্রায়েম পোলক ২৩ টেস্ট খেলা এক ক্রিকেটারই। আক্ষেপটা কি গ্রায়েম পোলক পেরিয়ে ক্রিকেটেরই নয়?
একুশে বইমেলা ‘২০ উপলক্ষে রোর বাংলা থেকে প্রকাশিত বইগুলো কিনতে এখনই ক্লিক করুন নিচের লিঙ্কে-
১) ইহুদী জাতির ইতিহাস
২) সাচিকো – নাগাসাকির পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া এক শিশুর সত্য ঘটনা
৩) অতিপ্রাকৃতের সন্ধানে