Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

লিভারপুল বনাম রোমা: সেমিফাইনালের যুদ্ধে কার শক্তি কেমন?

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের সূচনা হবে অ্যানফিল্ডে লিভারপুল বনাম রোমার প্রথম ম্যাচ দিয়ে। এই দুটি দলের চ্যাম্পিয়নস লিগে এতদূর পর্যন্ত আসাটাই অনেকের কাছে বিস্ময়কর। তবে উভয় দলই এবার সেমিফাইনাল পর্যন্ত এসেছে এবারের শিরোপার অন্যতম দাবিদার ম্যানচেস্টার সিটি ও বার্সেলোনাকে হারিয়ে। তবে বার্সেলোনা ম্যাচের মতো সিটিকে হারানো অঘটন বলা যাবে না। টাকার ঝনঝনানিতে বানানো চোখ ধাঁধানো দল থাকলেও কৌশলগত ফুটবলের কাছে যে হার মানতেই হবে, তার তরতাজা উদাহরণ লিভারপুলের কাছে ম্যানচেস্টার সিটির পর পর দুই ম্যাচের পরাজয় শিকার। অপরদিকে রোমার মাঠে বার্সেলোনার অপ্রত্যাশিত হার অবিশ্বাস্যই বটে। জায়ান্ট দুটো টিমকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠা এ দু’দলের লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হবার কথা। তাই, খেলা মাঠে গড়ানোর আগে দুই দলের অবস্থা ও পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ করা যাক।

লিভারপুল বনাম রোমা (হেড টু হেড)

সেমিফাইনালের প্রথম লেগে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে অ্যানফিল্ডে আসবে রোমা। দুই দলের মুখোমুখি পারফর্মেন্সে যদিও রোমা এগিয়ে আছে, তবে অ্যানফিল্ডে খেলা হবার সুবাদে ক্লপের দলও কম সুবিধা ভোগ করবে না। লিভারপুল ও রোমা মুখোমুখি হয়েছে মোট ৭ বার। যার ৪টিতে জিতেছে রোমা, ১টি হয়েছে গোলশূন্য ড্র এবং বাকি ২টি ম্যাচে জয় পেয়েছে লিভারপুল। ৩টি প্রীতিম্যাচ বাদে খোদ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে দু’দল মুখোমুখি হয়েছে ৪ বার। প্রথমবারের দেখায় রোমার মাঠে লিভারপুল দিয়ে এসেছিল জোড়া গোল। পরের ম্যাচে ০-১ গোলে অ্যানফিল্ডে রোমা জিতলেও, পরবর্তীতে চ্যাম্পিয়নস লিগে আর কখনো অ্যানফিল্ডে গোল পায়নি রোমা। পরের বারের দেখায় রোমার মাঠে গোলশূন্য ড্র করে আসে অলরেডরা। এরপরের ম্যাচে অ্যানফিল্ডে এসে রোমা কোনো গোল তো করতেই পারেনি, উল্টো জোড়া গোল হজম করতে হয়েছে তাদের। তিনটি প্রীতি ম্যাচে সবগুলো ম্যাচেই জয় পেয়েছে রোমা। ২০১৬ সালে সর্বশেষ দেখায় রোমা ১-০ গোলে জয় পেয়েছিল। একমাত্র গোল করেছিলেন মোহাম্মদ সালাহ, যিনি অ্যানফিল্ডে রোমার বিপক্ষে গোল করতেই ব্যতিব্যস্ত থাকবেন।

সমানতালে লড়াই হবে আজ; Source: Zimbio

অ্যানফিল্ডে কারা এগিয়ে?

নিজেদের মাঠে সবসময় এগিয়ে থাকবে লিভারপুল। নিজেদের পরিচিত আবহাওয়ায়, নিজেদের পরিচিত সমর্থকদের সামনে লিভারপুল সবসময় আগ্রাসী। কিন্তু বিপক্ষ দল যখন বার্সেলোনাকে হারিয়ে আসা রোমা, তখন ইয়ুর্গেন ক্লপকে যে আরো বেশি করে ভাবতে হবে। স্টিফেন জেরার্ডের আমলের পর আর কখনো চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি লিভারপুলের। সেমিতে রোমা বাধা পার করতে পারলে স্বপ্নের ফাইনাল। আর সে স্বপ্নের ফাইনালও যদি জয় করে ফেলে অলরেডরা, তাতে ইয়ুর্গেন ক্লপের অবদান থাকবে তুলনাহীন।

যার ছোঁয়ায় বদলে গেছে অলরেডরা; Source: Liverpool FC

সবরকম প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ ৬ ম্যাচে কোনো হারের দেখা পায়নি লিভারপুল। ৪ ম্যাচে জয় ও বাকি দুটো ড্র। বিপরীতে শেষ ছয় ম্যাচে রোমার জয় ৩টি, ২টি ড্র ও একমাত্র ম্যাচ হেরেছে বার্সেলোনার বিপক্ষে ক্যাম্প ন্যু তে। নিজেদের মাঠে ইউরোপিয়ান লিগের ১৭টি সেমিফাইনাল খেলা হয়েছে অ্যানফিল্ডে। যার মাত্র ১টিতে হেরেছে লিভারপুল। অ্যানফিল্ডে খেলা সর্বশেষ ২০টি ইউরোপিয়ান ম্যাচে তারা ২০১৪ সালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ছাড়া আর কোনো ম্যাচ হারেনি। পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরোপা লিগ মিলিয়ে ঘরের মাঠে শেষ ১৫ ম্যাচ অপরাজিত থাকার ধারা বজায় রেখেছে লিভারপুল।

ক্যাম্প ন্যু এবং রোমার মাঠে রোমার খেলোয়াড়দের ডিবক্সের বাইরে থেকে শূন্যে ভাসিয়ে বল পাঠানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিপক্ষ যদি বেশি রক্ষণাত্মক খেলে এবং নিজ দলের স্ট্রাইকারের উচ্চতা বেশি হয়, তাহলে এরূপ খেলার ধরন অর্থবহুল। বার্সেলোনার ডিফেন্ডার পিকে ও উমতিতির বেশি উচ্চতা থাকার দরুন এ পদ্ধতি কাজে না দিলেও, লিভারপুলের বিপক্ষে এডিন জেকোর দৈহিক উচ্চতা কাজে দিতে পারে। ইনজুরির কারণে জোয়েল মাটিপ থাকবেন না। তার বদলে নামা লভরেনের উচ্চতা মাটিপের মতো নয়। ভার্জিল ফন ডাইক দীর্ঘদেহী, কিন্তু দুই ফুল-ব্যাক আলেকজান্ডার আর্নল্ড ও রবার্টসন তাদের তুলনায় খর্বকায়। তাই লিভারপুলের প্রেসিং ফুটবলের পাশাপাশি তাদের রক্ষণ ভাঙতে ডিবক্সের বাইরে থেকে উচ্চতায় বল জোগানের প্রচেষ্টা ও এডিন জেকোর উচ্চতা বিশেষ কাজে দেবে। আর পাশাপাশি ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে বেশি সাহায্য করে আত্মবিশ্বাস। বার্সেলোনার বিপক্ষে স্বপ্নের মতো জয়ের পর যা যথেষ্ট আছে রোমার।

ভার্জিল ভ্যান ডাইক, অলরেডদের রক্ষণের ভরসা; Source: Getty Images

একাদশ পর্যালোচনা

ইনজুরির কারণে প্রথম পছন্দের সেন্ট্রাল-ব্যাক জোয়েল মাটিপকে পাবেন না ইয়ুর্গেন ক্লপ। মাঠে নামা নিয়ে সংশয় আছে এমরি চানেরও। দীর্ঘদিনের ইনজুরি কাটিয়ে নাথান ক্লাইন মাঠে ফিরলেও প্রথম একাদশে সম্ভবত তিনি থাকবেন না। তাই রোমার বিপক্ষে ৪-৩-৩ ফর্মেশনেই একাদশ সাজাতে যাচ্ছেন অলরেড কোচ। গোলকিপার হিসেবে লুকাস কারিওস থাকছেন। দুই ফুলব্যাক রবার্টসন ও আর্নল্ডের একাদশে থাকার সম্ভাবনা শতভাগ। ক্লপ মধ্যমাঠে হেন্ডারসন, মিলনার ও চেম্বারলেইনকে মাঠে নামানোর সম্ভাবনা বেশি। উইনালদুমের না থাকায় ইনজুরিতে থাকা চানও এ মৌসুমে বেশি সময় বেঞ্চে কাটানো লালানাকে নামানোর মতো সাহস হয়তো ক্লপ করবেন না। লিভারপুলের অ্যাটাক মানে সালাহ ও ফিরমিনো অটো চয়েজ। তাদের সাবস্টিটিউট হিসেবে বেঞ্চে থাকবেন উডবার্ন ও ইংস।

বর্তমান বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর ত্রয়ী; Source: Getty Images

রিক কার্নসড্রপ ও ডেফ্রেল ইনজুরির কারণে লিভারপুল ম্যাচে থাকবেন না, এটা পরিস্কার হয়ে গেছে বেশ কয়েকদিন আগেই। তবে তাদের না থাকাটা অতটা চিন্তার নয়। কারণ, রোমার প্রথম একাদশের সবাই লিভারপুল ম্যাচের জন্য পুরোপুরি ফিট। তবে রোমা কোচ ডি ফ্রান্সেসকো লিভারপুলের বিপক্ষে কোন ফর্মেশন ব্যবহার করবেন, তা বলা কষ্টকর। কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম লেগে বার্সেলোনার বিপক্ষে ব্যবহার করেছেন ৫-৪-১ ফর্মেশন, ফিরতি লেগে করেছিলেন ৩-৫-২ ফর্মেশন। তাই আজ কীভাবে দল সাজাবেন সেটা শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলা না গেলেও, ৫-৪-১ ফর্মেশন নামানোর সম্ভাবনা বেশি।

রোমার গোলকিপারের দায়িত্বে অবশ্যই অ্যালিসন থাকবেন। পাঁচজন ডিফেন্ডারের ভেতর কস্তাস মানোলোনাস, ফেড্রিকো ফাজিও ও হুয়ান হেসুস থাকবেন সেন্ট্রাল-ব্যাক ডিফেন্ডার পজিশনে। ফুল-ব্যাক পজিশনে থাকবেন কোলারভ ও ফ্লোরেঞ্জি, যারা রক্ষণ ছাড়াও মিডফিল্ডার হিসেবে মধ্যমাঠের ডান ও বাম পাশের দায়িত্ব থাকবেন। মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে অটো চয়েজ নাইংগোলান, স্ট্রুটম্যান ও ড্যানিয়েল ডি রসি। ৫-৪-১ ফর্মেশন ব্যবহার করলে রোমা কোচ বেশিরভাগ সময় এনেস উনদারকে ব্যবহার করেছেন। আজও হয়তো একাদশে তিনি থাকবেন। আর উনদার না নামলে পেল্লেগ্রিনো তো রয়েছেনই। একমাত্র স্ট্রাইকার পজিশনে থাকবেন বসনিয়ান স্টাইকার এডিন জেকো।

রাদজা নাইংগোলান, রোমার মাঝমাঠের ভরসা; Source: Express.co.uk

লিভারপুলের ভরসা সালাহ ও আলেক্সান্ডার আর্নল্ড

এ মৌসুমের শুরুতে রোমা থেকে লিভারপুলে পাড়ি জমিয়েছিলেন মিসরীয় উইংগার মোহাম্মদ সালাহ। লিভারপুলে আসার আগে প্রিমিয়ার লিগে চেলসি ফ্লপের খেতাব ছিলো তার অর্জনের ঝুলিতে। প্রিমিয়ার লিগে আবারো ফিরে এসে যেন তিনি সম্পূর্ণ উল্টো প্রমাণ করলেন। শুরু থেকে দারুণ ফর্মে আছেন তিনি। লিভারপুল বড় জয় পেয়েছে অথচ সালাহ গোল বা অ্যাসিস্ট করেননি, তা খুব কমই দেখা গিয়েছে। তাই অলরেডরা অবশ্যই সালাহর বিস্ময়কর গোল করার ফর্ম দেখতে চাইবে তার প্রাক্তন ক্লাবের বিপক্ষে। তবে পুরো মৌসুমজুড়ে গোল করে গেলেও সালাহ কি আজ তার পুরনো ক্লাবের বিপক্ষে জ্বলে উঠবেন? সবকিছু ছাপিয়ে এটাই বর্তমানে লাখ টাকার প্রশ্ন। মোহাম্মদ সালাহ অ্যানফিল্ডে জ্বলে উঠুক অথবা নিজের ছায়া হয়ে থাকুক, রোমার সাথে আজকের এ ম্যাচ তার জন্য সুখকর হবে না তা অনুমেয়।

মোহাম্মদ সালাহ; Source: Getty Images

লিভারপুলের অ্যাকাডেমিতে বেড়ে ওঠা ইংলিশ ফুটবলার ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ডের অভিষেক হয় ২০১৬ সালে। বড় মঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা না থাকলেও চলতি মৌসুমে আর্নল্ড হয়ে উঠেছেন অলরেডদের অন্যতম আস্থার নাম। লিগে সুযোগ না পেলেও এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রায় সকল ম্যাচ খেলেছেন আর্নল্ড। ক্লপের আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন দারুণভাবে। কোয়ার্টার ফাইনালে রহিম স্টার্লিং বা লেরয় সানে ডান পাশ দিয়ে কোনো আক্রমণ গড়তে পারেননি একমাত্র আর্নল্ডের জন্য। আর রহিম স্টার্লিং তো পুরো ম্যাচে বাক্সবন্দি ছিলেন একমাত্র আর্নল্ডের কড়া মার্কিংয়ের কারণে। ধারাবাহিক পারফর্মেন্সের পর আজকের ম্যাচেও আর্নল্ডের উপর ভরসা রাখতে প্রস্তুত অলরেডরা। হয়তো কোচ আজ তাকে সালাহকে আটকানোর মতো গুরুদায়িত্ব দিয়ে দিতে পারেন।

ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আর্নল্ড; Source: Getty Images

চোখ রাখুন লরিস কৌরিওসের উপর 

সিমিওনে মিনিগোলেতকে বাদ দিয়ে বর্তমানে ইয়ুর্গেন ক্লপের প্রথম পছন্দের গোলকিপার লরিস কৌরিওস। একটা সময় তার নামে দুর্নাম ছিল, তিনি নাকি ঠিকমত বল ধরতে পারেন না। ক্লপের ছোঁয়ায় লিভারপুলের ফিরে আসার পাশাপাশি পুনরুত্থান হয়েছে লরিস কারিওসেরও। নতুনভাবে সুযোগ পেয়ে তিনি দারুণ ফর্মে আছেন। প্রিমিয়ার লিগের পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নস লিগেও ধারাবাহিকভাবে ক্লিনশিট রেখে প্রমাণ করেছেন, লিভারপুলের প্রথম পছন্দের গোলকিপার হবার যোগ্যতা তার আছে। অ্যানফিল্ডে ম্যানচেস্টার সিটি কোনো গোল করতে পারেনি একমাত্র তার বদৌলতে। জোয়েল মাটিপ ও ভ্যান ডাইকের পেছনে তিনি প্রাচীর তুলে পাহারায় ছিলেন, যেখানে এসে বারবার ব্যর্থ হয়েছে হেসুস, স্টার্লিংরা। বড় মঞ্চে যখন তার আরও একবার প্রমাণ করার সুযোগ এসেছে, কৌরিওস নিশ্চয়ই তা বিফলে যেতে দেবেন না। ক্যারিয়ারে অন্যতম বড় পরীক্ষার আগে স্বীকার করেছেন, ম্যাচ সহজ হবে না। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এটা স্বাভাবিক যে ম্যাচের আগে আমরা সামান্য নার্ভাস। তবে আমি মনে করি এই নার্ভাসনেস মাঠে ভালো পারফর্মেন্স বের করে আনবে।

লরিস কৌরিওস; Source: Daily Star

রোমার তুরুপের তাস অ্যালিসন ও নাইংগোলান

রোমার সাফল্যের পেছনে অন্যতম মুখ ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার অ্যালিসন বেকার। চলতি মৌসুমে চোখ ধাঁধানো পারফর্মেন্সে শুধু এ বছরের সেরা গোলকিপার নন, পাশাপাশি উপহারটা পেয়ে গেছেন ব্রাজিল কোচ তিতের কাছ থেকে। রোমার হয়ে ধারাবাহিক সাফল্যের ফলে এডারসনকে হারিয়ে ব্রাজিল দলে প্রথম পছন্দের গোলকিপার তিনি। প্রতি ম্যাচে দারুণ সব সেভ করে চলেছেন, চ্যাম্পিয়নস লিগেও ১০ ম্যাচ খেলে গোল সেভ করেছেন ৩৮টি। আর গোল হজম করেছেন মাত্র ১২টি। নিজেদের মাঠে বার্সেলোনাকে ঠেকানোর অন্যতম সৈনিক তিনি। বিপক্ষ দলকে গোলবঞ্চিত করাতে তার জুড়ি নেই। তাই রোমার ভরসার পাশাপাশি লিভারপুলের জন্য অন্যতম বাধা অ্যালিসন।

অ্যালিসন বেকার; Source: Shaun Botterill

রাদজা নাইংগোলান রোমার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়, তার প্রমাণ রোমার সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ। প্রথম লেগে নাইংগোলান ইনজুরির কারণে ছিলেন না। রোমার মধ্যমাঠও ছিলো ছন্দহীন। পরের ম্যাচে ইনজুরি থেকে ফিরে এসে তিনি যেন রোমার মধ্যমাঠকে এক সুতোয় গাঁথলেন। মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ তৈরি করে দেওয়া ও একইসাথে রক্ষণে ভূমিকা রাখার মতো দায়িত্ব তিনি একসাথে করতে পারেন। তাই তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অবশ্যই কাজে দেবে লিভারপুলের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিপরীতে।

চোখ রাখুন এডিন জেকোর উপর

চ্যাম্পিয়নস লিগে এডিন জেকো কি দুর্দান্ত ফর্মে আছেন? তা তিনি হয়তো নেই, কিন্ত দলের হয়ে গোল প্রতিনিয়তই পাচ্ছেন। বার্সেলোনার বিপক্ষে উভয় লেগে গোল পেয়েছিলেন জেকো। একদম শেষ মুহূর্তে বার্সেলোনার মাঠে অ্যাওয়ে গোল তিনিই এনে দিয়েছিলেন। ঐ অ্যাওয়ে গোলের উপর ভর করেই অ্যাগ্রেগেটে এগিয়ে সেমিফাইনালে আসার সুযোগ পায় রোমা। তাই ৬ ফুট ২ ইঞ্চির দীর্ঘদেহী এই স্ট্রাইকারের উপর অগাধ ভরসা আছে রোমা সমর্থকদের। জেকো তার সামর্থানুযায়ী ফুটবল অ্যানফিল্ডে খেলতে পারলে ভাগ্যের চাকা রোমার দিকে ঘুরে যাবে। তাই ইয়ুর্গেন ক্লপ তাকে আটকানোর পরিকল্পনা করুক বা না করুক, রোমার পরিকল্পনার শিরোমণি এডিন জেকোই।

এডিন জেকো; Source: Getty Images

শেষকথা

উড়ে চলা ম্যানচেস্টার সিটি ও অপরাজিত বার্সেলোনাকে হারিয়ে এসেছে লিভারপুল ও রোমা। খেলার নিয়ম অনুযায়ী ফাইনালে যাবে এ দু’দলের যেকোনো একটি। তবে ফাইনালে পৌঁছানোর যোগ্যতা ও সামর্থ্য উভয় দলেরই আছে। লিভারপুলের বিপক্ষে রোমা এগিয়ে আছে জয়ের দিক থেকে, লিভারপুল এগিয়ে আছে তাদের সাম্প্রতিক ফর্মের দিক থেকে। যেখানে উভয় দলের সমান সমান সম্ভাব্যতা থাকছে, সেখানে লড়াইও হবে সমানে সমানে।

Featured Image Source: Spin Castle

Related Articles