Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বার্সেলোনায় মেসির প্রত্যাবর্তন: সম্ভাবনা, নাকি সম্ভব না?

“আমি এখনকার মতো চলে যাচ্ছি, কিন্তু এটা চিরবিদায় নয়। আবার দেখা হবে নিশ্চয়ই।”

২০২১ সালের ৮ আগস্ট, বার্সেলোনা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেওয়ার দিনে নিজের ফেসবুক পাতায় এই কথাটা লিখেছিলেন লিওনেল মেসি। বার্সেলোনা বলতে হয়তো তখন কাতালুনিয়ার রাজধানীকেই বুঝিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পিএসজির জার্সিতে দুটো বছর কাটানোর আগেই উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে মেসির বার্সেলোনা ক্লাবে ফেরার সম্ভাবনা, প্রতিটা দিনেই যেন নতুন করে আশার সঞ্চার হচ্ছে বার্সা সমর্থকদের মনে। আর্জেন্টিনার হয়ে সদ্য বিশ্বকাপজয়ী মেসি কি তবে ফিরছেন তার চিরচেনা মেরুন-নীল বাড়িতে?

চলুন দেখে নেওয়া যাক বার্সেলোনায় মেসির প্রত্যাবর্তনের আলোচনা আসলে কতটা বাস্তবসম্মত।

পিএসজিতে মেসির বর্তমান অবস্থা কী?

বার্সেলোনার সাথে চুক্তি নবায়ন সম্ভব না হওয়ায় ২০২১ সালের আগস্টে ফ্রি ট্রান্সফারে লিওনেল মেসি পিএসজিতে যোগ দিয়েছিলেন। দুই বছরের সেই চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০২৩ এর ৩০ জুন পর্যন্ত, সাথে ছিল উভয় পক্ষের সম্মতিতে আরো এক বছর বাড়ানোর সুযোগ।

এই দুই বছরে মেসি জিতেছেন একটা ফ্রেঞ্চ লিগ আর একটা ফ্রেঞ্চ সুপার কাপ, রয়েছেন আরো একটা লিগ জয়ের পথে। তবে তাঁকে দলে ভেড়ানোর পেছনে পিএসজির মূল যে উদ্দেশ্য ছিল, সেই চ্যাম্পিয়নস লিগ রয়ে গেছে অধরাই। পরপর দুই মৌসুমে শেষ ষোল থেকে বিদায় নিয়েছে পিএসজি, যথাক্রমে রিয়াল মাদ্রিদ এবং বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে।

বায়ার্নের বিপক্ষে এই ম্যাচের আগে প্যারিসে দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হলেও চুক্তি নবায়নের কথাবার্তা এগোয়নি। এরপর স্প্যানিশ পত্রিকা মার্কার প্রশ্নের জবাবে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইর সভাপতি নাসের আল-খেলাইফি বলেছিলেন মেসি-সহ অন্য খেলোয়াড়দের চুক্তি নবায়নের ব্যাপারে, “আমরা তাদেরকে ক্লাবে রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।”

তবে মেসিকে রাখার প্রশ্নে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনের সমর্থকেরা অবশ্য দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন ইতোমধ্যে। বায়ার্নের বিপক্ষে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নেওয়ার পর ফ্রেঞ্চ লিগের ম্যাচে রেঁনের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে কিছু সমর্থকের কাছ থেকে দুয়োধ্বনি শুনেছেন মেসি। পাশাপাশি পিএসজির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, সেই পরিকল্পনায় তাঁর ভূমিকা কতটুকু, এই ব্যাপারগুলো নিয়েও ধোঁয়াশায় রয়েছেন লিওনেল মেসি। এ কারণেই পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না মেসির পিএসজি ছাড়ার সম্ভাবনা। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে মেসির কাছের বন্ধু ও সাবেক সতীর্থ সার্জিও আগুয়েরোর বক্তব্যও হাওয়া লাগিয়েছে সম্ভাবনার পালে। মেসিকে ফেরাতে বার্সা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তাকে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিলেন আগুয়েরো, বলেছিলেন প্রাণের ক্লাব বার্সেলোনাতেই মেসির অবসর নেওয়ার কথা।

“একজন পরিপূর্ণ ফুটবলার হিসেবে মেসি বেড়ে উঠেছে বার্সেলোনায়, বার্সাতেই তার অবসর নেওয়া উচিত। আমার মনে হয় যদি লাপোর্তা উদ্যোগ নেন, যদি ব্যক্তিগতভাবে মেসির সাথে কথা বলেন, সেক্ষেত্রে হয়তো মেসির ফেরার সম্ভাবনা বাড়বে। আমার মতে, এই মুহূর্তে মেসির বার্সেলোনায় ফেরার সম্ভাবনা পঞ্চাশ শতাংশ।”

সার্জিও আগুয়েরো, সাবেক আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড

কিন্তু, বার্সেলোনা কি আসলেই মেসিকে চায়?

বার্সেলোনা কি মেসিকে ফেরাতে চায়?

৩১ মার্চের আগ পর্যন্ত বার্সেলোনার কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে মেসির ফেরার ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনো নির্দিষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ৩১ মার্চ বার্সেলোনার সহসভাপতি রাফা ইয়ুস্তে কথা বলেছেন এ ব্যাপারে, প্রথমবারের মতো।

”আমরা সরাসরি মেসির ক্যাম্পের সাথে কথা যোগাযোগ করছি। মেসি জানেন আমরা তাকে কতটা পছন্দ করি, তিনি ফিরলে আমরা খুশি হবো। দুই বছর আগে মেসির সাথে চুক্তির কথাবার্তায় আমি যুক্ত ছিলাম, আমি জানি মেসিকে ছেড়ে দেওয়াটা আমাদের জন্য কতটা কষ্টদায়ক ছিল। মেসি বার্সেলোনা ক্লাব এবং শহর – দুটোকেই খুব ভালোবাসে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এই ক্লাবে তার ইতিহাস লেখার কাজটাকে চালিয়ে নেওয়ার।”

– রাফা ইয়ুস্তে, সহসভাপতি, ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা

২০২১ এর আগস্টে মেসির বিদায়ের পর থেকেই সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা জনসম্মুখে বারবার বলেছেন মেসির সাথে সুসম্পর্কের কথা, বলেছেন মেসির জন্য ক্লাবের দরজা সবসময়েই খোলা থাকবে।

“আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছি, বার্সেলোনার অবস্থা তখন ভালো না। ক্লাবের স্বার্থে আমাকে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেই হতো। তবে মেসির সাথে বার্সার বর্তমান সম্পর্ককে আরো উন্নত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি আমি। দেখা যাক ভবিষ্যতে কী ঘটে, তবে মেসি জানেন, বার্সেলোনার দরজা সবসময়েই তাঁর জন্য খোলা।”

হোয়ান লাপোর্তা, সভাপতি, ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা

বার্সেলোনার মিডফিল্ডার এবং অন্যতম অধিনায়ক সার্জি রবার্তো কিছুদিন আগে বলেছিলেন যে মেসি ফিরলে তাঁকে বরণ করে নেওয়া হবে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথেই। অর্থনৈতিক সহসভাপতি এদুয়ার্দ রোমেউ গত সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন, মেসিকে ফেরানোটা বার্সার জন্য অর্থনৈতিকভাবে সম্ভব।

কিন্তু মেসি নিজে কি বার্সেলোনায় ফিরতে চান?

মেসি কি ফিরতে চান বার্সেলোনায়?

তিন মাস আগে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জেতানো এই মহাতারকা অবশ্য জনসমক্ষে তার ভবিষ্যতের ব্যাপারে কথা বলেননি এখনো, প্রকাশ করেননি বার্সেলোনায় ফেরার ইচ্ছাটা। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে বার্সেলোনার একটা রেস্তোরাঁয় সাবেক সতীর্থ সার্জিও বুসকেটস এবং জর্দি আলবার সাথে মেসির ডিনারের ছবি প্রকাশের পর থেকেই গুঞ্জনটা নতুন মাত্রা পায়।

সর্বশেষ বিশ্বকাপের আগে মনে হচ্ছিল মেসি হয়তো আরেক মৌসুমের জন্য থেকে যাবেন পিএসজিতেই। মেসির আশেপাশের সূত্র থেকেও এমন খবরই ভেসে আসছিলো, বার্সেলোনায় ফেরার সম্ভাবনা তখন ছিল খুবই ক্ষীণ। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে পিএসজির বিদায়ের পর থেকেই মূলত মেসির আশেপাশের সূত্রগুলোর কথার সুর পরিবর্তন হয়েছে, কোনো সম্ভাবনাকেই এখন তারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। সার্জিও আগুয়েরোর কথাকেও তাই গুরুত্বের সাথে নিতে হচ্ছে, ম্যানচেস্টার সিটির এই কিংবদন্তি ফরোয়ার্ডকে তো মেসির কাছের বন্ধু হিসেবেই চেনেন সবাই।

এখন প্রশ্নটা হচ্ছে, সম্ভাব্য এই চুক্তিতে আসলে কী থাকবে?

কী কী থাকতে পারে বার্সেলোনা-মেসির চুক্তিতে?

এই প্রশ্নটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এর উত্তরেই হয়তো নির্ভর করছে মেসির ভবিষ্যৎ।

২০২১ এর আগস্টে বার্সা ছাড়ার আগে বার্সার সাথে চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল মেসির। সেই ‘না হওয়া’ চুক্তি অনুসারে, প্রথম বছরে মেসির পাওয়ার কথা ছিল মোট নেট ১০ মিলিয়ন ইউরো। মেসি পরে বলেছিলেন এ ব্যাপারে,

“আমি জানি না ক্লাবের ভূমিকা সম্পর্কে, তবে আমি আমার সবটা দিয়েই চেষ্টা করেছিলাম। সব ঠিকঠাক হয়ে গিয়েছিল। আমি পঞ্চাশ শতাংশ বেতন কমাতে রাজি ছিলাম। এর পরে যা হয়েছে, সেটা মিথ্যাচার। আর এ ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু বলেনি।”

– লিওনেল মেসি, বার্সেলোনার সাবেক আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড

স্বাভাবিকভাবেই এসব আলোচনা আবার গোড়া থেকে শুরু করতে হবে উভয়পক্ষকে। সাইনিং-অন ফি হিসেবে মেসি কত পাবেন, অথবা পরবর্তীতে কমিশন হিসেবে, দু’পক্ষকে আলোচনা করতে হবে এগুলোও।

এছাড়া আগামী মৌসুমে ক্যাম্প ন্যুয়ের সংস্কারের জন্য বার্সেলোনা তাদের হোম ম্যাচগুলো খেলবে এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিস-এ। ৫৫,০০০ ধারণ ক্ষমতার এই স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯২ এর অলিম্পিক গেমস। মেসির আগমনের ব্যাপারটা এই সাময়িক স্টেডিয়াম বদলের ক্ষেত্রেও বার্সাকে অর্থনৈতিক বিভিন্ন সুবিধা দিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্লাবের বিভিন্ন সূত্র অনুসারে, ক্যাম্প ন্যুয়ের সংস্কারের জন্য রাখা হয়েছে ৯০ মিলিয়ন ইউরোর বাজেট। বার্সা চাইছে এই অর্থ তুলে আনার পথ খুঁজতে, স্বাভাবিকভাবেই নতুন স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতিটাই হবে বার্সার আয়ের অন্যতম মূল উৎস। আর ‘আইকনিক’ ক্যাম্প ন্যু ছেড়ে অপেক্ষাকৃত অচেনা, অপরিচত ভেন্যুতে গিয়ে খেলা দেখার জন্য মেসির ‘লাস্ট ড্যান্স’-এর চেয়ে বেশি আবেদন আর কী-ই বা তৈরি করতে পারে?

মেসির বেতন কীভাবে দিবে বার্সেলোনা?

এই উত্তরটা এখনই দেওয়া মুশকিল। লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাস যেমন বলছেন, লিগের বেঁধে দেওয়া সীমার মধ্যে থাকতে হলে বার্সেলোনাকে তাদের বেতন কাঠামোতে কমাতে হবে নিদেনপক্ষে ২০০ মিলিয়ন ইউরো। তবে সম্প্রতি তিনিও বলেছেন, সব ঠিকঠাক থাকলে মেসির বার্সেলোনায় প্রত্যাবর্তনের ঘটনা ঘটতেও পারে।

“ক্যারিয়ারের এই শেষ পর্যায়ে এসে যদি মেসি তার বেতন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমাতে রাজি হন, সেক্ষেত্রে তিনি বার্সেলোনায় ফিরতেও পারেন।”

– হাভিয়ের তেবাস, সভাপতি, লা লিগা

বার্সেলোনার ক্রীড়া পরিচালক মাতেউ আলেমানি অবশ্য ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলেন,

“আমাদের অনুমান, আগামী মৌসুমে আমাদের মোট বেতনভাতার পরিমাণ লা লিগার বেঁধে দেওয়া সীমার মধ্যে থাকবে। জেরার্ড পিকে আর আঁতোয়ান গ্রিজমানের বিদায়ের ফলে আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ৯০ মিলিয়ন ইউরো খরচ কমিয়ে ফেলেছি”

– মাতেউ আলেমানি, ক্রীড়া পরিচালক, ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা

চুক্তির শেষ বছরে থাকা সার্জিও বুসকেটস চুক্তি নবায়ন না করলে তার বিশাল বেতন থেকেও ‘বেঁচে’ যাবে বার্সেলোনা। যদিও গুঞ্জন আছে, বেতন অনেকটা কমিয়ে বুসকেটস থাকতে পারেন আরো একটা বছরের জন্য। এছাড়া বর্তমানে ধারে টটেনহ্যামে খেলা ক্লেমঁ লংলে, লেচ্চেতে খেলা স্যামুয়েল উমতিতি, এবং এসি মিলানে খেলা সার্জিনিও ডেস্টও নেই জাভির পরিকল্পনায়। সামনের গ্রীষ্মে তাদের বিক্রি করতে পারলে বাঁচবে তাদের বড় অঙ্কের বেতনটা। তবে ধারে ভ্যালেন্সিয়াতে খেলা নিকো গঞ্জালেস আর ওসাসুনাতে খেলা আবদে এজাজুলিকে নিয়ে জাভির পরিকল্পনাটা এখনো পরিষ্কার নয়।

মেসির প্রত্যাবর্তনটা শুধুই দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য?

সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সাপেক্ষে এমনটা মনে হতেই পারে। নেগ্রেইরা-ইস্যু নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই জেরবার বার্সেলোনা, লা লিগার পর এবার উয়েফাও ঘোষণা দিয়েছে তদন্তের। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে নিষেধাজ্ঞাও জুটতে পারে। বার্সেলোনা অবশ্য বরাবরই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটা, মেসির প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে লাপোর্তা বক্তব্য দিয়েছিলেন গত জানুয়ারিতেই, অর্থাৎ নেগ্রেইরা-ইস্যু আলোর মুখ দেখার অনেক আগেই। স্প্যানিশ রেডিও স্টেশন কাদেনা সারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লাপোর্তা বলেছিলেন,

“এখনো মেসির সাথে আমার সম্পর্ক আছে, তার ক্যাম্প এই কথার বিরোধিতা করলেও।”

– হোয়ান লাপোর্তা, সভাপতি, ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা

গত ফেব্রুয়ারিতে, লিওনেল মেসির বাবা এবং এজেন্ট হোর্হে মেসি বার্সেলোনায় এসেছিলেন ব্যক্তিগত কিছু কাজে। তখন লাপোর্তার সাথে সরাসরি কথা হয়েছিল তার সাথে।

“তার সাথে আমার দেখা হয়েছিল। আমরা পরিস্থিতির ব্যাপারে কথা বলেছি। মেসিকে আমি আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি। এছাড়া তাকে সম্মাননা দেওয়ার ব্যাপারেও কথা হয়েছে।”

– হোয়ান লাপোর্তা, সভাপতি, ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা

মাঠের বাইরের বিভিন্ন ইস্যুতে যখন ক্লাব জেরবার, সেসব ইস্যু থেকে সবার দৃষ্টি ফেরানোর জন্য নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তারকাকে ফেরানোর চেয়ে বড় টোটকা আর হতে পারে না। আর সম্প্রতি বিভিন্ন আর্জেন্টাইন, স্প্যানিশ ও ফরাসি সূত্র থেকে যেমনটা জানা যাচ্ছে, সব মিলিয়ে মেসির প্রত্যাবর্তনটা খুবই সম্ভব।

মেসির প্রত্যাবর্তনটা কি বার্সার জন্য ভালো হবে?

রক্ষণ ছিল বরাবরই বার্সার বড় সমস্যার জায়গা। ভালভার্দে-সেতিয়েন-কোম্যানের অধীনে রক্ষণের ভুলে বারবার লজ্জার মুখে পড়তে হয়েছে কাতালান ক্লাবটাকে। জাভির বার্সেলোনা সেক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি করেছে, আলেহান্দ্রো বালদে-রোনাল্ড আরাউহো-আন্দ্রেয়াস ক্রিস্টেনসেন-জুলস কুন্ডের এই রক্ষণটা স্পেনের সেরা। সেই তুলনায় এই বার্সার আক্রমণভাগকেই লাগছে ম্রিয়মাণ। বিশ্বকাপের পর থেকে সবচেয়ে বড় তারকা রবার্ট লেওয়ানডস্কি চেনা খুনে ফর্মে নেই। উসমান দেম্বেলে রয়েছেন ইনজুরিতে, আনসু ফাতি আর ফেরান তোরেসও নিজেদের হারিয়ে খুঁজছেন।

মেসি ফিরলে এই আক্রমণভাগে নতুন বৈচিত্র্য আসবে, সন্দেহ নেই। কিন্তু কোচ জাভি হার্নান্দেজ বার্সেলোনাকে যে ৪-৪-২ ফরমেশনে খেলাচ্ছেন বর্তমানে, তাতে মেসি হয়তো জায়গা পাবেন মাঝমাঠে। আর মেসিকে জায়গা দেওয়ার জন্য হয়তো পেদ্রি গঞ্জালেস বা পাবলো গাভির মতো তরুণ মিডফিল্ডারকে থাকতে হবে বেঞ্চে। এই ব্যাপারটাও নিশ্চয়ই থাকবে জাভির মাথায়।

তাছাড়া পেদ্রি-গাভি-বালদে-আরাউহোর মতো তরুণ প্রতিভাদের নিয়ে বার্সা যে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে, তাতে মেসির ভূমিকাটা ঠিক কী হবে, সেটাও এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার না। সামনের জুনে ৩৬ পূর্ণ করতে চলা মেসি নিশ্চয়ই বার্সার ‘ভবিষ্যৎ’ নন! জাভি অবশ্য অতশত ভাবছেন না, মেসিকে বার্সার জার্সিতে ফিরে পেতেই অনেক বেশি উদগ্রীব তিনি।

মেসির বার্সেলোনায় প্রত্যাবর্তনটা তাই এখনো পুরোপুরি দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু যদি-কিন্তুর ওপর। আর সবগুলো চেকবক্সে যদি টিক পড়ে যায়, মেসি আর বার্সেলোনার পুনর্মিলনীটা তাহলে এই গ্রীষ্মেই মঞ্চায়িত হতে যাচ্ছে। আরো একবার মেরুন-নীলের দশ নম্বর জার্সিটা উঠতে যাচ্ছে আর্জেন্টাইন জাদুকরের গায়ে।

ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে, সর্বজয়ী লিওনেল মেসি তো এমন একটা বিদায়ই চেয়েছিলেন!

[সকল তথ্য ৩১ মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত]

This article is in Bangla language. It is about the possible return of Lionel Messi, the world cup winning Argentine forward, to his previous club FC Barcelona from his current club Paris Saint-Germain.

Necessary Sources: The Athletic
Featured Image: Getty Images

Related Articles