শ্রীলঙ্কার চায়নাম্যান বোলার সান্দাকানের ওভারের পঞ্চম বলে কাভারে খেলে দ্রুত এক রান নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ শতক তুলে নেন মুমিনুল হক। সেই সাথে প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসাবে টেস্ট ক্রিকেটে এক ম্যাচের দুই ইনিংসে শতক হাঁকানোর কীর্তি গড়েন তিনি।
টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসাবে জোড়া শতক হাঁকিয়েছিলে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ারেন বার্ডসলি। এরপর আরও ৮১ বার ম্যাচে জোড়া শতক হাঁকানোর ঘটনা ঘটলেও কোনো বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানের নাম তালিকায় ছিল না। শেষপর্যন্ত সেই আক্ষেপ দূর করলেন মুমিনুল।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে পঞ্চম দিনে ম্যাচ বাঁচানোর লক্ষ্যে মাঠে নামে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনের শেষ লগ্নে মুশফিক এবং তামিমের উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে ছিল টাইগাররা। মাত্র ৮১ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বসেছিল স্বাগতিকরা। তখনো ১১৯ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। আজ শেষ দিনে লিটন দাসকে সাথে নিয়ে কোনো অঘটন ঘটতে দেননি মুমিনুল। ডি সিলভার বলে সাজঘরে ফেরার আগে ১৭৪ বলে পাঁচটি চার এবং দুটি ছয়ের সাহায্যে ১০৫ রান করেন তিনি। মুমিনুল হক যখন আউট হন, তখন বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ৬১ রানে এগিয়ে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মুমিনুল হকের অনবদ্য ১৭৬ রানের ইনিংসের উপর ভর করে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৫১৩ রান সংগ্রহ করে। জবাবে শ্রীলঙ্কা ৭১৩ রান সংগ্রহ করলে বাংলাদেশ কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায়। সেখান থেকে ১০৫ রানের ইনিংস খেলে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটান চট্টগ্রামের ঘরের ছেলে মুমিনুল।
মুমিনুল হক জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচে ৮৬.৯০ ব্যাটিং গড়ে ৮৬৯ রান করেছেন। তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ছয়টি শতকের মধ্যে পাঁচটি এসেছে এই মাঠে। নিজের ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টের চার ইনিংসের মধ্যে তিনটিতে শতক হাঁকিয়েছেন তিনি। এই মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই টেস্টে ১৩১.৩৩ ব্যাটিং গড়ে ৩৯৪ রান সংগ্রহ করেছেন। এক টেস্টে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহের রেকর্ডও মমিনুলের দখলে। তিনি চলতি টেস্টের দুই ইনিংসে ২৮১ রান (১৭৬ ও ১০৫) করেছেন। আগের রেকর্ডটি ছিলো তামিম ইকবালের দখলে। তিনি ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৩১ রান (২৫ ও ২০৬) করেছিলেন।
ফিচার ইমেজ- Associated Press