একটি ছোট্ট শিশু, ভূমিষ্ঠ হয়েছে খুব বেশিদিন হয়নি। নেমে পড়েছে বড়দের খেলায়। তারস্বরে চেঁচাচ্ছে। রক্তাক্ত হচ্ছে। এখানে-সেখানে জর্জরিত হচ্ছে আঘাতে, লুটিয়ে পড়ছে যন্ত্রণায়। ‘এই পুঁচকে এখানে কেন?’ আওয়াজ তুলছে বড়রা। ‘বের করে দাও ওকে। আগে খেলা শিখুক, তারপর আসুক খেলতে।’ কিন্তু শিশুটি পিছিয়ে যেতে আসেনি। রক্তাক্ত হলেও, উঠে দাঁড়ায় আবার। লূটিয়ে পড়লেও, তাল ঠিক করে নেয় প্রতিবার। মাঝেমধ্যে এক-আধটা পাল্টা আঘাতে চমকে দেয় বড়দের। বড়রা চমকিত হয়, আতঙ্কিত হয়, তবে প্রভাবিত হয় না খুব একটা। শিশুটি ঠিক বুঝতে পারে, বড়দের মতো খেলতে না জানলে, এই মাটিতে, এই খেলায় কখনোই সে টিকতে পারবে না। তাকে শক্তিতে-সামর্থ্যে-সক্ষমতায় টক্কর দিতে হবে সমস্ত প্রাচীন-অভিজাত-নাক উঁচুওয়ালাদের সঙ্গে, নচেৎ ছেড়ে দিতে হবে এই খেলা।
শিশুটি দ্বারস্থ হয় নানাজনের। সতেরো বছরের এক কিশোর, বুকে তার এক আকাশ সমান সাহস, নেমে পড়ে শিশুটির হয়ে খেলতে। খেলাটির সবচেয়ে পুরনো ও কঠিন মৌসুম, ইংলিশ গ্রীষ্ম। সাপের মতো ফণা তোলা সুইং, সবুজ গালিচার মতো ২২ গজ, সম্পূর্ণ অচেনা-অজানা কন্ডিশন; কিশোরকে ভয় লাগাতে পারে না কিছুই। তাবৎ ক্রিকেট পন্ডিতের হতবাক চোখে মুগ্ধতার পরশ বুলিয়ে কিশোরটি প্রতিনিধিত্ব করে শিশুটির। জিওফ্রে বয়কট বলে বসেন, ‘আরে! ছোকরার টেকনিক তো জবরদস্ত!’ ক্রিকেট তীর্থে, শ্বেত আঙিনায়, ঢোলা হওয়া শুভ্র পোষাক আর গৌরবের টেস্ট-ক্যাপ মাথায় উঠে তার। শুরু হয় শিশুটির জন্য কিশোরের আত্মোৎসর্গের আনন্দমুখর এক অভিযাত্রা।
শিশুটি হচ্ছে টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির পঞ্চম বছরে পা রাখা বাংলাদেশ ক্রিকেট। আর শিশুটির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা কিশোরের নাম মুশফিকুর রহিম।
১.
কিশোরটির ক্রিকেটজ্ঞান ছিল টনটনে। সে জানত, বড়দের খেলায় পা হড়কানোর সুযোগ নেই। বড়রা ছিঁড়েখুড়ে ফেলার জন্য করাত নিয়ে তৈরিই আছে। একটু এদিক-সেদিক হলে কেউ বলবে না, নেহায়েৎ বাচ্চা। আরেকটু সময় দাও, পারবে অবশ্যই। বরং উলটো বলে উঠবে, উঁহু! হবে না একে দিয়ে, বের করে দাও ওকে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের হাঁটি হাঁটি পা পা—এর সময়েই কতজনের কত কথা! কেউ বলেন, টেস্ট স্ট্যাটাস কেড়ে নিতে, কেউ দেন দু’দিনে টেস্ট শেষের ফর্মুলা। কিশোর মুশফিকুরের সেসব না জানার কথা নয়। সতেরো বছরের মুশফিকুর রহিম ঠিকই জানত, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জমিন শক্ত হবে, যদি সে নিজের জমিন শক্ত করতে পারে। বাংলাদেশ ক্রিকেট মাথা তুলে দাঁড়াবে, যদি সে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে। তাকে তাই নিজের জন্য নয়, বরং খেলতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য। তাহলেই হবে উদ্দেশ্য সাধন। তাকে দেখাতে হবে চূড়ান্ত নিবেদন, এবং বিকল্প নেই কঠিন পরিশ্রমেরও।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা আবিষ্কার সে, তাই বলে অনুশীলনে একটু ঢিল দেয়ার ছেলে নয়। বরং সবচেয়ে ঘাম ঝরানো একজন। ছোট্ট কাঁধে চাপলো অনেক ভার। উইকেটের পেছনটা সামলাও, সামনেটায় দাঁড়াও বুক চিতিয়ে, অথচ তখনো নিশ্চিতই হয়নি দলে তার অবস্থান। দলে জায়গা হারালো সে, কৈশোর পেরিয়ে তখন তিনি তারুণ্যে পা রেখেছেন। ছোট্ট একটা সময় পর, তিনি ফিরলেন আবার। আর পরের এক যুগেরও বেশি সময়ে দলে তার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠার অবকাশ দেননি আর।
২.
দাঁতে দাঁত চেপে স্ট্যাম্পের সামনেটায় লড়ে যান তিনি। জহুরী কেউ তার শ্যাডো প্র্যাকটিস দেখলেই বুঝে যাবেন, তিনি অনন্য। দুটো বল ব্লক করতে দেখলেই নিশ্চিত হবেন, হি ইজ দ্য বেস্ট। আর একটা কাভার ড্রাইভ দেখলে মুগ্ধস্বরে চেঁচিয়ে উঠবেন, হি ইজ পিওর গোল্ড। জেমি সিডন্সও তাই বলেছিলেন,
‘হি ইজ দ্য গোল্ডেন বয় অফ বাংলাদেশ।’
বড় ইনিংস আসছিল না সেভাবে। সবাই জানতেন, তা সময়ের ব্যাপার। কিন্তু সময়টা কত দীর্ঘ? বেশ ক’বার আটকে গেলেন ষাট-সত্তর পেরিয়ে। কিন্তু যেবার তিন অঙ্কের জাদুকরী সংখ্যাটায় পৌঁছালেন, সে এক গল্প করার মতো অধ্যায়।
মাহমুদউল্লাহ যখন তাকে ছেড়ে গেলেন, তিনি তখন ৩৩ বলে ৭ রান করেছেন। বড় পরাজয় চোখ রাঙাচ্ছে। জয়ের জন্য দলের দরকার আরো ২৪৫ রান, আর অপরদিকের সঙ্গী শাহাদাত হোসেন, শফিউল ইসলাম, রুবেল হোসেন। এদের সঙ্গে নিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছার চেয়ে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের বন্দরে হাওয়া খেয়ে আসা যাক বরং!
তবে ভিন্ন কিছু চিন্তা করলেন মুশফিকুর। প্রথমে লড়াইটা চালালেন শাহাদাতকে নিয়ে, পৌঁছলেন ২৩০ অবধি। তিনি তখন ৪২-য়ে, খেলেছেন ৭০ বল। শফিউলও সঙ্গ ছাড়লেন ২৫৮তে, তিনি ৮৪ বল থেকে ৬২ রান তুলে নিয়েছেন। তারপর শেষজন রুবেল হোসেন। রুবেল হোসেনের ব্যাটিংয়ের চেয়ে বেশি বাজি ধরা যায় মুশফিকুর রহিমের বোলিংয়ে!
পরের ৭ ওভারে দু’জন জমা করলেন আরো ৪৩ রান, বাংলাদেশের স্কোর পেরিয়ে গেল তিনশ, লজ্জাজনক পরাজয়টা কিঞ্চিৎ ‘প্রমোশন’ পেয়ে হলো সম্মানজনক পরাজয়। আর মুশফিকুর রহিম খেললেন তার ক্যারিয়ারের প্রথম মাস্টারক্লাস, ১০১ রানের ইনিংস ১১৪ বল থেকে। ছোট্ট বুকের অসীম সাহস, দৃঢ়চেতা লড়াইয়ের প্রদর্শনীর মাত্র শুরু, এরপর অকাতরে দেখিয়ে গেছেন তা কতবার!
৩.
বহুবার উইকেটের পেছনে তার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, প্রশ্ন উঠেছে তার নেতৃত্ব নিয়ে, তার একগুঁয়েমি নিয়েও কম কথা হয়নি। কিন্তু উইকেটের সামনে তিনিই সেরা। প্রশ্নের কোনো সুযোগ নেই। শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেট নয়, পুরো বিশ্ব ক্রিকেটেই তার মতো ব্যাটসম্যান এখন হাতেগোনা। ব্যাটসম্যানশিপ আর লড়াকু মনন – দুটোতেই অনন্য তিনি। অনন্য তার নিবেদন দিয়েও। বহুবার, বহুবার বহুজন অকপট বলেছেন, হি ইজ দ্য গ্রেট সার্ভেন্ট অব বাংলাদেশ ক্রিকেট। ‘গ্রেট ব্যাটসম্যান’ নয়, ‘গ্রেট স্পোর্টসম্যান’ নয়, ‘গ্রেট ক্রিকেটার’ নয়, তিনি গ্রেট সার্ভেন্ট। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য আপাদমস্তক নিবেদিত একজন।
অনেকসময় শিশুতোষ ভুলের পরও উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে দাঁড়ানোর ব্যখ্যাতেও চলে আসে এই নিবেদন। তিনি সম্ভব সর্বোচ্চ উপায়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ‘সার্ভ’ করতে চান, তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে নিজের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ দিতে চান। তিনি উইকেটের সামনে-পেছনে সমানতালে লড়তে চান, তিনি উইকেটের পেছন থেকে খেলাটাকে ‘রীড’ করে, প্রয়োগ করতে চান তার ব্যাটসম্যানশীপের সময়ে। তবে প্রশ্ন যখন নিবেদনের, মুশফিকুর উইকেটের পেছনটা ছাড়লেই বরং বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভালো, তখন তিনি মেনে নেন তা। এই মেনে নেয়া ‘সহজেই হলো’ নাকি বেশ জটিল ছিল, তা কিছুতেই তার নিবেদন ও উজার করা মানসিকতায় প্রশ্নচিহ্ন দাঁড় করায় না।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতি তার নিবেদন, তার ভালোবাসা এখনো যেকোনো ভালোবাসা দিবসের গল্পের চেয়েও বেশি মনকাড়া। তিনি পাকিস্তানে যেতে না চাইলেও ‘কালিমা’ পড়ে না তাতে।
৪.
১.৬ মিটার উচ্চতার ছোটখাটো একজন, অথচ দীর্ঘদেহী সব ফাস্ট বোলারকে অনায়াসে দেখিয়ে দেন সীমানা দড়ির উড়াল পথ। তার ডিপ মিড উইকেট স্পেশাল কত আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে! তার ভয়ডর নেই, আছে সাহস, আছে ব্যক্তিত্ব। তিনি ভাঙবেন, তবে মচকাবেন না। তিনি হারবেন, তবে ব্যক্তিত্বহীন হবেন না। তিনি লড়বেন, কিন্তু শির নিচু রাখবেন না।
এক ক্রিকেট-দর্শক তখনও ফেসবুকে কাটিয়ে ওঠেননি আড়ষ্টতা, ব্লগের ব্যবহারেও নন পারদর্শী। তার ক্রিকেট-ভাবনা তিনি লিখে রাখেন ডায়েরির পাতায়, তার একান্ত ক্রিকেট খাতায়। সেবার বিপিএল নিয়ে গোলমাল হলো বড্ড। ব্র্যাড হজ দলের বিদায় জেনে বিমান ধরতে এয়ারপোর্ট যান, ফেরত আসেন আবার। কারণ, দল তার সেমিফাইনাল খেলছে! অব্যবস্থাপনা-সমন্বয়হীনতা-ঔদাসীন্যের বিপিএল নিয়ে মুশফিকুর রহিমকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এড়িয়ে যান না সে প্রশ্ন। অকপটেই বলে বসেন,
“পুরো বিশ্বক্রিকেটই দেখেছে এই টুর্নামেন্ট কতটা অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।”
হতবাক ক্রিকেট-দর্শক তার ক্রিকেট খাতায় টুকে রাখেন তা। মুশফিকুর রহিম তখন জাতীয় দলের অধিনায়ক। অধিনায়কের এমন নিঃসংশয় ঘোষণা প্রমাণ করে তার মেরুদণ্ডের অস্তিত্ব। বাংলাদেশ ক্রিকেট তাহলে যোগ্য হাতেই পড়েছে।
বহুকাল পর সেই ক্রিকেট-দর্শক আবার হতবাক হন। মুগ্ধ হন মুশফিকুর রহিমের ব্যক্তিত্বে। বারবার চাপ সত্ত্বেও তিনি যাবেন না পাকিস্তান। এটা যে তখন আর নিছক পাকিস্তান যাওয়া বা না যাওয়া নয়, আপোষকামিতা বা আপোষহীনতা হয়ে দাঁড়িয়েছে!
তিনি লড়বেন, তিনি খেলবেন, তিনি তৃতীয় দ্বিশতক হাঁকাবেন, ট্রিপলের স্বপ্ন বুনবেন, কিন্তু চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না।
৫.
দেড় দশকের ক্যারিয়ারে কত চাপ সামলেছেন নিদারুণ দক্ষতায়! তিন-তিনটে দ্বিশতক, শেষ পাঁচ বছরে টেস্ট বা ওয়ানডে, দুই বিভাগেই রান করেছেন চল্লিশোর্ধ্ব গড়ে, মধ্যমাঠে তার উপস্থিতি মানেই নির্ভরতা ও সৌন্দর্যের চমৎকার মিশ্রণ। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পাঁচটি জুটির চারটিতেই আছেন তিনি, সাকিবের সঙ্গে ওয়েলিংটনের ক্ল্যাসিক ৩৫৯ রানের জুটি যেখানটায় আছে শীর্ষে। তৃতীয়-চতুর্থ-পঞ্চম-ষষ্ঠ-অষ্টম টেস্ট উইকেটের সর্বোচ্চ জুটিতেও আছেন তিনি। তার কবজির পাওয়ার, তার বাহুর জোর, তার সংযম, তার আত্মনিয়ন্ত্রণ এখনো বাংলাদেশ ক্রিকেটে সেরা। যেই ‘পাওয়ার ক্রিকেট’ টি-টোয়েন্টিতে তাকে ভাবা হচ্ছিল অপাংক্তেয়, সেখানেই বাহু-কবজি-টাইমিংয়ের অনন্যতায় তিনি দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনবদ্য কিছু গল্প। সর্বোচ্চ ২১৪ শৃঙ্গ জয়, দিল্লীজয়… কত কত গল্প ঝুলিতে!
পাঁচদিনের টেস্ট হোক বা ধুন্ধুমার টি-টোয়েন্টি, রয়ে-সয়ে খেলা ওয়ানডে হোক বা উইকেট কামড়ে থাকার আবেদন, মুশফিকুর রহিম সেরা এখনো। আপনাকে যদি বলা হয়, জীবনের জন্য কোন ব্যাটসম্যানটিকে বেছে নেবেন? বা যদি বলি, কাকে দেখতে আপনি হেঁটে যাবেন অনেকটা পথ? নিঃসন্দেহে নামটা মুশফিকুর রহিমই হবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট ও তিনি পথ চলেছেন হাত ধরাধরি করে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আজকে যে উলটো পাঞ্চ ছুঁড়ে দেয়, বড়দের ক্রিকেটে সম্ভ্রমের চোখে দাঁড়ায়, ছোট্ট শিশুটির এই বড়ত্বের রূপায়নে মূল রূপকারদের একজন এই মুশফিকুর রহিম।
মুশফিকুর রহিম বহুবার হোঁচট খেয়েছেন, ভুল করেছেন, পথ ভুল করেছেন, কিন্তু আবার ঠিক পথে মাথা উঁচু করে হেঁটেছেনও। বাংলাদেশ ক্রিকেট মুখ থুবড়ে পড়লে, কাঁধে তুলে নিয়ে থোবড়ানো মুখটার শুশ্রুষা ও দেখভাল করেছেন। অবশ্যই মুশফিকুর রহিমের ঠিক-ভুল নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, ওঠা উচিৎ; তবে যা ওঠা উচিৎ নয়, তা হলো তার নিবেদন ও দেশাত্মবোধ নিয়ে প্রশ্ন।
৬.
মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে নিবেদিত ও পরিশীলিত একজন ক্রিকেটার। তার ব্যাটসম্যানশীপ প্রমাণ করে, তার গ্রহণযোগ্যতা ও অপরিহার্যতা। তার পরিশ্রম ও অধ্যবসায় সুনিশ্চিত করে তার সক্ষমতা ও যোগ্যতা। তার একাগ্রতা ও মনোযোগ তার মধ্যে জাগ্রত রাখে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতা। তার সামর্থ্য আরো ধারালো হয়, তার বিচক্ষণতা আরো ক্ষুরধার হয়, তার দৃঢ়চিত্ত আরো জমাট হয়, সময়ের সঙ্গে আরো পোক্ত ও পরিপক্ক হয়ে ওঠেন তিনি। এই সময় তাকে উঁচুত্বের নানান শৃঙ্গ দেখিয়ে সেসব জয়ের প্রেরণা যোগানোই আমাদের কাজ হওয়া উচিৎ, তার নিবেদন নিয়ে অযাচিত প্রশ্ন তোলা নয়।
আপনার ক্ষীণকায় কাঁধে সওয়ার কতবার!
আহা-উঁহু নয় মোটেও,
উলটো দাঁতে দাঁত চেপে সওয়ারীকে দিয়েছেন আরাম,
কাঁধটা চওড়া করে, ছুটেছেন দুর্নিবার।
দুর্বিনীত চোখ মেলে বল রেখে বুকে
লড়েছেন সামর্থ্যের সবটা দিয়ে,
বিজয়ের রাজতিলক এনেছেন পেড়ে
সমস্ত ঝঞ্ঝাট পেরিয়ে।
সম্মুখের পথ মসৃণ নয় একদম,
এবড়ো-থেবড়ো, খাদে-গর্তে পরিপূর্ণ;
সেইসব মাড়িয়ে, যেতে হবে এগিয়ে
ডাকছে ক্লাব—একের পাশে চারটি শূন্য।