অষ্টাদশ ওভারে ‘কুড়িয়ে পাওয়া’ বাউন্ডারির সাথে সাথে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী হলো পায়ের চোট। দৌড়ে দ্বিতীয় রানটা শেষ করতে পারলেন না, বসে পড়লেন হাঁটুর উপর ভর করে। সাথে সাথে বোধহয় প্রার্থনায় বসে পড়লো গোটা বাংলাদেশ, তার উপরই যে নির্ভর করছে ম্যাচের সিংহভাগ! অপর পার্শ্বে সঙ্গী ছিলেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আর অদৃশ্যভাবে নিশ্চয়ই সঙ্গী হয়েছিল বেঙ্গালুরুর সেই অভিশপ্ত রাত।
সে রাতের পুরোনো মদটুকুই আজ নতুন মোড়কে আনতে খুব একটা ঝামেলা পোহায়নি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও। ঐ বাউন্ডারির পর মাহমুদউল্লাহ এবং সাব্বিরের জোড়া আত্মহত্যায় হাতে থাকা ম্যাচটিই বেরিয়ে যেতে বসেছিল। বিশেষ করে সাব্বিরের রান আউটটা ছিল রীতিমতো বিস্ময়কর। ইনজুরিগ্রস্থ মুশফিক যেখানে প্রাণান্ত চেষ্টায় দৌড়ে পৌঁছে গেছেন অপর প্রান্তে, কোনো এক অদ্ভুত কারণে সাব্বির হেলেদুলে রান নেওয়ার প্রচেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার, সাব্বির ব্যাটটা প্লেসমেন্টেরও বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেননি!
অথচ এর আগেই গোটা ম্যাচে দুর্দান্ত ফিল্ডিং করে দলকে উজ্জীবিত রেখেছিলেন সাব্বির। তিনটি দুর্দান্ত ক্যাচ তো আছেই, সঙ্গে ক্ষিপ্র গতির জমাট ফিল্ডিংয়ে দলের অন্তত ১০/১৫টি নিশ্চিত রান বাঁচিয়েছেন। টি-টোয়েন্টির এই ক্ষুদ্র পরিসর ক্রিকেটে এই ফিল্ডিং যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেটা নিয়ে কোনো মতপার্থক্য নেই। তবে সেই অসাধারণ নৈপুণ্য তিনি নিজেই ঢেকে দিলেন অদ্ভুতুড়ে এক রান আউট দিয়ে!
অগত্যা গোটা দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন মুশফিকই। পূর্ব অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর ছিল না। বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে ৩ বলে ২ রান নিতে না পারার সেই ভয়াবহ রাতের ক্ষতটা এখনও দগদগে না থেকে পারে না। সে ম্যাচে জয়ের আগেই উৎসবে লিপ্ত হয়ে রীতিমতো হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন মুশফিক। এবার আর সে ভুল করলেন না, নন-স্ট্রাইক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা নবাগত ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজকে বিন্দুমাত্র সুযোগ না দিয়ে অনবদ্য সব স্ট্রোকের ফল্গুধারা সাজিয়ে ম্যাচটিকে একদম নিজের করে নিলেন।
নিদাহাস ট্রফি শুরুর আগে বাংলাদেশ দলকে ঘিরে জমে ছিল হাজার প্রশ্ন। প্রথম ম্যাচটা শেষে সেই প্রশ্নগুলো হয়ে উঠলো টিপ্পনী। কোহলি-ধোনি-পান্ডিয়াবিহীন এই ভারত আসলে ‘দ্বিতীয় শ্রেণির’ একটি দল। এমন কটাক্ষ করা মানুষের অভাব নিতান্ত কম ছিলো না ত্রিদেশীয় এ টুর্নামেন্টের শুরুতে। অথচ সেই ভারতই যখন এভাবে অনায়াসে হারিয়ে দিলো বাংলাদেশকে, টিপ্পনীগুলো ছিলো অবধারিত।
চন্ডিকা হাতুরুসিংহে যুগের সমাপ্তির পর একের পর এক পরাজয়ে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ তখন পায়ের নিচে এক টুকরো মাটি খুঁজছে। জয়ের আশা জাগানো তো দূরের কথা, মানসম্মত পারফরম্যান্সও দিতে পারছিল না। তাবৎ বিশ্ব তো বটেই, বাংলাদেশের সমর্থকরাও যেন কিছুটা অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছিলো গত কিছুদিন। গোটা দলের শারীরিক ভাষায় সেই ছিঁড়েখুঁড়ে খাওয়ার মানসিকতাটা যেন ঠিক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
অবশেষে সেটা আবারো ফিরলো লিটন দাসের ব্যাটে। সেই লিটন, যাকে নিয়ে গোটা অনলাইনে কটূক্তির বিশেষ কমতি নেই। এমনকি তার ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো মানুষেরও অভাব ছিল গত কিছুদিন আগেও। গত ম্যাচের দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছিলেন দারুণভাবে। সে সুবাদেই এ ম্যাচে প্রমোশন পেয়ে উঠে এসেছিলেন ওপেনিংয়ে, এরপর তামিম ইকবালকে পার্শ্বনায়কের চরিত্রে রেখে নিজে জ্বলে উঠলেন ভয়াবহ রূপে।
কতটা ভয়াবহ, সেটা মাত্র ১৯ বলে ৪৩ রানের ঝলমলে ইনিংসের পরিসংখ্যানও জানান দিতে পারছে না। এমনকি পাঁচ ওভার-বাউন্ডারিতে বাংলাদেশের পক্ষে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডে ভাগ বসানোর পরও স্কোরবোর্ড সাক্ষ্য দিচ্ছে না তার সামনে আকিলা ধনঞ্জয় কতটা অসহায় ছিলেন। অবশেষে নুয়ান প্রদীপের দারুণ এক স্লোয়ারে পরাস্ত হয়ে যখন ফিরে গেলেন সাজঘরে, ততক্ষণে বাংলাদেশের স্কোরকার্ডে মাত্র ৫.৫ ওভারেই জমা পড়েছে ৭৪ রান! বাংলাদেশ তখন স্বপ্ন দেখছে, তবে কি আজ সত্যিই পারবে বাংলাদেশ?
কিন্তু শ্রীলংকার ছুঁড়ে দেওয়া ২১৫ রানের বিশাল এই টার্গেটটা ছোঁয়া তো যেনতেন কথা নয়, এর আগে যে এত রান তাড়া করে জেতার নিদর্শনই আছে মাত্র তিনটি! কোনো এশীয় দলই এর আগে এত বড় টার্গেট তাড়া করে জিততে পারেনি। তার চেয়েও বড় কথা, বাংলাদেশ এর আগে কোনোদিন টি-টোয়েন্টিতে ২০০ রানই করতেই পারেনি! আগুনঝড়া শুরুটার পরও তাই সমর্থকদের মনে জমেছিল শঙ্কার মেঘ, এর আগে যে হৃদয় ভাঙার গল্পগুলো যে নিতান্তই ছোট নয় বাংলাদেশের!
সেটা যে হলো না, তার পেছনে মূল কাণ্ডারি হলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুই রাজপুত্র- তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম। দুজনের নামেই গত বেশ কিছুদিনে একের পর এক অভিযোগ উঠেছে, কেউ কেউ বাতিলের খাতায় ফেলে দিতেও খুব একটা পিছপা হননি। নিজেদেরকে প্রমাণ করার একটা আলাদা তাগিদ তাই ছিল, সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। সে সুযোগটা দারুণভাবেই নিলেন খানসাহেব, মাত্র ২৯ বলে ৪৭ রানের ঝলমলে একটা ইনিংস খেলে বাংলাদেশের ইনিংসটা দাঁড় করিয়ে দিলেন শক্ত একটা ভিত্তির উপর। সাথে নিন্দুকদের চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে অবিসংবাদিত সেরা এই ব্যাটসম্যান টি-টোয়েন্টিতেও কম যান না!
কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে গেলেন মুশফিকুর রহিম। সম্প্রতি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের আগে মুশফিককে ঘিরে কানাঘুষা চলছিলো বেশ, অনেকে এক পা বাড়িয়ে বাতিলের খাতায় ফেলে দিতেও কার্পণ্যবোধ করেনি। সে আলোচনা যে নিতান্তই অবিমৃষ্যকারী আলোচনা ছিল, সেটাও ঠিক নয়। ৬১ ম্যাচে মাত্র ১৬.৮৪ গড়ে ৭৪১ রান করা একজন ব্যাটসম্যান যার স্ট্রাইকরেটও গড়পড়তা, মুশফিকের মতো একজন ব্যাটসম্যানের নামের পাশে এমন পরিসংখ্যান ছিল একইসঙ্গে বিস্ময়কর এবং হৃদয়বিদারক। অথচ সেখান থেকে কি অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন তার! স্রেফ মনের জোর, প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যে আদর্শ টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠা সম্ভব, সেটার জন্য মুশফিকের থেকে ভালো উদাহরণ আর কী-ই বা হতে পারে!
ম্যাচটা শুরুর আগে দুটো দলই একটা নির্দিষ্ট রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল, যদিও সেটা ঠিক গৌরবময় কোনো রেকর্ড নয়। যে দলই ম্যাচটিতে পরাজিত হোক না কেন, সেটাই হবে টি২০ ক্রিকেটে যেকোনো দলের জন্য প্রথম পঞ্চাশতম পরাজয়। তবে এটা ছাড়াও আরো একটা জায়গাতে এক বিন্দুতে মিলেছে দুটি দল, চন্ডিকা হাতুরুসিংহে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে হাতুরুসিংহের সম্পর্কটা বরাবরই কেমন খটকা বাঁধায়, ঠিক মিলিয়ে ওঠা যায় না। এই যেমন হাতুরুসিংহের বিদায়ে বেশ কিছুদিন ধরেই যেখানে বিসিবিতে কান পাতলে হাতুরুসিংহের বিদায়ে বিরহের গান শোনা যেত, গত কিছুদিনে যেন সে বিরহ কেটে গিয়ে অভিমানের সুর। প্রাক্তন কোচের বিদায়ের পর থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটা ঝড় চলমান ছিল।
ঠিক অপর প্রান্তেই দাঁড়িয়ে যেন হাতুরুসিংহের শ্রীলংকা। মাত্রই কিছুদিন আগে অগোছালো একটি দলের মধ্যে হঠাৎই যেন প্রাণ ফিরেছে। দারুণ প্রাণোদ্যমে পরিপূর্ণ কিছু পারফরম্যান্স দেখেছে বিশ্ব। সাহসী ক্রিকেটে মুগ্ধ করেছে গোটা ক্রিকেট বিশ্বকেই। হাতুরুসিংহে যেন রূপকথার সেই জাদুর কাঠি, যার ছোঁয়ায় নিদ্রাকুমারীর তন্দ্রাভঙ্গ হয়। বাংলাদেশের জাতীয় দলের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর প্রথম অ্যাসাইনমেন্টটা পেয়েছিলেন সেই বাংলাদেশেই, যাতে ভাগ্যদেবীর ক্রুর অথচ ঈষদচ্ছ হাসির রেশ ছিলো বৈকি। সে কারণেই কিনা প্রথম ম্যাচটাতে হেরে বসলেন বাংলাদেশের কাছে। কিন্তু এরপর থেকে ভোল পাল্টে গেলো গোটা শ্রীলঙ্কার, হঠাৎই যেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিল তারা। উড়তে থাকা লঙ্কানদেরকে মাটিতে নামিয়ে আনার জন্য তাই প্রয়োজন ছিল দারুণ একটা পারফরম্যান্সের।
সেই দারুণ পারফরম্যান্সটা বিশ্ব দেখলো গতকাল রাতে। মাত্র কিছুদিন আগেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে অকল্যান্ডে ২৪৪ রানের ‘অসম্ভব’ এক টার্গেটকে তাড়া করে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া, এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০১৫ সালে উইন্ডিজের কিংবা ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের অবিশ্বাস্য দুটো রান তাড়ার রেকর্ড রয়েছে। তাই এ ম্যাচে জয়টাও নিখাদ ক্রিকেটীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে জয়টা অসম্ভব ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গী যে হয়েছিল আরো কিছু পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিও!
গত কয়েক মাস ধরে ম্যাচের পর ম্যাচ পরাজয়ের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ। ২৩ জানুয়ারির পর খেলা দুটো ওডিআই, দুটো টেস্ট এবং তিনটি টি২০ খেললেও খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ, হেরেছে সবগুলোতেই। সবচেয়ে দৃষ্টিকটু ছিল দলের শরীরী ভাষা, কী যেন একটা ঠিক ছিল না দলের মধ্যে। ড্রেসিংরুমে একজন মূল কোচের অভাব অনুভূত হচ্ছিল দারুণভাবে, মোটিভেশন কিংবা নেতৃত্বের অভাবের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে দলের স্ট্র্যাটেজিটাও ঠাহর করে ওঠা যাচ্ছিল না। সাফল্যের ক্ষুধায় বুভুক্ষু বাংলাদেশকে আবারো জয়ের ধারায় ফিরতে প্রয়োজন ছিল একটি সত্যিকারের জয়। এমন একটি জয়, যা গোটা দলের তলানি জমা আত্মবিশ্বাসকে আরেকবার তুলে আনতে পারে। কিন্তু এ ম্যাচে? বাংলাদেশ এর আগে কোনোদিন ২০০ রানের চৌহদ্দি পেরোয়নি, এমনকি ২০০৭ সালে উইন্ডিজের বিপক্ষে ১৬৫ রান তাড়া করার পর আর কোনোদিন এর চেয়ে বড় কোনো টার্গেট তাড়া করে জিততেও পারেনি বাংলাদেশ। এছাড়া প্রতি ম্যাচে ডট বলের পসরা বসানো বাংলাদেশ কি সত্যিই পারবে এ অপেক্ষার ইতি টানতে?
অবশেষে সে অপেক্ষার অবসান ঘটলো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাঁচ উইকেটের এই অনবদ্য জয়ের মধ্য দিয়ে। মোহাম্মদ আশরাফুলের ২০ বলে পঞ্চাশের উপর ভর করে সে ম্যাচে জিতেছিল বাংলাদেশ, আর এ ম্যাচে সে ভূমিকাটা নিলেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের টি২০ ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটি তুলে নিলেন মাত্র ২৪ বলেই, আর সাথে তামিম-লিটনের কুইকফায়ার দুটো ক্যামিওতেই জয়কে মুঠোবন্দি করলো বাংলাদেশ। গত বছর গল স্টেডিয়ামে শততম টেস্টে অনবদ্য জয়ের পর কলম্বোতে এই ঐতিহাসিক রান তাড়া, শ্রীলঙ্কাকে ভেন্যু হিসেবে বেশ পয়মন্ত বলে মানতেই হচ্ছে!
তাতে প্রাপ্তির খাতায় কতটুকু যোগ হলো বাংলাদেশের? আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টির ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের গর্ব, মুশফিকের টি-টোয়েন্টি সত্ত্বার পূর্ণবিকাশ, লিটনের আগমনী বার্তা নাকি দীর্ঘসময় পর অবশেষে টি-টোয়েন্টিতে জয়খরা কাটানো? নাহ, গোটা ম্যাচশেষে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বোধহয় আত্মবিশ্বাস, সেই হারিয়ে ফেলা ভয়ডরহীন মানসিকতা, সেই পজিটিভ ক্রিকেট। বাংলাদেশ ক্রিকেটের কোটি সমর্থকদের তৃষ্ণার্ত চোখগুলো এতদিন যে মানসিকতাটুকু খুঁজে ফিরছিল, সেটা ফিরে পাওয়াটাই ছিল এই ম্যাচের মূল উপজীব্য। এখান থেকেই তাহলে শুরু হোক টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে নতুন যাত্রা, এতদিনের প্রচেষ্টায় হামাগুড়ি দেয়া দলটা এবার দৌড়াতে শিখুক। আশায় বুক বাঁধতে তো বাধা নেই, পারলে যে ওরাই পারে!
Featured Image Source: Wisden India