সালটা তখন ২০০৪, ফেদেরারের কেবল টেনিসে দাপটের শুরু। বয়স তার সবে ২০ পেরিয়েছে। তখন জন ম্যাকেনরো, যিনি টেনিস ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্লাসিক খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত, বললেন:
“আমি আমার জীবনে রজারের চেয়ে বেশি প্রতিভাবান খেলোয়াড় দেখিনি। আমি রড লেভারকে দেখেছি, সাম্প্রাস বা বিয়ন বর্গের বিপক্ষেও খেলেছি। কিন্তু ও পুরো আলাদা। র্যাকেট হাতে এত প্রতিভাবান কাউকে দেখিনি।”
খেলার ইতিহাসে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। মেসিকে বার্সার একাডেমিতে খেলতে দেখেই রোনালদিনহো বুঝে গিয়েছিলেন ভবিষ্যতটা। বিশ্বসেরার খেতাব হাতে ভরা মঞ্চেই তিনি বলেছিলেন যে, খোদ বার্সাতেই তিনি সেরা নন, বার্সার সেরা খেলোয়াড়টি যে একাডেমিতে খেলে! খুব কি ভুল ছিলেন ম্যাকেনরো বা রোনালদিনহো? রোনালদিনহো সঠিকই ছিলেন, সেটা প্রমাণিত; আজ দেখে নেয়া যাক ম্যাকেনরোর কথার সত্যতা – কেন রজার ফেদেরারই আধুনিক টেনিসের সর্বকালের সেরা!
খেলার স্টাইল
ফেদেরারের ২০টি গ্র্যান্ডস্লাম থেকে ১০টি বাদ দিলেও যে সত্যটা মুছে ফেলা যাবে না, তা হলো: স্মরণকালের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে ক্লাসিক টেনিস খেলোয়াড়। সর্বকালের সেরাদের দৌড়ে থাকা পিট সাম্প্রাসের মতে, ফেদেরারের ফোরহ্যান্ড হলো টেনিস ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা শট। বিখ্যাত টেনিস সাংবাদিক হেনরি ক্লে বলেছিলেন,
“যদি তার ট্রফি সংখ্যায় আপনার মন না ভরে, চোখটা কাজে লাগান।”
ফেদেরারের সিঙ্গেল-হ্যান্ডেড ব্যাকহ্যান্ড শটকে হেনরি বলেছিলেন ‘পোয়েট্রি অব টেনিস’।
টেনিস ইতিহাসে যার স্থান অনবদ্য সেই রড লেভার নিজে বলেছিলেন,
“কখনো কখনো তার শট দেখলে মনে হয়, কীভাবে সম্ভব!”
অথচ ফেদেরারের মূল শক্তি কখনোই তার গায়ের জোর নয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে খুব জোরে সার্ভও করতেন না। সার্ভ জোরে করলে খেলাটা ক্ষণস্থায়ী হয়, মানে র্যালিটা বড় হয় না। অথচ প্রথম দিকের অনেক শিরোপাই তার র্যালির উপর ভর করে জেতা। তার সবচেয়ে বড় দিকটা হলো, নিশ্চিত ব্রেক পয়েন্ট দিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনার মুখেও ঠিকই রিস্কি ক্লাসিক শট নেন। ফুটবলে ম্যারাডোনার চেয়ে জার্ড মুলারের গোল বেশি হলেও, খেলার সৌন্দর্যে ম্যারাডোনা অনবদ্য, অতুলনীয়। অনেক প্লে-মেকারের গোল রোনালদিনহোর চেয়ে বেশি হলেও, খেলার স্টাইলে রোনালদিনহোর সমকক্ষ ইতিহাসেই বিরল। টেনিস ইতিহাসেও তেমনি কেউ না কেউ হয়ত ফেদেরারের রেকর্ড ভাঙবেন, তবে শুধু ট্রফি সংখ্যা দ্বারা তাকে বিচার করার মানে হলো, তার খেলাকে বা টেনিসের আসল সৌন্দর্যকে অবমাননা করা।
স্বকীয়তা
টেনিসের আরেক গ্রেট জিমি কন্নর বিবিসিকে বলেছিলেন,
“আধুনিক যুগে আপনি হয় ক্লে কোর্ট বা ঘাসকোর্ট বা হার্ডকোর্টের বিশেষজ্ঞ খেলোয়াড় অথবা আপনি রজার ফেদেরার!”
টেনিসের আভিজাত্যের স্থান হলো ‘টেনিসের বিশ্বকাপ’ উইম্বলডন, আর সেই উইম্বলডনের ঘাসকোর্টে সর্বাধিক আটটি টাইটেল নিয়ে ফেদেরারই সেখানে অবিসংবাদিত সেরা। ইউএস ওপেনে পাঁচটি শিরোপা নিয়ে যৌথভাবে শীর্ষে, অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ছয়টি নিয়ে জোকোভিচের পরেই তার স্থান। ক্লে কোর্টে তার অর্জন মাত্র একটি শিরোপা। কিন্তু কী আর করা! ক্লে কোর্টে যার সাথে তার প্রতিযোগিতা, সেই নাদালকে ক্লে কোর্টের সম্রাট, অধিশ্বর, রাজাধিরাজ যা-ই বলা হোক না কেন, তা কম হয়ে যাবে। দশটি ফ্রেঞ্চ ওপেন শিরোপা তার, ভাবা যায়? ক্লে কোর্ট মূলত পরিশ্রমী খেলোয়াড়দের জায়গা , যুগে যুগে অনেক গ্রেটই ক্লে কোর্টে ভুগেছেন। তবে রজার বা জোকোভিচের মতো দুর্ভাগা কয়জন? তাদের সামনে অনতিক্রম্য এক ক্লে কোর্ট খেলোয়াড় নাদাল। অথচ আন্দ্রে আগাসি, পিট সাম্প্রাস, ইভান লেন্ডল, জন ম্যাকেনরো বা হালের অ্যান্ডি মারে, জোকোভিচদের চেয়েও বেশি ফাইনাল খেলেছেন ফেদেরার। তবে একবার বাদে আর পারেননি, চারবারই হেরেছেন নাদালের কাছে। হয়তো নাদালের মতো এমন ক্লে কোর্টের অধিশ্বর ছাড়া অন্য কোনো ক্লে কোর্টে দক্ষ খেলোয়াড়ের সাথে চারটি ফাইনাল হলে, ভাগ্যের শিকে ছিঁড়তই একবার না একবার। একই সাথে দুই সার্ফেসে অদম্য হয়ে ওঠা আর নিজের দুর্বল সার্ফেসেও অনেকের জন্য ঈর্ষাজাগানিয়া পারফর্মেন্সই বোঝায় তার স্বকীয়তার ধরনটা।
ফিটনেস এবং দুঃসময় থেকে কামব্যাক
অনেকের ক্যারিয়ারে একটা ‘কিন্তু… যদি’ এমন ফ্যাক্টর থাকে, বিশেষত ইনজুরির কারণে যাদের ক্যারিয়ার আশানুরূপ এগোয়নি। কিন্তু টানা ফিট থেকে ক্যারিয়ারের ঊষালগ্নেও দাপট দেখানোটা অবশ্যই বিশেষ যোগ্যতার মধ্যে পড়ে। টেনিসে ওপেন জমানা শুরু হওয়ার পর ইনজুরির কারণে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ ছেড়ে যাওয়া খেলোয়াড় ফেদেরার। অবশ্য খুব বড় কোনো ইনজুরিতে পড়েননি তিনি। মূলত তার খেলা ‘স্কিল বেইজড’ হওয়ায় মাসল ইনজুরিতে তেমন কখনোই ভোগেননি। অথচ ক্লে কোর্ট বাদে বাকি সার্ফেসগুলোয় তার মুভমেন্ট হচ্ছে উঠতিদের আদর্শ। বড় ইনজুরিতে পড়েন ক্যারিয়ারের শেষভাগে এসে, ২০১৬-তে। চার বছর শিরোপাহীন ফেদেরারকে ভাবা হচ্ছিল, ফুরিয়ে গেছেন; আর কোনো গ্র্যান্ডস্লাম জিততে পারবেন না। সেই ইনজুরি থেকে ফিরে এসে টানা দু’টি গ্র্যান্ড স্লাম জিতে নেন তিনি, ঠিক যখন ৩৬তম জন্মদিন তার দুয়ারে। একজন অ্যাথলেটকে বিচার করার জন্য একটা বড় মানদণ্ড হলো, দুঃসময়কে তিনি কেমনভাবে সামলেছেন সেটি। টেনিস এলবোর কারণে শচীন তার সবচেয়ে প্রিয় শট ছেড়ে দিয়েও ক্যারিয়ারকে টেনে নিয়েছেন কমপক্ষে ১০ বছর, দু’বার গোড়ালির মারাত্মক ইনজুরি থেকে ফিরে রোনালদো ব্রাজিলকে জিতিয়েছিলেন বিশ্বকাপ। ফেদেরারের ফিরে আসা কি এর চেয়ে নেহায়েত কম কিছু?
ফেদেরার বনাম নাদাল বনাম সাম্প্রাস বনাম রড লেভার
রড লেভারকে বয়স্ক টেনিস ভক্তরা, যারা স্বচক্ষে তার খেলা দেখেছেন, বলে থাকেন টেনিস রোমান্সের প্রতীক। ওপেন যুগের আগে এবং ওপেন যুগেও তিনি গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন। অ্যামেচার হিসেবে গ্র্যান্ডস্লাম জেতার রেকর্ডও তার। তবে ১৯৬০ সালের সাথে বর্তমানের খেলা কিংবা খেলোয়াড়দের তুলনা করা অর্বাচীনতা। লেভার নিজেই বলেছেন, ওপেন যুগে (মানে বর্তমান যুগে যে নিয়মে হচ্ছে) জেতা তার সময়ের চেয়ে কঠিন। একবার একটা অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালের পর তিনি বলেছিলেন, এখন একটি গ্র্যান্ড স্লাম তখনকার দুটোর কাছাকাছি। ১১টি গ্র্যান্ড স্লাম বলে ভ্রু কোঁচকানোর দরকার নেই, খেলার স্টাইল তার ট্রফি সংখ্যা দিয়ে বোঝানো যাবে না। তাই এটা বলাই নিরাপদ যে, ওপেন জামানার আগের যুগের সেরা তিনিই।
১৪টি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী পিট সাম্প্রাস ছিলেন ফেদেরারের আদর্শ। হওয়ারই কথা, তাদের খেলার ধরনও কাছাকাছি। দু’জনই সিঙ্গেল হ্যান্ড ব্যাকহ্যান্ড প্লেয়ার (মানে এক হাতে ব্যাকহ্যান্ড শট নেন)। টেনিস ইতিহাসের সবচেয়ে ক্লাসিক খেলোয়াড়রা সিঙ্গেল হ্যান্ড ব্যাকহ্যান্ডই হয়ে থাকেন সাধারণত। সাম্প্রাসের সাফল্য পেতে কষ্ট করতে হয়েছে ঢের। আগাসি, ম্যাকেনরো, লেন্ডলদের মতো তারকাদের সাথে লড়ে জিততে হয়েছে।
একটা অপবাদ ফেদেরারেরও আছে যে, তার প্রথম দিকের অনেক ট্রফিই নাকি দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পাওয়া! বাস্তবতাটা হলো, সেই ২০০৩-২০০৭ সালের ফেদেরার এমনই অদম্য ছিলেন যে, অনেক খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারে গ্র্যান্ড স্লাম সংখ্যা বাড়েইনি কেবল তার কারণে। ২০০৭-২০১২ সালের দিকে মেসি ক্যানাভারো, কারভালহো, রামোস, ভিদিচদের খাবি খাইয়েছেন; তাই বলে তারা কেউ দুর্বল কোয়ালিটির হয়ে যাননি। আসলে কিছু খেলোয়াড় নিজেদের সময়ে এতই অদম্য থাকেন যে, বাকিদের কিছু করার থাকে না।
তবে খেলার সৌন্দর্যে সাম্প্রাস পিছিয়ে থাকবেন ঢের। তিনি ছিলেন ‘সার্ভ অ্যান্ড ভলি’ টাইপ প্লেয়ার, মানে প্রচণ্ড জোরে সার্ভ করবেন আর অ্যাটাকিং খেলে র্যালি ছোট করে জিতবেন। তার দ্রুতগতির সার্ভের জন্য তাকে ‘পিস্তল পিট’ ডাকা হতো। ফেদেরারের আগে তার ফোরহ্যান্ডকেই সেরা ধরা হতো। তবে ফেদেরারের যেমন কল্পনাশক্তির মিশেলে নতুন নতুন শট থাকে, এটি সাম্প্রাসের খেলায় খুব একটা ছিল না। তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় দাগ ফ্রেঞ্চ ওপেন না জেতা। ক্লে কোর্টে তিনিও দুর্বল ছিলেন, একটি ফাইনালও খেলতে পারেননি, সেমি অবধি গিয়েছেন একবারই। তাই সাফল্য বা সৌন্দর্য সব মিলিয়ে তিনি ফেদেরারের বেশ পিছনেই থাকবেন।
ফেদেরারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিলেন তারই সবচেয়ে কাছের বন্ধু রাফায়েল নাদাল। ৪০ বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে নাদাল ২৪-১৬ ব্যবধানে এগিয়ে। এটি নিয়ে ফেদেরারকে যতটা ব্যঙ্গ করা হয়, তা নিয়ে একটু আলোচনার দরকার আছে। ঘাস ও হার্ডকোর্টে ফেদেরার ১৬-৮ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও ক্লে-তে পিছিয়ে ২-১৪তে। এটা অনস্বীকার্য যে, ফেদেরার-নাদাল দ্বৈরথে নাদালেরই বেশি জয় এবং সার্বিক বিবেচনায় তিনিই বেশি সফল, তবে ক্লে কোর্টে নাদালের যা দক্ষতা, তা আমলে নিলে অতটা একপেশে কখনোই হয়নি তাদের মুখোমুখি লড়াই।
সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বললাম নাদালকে। তবে জোকোভিচ কোথায় থাকবেন সে তালিকায়? উত্তর খুঁজে নিতে পারেন এই টুইট থেকেই:
On the debates about whether Roger Federer was the best male tennis player ever, this is the answer:
Djokovic will have had the better career; Nadal got the better of Federer head-to-head; but Federer is the best ever. Here’s why…
— Paul Waldman (@paulwaldman1) September 15, 2022
নাদালের ২২টি গ্র্যান্ডস্লামের ১৪টিই হলো ফ্রেঞ্চ ওপেনে, যেটি এক অসামান্য অর্জন তার। তবে কঠিন হলেও সত্যি, ফ্রেঞ্চ ওপেন বা ক্লে কোর্ট ঠিক ঘাসের মতো অভিজাত কোর্ট বা হার্ডের মতো দক্ষতার চূড়ান্ত পরীক্ষা ক্ষেত্র নয়। ক্লে-তে যত গতিতেই সার্ভ করা হোক না কেন, তা স্লো হয়ে বাউন্স খেয়ে উঠে যায়। ফলে ভালো সার্ভ, ব্যাকহ্যান্ড বা শার্প ফোরহ্যান্ডের চেয়েও এটি শারীরিক শক্তি আর ধৈর্যের প্রচণ্ড পরীক্ষা নেয়। আর তাই নাদাল ক্লে কোর্টের সর্বকালের অবিসংবাদিত সেরা, তবে হয়তো সব মিলিয়ে সেরা নন। উইম্বলডন, অস্ট্রেলিয়ান ওপেন আর ইউএস ওপেন মিলিয়ে তার সাকুল্যে গ্র্যান্ড স্লাম ৮টি। নেহায়েত কম নয় বৈকি; তবে অনুপাতটাই বুঝিয়ে দেয়, ক্লে কোর্টের তুলনায় অন্যগুলোতে সমান কার্যকর হয়তো হয়ে উঠতে পারেননি অনেকাংশেই।
যদি খেলার ব্যাপারে আসি, নাদাল প্রতিভার সাথে প্রচণ্ড পরিশ্রমের এক মিশেল। তবে আর যা-ই হোক, ফেদেরারের মতো এত ক্লাসিক খেলোয়াড় তিনি নন। নাদাল লড়াকু, ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন প্রতিযোগিতার সময়েই তার সব অর্জন, তবে খেলার স্টাইল? এখানেই ফেদেরার অনবদ্য। তাই বলে নাদালকে ছোট করা? অসম্ভব, তাকে ছোট করা মানে পুরো টেনিস খেলাকেই অবজ্ঞা করা। বিশ্বের ইতিহাসে এখন অবধি সবচেয়ে বেশি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী পুরুষ খেলোয়াড়কে খাটো করা আমাদের জ্ঞানস্বল্পতারই পরিচায়ক হবে। আপনি টেনিসের এমন একটি সময়ে আছেন, যখন ‘বিগ থ্রি’- ফেদেরার, নাদাল আর জোকোভিচের সংগ্রহে মোট ৬৩টি গ্র্যান্ড স্লাম; আর এই তিনজনই সর্বকালের সেরাদের তালিকার সামনের দিকেই থাকবেন।
ব্যক্তিগত জীবন
তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন ভক্তদের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। ব্যক্তিগত জীবনে পরিষ্কার ভাবমূর্তির অধিকারী ফেদেরার, আপাদমস্তক ‘ফ্যামিলি ম্যান’। জোকোভিচের কাছে একটি গ্র্যান্ডস্লাম ফাইনাল হারার পর যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, টানা ফাইনাল হেরে তিনি ক্লান্ত কি না? তার উত্তর ছিল,
“খারাপ তো লাগেই, তবে যখন দেখি গ্যালারিতে আমার বাচ্চারা আমার খেলা দেখছে, সব ভুলে যাই। ট্রফি না জিতলেও আমি আরো বড় কিছু পাচ্ছি ইদানিং।”
স্ত্রী মিরকার অবদানের কথা এখনো অকপটে যেকোনো ফাইনাল জেতার পর বলেন। স্ক্যান্ডালের কোনো কালিমা এখনো তাকে ছোঁয়নি। ফেদেরারকে কি আর সাধে পুরো টেনিস খেলারই ‘অনানুষ্ঠানিক দূত’ বলা হয়?
কখনো কখনো কোনো অ্যাথলেটকে ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের ঊর্ধ্বে রেখে নির্মোহভাবে দেখতে হয়। ফেদেরার এমনই একজন। বহু জরিপ হয়েছে কে সর্বকালের সেরা টেনিস খেলোয়াড় তা নিয়ে। বিপুল ব্যবধানে ফেদেরারই জয়ী হয়েছেন এসব জরিপে। এই ৪১ বছর বয়সে এসেও আলোচনা চলে, ফেদেরার সব খেলা মিলিয়েই সর্বকালের সেরা অ্যাথলেট কি না তা নিয়ে। সেটি অবশ্য অনেক দূরের কথা, টেনিসের মধ্যেই থাকা যাক। গ্র্যান্ড স্লামের সংখ্যায় নাদাল বা জোকোভিচ ইতোমধ্যেই টপকে গেছেন ফেদেরারকে, হয়ে গেছেন সর্বকালের ‘সফলতম’ খেলোয়াড়। কিন্তু সব মিলিয়ে ‘সর্বকালের সেরা’? সেটা আপাতত একজনই: রজার ফেদেরার।