একসাথে কোনো বন্ধুর বাসায় সবাই জড়ো হয়েছেন। সবাই মিলে একসাথে কোনো গেমিং টুর্নামেন্ট করতে গেলে সবার আগে যে নামটা মাথায় আসবে, তা হলো ‘ফিফা’। ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা নয়, বরং ইএ স্পোর্টসের ডেভেলপ করা ফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও গেমের কথাই বলা হচ্ছে। সেই ১৯৯৩ সালে যে পথচলা শুরু হয়েছে, ২৬ বছর পর এই ২০১৯ সালেও সগর্বে এগিয়ে চলেছে গেমটি।
ফিফা হচ্ছে মূলত আমেরিকান গেমিং কোম্পানি ‘ইলেকট্রনিক আর্টস’-এর বিভাগ ‘ইএ স্পোর্টস’-এর ডেভেলপ করা একটি ফুটবল গেম সিরিজ। আশির দশকের শেষ দিকে ‘সেন্সিবল সকার’, ‘কিক-অফ’, ‘ম্যাচ ডে’সহ বেশ কিছু ফুটবলভিত্তিক ভিডিও গেম দেখা গেলেও ফিফার মতো জনপ্রিয়তা আর কোনো গেমই অর্জন করতে পারেনি। ফিফার কাছাকাছি আসতে পেরেছে শুধু কোনামির ‘প্রো ইভল্যুশন সকার’ গেমটি। ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকা থেকে ফিফা গেমটিকে নিয়ে বলা হয়েছে,
‘… the slickest, most polished and by far the most popular football game around.’
গিনেসবুকে বেস্ট সেলিং স্পোর্টস ভিডিও গেম ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে নাম রয়েছে ফিফার। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ফিফা সিরিজের সর্বমোট ২৬০ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। কেন এত জনপ্রিয় ফিফা?
পৃথিবীতে এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল, আর সেটা নিয়েই ভিডিও গেমে আপনি একের মধ্যে অনেক কিছু করার সুযোগ পাচ্ছেন। বাস্তবসম্মত গেমপ্লে’র পাশাপাশি দুর্দান্ত ধারাভাষ্য আপনাকে আসল ফুটবল ম্যাচ দেখার অনুভূতিই দেবে। অফলাইনে আন্তর্জাতিক ফুটবলে আপনার প্রিয় দেশ নিয়ে খেলার পাশাপাশি ক্লাব ফুটবলে আপনার প্রিয় ক্লাব নিয়ে খেলতে পারবেন। এছাড়াও ক্যারিয়ার মোডে আপনি নিজের প্রিয় ক্লাবের ম্যানেজার হয়ে পুরো ক্লাবের দেখাশোনা করার পাশাপাশি কোনো বাস্তব প্লেয়ার বা তৈরি করা খেলোয়াড় নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। এছাড়াও ‘ফিফা ১৭’ থেকে শুরু হওয়া স্টোরি মোড ‘দ্য জার্নি’-এর পাশাপাশি ‘ফিফা ১৯’ থেকে আপনি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফুটবলও খেলতে পারবেন ফিফাতে।
এ তো গেল অফলাইনের কথা। অনলাইনে আপনি পরিচিত-অপরিচিত দেশি-বিদেশি বন্ধু আর খেলোয়াড়দের পাচ্ছেন প্রতিপক্ষ হিসেবে। আর সবাই মিলে একসাথে কোনো গেমিং টুর্নামেন্টের কথা তো আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ফিফা সমান জনপ্রিয়। স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির আয়োজন করা গেমিং কম্পিটিশনে ফিফা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
শুরুর ইতিহাস
১৯৯৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস উপলক্ষে রিলিজ করা হয় ফিফা সিরিজের প্রথম গেম ‘ফিফা ইন্টারন্যাশনাল সকার’ । ট্র্যাডিশনাল ১৬ বিটের এই গেমে শুধু আন্তর্জাতিক দলগুলো নিয়ে খেলা গেলেও খেলোয়াড়দের আসল নাম ব্যবহার করা হয়নি। যুক্তরাজ্যের গেমিং চার্টে টানা ৬ মাস ধরে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছিল গেমটি।
ফিফা ৯৫
আগের সফলতা ধরে রাখতে রিলিজ দেয়া হয় ‘ফিফা সকার ৯৫’। অল্প কিছু আপগ্রেড করা হলেও এই গেমটিতে মোটামুটি আগের ভার্সনের গেমপ্লেই অনুসরণ করা হয়। তবে এই সংস্করণেই প্রথমবারের মতো ক্লাব ফুটবল নিয়ে খেলার সুযোগ ছিল। ব্রাজিল, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড এবং ইউনাইটেড স্টেটসের ৮টি ঘরোয়া লিগকে এই গেমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ফিফা ৯৬
‘ফিফা সকার ৯৬’তে প্রথমবারের মতো ফিফা সিরিজে থ্রিডি গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও প্রথমবারের মতো বাস্তবের খেলোয়াড়দের আসল নাম, র্যাংকিং, ট্রান্সফার, টিম কাস্টোমাইজ করার অপশন রাখা হয়।
ফিফা ৯৭
এই সংস্করণে নাম থেকে সকার বাদ দিয়ে পুরোপুরিভাবে ‘ফিফা ৯৭’ নাম গ্রহণ করা হয়। এই গেমের পরিবর্তনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘সিক্স-এ-সাইড ইনডোর’ ফিচার যুক্ত করা।
ফিফা ৯৮
ফিফা ৯৮ অনেক জায়গাতেই ‘ওয়ার্ল্ড কাপ ৯৮’ নামে পরিচিত। ফিফার কাছ থেকে স্বত্ত্বগ্রহণের পর ‘ইএ স্পোর্টস’-এর এটাই ছিল প্রথম ডেভেলপ করা ওয়ার্ল্ড কাপ গেম।
এছাড়াও পরবর্তীতে ‘ফিফা: রোড টু ওয়ার্ল্ড কাপ ৯৮’ নামের নতুন গেমও আনা হয়। এবারে উন্নত গ্রাফিক্স ইঞ্জিনের পাশাপাশি অফিশিয়াল সাউন্ডট্র্যাক আনা হয়। তাছাড়া ‘অফসাইড রুল’ প্রথমবারের মতো যথাযথ নিয়মে কার্যকর করা হয়।
ফিফা ৯৯
বেলজিয়াম এবং পর্তুগালের ঘরোয়া লিগ যুক্ত করার পাশাপাশি ‘ইউরোপিয়ান ড্রিম লিগ’ও তৈরি করা হয়। এই লিগে তুলনামূলক কম জনপ্রিয় লিগগুলোর জনপ্রিয় ইউরোপিয়ান দলগুলো একে অপরের বিপক্ষে খেলত। এদেরকে ‘রেস্ট অফ ইউরোপ’ হিসেবেও দেখা যায়।
ফিফা ২০০০
প্রথমবারের মতো গেমে ‘মেজর লিগ সকার’ নিয়ে আসা হয়। ৪০টার উপর ক্লাসিক টিম বানানো হয়, যাতে করে গেমাররা অবসরপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের নিয়েও খেলতে পারেন। এছাড়াও ৪০+ আন্তর্জাতিক দল, সম্পূর্ণ ক্লাব সিজন যুক্ত করার পাশাপাশি সেটপিস, শারীরিক সংঘর্ষ, রাফ ট্যাকলের মতো ব্যাপারগুলো আরো উন্নত করা হয়।
ফিফা ২০০১
এই সংস্করণে গেমপ্লে’তে শ্যুটিংয়ের পাওয়ার বার যুক্ত করা হয়। তাছাড়া প্রথমবারের মতো অনলাইনে খেলার সুযোগও ছিল সেবার, সেই সময়ের হিসাবে যেটাকে যুগান্তকারী ব্যাপার হিসেবে ধরা হয়। ক্লাবগুলোর লোগোর লাইসেন্স পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয় এই গেম থেকে।
ফিফা ফুটবল ২০০২
এবার পাসিংয়ের জন্যও পাওয়ার বার যুক্ত করা হয়। এছাড়াও ঘরোয়া কিছু লিগের অদলবদল হয়। এই সংস্করণে ‘ফিফা ১৭’-এর আগে শেষবারের মতো জাপানের জাতীয় দলকে দেখা যায় চুক্তিসংক্রান্ত কারণে। এছাড়াও ইসরায়েলের ঘরোয়া লিগও সর্বশেষবারের মতো দেখা যায় এই গেমে।
ফিফা ফুটবল ২০০৩
আগেরগুলো থেকে সম্পূর্ণ নতুন গেমপ্লে দেখা যায় এবার। নতুন ফিচারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল ‘ফ্রি-স্টাইল কন্ট্রোল’।
ফিফা ফুটবল ২০০৪
গেমপ্লে’তে খুব বেশি পরিবর্তন করা না হলেও এই সংস্করণের সবচেয়ে বড় সংযোজন ছিল ঘরোয়া লিগগুলোর ২য় বিভাগের ক্লাবগুলো সংযুক্ত করা। এর মাধ্যমে ক্লাবগুলোর অবনমন এবং উত্তরণ আরো ভালভাবে পরিচালনা করা যায়। এছাড়াও ‘অফ দ্য বল’ নামের নতুন ফিচার নিয়ে আসা হয়।
ফিফা ফুটবল ২০০৫
নতুন খেলোয়াড় তৈরির পাশাপাশি আগের চেয়ে উন্নত ক্যারিয়ার মোড দেখা যায় এবার। এছাড়াও এই গেমের ‘ফার্স্ট টাচ প্লে’ আগের সংস্করণগুলো থেকে এটিকে আলাদা করেছে।
ফিফা ০৬
আগের সংস্করণগুলোর চেয়ে এবার সম্পূর্ণ নতুন গেমপ্লে নিয়ে আসা হয়। পাশাপাশি ক্যারিয়ার মোডে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘টিম কেমিস্ট্রি’। এছাড়াও প্রথমবারের মতো ফিফা গেমে ক্লাসিক একাদশ এবং বিশ্ব একাদশ টিম আনা হয়।
ফিফা ০৭
গেমে ওয়েম্বলি এবং এমিরেটস স্টেডিয়াম সংযোজন করা হয়। পাশাপাশি, গেমারদের জন্য সম্পূর্ণ নতুন টিম তৈরি করার সুযোগও থাকে প্রথমবারের মতো।
ফিফা ০৮
ক্যারিয়ার মোডে প্রথমবারের মতো ‘Be A Pro’ মোড আনা হয়, যেটায় গেমার পুরো মাঠে শুধুমাত্র একজনকে কন্ট্রোল করে খেলবেন। আইরিশ এবং অস্ট্রেলিয়ানসহ নতুন কিছু ঘরোয়া লিগ এবং ক্লাব সংযোজন করা হয় এবার।
ফিফা ০৯
‘Be A Pro’-এর অনলাইনে ‘টেন ভার্সেস টেন’ ফিচার সংযুক্ত করা হয়। ফিফা সিরিজে প্রথমবারের মতো গেমারদের নিজে থেকেই প্লেয়াররা কীভাবে গোল উদযাপন করবে, তা ঠিক করার সুযোগ রাখা হয়।
ফিফা ১০
‘ম্যানেজার মোড’ আরো বর্ধিত করা হয় এবং ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার’ ফিচার অ্যাড করা হয়, যেটা দিয়ে গেমাররা টিমের লাইনআপ এবং রোটেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাল্টাতে পারতেন।
ফিফা ১১
ক্যারিয়ার মোডে ‘প্লেয়ার ম্যানেজার’ নামের নতুন ফিচার যুক্ত করা হয়। পাসিং সিস্টেম উন্নত করার পাশাপাশি প্রথমবারের মতো গোলকিপার হিসেবে খেলার সুযোগ রাখা হয় গেমারদের জন্য।
ফিফা ১২
‘প্লেয়ার ইমপ্যাক্ট ইঞ্জিন’ দিয়ে উন্নত গেমপ্লে’র পাশাপাশি নির্ভুল ড্রিবলিং এবং ট্যাক্টিক্যাল ডিফেন্ডিং সংযুক্ত করা হয় এই সংস্করণে।
ফিফা ১৩
গেমে প্লেয়ারদের অ্যাটাকিং ইন্টেলিজেন্সের পাশাপাশি নতুন এবং কার্যকরী কিছু ড্রিবলিং আনা হয় ‘ওয়ান ভার্সেস ওয়ান’ পরিস্থিতির জন্য। এছাড়াও উন্নত ফার্স্ট টাচ কন্ট্রোল দেখা যায়।
ফিফা ১৪
হিউম্যান ইন্টেলিজেন্সের পাশাপাশি ‘ট্রু প্লেয়ার মোশন’ ফিচার যুক্ত করা হয়। পাশাপাশি লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, গ্যারেথ বেলদের ট্রেডমার্ক গোল উদযাপন নিয়ে আসা হয়।
ফিফা ১৫
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সাথে ‘ইএ স্পোর্টস’-এর চুক্তির সময়ে এই গেম রিলিজ হয়। চুক্তি অনুযায়ী, গেমে ইপিএলের সবগুলো ক্লাবের স্টেডিয়াম ব্যবহারের পাশাপাশি অফিশিয়াল স্কোরকার্ড এবং টেলিভিশন গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়।
ফিফা ১৬
ফিফা সিরিজে প্রথমবারের মতো নারী খেলোয়াড় এবং জাতীয় দল অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ফিফা ১৭
ফিফার গেমগুলোর মধ্যে প্রথমবারের মতো ‘ফ্রস্টবাইট ইঞ্জিন’ ব্যবহার করা হয় এই সংস্করণে। ‘দ্য জার্নি’ নামের নতুন স্টোরি মোড নিয়ে আসা হয়।
ফিফা ১৮
প্রথমবারের মতো ‘আল্টিমেট টিম আইকন’ দেখা যায় গেমে। নতুন চারটি স্কিল অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে জনপ্রিয় ‘ক্রুইফ টার্ন’। এছাড়াও কুইক সাবের নিয়ম চালু করা হয়।
ফিফা ১৯
এই সংস্করণে ফিফা সিরিজে প্রথমবারের মতো নিয়ে আসা হয় উয়েফার অন্তর্ভুক্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইউরোপা লিগ এবং সুপার কাপ। স্টোরি মোড ‘দ্য জার্নি’-এর তৃতীয় এবং শেষ কিস্তি থাকে এই গেমে। এছাড়াও প্রথমবারের মতো ফিফার কোনো গেমে চাইনিজ সুপার লিগ দেখা যায়।
১৯৯৮ ওয়ার্ল্ড কাপ থেকে শুরু করে এর পরের সব ওয়ার্ল্ড কাপের জন্য আলাদা করে ওয়ার্ল্ড কাপ গেম ভার্সন আনা হয়েছে, শুধুমাত্র ২০১৮ ওয়ার্ল্ড কাপ বাদে। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ বার ফিফার কভারে দেখা গেছে ওয়েইন রুনিকে। এছাড়াও লিওনেল মেসিকে ৪ বার এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ২ বার গেমগুলোর কভারে দেখা গেছে। ‘ফাস্টেস্ট সেলিং স্পোর্টস গেইম এভার’-এর রেকর্ড আপাতত ‘ফিফা ১২’-এর দখলে।
এতক্ষণ হলো অতীতের কথা। চোখ ফেলা যাক ভবিষ্যতে।
২৭শে সেপ্টেম্বর রিলিজ পেয়েছে ফিফার সাম্প্রতিকতম এডিশন ‘ফিফা ২০’। গেমটির রেগুলার, চ্যাম্পিয়ন্স এবং আল্টিমেট এডিশনের কভারে থাকছেন যথাক্রমে ইডেন হ্যাজার্ড, ভার্জিল ভ্যান ডাইক এবং জিনেদিন জিদান। ‘স্ট্রিট ফুটবল’-এর আদলে এবার আনা হচ্ছে ‘ভোল্টা ফুটবল’। ইতালির ক্লাব জুভেন্টাসের নাম পরিবর্তিত হয়ে এবারের সংস্করণে দেখা যাবে ‘Piemonte Calcio’ নামে। এবারের সংস্করণে সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত খেলোয়াড় লিওনেল মেসি এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, তাদের রেটিং যথাক্রমে ৯৪ এবং ৯৩। এছাড়াও সর্বোচ্চ রেটিংপ্রাপ্ত মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইন (৯১), ডিফেন্ডার ভার্জিল ভ্যান ডাইক (৯০) এবং গোলকিপার ইয়ান ওবলাক (৯১)। এখন ফিফাপ্রেমীদের শুধু ‘ফিফা ২০’-এর অফিশিয়াল রিলিজের অপেক্ষার পালা।