অলিম্পিক- পৃথিবীর সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগীতার আসর। প্রতিটি দেশেরই ক্রীড়াবিদদের স্বপ্ন থাকে এ আসরে অংশগ্রহণের। আর অলিম্পিকে পদকজয় যেন সেই স্বপ্নের মধুরেণ সমাপয়েৎ! তবে মর্যাদাপূর্ণ এ আসরের শত বছরের ইতিহাসে অমর্যাদার ঘটনাও নেহাৎ কম নয়, যার মধ্যে অন্যতম ছিল ১৯০৪ অলিম্পিকের ম্যারাথন, যা এখন পর্যন্ত অলিম্পিকের সবচেয়ে বাজে ও উদ্ভট ম্যারাথন হিসেবে স্বীকৃত।
এমন একটি অলিম্পিকের কথা কি কল্পনা করা যায়, যেখানে প্রতিযোগীই নেই? ১৯০৪ অলিম্পিক ছিল তেমনই একটি আসর। বিভিন্ন কারণে অলিম্পিকের ইতিহাসে এ আসর উল্লেখযোগ্য, যার মধ্যে অন্যতম হলো সোনার পদকের প্রচলন। এর আগপর্যন্ত শুধু প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারীকেই যথাক্রমে রূপা ও ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হত। এছাড়াও এটি ছিল ইউরোপের বাইরে আয়োজিত প্রথম আধুনিক অলিম্পিক যার আয়োজক ছিল যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতিযোগিতার জন্য নির্ধারিত স্থান ছিল মিসৌরী অঙ্গরাজ্যের সেন্ট লুইস শহর। আর এটাই ছিল অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা কম হওয়ার প্রধান কারণ। আজকের দিনে এটি বিস্ময়ের উদ্রেক করলেও, মনে রাখতে হবে, ঘটনাটা কিন্তু ১১৬ বছর পূর্বের। যোগাযোগ ব্যবস্থা তখন মোটেই এত উন্নত ছিল না। কাজেই অলিম্পিকে সেবার আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রসহ অংশ নিয়েছিল মাত্র ১২টি দেশ, যার মধ্যে জার্মানি এবং কানাডা পাঠিয়েছিল যথাক্রমে ২২ জন এবং ৫৬ জন ক্রীড়াবিদ। মোট ৬৫১ জনের মধ্যে ৫২৬ জনই ছিল আমেরিকান।
একই সময়ে সেন্ট লুইসে চলছিল ওয়ার্ল্ড ফেয়ার, যার উপলক্ষ্য ছিল লুইজিয়ানা ক্রয়ের শতবর্ষ উদযাপন। অলিম্পিক মূল আয়োজন না হয়ে আসলে এ উৎসবের অংশ হিসেবে আয়োজিত হয়েছিল, যার ফলে সব ক্ষেত্রেই ছিল অপেশাদারিত্বের ছাপ। যদিও কিছু প্রতিযোগীতা ছিল সত্যিই বিস্ময় জাগানিয়া এবং উদ্ভাসিত হওয়ার মতো, যেমন কাঠের পা নিয়ে জর্জ এইসারের ছয় ছয়টি পদক জেতা, যার মধ্যে তিনটি স্বর্ণপদক। তবে বেশিরভাগ ইভেন্টই ছিল বিতর্কিত। উৎসবের সাথে যুক্ত লোকজনেরাই আয়োজন করেছিল বিভিন্ন খেলার, গ্রীজ মাখানো পোলে চড়া, গ্রাম্য নাচ, কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি ইত্যাদি। এসব আয়োজনের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল হাসি-তামাশা, যা দর্শকদের বিনোদন দেবে। অলিম্পিকের মূল সুরটা এতে একদমই অনুপস্থিত ছিল।
ম্যারাথন অলিম্পিকের অন্যতম প্রধান একটি ইভেন্ট। গ্রীকদের ঐতিহ্যের প্রতীক এ প্রতিযোগিতা প্রাচীন ও আধুনিক অলিম্পিকের সেতুবন্ধনও বটে। তবে ১৯০৪ অলিম্পিকের ম্যারাথন যেন ছিল অনেকটা পার্শ্বচরিত্র। দর্শকেরা খেলার মেজাজে না থেকে ছিল উৎসবের আমেজে। যার ফলে রচিত হলো ম্যারাথনের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের, আরেকটু হলে ইভেন্টটাই হারিয়ে যেতে বসেছিল!
মোট ৩২ জন অংশ নিয়েছিল প্রতিযোগীতায় যার মধ্যে ১৯ জন আমেরিকান। তাদের মধ্যে খুব অল্প প্রতিযোগীরই অভিজ্ঞতা ছিল ম্যারাথনে অংশ নেওয়ার। অভিজ্ঞ ম্যারাথনারদের মাঝে ছিলেন স্যাম মেলর, এ. এল. নিউটন, জন লর্ডন, মাইকেল স্প্রিং এবং থমাস হিক্স।
একজন আমেরিকান, ফ্রেড লর্জ, যিনি সারারাত ট্রেনিং করতেন কারণ দিনের বেলা তাকে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে হত! ‘অ্যামেচার অ্যাথলেটিক ইউনিয়ন’ তাকে নির্বাচন করেছিল একটি ‘বিশেষ পাঁচমাইল রেস’ স্পন্সর করে, যেখানে অলিম্পিক ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ মাইল। দক্ষিণ আফ্রিকার সুয়ানা আদিবাসীর মধ্য থেকে দুজন প্রতিযোগী এসেছিল খালি পায়ে! তবে দশজন গ্রীক প্রতিযোগীও অংশ নিয়েছিল, যারা জীবনে কোনো দৌড় প্রতিযোগিতায় আগে অংশগ্রহণই করেনি!
আরেকজনের কথা না বললেই নয়, কিউবার প্রতিযোগী ফেলিক্স কারবাহাল, যিনি পিয়নের চাকরি করতেন। অনেক অর্থ চাঁদা তুলে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন তার দৌড়ের ক্ষমতা দেখাতে। তবে নিউ অর্লিন্সে পৌঁছবার পর লুডোর জুয়ায় তিনি তার সব অর্থ খোয়ান, পরে কিছুটা হেঁটে, কিছুটা হিচ হাইক করে সেন্ট লুইসে পৌঁছান। পাঁচ ফুট উচ্চতার কারবাহাল যখন স্টার্টিং লাইনে দাঁড়ালেন, তখন তাকে আর যা-ই হোক ম্যারাথনার লাগছিল না মোটেই। পরনে ছিল সাদা ফুল হাতা শার্ট, লম্বা কালো প্যান্ট, টুপি এবং একজোড়া সাধারণ রাস্তায় হাঁটার জুতো! এহেন দৌড়ের পোষাক দেখে একজন সাবেক অলিম্পিয়ান অসহিষ্ণু হয়ে তার প্যান্টটা হাঁটু অব্দি কেটে ছোট করে দেন।
প্রতিযোগীদেরই যখন এ অবস্থা, আয়োজকেরা কি ভিন্ন হবেন! তাদের অবস্থাও ছিল তথৈবচ। সবাই জানে যে দীর্ঘ দৌড়ের প্রতিযোগীদের জন্য অত্যন্ত জরুরি হলো তাদের শরীরকে পানিশূন্য হতে না দেওয়া। আজকাল অ্যাথলেটদের শারীরিক কার্যক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলো প্রচুর অর্থ ব্যয় করে এবং বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করে। তবে ১৯০৪ সালে তা ছিল নিতান্তই স্বপ্ন। আর সেটাকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করলেন খেলার প্রধান আয়োজক জেমস সুলিভান। তিনি ‘উদ্দেশ্যপূর্ণ পানিশূন্যতা’ নেমে এক আজব তত্ত্ব প্রদান করলেন। পানিশূন্যতার ফলে প্রতিযোগীদের শারীরিক সক্ষমতা ঠিক কতটুকু হ্রাস পায় তা পরীক্ষার জন্য বেছে নিলেন এই প্রতিযোগীতাকে।
তখন পর্যন্ত পুরো ট্র্যাকের দুটো জায়গায় প্রতিযোগীদের জন্য পানির ব্যবস্থা থাকত, একটি ছয় মাইল পর এবং অপরটি বারো মাইল পর। সুলিভান দুটোর বদলে কেবল একটি পানির ব্যবস্থা রাখলেন মোট ২৪.৮৫ মাইল দীর্ঘ রেসট্র্যাকে, যখন তাপমাত্রা ছিল ৯২ ডিগ্রী ফারেনহাইট। ফলাফল? ১৪ জন প্রতিযোগী দৌড় শেষই করতে পারেনি। এখানেই শেষ নয়, রেসট্র্যাকটিও ছিল দেখার মতো। যত রকম বাধা বিপত্তি থাকা সম্ভব মোটামুটি সবই ছিল। সম্পূর্ণ ধূলোময় একটি রাস্তা, যার মধ্যে ছিল সাতটি চড়াই-উৎরাই। প্রতিটিই ছিল অন্তত ১০০-৩০০ ফুট উঁচু! কিছু চড়াই তো ছিল বেশ নৃশংস! পুরোটা রাস্তা জুড়ে ছিল অজস্র নুড়িপাথর, যার মধ্যে দৌড়ানো ছিল বেশ বিপদজনক। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো ছিল যানবাহনের উপদ্রব। প্রতিযোগীদের দৌড়াতে হয়েছিল ডেলিভারি ট্রাক, ট্রাম, ট্রলিকার, এমনকি পথচারী ও কুকুরের সংঘর্ষ বাঁচিয়ে! প্রতিযোগীদের পাশাপাশি গাড়ি নিয়ে ডাক্তার এবং কোচরাও ছুটছিলেন, যার ধূলো ধোঁয়া সবই তাদের খেতে হচ্ছিল!
আগস্টের ৩০ তারিখ, বিকেল ৩টার দিকে পিস্তল গর্জে উঠল, শুরু হলো প্রতিযোগিতা। ফ্রেড লর্জ সবার সামনে থেকে দৌড় শুরু করলেও প্রথম মাইলের পর থমাস হিক্স এগিয়ে যান। ক্যালিফোর্নিয়ার উইলিয়াম গার্সিয়া আরেকটু হলে অলিম্পিকে মৃতদের তালিকায় প্রথম নাম লেখাতে যাচ্ছিলেন! দৌড়াতে দৌড়াতে রাস্তার পাশেই তিনি পড়ে গেলেন এবং রক্তক্ষরণ হতে লাগল। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলো। এত বেশি ধুলো খেয়েছিলেন যে তার পাকস্থলী এবং ইসোফেগাসের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল।
জন লর্ডন একটু পর পরেই বমি করতে লাগলেন এবং প্রতিযোগিতায় ইস্তফা দিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার লেন টাউ প্রায় মাইলখানেক দৌড়ালেন কুকুরের তাড়া খেয়ে! তবে অনবদ্য ছিলেন ফেলিক্স কারবাহাল, কারণ তার কান্ডকারখানা দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে তিনি দৌড় প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। একে তো রেসের অনুপযুক্ত পোষাক পরে ছিলেন, তার ওপর ‘সময় কাটাতে’ দর্শকদের সঙ্গে ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে গল্প করতে লাগলেন। কিছুদূর দৌড়ানোর পর একটি গাড়ি থামিয়ে দেখলেন আরোহীরা ফল খেতে ব্যস্ত। তাদের কাছে ফল খেতে চেয়ে যখন প্রত্যাখ্যাত হলেন, দুটো ফল ছিনিয়ে নিয়ে খেতে খেতে দিলেন দৌড়। এভাবে কিছু দূর দৌড়াবার পর একখানা ফলের বাগানে ঢুকে খেলেন বেশ ক’টা পচতে শুরু হওয়া আপেল! এরপর দৌড়াতে দৌড়াতে পেটের শিরায় টান পড়ায় সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়ে একটু ঘুমিয়েও নিলেন!
স্যাম মেলরও ভয়াবহ শিরার টানের সম্মুখীন হলেন। ধীরে ধীরে তার গতি কমতে কমতে তিনি হাঁটা শুরু করলেন এবং একসময় হাঁটাও থামিয়ে দিলেন। নয় মাইল পর শিরায় টান আক্রমণ করল লর্জকেও। তিনি অবশ্য বেশ বুদ্ধিমানের (!) কাজ করলেন। হাত দেখিয়ে একটি গাড়ি থামিয়ে লিফট নিলেন, এবং লোকজন ও অন্যান্য প্রতিযোগীদের দিকে হাত নাড়াতে নাড়াতে এগোতে লাগলেন!
থমাস হিক্স আমেরিকানদের প্রিয় একজন প্রতিযোগী ছিলেন। রেস শেষ হতে যখন আর মাইল দশেক বাকি, তখন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তার সেবায় দুজন ক্রু এগিয়ে গেলে তিনি তাদের কাছে পানি চাইলেন, কিন্তু সেটা তো নিয়মবিরুদ্ধ। তারা পানির বদলে ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে তার মুখ মুছে দিলেন। সাত মাইল বাকি থাকতে হিক্স আর পারলেন না। তখন তাকে শক্তিবর্ধক হিসেবে স্ট্রিকনিন আর ডিমের সাদা অংশের এক মিশ্রণ দেওয়া হলো। অলিম্পিকে শক্তিবর্ধক ড্রাগ ব্যবহারের এটিই ছিল প্রথম নমুনা। স্ট্রিকনিন তখন সামান্য পরিমাণে ব্যবহার করলে তা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করত। সেসময় শক্তিবর্ধক ড্রাগ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা না থাকায় হিক্সের দল ফ্লাস্ক ভর্তি ফ্রেঞ্চ ব্র্যান্ডি মজুত রেখেছিল!
ইতোমধ্যে লর্জ সুস্থ হয়ে উঠেছেন, প্রায় ১১ মাইল গাড়ি করে ‘দৌড়ানোর’ পর। এবার গাড়ি থেকে নেমে দু’পায়ে দৌড়াতে লাগলেন এবং ফিনিশিং লাইন পার করেন। দর্শকেরা গর্জে ওঠে একজন আমেরিকানের জয়ে। প্রেসিডেন্ট থিওডর রুজভেল্টের কন্যা এলিস রুজভেল্ট এগিয়ে এলেন, সোনার মেডেল লর্জের গলায় পরাতে যাবেন, এমন সময় প্রকাশ হয়ে পড়ে লর্জের ভাঁওতাবাজি। দেঁতো হাসি হেসে লর্জের সাফাই ছিল যে, তিনি নাকি এ সম্মান এমনিতেও গ্রহণ করতেন না। রসিকতা করতেই নাকি এমন করেছেন!
এদিকে ড্রাগও হিক্সকে সাহায্য করতে পারছিল না। কিন্তু যখন তিনি শুনলেন যে লর্জকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তখন অতিকষ্টে উঠে দাঁড়ালেন। ট্রেনাররা স্ট্রিকনিনের আরও একটি ডোজ এবং ব্র্যান্ডি দিল। ভালো করে পানি দিয়ে শরীর মুছে দিল। এতে হিক্স কিছুটা সুস্থ হলেন এবং আবারও দৌড় শুরু করলেন। অফিশিয়াল রেকর্ডধারী চার্লস লুকাসের বর্ণনামতে, “হিক্স দৌড়াচ্ছিল যন্ত্রের মতো, তার চোখ ছিল ঘোলাটে, মৃত, মুখ এবং শরীরের চামড়া ছাইবর্ণ ধারণ করেছিল, হাত দুটোতে মনে হচ্ছিল ভারী কিছু বাঁধা, আর হাঁটু দুটো মনে হচ্ছিল এখনই খুলে আসবে।“
এক মাইল বাকি থাকতে হিক্সের হ্যালুসিনেশন হতে লাগল, ফিনিশিং লাইন তার কাছে মনে হলো যেন বিশ মাইল দীর্ঘ! হিক্স আবার শুয়ে পড়লেন। তাকে দুটো ডিম এবং ব্র্যান্ডি খাওয়ানো হলো। শেষ দুটো চড়াই এর প্রথমটা পার হলেন হেঁটে এবং শেষটা হামাগুড়ি দিয়ে। তা-ও ফিনিশিং লাইন পার করতে পারলেন না। শেষমেষ দুজন ট্রেনার তাকে কাঁধে করে ফিনিশিং লাইন পার করালো এবং তাকে আসল স্বর্ণপদক বিজয়ী ঘোষণা করা হলো!
চারজন ডাক্তারের এক ঘন্টা সময় লেগেছিল হিক্সকে শুধু ট্র্যাক থেকে বাইরে যেতে সক্ষম করে তুলতে। এই এক প্রতিযোগিতা হিক্সের প্রায় আট পাউন্ড ওজন কমিয়ে দিয়েছিল! হিক্সের ভাষায়, “আমি আমার জীবনে কখনও এত কঠিন সময় পার করিনি, উঁচু–নিচু রাস্তাটা যেন আমাকে টুকরো টুকরো করে ফেলছিল।“
একদিকে গাড়ি করে এগারো মাইল যাওয়া ফ্রেড লর্জ, আরেকদিকে কাঁধে করে ফিনিশিং লাইন পার করা থমাস হিক্স। দুজনেই অন্যের সাহায্যে রেস শেষ করলেও একজনকে বিজয়ী, আরেকজনকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত কতটুকু যৌক্তিক, তা নিয়ে তর্ক থাকতে পারে। তবে মজার ব্যাপার হলো, পরের বছর বোস্টন ম্যারাথনে কিন্তু দুজনেই অংশ নিয়েছিলেন, এবং লর্জ জিতেছিলেন শুধুমাত্র তার পায়ের সাহায্যেই!