দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আগে থেকেই জানেন, তারা পেসারদের বিপক্ষে নতুন চকচকে ডিউস, এসজি অথবা কোকাবুরা বলে ব্যাট করবেন। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা জানেন না তাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে। দ্রুত দুই উইকেটের পতন ঘটলে তাদের নতুন বলেই খেলতে হবে। আবার টপ অর্ডাররা যদি ভালো সূচনা এনে দেন, ততক্ষণে বলের উজ্জ্বলতা কমে যাবে। সেক্ষেত্রে তাদের পুরাতন বলে স্পিনারদের ঘূর্ণি বল এবং পেসারদের রিভার্স সুইংও সামলাতে হবে। মিডল অর্ডারদের সবসময়ই ব্যাট-প্যাড পরে প্রস্তুত থাকতে হয়। যেকোনো পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়ে দলের হাল ধরতে হয়। টপ অর্ডাররা ব্যর্থ হলে মিডল অর্ডারদের দায়িত্ব থাকে দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দেওয়া। টপ অর্ডাররা সফল হলে মোমেন্টাম ধরে রাখা মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের কাজ। তারা ব্যর্থ হলে ভালো শুরুর পরেও বড় সংগ্রহ দাঁড় করানো কষ্টকর।
টেস্ট ক্রিকেটে গত কয়েক দশক ধরে সেরা ব্যাটিং পজিশন চার। চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশন দিয়েই টপ অর্ডার শেষ হয় এবং মিডল অর্ডার শুরু হয়। ভারতীয় ক্রিকেট দলে শচীন টেন্ডুলকারের গুরুত্ব যতটা, ব্যাটিং লাইনআপে চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনের গুরুত্বও ততটুকু। টেস্ট ক্রিকেটে টেন্ডুলকারের ব্যাটিং পজিশনও ছিলো চার নাম্বার।
১
১৮৭৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্মের পর ১৯২০ সাল পর্যন্ত চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশন খুব বেশি কার্যকর ছিলো না। প্রথম পাঁচ ব্যাটিং পজিশনের মধ্যে সবচেয়ে কম ব্যাটিং গড় ছিলো চার নাম্বার পজিশনে ব্যাট করা ব্যাটসম্যানদের। এই পজিশনে ব্যাট করা ব্যাটসম্যানদের মোট ব্যাটিং গড় ২৯.৪৪। ৬৪৮ ইনিংসের মধ্যে মাত্র ২৮টি শতক। সেই সময়ে দলের মূল তারকা ব্যাটসম্যানরা টপ অর্ডারেই ব্যাট করতো।
১৯২০ সালের পর চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে ব্যাটসম্যানরা সাফল্য পেতে শুরু করেছিলো। দলের স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা এই পজিশনে ব্যাট করা শুরু করেন। ১৯২০ সাল থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগপর্যন্ত ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটসম্যান ওয়ালি হ্যামন্ড ও প্যাটসি হেনড্রেন চারে ব্যাট করতেন। দক্ষিণ হার্ভি টেইলর, অস্ট্রেলিয়ার অ্যালান কিপ্পাক্স ও স্ট্যান ম্যাককেইব চারে ব্যাট করে সফল হয়েছিলেন। ওয়ালি হ্যামন্ড চারে ৬৬ ইনিংস ব্যাট করে ৫০.৭৯ ব্যাটিং গড়ে ২,৯৯৭ রান করেছিলেন। তিনি এবং হার্ভি টেইলর চার নাম্বার পজিশনে সফলতার সাথে ব্যাট করেছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপর টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সাফল্যমণ্ডিত ব্যাটিং পজিশন ছিলো চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশন। ইংল্যান্ডের ডেনিস কম্পটন ও পিটার মে; দক্ষিণ আফ্রিকার ডুডলে নর্স ও গ্রায়েম পোলক, ওয়েস্ট ইন্ডিজের এভারটন উইকস ও গ্যারি সোবার্স, ভারতের বিজয় হাজারে এবং অস্ট্রেলিয়ার নেইল হার্ভে, নর্ম ও’নেইল ও লিন্ডসে হ্যাসেট চারে ব্যাট করে রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছিলেন। সেখান থেকে শুরু। টেস্ট ক্রিকেটে সব দলই চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনের উপর গুরুত্ব দেয় এবং সফলতা পাওয়াও শুরু করেছিলো।
বিভিন্ন টেস্ট খেলুড়ে দেশের চারে ব্যাট করা ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিকতা
১. অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চারে একজনের পর একজন সফলতা পেয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত চারে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন লিন্ডসে হ্যাসেট। তিনি ২৫ ইনিংসে ৫১.৩৯ ব্যাটিং গড়ে ১,১৮২ রান করেছিলেন। এরপর নর্ম ও’নেইল এবং নেইল হার্ভে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত চারের দুশ্চিন্তা দূর করেছিলেন। ও’নেইল ৪১ ইনিংসে ৫৭.৪২ গড়ে ২,০১০ রান ও নেইল হার্ভে সমান সংখ্যক ৪১ ইনিংসে ৪৭.৭১ গড়ে ১,৮৬১ রান করেছিলেন। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত গ্রেগ চ্যাপেল দাপটের সাথে চারে ব্যাট করেছিলেন। তিনি ৮৬ ইনিংসে ৫৯.১২ গড়ে ৪,৩১৬ রান করেছেন। গ্রেগ চ্যাপেলের পর চারের দায়িত্ব নেন অ্যালান বোর্ডার। তিনি ১৯৮১ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ৮৮ ইনিংসে ৫০.৪৪ ব্যাটিং গড়ে ৩,৭৮৩ রান করেছেন। সেই সময়ে ডিন জোন্সও চার নাম্বার পজিশনে দুর্দান্ত ব্যাট করেছিলেন। তিনি মাত্র ১৮ ইনিংস ব্যাট করে ৭১.৬১ ব্যাটিং গড়ে ৯৩১ রান করেছিলেন।
১৯৯২ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চার নাম্বার পজিশনে ব্যাট করেছিলেন মার্ক ওয়াহ। এই স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান চারে ১৭০ ইনিংস ব্যাট করে ৪২.৪৩ ব্যাটিং গড়ে ৬,৬৬৩ রান করেছিলেন। তার অবসরের পর ড্যামিয়েন মার্টিন এবং মাইক চারে সফলতার সাথে ব্যাট করেছিলেন।
২. ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান লারা তার ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় চারে ব্যাট করেছেন। তিনি ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারে ১৪৮ ইনিংস ব্যাট করে ৫১.২৫ ব্যাটিং গড়ে ৭,৫৩৫ রান করেছেন।
গত শতকে ক্রিকেট বিশ্বকে শাসন করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কখনোই চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশন নিয়ে ভাবতে হয়নি। কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান এভারটন উইকস ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত চারে ৫৭ ইনিংসে ৬৩.৬২ ব্যাটিং গড়ে ৩,৩৭২ রান করেছেন। তার অবসরের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। চারে ব্যাট করার দায়িত্ব বুঝে নেন ব্যাসিল বাটচার, তিনি ৫২ ইনিংসে ৪৭.৩০ ব্যাটিং গড়ে ২,৩১৮ রান করেছেন। অ্যালভিন কালিচরণ, ক্লাইভ লয়েড, গ্যারি সোবার্সের মতো ব্যাটসম্যানরাও চার নাম্বার পজিশনে সফলতার সাথে ব্যাট করেছিলেন।
৩. ইংল্যান্ড
ওয়ালি হ্যামন্ড ও প্যাটসি হেনড্রেন বিশ্বযুদ্ধের আগে এবং ডেনিস কম্পটন বিশ্বযুদ্ধের পরে ইংল্যান্ডের চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশন সামলান। ডেনিস কম্পটন ১৯৩৭ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত চারে ৮৬ ইনিংস ব্যাট করে ৫৩.৫৯ ব্যাটিং গড়ে ৪,২৩৪ রান করেছেন। এরপর পিটার মে, কেন বেরিংটন, গ্রায়েম থোপরা চারে ব্যাট করে সফল হয়েছিলেন।
ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেনও চারে ব্যাট করতেন। তিনি ১৩৯ ইনিংসে ৪৮.৪৩ ব্যাটিং গড়ে ৬,৪৯০ রান করেছেন চারে ব্যাট করে।
৪. ভারত
টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শচীন টেন্ডুলকারের ব্যাটিং পজিশন ছিলো চার। তিনি চারে ২৭৫ ইনিংস ব্যাট করে ৫৪.৪০ ব্যাটিং গড়ে ১৩,৪৯২ রান করেছেন। ৫১টি টেস্ট শতকের মধ্যে ৪৪টিই হাঁকিয়েছেন চারে ব্যাট করে।
শচীন টেন্ডুলকারের পথচলা শুরু হওয়ার আগেও চার নাম্বারে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা সফল ছিলেন। গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ, বিজয় হাজারে, দিলীপ ভেংশংকাররাও চারে ব্যাট করে স্পিন, পেস এবং উজ্জ্বল-অনুজ্জ্বল দু’রকম বলই সামাল দিয়েছিলেন।
৫. দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকা চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশন নিয়ে বর্তমানে কিছুটা দোটানায় থাকলেও ১৯২০ সালের পর এই পজিশনে ধারাবাহিকভাবে ব্যাটসম্যানরা সফল হয়েছিলেন। ১৯২১ সাল থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত হার্ভে টেইলর চারে ২৩ ইনিংসে ৪৭.৪০ ব্যাটিং গড়ে ১,০৪৩ রান করেছেন। ডুডলি নর্স ১৯৩৫ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত চারে ৫৩ ইনিংসে ৫০.০০ ব্যাটিং গড়ে ২,৪০০ রান করেছেন। বর্ণবাদের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে নির্বাসনে পাঠানোর আগে তাদের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান গ্রায়েম পোলকও চার নাম্বার পজিশনে ব্যাট করতেন। তিনি মাত্র ৩৭ ইনিংসে ৬২.৫৭ ব্যাটিং গড়ে ২,০৬৫ রান করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা নির্বাসনে না গেলে গ্রায়েম পোলকের পরিসংখ্যান বেশ স্বাস্থ্যবান হতে পারতো। প্রায় ২২ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকা পুনরায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে আসলে ড্যারেল কুলিনান চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে দুর্দান্তভাবে ব্যাটিং করেন। তিনি ৯৭ ইনিংসে ৪৬.১৩ ব্যাটিং গড়ে ৪,০৬০ রান করেন।
তার অবসরের পর চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে ব্যাট করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন জ্যাক ক্যালিস। দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান চারে ১৭০ ইনিংসে ৬১.৪৩ ব্যাটিং গড়ে ৯,০৩৩ রান করেছেন। এই পজিশনে তিনি ৩৫টি শতক এবং ৩৬টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন। শ্রীলংকার মাহেলা জয়াবর্ধনে ও অরবিন্দ ডি সিলভা, পাকিস্তানের জাভেদ মিয়াঁদাদ, ইনজামাম-উল হক, মোহাম্মদ ইউনুস ও মোহাম্মদ ইউসুফ, নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান মার্টিন ক্রো এবং রস টেইলরও চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে ব্যাট করেছেন।
২
বর্তমানেও টেস্ট ক্রিকেটে চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে দলের সেরা ব্যাটসম্যানই ব্যাট করেন। ভারতের বিরাট কোহলি, অস্ট্রেলিয়ার স্টিভেন স্মিথ, ইংল্যান্ডের জো রুট এবং নিউজিল্যান্ডের রস টেইলর চার নাম্বার পজিশনে ব্যাট করে নিয়মিত রানের দেখা পাচ্ছেন। জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপের দুই সেরা ব্যাটসম্যান ক্রেইগ আরভিন এবং ব্রেন্ডন টেইলরও চারে ব্যাট করেন। পরিসংখ্যান এবং তারকা ব্যাটসম্যানদের নাম দেখে অনেকের মনে হতে পারে, চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে যারা নিয়মিত ব্যাট করেছেন তারা সফল হয়েছেন। আদৌ তেমন হয়নি। মাইকেল ক্লার্ক, ইয়ান বেল, শিবনারায়ণ চন্দরপল, স্টিফেন ফ্লেমিং টেস্ট ক্রিকেটে অসাধারণ ব্যাটিং প্রদর্শন করে গেলেও চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে নিজেদের ছায়া হয়ে ছিলেন। কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান স্যার ডন ব্রাডম্যান চার নাম্বারে ১০ ইনিংসে ৫৩.৮৮ ব্যাটিং গড়ে রান করেছেন, যা তার ক্যারিয়ারের মোট গড়ের প্রায় অর্ধেক।
চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে বাংলাদেশের লজ্জাজনক রেকর্ড
চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে প্রায় সব দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু এই তালিকায় বাংলাদেশী কোনো ব্যাটসম্যানের নাম নেই। তবে চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে সবচেয়ে বাজে ব্যাটসম্যানদের তালিকা করতে গেলে সবার উপরে থাকবেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ডন ব্রাডম্যানের প্রায় ১০০ ছুঁই ছুঁই ব্যাটিং গড়, মুরালিধরনের ৮০০ টেস্ট উইকেট কিংবা লারার ৪০০* রানের ইনিংসের রেকর্ডগুলো যেমন সহজে ভাঙা যাবে না, তেমনি মোহাম্মদ আশরাফুলের চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে ৪৪ ইনিংস ব্যাট করে মাত্র ১৫.৭০ ব্যাটিং গড়ে ৬৯১ রান করার রেকর্ডটিও কেউ সহজে ভাঙতে পারবে না। বর্তমানে কোনো দলই গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যাটিং পজিশনে কাউকে এত সুযোগ দেবে না। মোহাম্মদ আশরাফুল ২০০২-১১ সাল পর্যন্ত চার নাম্বারে ৪৪ ইনিংস ব্যাট করেছেন। ৪৪ ইনিংসে মাত্র তিনটি অর্ধশত রানের ইনিংস খেলেছেন। তার মধ্যে শেষ ৩২ ইনিংসে মাত্র একটি চল্লিশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন। ২০০২-১১ সাল পর্যন্ত অন্যান্য টেস্ট খেলুড়ে দেশের চার নাম্বারে নামা ব্যাটসম্যানরা ৪৫.৫৫ গড়ে রান করেছেন।
টেস্ট ক্রিকেটে চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে ৪০ এর বেশি ইনিংস ব্যাট করেছেন ৫১ জন ব্যাটসম্যান। তার মধ্যে সবচেয়ে কম ব্যাটিং গড় মোহাম্মদ আশরাফুলের। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভ নর্স। তিনি খেলেছিলেন ১৯০৬-২৪ সাল পর্যন্ত। সে সময় চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনের পরিসংখ্যান খুব একটা ভালো ছিলো না। তিনি ৫১ ইনিংসে ২৭.৪৬ ব্যাটিং গড়ে রান করেছেন। এক থেকে সাত নাম্বার ব্যাটিং পজিশনের যেকোনো একটি পজিশনে কমপক্ষে ২৫ ইনিংস ব্যাট করেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বাজে ব্যাটিং গড় মোহাম্মদ আশরাফুলের! ক্রিকেট বিশ্বের অন্যান্য দলগুলো যেখানে চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে নিজেদের সেরা ব্যাটসম্যানদের পাঠাচ্ছেন, সেখানে বাংলাদেশ এখনো নির্দিষ্ট কাউকেই খুঁজে পেলো না।
আশরাফুলের পর নাঈম ইসলাম ২০১২ সালে চার নাম্বারে চার ইনিংস ব্যাট করে একটি শতক সহ ৩৮.০০ ব্যাটিং গড়ে ১৫২ রান করার পরেও আর সুযোগ পাননি। ২০১৩ সালে মমিনুল হকের অভিষেক ঘটলে তিনি চারে ব্যাট করেন। এখন পর্যন্ত চার নাম্বারে তিনি বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান। মাত্র ১৮ ইনিংসে ৬০.৫৩ ব্যাটিং গড়ে ৯০৮ রান করেছিলেন। কিন্তু তাকেও হঠাৎ করে তিনে ব্যাট করতে পাঠানো হয়। তার জায়গায় চারে ব্যাট করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। রিয়াদও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। প্রতিটি সিরিজেই ভিন্ন ভিন্ন ব্যাটসম্যানকে চার নাম্বারে ব্যাট করার জন্য পাঠানো হচ্ছে। চলতি বছরেই সাতজন ব্যাটসম্যান চার নাম্বার ব্যাটিং পজিশনে ব্যাট করেছেন। কিন্তু কেউই নিজেকে চার নাম্বারে থিতু করতে পারেননি।
ফিচার ইমেজ- amazingtruelifestories.com