![](https://assets.roar.media/assets/ffPSvXRUi7qHxFAt_dlsr.jpg?w=1200)
ব্যক্তিগত ডিএসএলআর ক্যামেরার স্বপ্ন আমরা অনেকেই দেখি। অনেকেই হয়তো তার দামি স্মার্টফোনটি দিয়ে বেশ ভালো ফটোগ্রাফি করতে পারেন, কিন্তু পেশাদার বা ব্যক্তিগত অথবা পারিবারিক প্রয়োজনে ছবি তোলার ক্ষেত্রে ডিএসএলআর ক্যামেরার মতো বিশেষ সুবিধা এবং ফিচার মোবাইল ফোনে কখনোই সম্ভব নয়।
বাজারে এখন হাজারো ক্যামেরার ছড়াছড়ি। বিভিন্ন বাজেটে নানা ফিচারের অসংখ্য ডিএসএলআর ক্যামেরা এখন কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। অনেকগুলো বিকল্প থাকাতে ক্যামেরা কিনতে গিয়ে আজকাল অনেকেই বেশ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।
আজকের লেখাতে বিভিন্ন বাজেটের সেরা কিছু ডিএসএলআর ক্যামেরা এবং এগুলোর অ্যামাজন ডিল নিয়ে আলোচনা থাকছে। উল্লেখ্য, এই ক্যামেরাগুলোর বাইরেও বাজারে বেশ কিছু ভালো ক্যামেরা রয়েছে। উপযোগিতা, দাম, ফিচার এবং অন্যান্য বেশকিছু দিক বিবেচনা সাপেক্ষে এই লেখাটি সাজানো হয়েছে।
নিকন ডি৩৫০০
কম বাজেটে কেউ যদি ডিএসএলআর ক্যামেরা কিনতে চান, কিংবা ফটোগ্রাফিতে হাতেখড়ির জন্য কেউ এন্ট্রি লেভেলের একটা ক্যামেরা খুঁজে থাকেন, তাহলে নিকন ডি৩৫০০ তার জন্য একটি আদর্শ পছন্দ হতে পারে। কম বাজেট ক্যাটাগরিতে অন্যতম সেরা এই ক্যামেরাটি এখন অ্যামাজনে মাত্র ২৭০ ডলারে (বডি) কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে ক্যামেরাটিতে ৫ এফপিএস শ্যুটিং স্পিড, ১০৮০পি ভিডিও রেকর্ডিং ১১ পয়েন্ট অটোফোকাসের মতো ফিচারগুলো না থাকলেও এই ক্যামেরা দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের ফটোগ্রাফি বেশ ভালোভাবেই সম্ভব।
![](https://assets.roar.media/assets/xgOTJLXy8AzFeUWO_1.jpg)
এই ক্যামেরায় ২৪.২ মেগাপিক্সেল সিএমওএস সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। লাইটিং, কম্পোজিশন সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকলে ক্যামেরাটি থেকে বেশ ভালো মানের ছবি ধারণ সম্ভব। এমনকি ফটোগ্রাফিতে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কেউ এই ক্যামেরা দিয়ে প্রফেশনাল পর্যায়ের কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন।
নিকন ডি৫৬০০
উপরে উল্লিখিত ক্যামেরাটিতে বেশ কিছু ফিচার না থাকলেও নিকন ডি৫৬০০ ক্যামেরা সে ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে। ক্যামেরাটিতে প্রায় সবধরনের ফিচার রয়েছে। যেমন- ২৪.২ মেগাপিক্সেল এপিএস-সি সিএমওএস সেন্সর, ৫ এফপিএস শ্যুটিং স্পিড, এবং ১০৮০পি ভিডিও রেকর্ডিং সুবিধা। এছাড়া বেশকিছু বাড়তি সুবিধার কারণে ক্যামেরাটি অনেকের কাছেই হতে পারে সেরা পছন্দ।
![](https://assets.roar.media/assets/fPKu922Q2EiAJzfp_2.jpg)
ক্যামেরাটিতে ব্যবহৃত আর্টিকুলেট পর্দার কারণে অধিকাংশ অ্যাঙ্গেলে ক্যামেরাটি দিয়ে ছবি ধারণ করা সম্ভব। এছাড়া ওয়্যারলেস, উন্নত ব্যাটারি লাইফ এবং টাচযুক্ত পর্দার কারণে ক্যামেরাটি এগিয়ে আছে। অ্যামাজনে ক্যামেরাটি এখন ৪৭০ ডলারের আশেপাশে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
ক্যানন রেবেল এসএল৩
বাজেট ক্যাটাগরিতে ক্যাননের বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় ডিএসএলআর ক্যামেরার মধ্যে অন্যতম সেরা হচ্ছে রেবেল এসএল৩। বেশ ভালো বিল্ড কোয়ালিটির সাথে ক্যামেরাটির অন্যতম বিশেষত্ব হচ্ছে- এই ক্যামেরাটিতে এমন কিছু ফিচার রয়েছে, যা শুধুমাত্র দামি ক্যামেরাতেই পাওয়া সম্ভব।
![](https://assets.roar.media/assets/e6PmL9dOm9wpeZPg_3.jpg)
রোটেটিং পর্দার পাশাপাশি ক্যামেরাটিতে রয়েছে ফোরকে ভিডিও রেকর্ডিং সুবিধা, ওয়াইফাই ব্লুটুথ এবং ডুয়েল পিক্সেলস অটো ফোকাস। ওজনে বেশ হালকা এবং কম্প্যাক্ট এই ক্যামেরায় ২৪.১ মেগাপিক্সেল এপিএস-সি সেন্সর এবং ৯-পয়েন্ট অটোফোকাস ব্যবহার করা রয়েছে। অ্যামাজনে এখন ক্যামেরাটি সাড়ে ৫০০ ডলারের আশেপাশে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
ক্যানন ইওএস ৮০ডি
১০০০ ডলারের কাছাকাছি দামে ক্যানন ইওএস ৮০ডি বাজারের অন্যতম সেরা একটি ডিএসএলআর। ক্যামেরাটিতে ২৪.২ মেগাপিক্সেল এপিএস-সি সেন্সর, ৪৫-পয়েন্ট ডুয়েল পিক্সেলস অটোফোকাস ব্যবহার করা হয়েছে। ক্যামেরাটি দিয়ে ৭ এফপিএস শুটিং সম্ভব।
![](https://assets.roar.media/assets/RHbxT52SLAQaOdEV_4.jpg)
এই ক্যামেরাটিতে ওয়াইফাই এবং এনএফসি সুবিধা রয়েছে। ক্যামেরাটির অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে- এর বিল্ড কোয়ালিটি। ফোরকে ভিডিও ধারণ সম্ভব না হলেও অন্যান্য ফিচার বিবেচনায় ক্যামেরাটি বেশ এগিয়ে আছে। অ্যামাজনে এখন ১০০০ ডলারের আশেপাশে ৮০ডি কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
ক্যানন ইওস ৬ডি মার্ক ২
ফুল ফ্রেম ডিএসএলআর-এর জগতে ক্যাননের সব থেকে বাজেটবান্ধব ডিএসএলআর হচ্ছে ক্যানন সিক্স ডি মার্ক ২। নিখুঁত ফটোগ্রাফির জন্য এই ক্যামেরাটি একটি আদর্শ পছন্দ হতে পারে। ক্যামেরাটিতে ২৬.২ মেগাপিক্সেল এর ফুল ফ্রেম সিএমওএস সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম আলোতে নয়েজ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সুন্দর ছবি তোলার ক্ষেত্রে এই সেন্সরের বিশেষত্ব রয়েছে।
![](https://assets.roar.media/assets/OrK3ulDcRIhkFHks_5.jpg)
ক্যামেরাটির অন্যান্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে ৪৫-পয়েন্ট অটোফোকাস সিস্টেম এবং ডুয়েল পিক্সেল প্রযুক্তি। এই ক্যামেরা দিয়ে ৬.৫ এফপিএস শুটিং এবং ফোরকে ভিডিও রেকর্ডিং করা যায়। এছাড়া ভাঁজযোগ্য পর্দা এবং ওয়্যারলেস থাকার কারণে ক্যামেরাটি দিয়ে যেকোনো পরিবেশে কাজ করা যায়। অ্যামাজনে এখন এটি ১,৩০০ ডলারে আশেপাশে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।
নিকন ডি৬১০
ফুলফ্রেম ডিএসএলআরের ক্ষেত্রে ক্যানন থেকে অপেক্ষাকৃত কম দামে নিকন৬১০ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এই ক্যামেরাটির অ্যামাজন মূল্য মূলত প্রায় ১৫০০ ডলার হলেও এখন ৮৫০ ডলারের কাছাকাছি দামে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। ফুলফ্রেম ডিএসএলআরের ক্ষেত্রে অন্যতম সেরা একটি বাজেট ডিল এটি।
![](https://assets.roar.media/assets/Fd3lzLdpzMK0UWm0_6.jpg)
তবে ফিচারের ক্ষেত্রে ক্যামেরাটির কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এতে ২৪.৩ মেগাপিক্সেল সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। ক্যামেরাটি দিয়ে ৬ এফপিএস শ্যুটিং এবং 1080p ভিডিও করা গেলেও ফোরকে ভিডিও ধারণ সম্ভব নয়।
বাহ্যিক দংগল ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যামেরাটিতে ওয়ারলেস প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলেও বিল্ট-ইন ওয়্যারলেস নেই। এই দিকটি বিবেচনা করেও কেউ যদি অপেক্ষাকৃত কম বাজেটে ফুলফ্রেম ডিএসএলআর-এর স্বাদ নিতে চান, তবে তার জন্য এই ক্যামেরাটি আদর্শ হতে পারে।
নিকন ডি৮৫০
হাই-এন্ড ক্যাটাগরিতে ফটোগ্রাফির জন্য অন্যতম সেরা একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা হচ্ছে নিকন ডি৮৫০। পৃথিবী জুড়েই প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারদের অন্যতম পছন্দের একটি ক্যামেরা এটি। অ্যামাজনে এই ক্যামেরাটির বডির দামই তিন হাজার ডলারের কাছাকাছি।
![](https://assets.roar.media/assets/ofVgdVzVsuDxV3es_7.jpg)
ক্যামেরা টিতে ৪৫.৭ মেগাপিক্সেল ফুলফ্রেম সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। লোলাইট পারফরম্যান্স এবং ভালো ডায়নামিক রেঞ্জের ক্ষেত্রে এই সেন্সরের বেশ সুনাম রয়েছে। এই ক্যামেরায় ৭ এপিএস শুটিং, ১৫৩ ফোকাস পয়েন্ট এবং ঢালু পর্দা ব্যবহৃত রয়েছে। ক্যামেরাটি দিয়ে 120 এফপিএস ফ্রেমে ফোরকে ভিডিও ধারণ করা সম্ভব।
সনি আলফা এ৯৯ টু
নিকন এবং ক্যাননের পরে এবার সনি আলফা। আলফা এ৯৯ টু বাজারের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ডিএসএলআর ক্যামেরা। ৪২.২ মেগাপিক্সেল ফুলফ্রেম সেন্সর, ৩৯৯- পয়েন্ট ফোকাল প্লেন অটোফোকাস, ১২ এফপিএস শুটিং স্পিড ক্যামেরাটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এই ক্যামেরা দিয়ে ফোরকে ভিডিও ধারণ করা যায়।
![](https://assets.roar.media/assets/T8HvopIwAGnubNNS_8.jpg)
ক্যামেরাটিতে ওয়াইফাই এবং এনএফসি প্রযুক্তি থাকার কারণে ফাইল ট্রান্সফারের বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়।
ক্যানন ইওএস-ওয়ানডি এক্স স্মার্ট টু
প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ডলার দামের ওয়ানডি এক্স স্মার্ট টু ডিএসএলআর ক্যামেরাটিকে বাজারের অন্যতম সেরা ডিএসএলআর বলা যেতে পারে। ক্যাননের সেরা এই ক্যামেরায় একজন ফটোগ্রাফার ফটোগ্রাফারের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই রয়েছে।
![](https://assets.roar.media/assets/UyHZM9uTSxbTMs5C_9.jpg)
এই ক্যামেরায় ব্যবহৃত ২০.২ মেগাপিক্সেল সিএমওএস সেন্সর কম আলোতে ছবি তোলার জন্য এককথায় অতুলনীয়! এছাড়া ক্যামেরাটিতে ১৪ এফপিএস শ্যুটিং স্পিড, ফোরকে ভিডিও, ডুয়াল প্রসেসিং ইউনিট 61 অটোফোকাস পয়েন্ট, বিল্ট ইন জিপিএস এবং প্রয়োজনীয় সবকিছুই রয়েছে।
নিকন ডি৫
বাজারে নিকনের অন্যতম সেরা ডিএসএলআর ক্যামেরা হচ্ছে নিকন ডি৫। অ্যামাজনে এই ক্যামেরার দাম ৬ হাজার ডলারের কাছাকাছি।
ক্যামেরাটিতে ২০.৮ মেগাপিক্সেল সেন্সর এবং নিকনের নতুন এক্সপিড-৫ প্রযুক্তির প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ১৫৩- পয়েন্ট অটোফোকাস সিস্টেম ১২ এফপিএস শ্যুটিং স্পিডের এই ক্যামেরায় ফোরকে ভিডিও ধারণ করা সম্ভব। এই ক্যামেরায় আএএসও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা এক কথায় ‘অসীম’ বলা চলে। এই সীমা প্রাথমিকভাবে ১,০২,৪০০ হলেও ৩২,৮০,০০০ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।
![](https://assets.roar.media/assets/cVx0m2kIJKyucHUc_10.jpg)
প্রফেশনাল ভিডিও প্রোডাকশনের ক্ষেত্রে এই ক্যামেরার জুড়ি মেলা ভার, এককথায় একে বাজারের ‘অন্যতম সেরা’ বলাই যায়।