Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

নিঝুম দ্বীপে তাঁবুবাস

একজন ভ্রমণকারীর জীবনে ক্যাম্পিং তথা তাঁবুবাসের অভিজ্ঞতা ও অ্যাডভেঞ্চারের স্মৃতি থাকাটা একান্ত আবশ্যক। তাই বলে যে কোনো জায়গায় তাঁবু খাটিয়ে রাত পার করে দিলেই কি সেটা সত্যিকারের ক্যাম্পিং-এর পর্যায়ে পরে? ক্যাম্পিং এর আসল মজা সেখানেই যেখানে আধুনিক যুগের সাথে সমস্ত সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে, কোনো এক নীরব পরিবেশে, প্রকৃতির একেবারে নিকটে থাকা যায়। তাই এই পর্যন্ত বেশ কয়েকটা তাঁবু বাস এর সুযোগ আমার জীবনে আসলেও সেগুলোর কোনোটাই ঠিক যুতসই মনে হয়নি। শেষ পর্যন্ত মনে ধরার মত একটা সুযোগ এলো ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের ১২ তারিখে। গন্তব্য, হরিণের অভয়ারণ্য, নিঝুম দ্বীপ।

লঞ্চ থেকে সূর্যোদয়; ছবি: লেখক

কাজের ব্যস্ততা থেকে সত্যিকারের অবসরের জন্য আমি এতটাই অস্থির হয়ে ছিলাম যে, মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলেও, ব্যাগ গুছানোর জন্য যথেষ্ট সময় পাইনি। আর তারই ফলস্বরূপ মুঠোফোনের চার্জারটাও সাথে নিতে ভুলে যাই। এই কারণেই হয়তো এই সফরটি আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। যদিও ফোন বা অন্যান্য যন্ত্রপাতি চার্জে দেওয়ার মত যথেষ্ট ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু ‍কিছুটা আলসেমি করেই আমি আমার ফোনে আর চার্জ দেইনি। এতে করে নিজের চেনা জগত থেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন থাকাটা আমার জন্য খুবই সহজ ছিল। আমি আমার পুরো সময়টাই আমার সফরসঙ্গীদের সাথে ঘুরে বেড়িয়ে, গল্প করে কাটিয়েছি। আর এত এত সুন্দর স্মৃতি নিয়ে বাড়ি ফিরেছি যা লিখে বুঝানো সম্ভব নয়।

মনপুরা দ্বীপে যাত্রাবিরতি; ছবি: লেখক

এ পর্যন্ত দলবেঁধে বেশ কিছু স্থানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমার আছে। এটি ছিল আমার ভ্রমণ জীবনের তৃতীয় বৃহত্তম গ্রুপ, মোটামুটি ৪০ জন মানুষ ছিলাম আমরা- সঠিক সংখ্যাটা আমার জানা নেই। এরকম ট্রিপে সবার সাথেই যে সুসম্পর্ক তৈরি হবে, তেমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই; এমনকি একই দলে থাকার পরেও সবার সাথে হয়তো একবারের জন্যও কথা বলার সুযোগ হয় না। তবে এবারে আমি বিভিন্নভাবে দলবদ্ধ হয়ে সময় কাটিয়েছে- একবার আমার সাথে ছিল স্বামী-স্ত্রীর একটি জুটি, আরেকবার এই জুটির সাথে যুক্ত হয় ছোট্ট একটি বাচ্চা সহ তিন জনের একটি পরিবার। বেশিরভাগ সময়ই কেটেছিল আমার মত এককভাবে দলে যোগ দেওয়া তিন/চারজনের সাথে। একেক ধরনের মানুষের সাথে এভাবে ঘুরে বেড়ানোর ফলে বিচিত্র ধরনের গল্প শুনতে পারি, তাদের ভ্রমণ জীবনের গল্প, সমাজ-সভ্যতা সম্পর্কে তাদের চিন্তা-চেতনা ইত্যাদি। আর সেই সাথে দলের প্রত্যেকের জন্য বিনোদনের খোরাক যোগানোর মত যথেষ্ট মেধাবী মানুষও ছিল এই দলে। এরকম দলবেঁধে বেড়াতে গেলে একটা বিষয় সব সময় মনে রাখতে হবে যে, সফরের জন্য নির্দিষ্ট সময়টাতে সকলে একটা পরিবারের মত হয়েই থাকে, তাই প্রত্যেককে তার নিজস্ব পরিপ্রেক্ষিতে গ্রহণ করতে পারলেই নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলি সমৃদ্ধ করা সম্ভব।

হাতিয়ার একাংশ; ছবি: লেখক

যাতায়াত সহ মোট চার রাত তিন দিনের এই সফর ছিল বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতায় পূর্ণ। প্রায় শেষ মুহূর্তে লঞ্চে পৌঁছানোর পরে খুব দ্রুত চাদর বিছিয়ে ঐ রাতের জন্য লঞ্চের ডেকে নিজের বিছানা গুছিয়ে নিই। লঞ্চের ডেকে কখনই আরামদায়ক অবস্থান সম্ভব নয়, কিন্তু জীবনে অন্তত একবার এই অভিজ্ঞতারও প্রয়োজন রয়েছে। তবে লঞ্চের ডেকে এটা ছিল আমার দ্বিতীয় অভিজ্ঞতা। সত্যি বলতে আমি যে আদৌ এই ট্রিপে যোগ দিতে পারব, তা নিশ্চিত ছিলাম না। আর আগে থেকে না বললে ভ্রমণের পিক সিজনে, বৃহস্পতিবার রাতের লঞ্চে কোনোভাবেই কেবিন পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এই ট্রিপ শেষ হওয়ার আগেই আমি খুশি ছিলাম যে, এবারে কেবিনে না গিয়ে ডেকে গিয়েছিলাম। তাই ফিরতি পথে কেবিন নেওয়ার সুযোগ থাকলেও ইচ্ছা করেই সে পথে যাইনি।

প্রায় ৭ টা নাগাদ লঞ্চ যাত্রা শুরু করার কিছুক্ষণ পর থেকেই শীতের প্রকোপ টের পেতে শুরু করি। তাই নিজেকে আষ্টেপৃষ্ঠে কম্বলে মুড়ে নিয়ে রাতের প্রায় পুরো সময়টাই ঘুমিয়ে কাটাই। তবে রাত প্রায় ১০ টা পর্যন্ত সেটা সম্ভব হয়নি, কারণ হকারদের হাঁকডাকে এমনিতেই সজাগ থাকতে বাধ্য ছিলাম। ভোর ৪ টার একটু আগে ঘুম ভাঙতে দেখি যে, আমার দলের বেশিরভাগই তখনো ঘুমে কাতর। কিন্তু আমার পক্ষে আর ঘুমানো সম্ভব ছিলনা। তাই লঞ্চের কেবিন অঞ্চলে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম, ভেবেছিলাম লঞ্চ থেকে হয়তো অল্প সময়ের মধ্যেই নেমে যেতে হবে। কিন্তু ডেকে ফেরার সময়ে টিকেট সংগ্রাহক ভাইটি জানালেন যে, আমাদের গন্তব্য এখনও তিন ঘণ্টা দূরে।

ট্রলারে করে হাতিয়া থেকে নিঝুম দ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা; ছবি: আয়োজক

কিছুক্ষণ নিজের জায়গায় শুয়ে থাকার পরে শেষ পর্যন্ত ঠাণ্ডা উপেক্ষা করেই উঠে গেলাম ছাদে। রাতেও ছাদে গিয়ে পূর্ণিমার সৌন্দর্য উপভোগ করেছিলাম। কিন্তু এই সময়কার দৃশ্য ছিল নদীর বুকে জেগে থাকা দ্বীপের আর ঠাণ্ডা, নিষ্প্রাণ চাঁদের আর সূর্য উঠার আগ মুহূর্তের। আমি প্রথমবার কোনো দ্বীপের এত কাছে থেকে এভাবে যাচ্ছিলাম। একটার পর একটা দ্বীপ পার হতে হতেই আকাশ আলো করে সূর্যের আগমন ঘটল। সকাল ৭ টার একটু পরে লঞ্চ ভিড়ল বিখ্যাত মনপুরা দ্বীপে। উল্লেখ্য, এখানেও নিয়মিতভাবে পর্যটকেরা ক্যাম্পিং করার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। আমি ভাবলাম, আবার করে সুযোগ ঘটবে কে জানে; তাই এখনই একবার নেমে আশপাশটা ঘুরে আসা উচিৎ। নামার পরে দেখলাম যে, বেশ কিছু বস্তা আর আসবাবপত্র নামানো হচ্ছে। মনে হল, বিরতি হয়তো কিছুটা লম্বা হবে। আনুমানিক কতক্ষণ লম্বা বিরতি সেটা জানার জন্য টিকেট সংগ্রাহক ভাইকে জিজ্ঞেস করলে উনি বললেন, ‘মোট ৭০ টা আলুর বস্তা নামানো হবে, ৩০ টা নামানো হয়েছে। এখন বাকি সময়টা হিসেব করে নেন।

মনপুরা লঞ্চ ঘাটেই গরম গরম পরোটা দিয়ে নাস্তা করার সুযোগ থাকলেও মনে করলাম যে, একটু পরে এমনিতেই নাস্তা করা হবে, এখন আর প্রয়োজন নাই। আগে যদি জানতাম! ঘটনা এই যে, মনপুরা থেকে কিছুদূর এগিয়েই আমাদের লঞ্চ ভাটার কবলে পরল। এবারে আরও একটা প্রথম অভিজ্ঞতা ঘটল- মাঝ নদীতে লঞ্চ আটকে প্রায় বন্দী হয়ে থাকা। মোটামুটি ৩-৩.৫ ঘণ্টা আমরা আটকে ছিলাম এভাবে। গান-বাজনা, গল্প, বিস্কিট আর পানি দিয়ে কোনোমতে ক্ষুধা মেটানো (লঞ্চের রান্নাঘর সেসময়ে বন্ধ ছিল)- এভাবেই সময়টা পার করি। উল্লেখ্য, লঞ্চের কর্মীরা আর আমাদের দলের সদস্যরা ছাড়া আর কেউই সেসময় লঞ্চে ছিল না।

নিঝুম দ্বীপের প্রথম দর্শন; ছবি: লেখক

সকাল প্রায় ১১:৩০ টার দিকে আমরা শেষ পর্যন্ত আমাদের প্রথম গন্তব্য হাতিয়া দ্বীপে পৌঁছাই। পৌঁছানোর পরে প্রথম কাজটাই ছিল, নি:সন্দেহে, পেট-পূজা। গরুর মাংস দিয়ে পেট ভরে ভাত খেয়ে আমরা উঠলাম ট্রলারে। পেট কাটা মানে পেটের মাঝে বিশাল গর্ত (মালপত্র রাখার ও বসার স্থান) সহ দুই ধারে বেশ উঁচু এবং উভয় পাশে বসার স্থান সম্বলিত এই ধরনের বড় ট্রলারেই অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা সেন্ট মার্টিনস্, সুন্দরবন ভ্রমণে যায়, আর জেলেরা মাছ ধরে। নিজেকেই অবাক করে দিয়ে, মোটামুটি অনায়াসে ট্রলারের সামিয়ানা ঢাকা অংশে উঠে বসলাম অন্য সবার সাথে। চলতে থাকল জেলেদের গল্প, স্থানীয় এক সহযাত্রীর গল্প আর দুই পাশের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে দেখতে নিঝুম দ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা। যাত্রাপথেই দেখতে পেলাম আমাদের পরের দিনের হরিণ দর্শনের স্থান- নিঝুম দ্বীপের বিখ্যাত হরিণের অভয়ারণ্য। অ্যাডভেঞ্চারের ছোঁয়া এর মধ্যেই যথেষ্ট পরিমাণে লেগেছিল, কিন্তু আসল অ্যাডভেঞ্চারের শুরু হয় দ্বীপে পৌঁছানোর পরে।

ট্রলারে উঠার পরে নিজের শারীরিক সামর্থ্য নিয়ে বেশ খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু নামার সময় মনে হল যেন প্রাণটাই হাতে চলে এসেছে। ট্রলারের ধার দিয়ে কোনো কিছু না ধরে কয়েক পা এগিয়ে, ট্রলার থেকে তীর পর্যন্ত পানির ওপর দিয়ে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত, মোটামুটি একজন মানুষের দাঁড়ানোর মত প্রশস্ত একটা তক্তা পার হয়েই ট্রলার থেকে নামতে হবে। এই পুলসিরাত আমাকে আরও পাঁচবার পার হতে হয়। চতুর্থবারে, হরিণ দেখে ফিরে আসার সময়ে, আমাদের ট্রলারের ধার দিয়ে হেঁটে আরেকটি ট্রলারে পৌঁছে- ঠিক আগের প্রক্রিয়াতে তীরে নামার পরে- আমার আত্মবিশ্বাস আকাশ ছোঁয়া হয়ে গিয়েছিল।

নিঝুম দ্বীপে সূর্যাস্ত; ছবি: লেখক

দ্বীপে পৌঁছে আয়োজকেরা তাঁবু খাটাতে ব্যস্ত হয়ে পরে, আর আমি ও আমার দলের কয়েকজন নিজ নিজ ব্যাগ রেখে তীরে সূর্যাস্ত উপভোগের জন্য চলে যাই। অনেক স্থানেই আমার সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত আর পূর্ণিমা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। কিন্তু এই সূর্যাস্ত ছিল সবচেয়ে সুন্দর, সূর্যের রঙটা কেমন যেন গোলাপি ছিল। প্রায় হাঁটু পর্যন্ত এঁটেল মাটি পেরিয়ে একজন সহযাত্রীর সাথে আমি যতদূর সম্ভব নদীর দিকে এগোলাম। ভাটার সময় ছিল বলে বেশ অনেক দূর পর্যন্তই যেতে পারি। তারপরে তীরে এসে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যাই নিঝুম দ্বীপের তীরবর্তী প্রসিদ্ধ খেজুর বাগানে। রাতের খাবারের আগে ও পরে, যতক্ষণ ঘুম আর আটকানো সম্ভব ছিলনা, ততক্ষণ পর্যন্ত ঠাণ্ডা বাতাসে নদীর তীরে বসে গল্প করেই যাচ্ছিলাম। শেষ পর্যন্ত সময় হল তাঁবু বাসের।

দেরিতে তাঁবুতে ঢোকার কারণেই কি না জানি না, সারা রাত তাঁবু বেশ শাস্তিই দেয় আমাকে। গরম জামা গায়ে দিয়ে, কম্বলটাকে স্লিপিং ব্যাগ বানিয়ে শোয়ার পরেও ঠাণ্ডার কষ্টে রাতে ঘুম আর হয়নি বললেই চলে। ভোরে সূর্য ওঠার আগেই ঘুম ভেঙ্গে গেলে, বেশ কিছুক্ষণ বসে বসে চিন্তা করছিলাম যে, তাঁবুর বাইরে ঠাণ্ডা বেশি লাগবে, না ভিতরে। শেষ পর্যন্ত তাঁবু থেকে বের হয়ে সহযাত্রীদের সাথে নাস্তার আগে, পরে দ্বীপের বেশিরভাগ অংশ হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়াই। দুপুর ১২ টার দিকে দলবেঁধে রওনা দিই হরিণ দর্শনে। চিড়িয়াখানায় দেখা প্রাণী, আর নিজ আবাসে মুক্ত, স্বাধীনভাবে ঘুরতে থাকা প্রাণী দেখার মধ্যে অনেক বেশি পার্থক্য রয়েছে।

জঙ্গলে ট্রেকিং করে হরিণ দর্শনের অভিযানের মধ্যবর্তী সময়ে নির্দেশনা প্রদান: ছবি: আয়োজক

কিন্তু বনে-জঙ্গলে তথা অভয়ারণ্যে প্রাণী দেখার জন্য শুধু শারীরিক, মানসিক সামর্থ্যই যথেষ্ট না- সাধারণ জ্ঞানও এখানে অত্যাবশ্যক। জঙ্গলে প্রাণীর দেখা পেতে হলে সবার আগে যে শর্ত মেনে চলতে হবে তা হলো- কোনোভাবেই শব্দ করা যাবে না। কিন্তু মুখ বন্ধ রেখে এরকম বন্ধুর পথে চলতে থাকা বেশির ভাগ মানুষের পক্ষেই অসম্ভব। তাই মাঝপথেই আমাদের দলের প্রায় অর্ধেক সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়। তবে এর আরও একটা কারণ এই ছিল যে, তারা কেউই ঐরকম পথে চলতে স্বচ্ছন্দবোধ করছিল না। এদিকে কথাবার্তার আওয়াজের কারণে হরিণ বারবার আমাদের ফাঁকি দিয়ে এগিয়েই যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত, একটি মাত্র হরিণকে ১০-১৫ সেকেন্ডের জন্য দেখতে পাই; সবাই না- মোটামুটি ৫-৬ জন অর্থাৎ আমরা যারা বনের গাছগাছালিতে হাত-পা কাটাছেঁড়াকে উপেক্ষা করে লাফিয়ে লাফিয়ে ছুটে গিয়ে সামনের দিকে ছিলাম, শুধু তারাই সেই দর্শনের সৌভাগ্য অর্জন করতে পারি।

কাদা পেরিয়ে ফিরতি পথের যাত্রা; ছবি: আয়োজক

সেদিন রাতে ব্যবস্থা করা হয়েছিল বিশেষ বার-বি-কিউ ডিনারের। সেই সাথে, আমাদের অবাক করে দিয়ে ঐ একই রাতে প্রকৃতি চালিয়েছিল ‘মিটিওর শাওয়ার‘ তথা উল্কা বৃষ্টি। রাত প্রায় ৩ টা পর্যন্ত নদীর তীরে বসে প্রকৃতিকে উপভোগ করার পরে ফিরে যাই তাঁবুতে। উল্লেখ্য, গতরাতে আমার তাঁবুতে আমরা দুইজন ছিলাম। আর দ্বিতীয় দিন রাতে, সৌভাগ্যক্রমে, তাঁবুতে আমি একাই ছিলাম। তবে বুদ্ধি করে বিকালের দিকেই তাঁবুর উপরের অংশে মোটা কাপড়ে ঢেকে দেওয়ায় এই রাতে ঠাণ্ডা অনেক কম ছিল।

পরের দিনে সকালে উঠে আবারো ছোট একটি দলে আমরা দ্বীপের অন্য একটা পাশ ঘুরে আসি। এরপরে শুরু হয় ফিরতি পথে যাত্রা। একইভাবে ট্রলারে করে হাতিয়া পৌঁছে, লঞ্চে করে ঢাকা। তবে এবারে আমি আরও একটু সাহসী হয়ে ট্রলারের ধারটিতেই বসেছিলাম। আর রাতে লঞ্চে চলেছিল গ্রাম্য বৃদ্ধদের সাথে বসে তাস খেলা; আমার ক্ষেত্রে বলতে হবে, তাদের থেকে খেলাটা শেখা। ১৬ ডিসেম্বর ভোর ৪ টার দিকে আমাদের লঞ্চ সদরঘাট পৌঁছায়।

This Bengali article is a travel story. This travel story is written based on the author's personal experience. 

Feature image: team member of the trip

Related Articles