মে ১৪, ২০০৪ সাল। ঘড়ির কাঁটা বিকাল ৪টা স্পর্শ করেছে।
ডেনমার্কের রাজধানীর কোপেনহেগেন ক্যাথেড্রালে ঘণ্টাধ্বনির সাথে শুরু হয়েছে জাঁকজমকপূর্ণ এক বিয়ের অনুষ্ঠান। অতিথির তালিকায় বিশ্বের নানা দেশের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে আছেন অনেক দেশের রাজা-রানীসহ রাজপরিবারের সদস্যরা। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে নবদম্পতিকে নিয়ে বিরাট বহর রওনা হল ড্যানিশ রাজপরিবারের বাসভবন অ্যামেলিয়েনবর্গ (Amalienborg) প্রাসাদের উদ্দেশ্যে। সেখানেই প্রাসাদের ব্যালকনিতে ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্স (সিংহাসনের পরবর্তী প্রথম উত্তরাধিকারী) ফ্রেডেরিখ, তার নবপরিণীতা স্ত্রী এবং তাদের নিজ নিজ বাবা-মা নিচে জমা হওয়া হাজারো জনতার অভিবাদন গ্রহণ করলেন।
জনতার ভিড়ে ডেনমার্কের পতাকার সাথে শোভা পাচ্ছিল অগণিত অস্ট্রেলিয়ান পতাকা, কারণ ফ্রেডেরিখের স্ত্রী মেরি ডোনাল্ডসন কিছুদিন আগেও ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। তিনি উঠে এসেছেন সাধারণ পরিবার থেকে। ফ্রেডেরিখের সাথে তার পরিচয় ও প্রণয় অনেকটাই রূপকথার গল্পের মতো।
মেরি ডোনাল্ডসন
মেরি ডোনাল্ডসনের পুরো নাম মেরি এলিজাবেথ ডোনাল্ডসন। অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক হলেও তার জন্ম স্কটিশ বাবা-মায়ের ঘরে। তার বাবা জন ডোনাল্ডসন ছিলেন ফলিত গণিতের অধ্যাপক, আর মা হেনরিয়েটা (Henrietta Horne) কাজ করতেন তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের সহকারী হিসেবে। হেনরিয়েটা আর জনের বিয়ে হয় ১৯৬৩ সালের ৩১ আগস্ট, স্কটল্যান্ডে। সেখান থেকে তারা নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়াতে অভিবাসন করেন।
নয় বছর পরে ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখে তাদের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান মেরির জন্ম হয়। শিশুকালে বাবার কাজের জন্য কয়েক বছর মেরির পরিবার আমেরিকার টেক্সাসে ছিল। সেখানে হাউস্টনে মেরি তার প্রাথমিক শিক্ষা আরম্ভ করেন। পরিবার অস্ট্রেলিয়া ফিরে এসে হোবার্টে স্থায়ী হলে মেরি সেখানে তার স্কুল সমাপ্ত করেন। ১৯৯৪ সালে তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেরি বানিজ্য এবং আইন বিষয়ে ডিগ্রি নেন। তিনি বিজ্ঞাপন এবং বিপণন বিষয়েও প্রশিক্ষণ নেন। এরপর মেলবোর্নে চলে যান এবং বিজ্ঞাপনী সংস্থাতে কাজ শুরু করেন। ১৯৯৭ সালের নভেম্বর মেরির মায়ের মৃত্যু হয়, তাকে সমাধিস্থ করা হয় জন্মভূমি স্কটল্যান্ডে। এর ছয় মাস পর মেরি কাজ থেকে ইস্তফা দিয়ে এক বছর ইউরোপ এবং আমেরিকা ভ্রমণ করে বেড়ান। ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলিয়াতে ফিরে এসে সিডনিতে কাজ নেন তিনি। এর পরের বছরই তার সাথে ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডেরিখের দেখা হলে সব হিসাবনিকাশ পাল্টে যায়।
প্রিন্স ফ্রেডেরিখ
ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডেরিখের (Frederik Andre Henrik Christian) জন্ম ২৬ মে, ১৯৬৮ সালে। তার মা ছিলেন তৎকালীন ড্যানিশ রাজকন্যা মারগ্রেথ (Margrethe) আর বাবা হেনরি (Henri de Laborde de Monpezat)। ফ্রেডেরিখের বয়স যখন তিন তখন তার দাদা, ডেনমার্কের রাজা নবম ফ্রেডেরিখ মারা যান। ফলে ফ্রেডেরিখের মা মারগ্রেথ ডেনমার্কের রানীর দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন, আর শিশু ফ্রেডেরিখ পরিণত হলেন সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারীতে।
ফ্রেডেরিখ তার লেখাপড়া সমাপ্ত করেন ডেনমার্ক এবং ফ্রান্সে । বয়স আঠার হলে তাকে কাউন্সিল অফ স্টেটে’র সদস্যপদ দেয়া হয়।এই কাউন্সিলের কাজ হল রানীর পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করা, তবে রাজতন্ত্রের মতো তাদের পদাধিকার এবং ক্ষমতাও মূলত আনুষ্ঠানিক। এর পাশাপাশি ফ্রেডেরিখকে রানীর অবর্তমানে তার কাজ চালানোর দায়িত্ব দেয়া হল। একই সময় তিনি ড্যানিশ সেনাবাহিনীতেও যোগ দেন। ১৯৮৯ সালে ফ্রেডেরিখ রাজনীতি এবং সাংবিধানিক আইন বিষয়ে ডেনমার্কের আর্হাস (University of Aarhus) বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন, এর অংশ হিসেবে তিনি হার্ভার্ডে এক বছরের জন্য পড়তে যান। ডিগ্রি শেষ হলে ফ্রেডেরিখ ড্যানিশ নৌবাহিনীতে যোগ দেন। সেখানে দায়িত্ব পালনের পর ১৯৯০ সালে তাকে প্যারিসে ড্যানিশ দূতাবাসে কূটনৈতিক পদে নিযুক্ত করা হয়। ফ্রেডেরিখ বিভিন্ন খেলাতে পারদর্শী ছিলেন। তিনি কোপেনহেগেন, প্যারিস আর নিউ ইয়র্কে ম্যারাথনে অংশ নিয়েছিলেন। ফুটবল খেলা, গাড়ি এবং জাহাজের রেসেও তার প্রচুর আগ্রহ ছিল।
পরিচয় এবং প্রণয়
এদিকে ততদিনে সিডনিতে ফিরে এসে মেরি রিয়েল এস্টেটে কাজ নিয়েছিলেন। তার কোম্পানির নাম বেল প্রোপার্টি (Belle Property), অফিস প্যাডিংটন এলাকাতে। কাজেই থাকার জন্য মেরি কাছেই সিডনির পূর্বাঞ্চলে সৈকতের নিকটবর্তী একটি ছোট এপার্টমেন্ট ভাড়া নেন। তার ফ্ল্যাটমেটের নাম অ্যান্ড্রু মাইলস। প্রায় শুক্রবারই এবং মাঝে মাঝে ছুটির দিনে মেরি, মাইলস আর তাদের কিছু বন্ধুবান্ধব রেস্টুরেন্টে সময় কাটাতে যেতেন। অ্যান্ড্রু মাইলসের বন্ধুদের একজন ছিলেন বিয়েট্রিস টার্নাওয়াস্কি, যার বোনের সাথে আবার স্পেনের রাজার ভাগ্নে ব্রুনো গোমেজের বন্ধুত্ব ছিল।
দেখতে দেখতে ২০০০ সাল চলে এলো। অস্ট্রেলিয়া সে বছর অলিম্পিকের স্বাগতিক দেশ। পুরো দেশই তখন অলিম্পিক জ্বরে কাঁপছে। সেই উপলক্ষ্যে সিডনিতে তখন বহু বিদেশির আনাগোনা। এর ভেতরেই মেরি, মাইলস আর টার্নাওয়াস্কি সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখে উপস্থিত হলেন সিডনির এক নামকরা রেস্টুরেন্টে, স্লিপ ইন (Slip Inn)। সেখানে ব্রুনো গোমেজের আসার কথা। তিনি এর মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিলেন, তার সাথে ছিলেন স্পেনের প্রিন্স ফেলিপ। কাকতালীয়ভাবে তাদের সাথে দেখা হয়ে যায় ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডেরিখ, তার ভাই জোয়াচিম, তাদের কাজিন গ্রীসের যুবরাজ নিকোলাস আর নরওয়ের রাজকন্যা মার্থা লুইসের।
টার্নাওয়াস্কির কল্যানে প্রিন্স ফেলিপের সাথে মেরির পরিচয় হলো। সেই সূত্র ধরে তিনি ফেলিপের সঙ্গীদের সাথেও কথা বললেন। প্রথম দেখায় প্রিন্স ফ্রেডেরিখের আর মেরি দুজনেরই খেলাধুলা আর ঘোড়ার বিষয়ে আগ্রহ থাকায় আলাপ জমে উঠল। মেরি কিন্তু তখনও ফ্রেডেরিখের আসল পরিচয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ অন্ধকারে ছিলেন। প্রায় আধা ঘন্টা ফ্রেডেরিখের সাথে কথা বলার পর কেউ একজন তাকে জানান এই ব্যক্তি ডেনমার্কের ভবিষ্যৎ রাজা।
অনেক রাত পর্যন্ত ফ্রেডেরিখ আর মেরি গল্প করলেন। বিদায় নেবার আগে মেরি তার ফোন নাম্বার ফ্রেডেরিখের কাছে দেন। তিনি অবশ্য আশা করেননি ফ্রেডেরিখ আবার যোগাযোগ করবেন। কিন্তু পরের দিনই ফ্রেডেরিখ তাকে ফোন করেন। তারা ফোন, ইমেইল এবং চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ চালিয়ে যান। মেরির সাথে দেখা করতে ফ্রেডেরিখ প্রায়ই সঙ্গোপনে অস্ট্রেলিয়া আসতেন।
ড্যানিশ রাজবংশ পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত রাজবংশ। রীতিনীতির দিক থেকে তারা অত্যন্ত রক্ষণশীল। মেরি জানতেন ফ্রেডেরিখের সাথে তার সম্পর্কের কথা প্রকাশ পেলে তাকে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রেখে চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হবে। কাজেই উঁচু সমাজের আদবকায়দার প্রশিক্ষণ নিতে তিনি সিডনির প্রথিতযশা স্টাইল কনসালটেন্ট টেরেসা পেইজের দ্বারস্থ হন। ছয় সপ্তাহের ট্রেনিং নিতে তার খরচ হয়েছিল প্রায় ১,২০০ ডলার। এরপর ২০০১ সালে তিনি চলে যান প্যারিসে নতুন এক কাজ নিয়ে। সেখানে থাকার সময়ই নভেম্বরে ড্যানিশ সংবাদপত্র বিল ব্ল্যা (Billed Bladet) তাদের সম্পর্কের কথা প্রথম জনসমক্ষে প্রকাশ করে।
লুকোচুরির প্রয়োজন ফুরোলে মেরি চলে আসেন কোপেনহেগেনে। তখন পর্যন্ত রাজপরিবার তাকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দিলেও তার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়। রাজপরিবারের বাসস্থান অ্যামেলিয়েনবর্গ প্রাসাদের পাশেই মাসিক ৭,০০০ ডলারের এক অ্যাপার্টমেন্টে মেরি থাকতে শুরু করেন। মাইক্রোসফটের কোপেনহেগেন অফিসে তার চাকরি হয়। এর পাশাপাশি মেরি ড্যানিশ ভাষা, সংস্কৃতি আর আচার-ব্যবহার শিখতে শুরু করেন। ডেনমার্কের ভবিষ্যৎ রানীর জন্য এগুলো অত্যাবশ্যক। বিশেষ করে ড্যানিশ ভাষা শিখতে মেরিকে প্রচন্ড বেগ পেতে হয়। শেখার জন্য ভয়ঙ্কর রকম কঠিন বলে ড্যানিশ ভাষার কুখ্যাতি আছে। মেরি তাই খুব সতর্কতার সাথে তা আয়ত্ত্ব করতে লাগলেন।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এবং রাজকীয় বিয়ে
২০০৩ সালের জানুয়ারিতে ফ্রেডেরিখ এবং মেরি প্রথম প্রকাশ্যভাবে জনতার মুখোমুখি হন। এপ্রিলে রানী মারগ্রেথ আনুষ্ঠানিকভাবে মেরি এবং ফ্রেডেরিখের সম্পর্ক স্বীকার করে নেন। ২৪ সেপ্টেম্বর তাদের বাগদান ঘোষিত হয় এবং পরের বছর বসন্তের কোনো এক সময়ে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হবে বলে জানানো হলো। ৮ অক্টোবর স্টেট কাউন্সিলের সভাতে রানী বিয়ের ব্যাপারে তার আনুষ্ঠানিক সম্মতি দান করেন। ২০০৪ সালের ১৪ মে ফ্রেডেরিখ এবং মেরির রাজকীয় বিয়ের দিন ধার্য হয়। এরপর ড্যানিশ সংসদ বিশেষ আইনের মাধ্যমে মেরিকে ডেনমার্কের নাগরিকত্ব প্রদান করে।
ফ্রেডেরিখের স্ত্রী হবার পূর্বশর্ত হিসেবে মেরিকে বেশ কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। ড্যানিশ রাজপরিবারের রীতি অনুযায়ী মেরি তার অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন। ডেনমার্কের খ্রিষ্টান সম্প্রদায় লুথেরান চার্চের অনুসারী, ফলে মেরিকে তার চার্চও পরিবর্তন করতে হয়। এছাড়াও ফ্রেডেরিখের সাথে ছাড়াছাড়ি হলে সন্তানদের উপর তার কোনো দাবি থাকবে না বলেও তাকে লিখিত সম্মতি দিতে হয়। মূলত এটাই ছিল ড্যানিশ রাজপরিবারের কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। এ যুগে শুনতে অদ্ভুত লাগলেও মেরির কাছে তাদের প্রধান প্রত্যাশা ছিল রাজপরিবারের বংশধারা বজায় রাখা, ফলে ফ্রেডেরিখের সাথে বিয়ের আগেই তাদের সন্তানদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।
২০০৪ সালের ১৪ মে কোপেনহেগেন ক্যাথেড্রালে ফ্রেডেরিখ আর মেরির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো। এসময় মেরি তার মায়ের আংটি নিজের কাপড়ে সেলাই করে রেখেছিলেন। বিয়ের পরে নবদম্পতি প্রথমে অ্যামেলিয়নবর্গ প্রাসাদে কিছু আনুষ্ঠানিকতা পালন শেষে রওনা হয় জিল্যান্ড দ্বীপের উদ্দেশ্যে। সেখানে এস্রাম লেকের ধারে ফ্রেডেন্সবর্গ (Fredensborg Palace) প্রাসাদে ৪০০ অভ্যাগতের জন্য নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। মেরি ও ফ্রেডেরিখ প্রথম রাত সেখানেই কাটান। মধুচন্দ্রিমা তারা উদযাপন করেন আফ্রিকাতে।
পরিবার
২০২০ সালে মেরি ও ফ্রেডেরিখের দাম্পত্য জীবনের ষোল বছর পূর্ণ হয়েছে। তারা এখন চার সন্তানের বাবা-মা। ২০১৫ সালের অক্টোবরে তাদের প্রথম সন্তান প্রিন্স ক্রিশ্চিয়ানের জন্ম হয়। এরপর ২০০৭ সালে প্রিন্সেস ইসাবেল এবং ২০১১-তে যমজ সন্তান প্রিন্স ভিনসেন্ট আর প্রিন্সেস জোসেফিন জন্মগ্রহণ করেন।
সমাজসেবামূলক কার্যক্রম
মেরি ডোনাল্ডসন সেবামূলক বিভিন্ন কাজে নিজেকে জড়িত রেখেছেন। পঁচিশটির মতো সেবামূলক প্রতিষ্ঠান মেরিকে তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষকদের একজন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক অফিস, যাদের সাথে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে মাতৃমৃত্যু রোধ করতে মেরি কাজ করছেন। ২০০৭ সালে তিনি নিজ নামে চালু করেছে মেরি ফাউন্ডেশন, যার অন্যতম লক্ষ্য পারিবারিক সহিংসতা এবং হয়রানির বিরুদ্ধে কাজ করা। রাজকীয় দায়িত্বের অংশ হিসেবে তিনি সামরিক প্রশিক্ষণও নিয়েছেন, ২০১৯ সালে তাকে ডেনমার্কের সামরিক বাহিনীর একটি শাখা হোম গার্ডের ক্যাপ্টেন পদবি দেয়া হয়।
ভবিষ্যৎ রানী
ফ্রেডেরিখ ইতোমধ্যেই ড্যানিশ ক্রাউন প্রিন্স। তার স্ত্রী হিসেবে মেরি এখন ক্রাউন প্রিন্সেস। ফলে রানী মারগ্রেথ মারা গেলে অথবা সিংহাসন ত্যাগ করলে ফ্রেডেরিখের সাথে মেরি রানী হিসেবে অভিষিক্ত হবেন। তিনিই হবেন ডেনমার্কের ইতিহাসে প্রথম অস্ট্রেলিয়ান রানী। বর্তমান রানী মারগ্রেথের বয়স এরই মধ্যে আশি পার হয়েছে, ২০১৮ সালে ফ্রেডেরিখের পিতার মৃত্যুর পর থেকে তিনি বেশ অসুস্থও। কাজেই অনেকেই বলছেন খুব শীঘ্রই হয়তো রানী ছেলের জন্য সিংহাসন ছেড়ে দেবেন। নিজের রাজকীয় বহু দায়িত্বও তিনি মেরির হাতে ছেড়ে দিয়েছেন।
মেরি নিজের মুখেই বলেছেন রাজপুত্রের হাত ধরে রাজপ্রাসাদে বসবাস করার চিন্তা তিনি কখনোই করেননি।যা ঘটেছে সবটাই তার কাছে রূপকথার গল্পের মতোই মনে হয়। তবে দেশটা যখন ডেনমার্ক, রূপকথার জাদুকর হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসনের জন্মভূমি, তখন রূপকথা এখানে সত্যি না হলে আর কোথায় হবে।