যখন প্রাচীন উপকথা কিংবা পৌরাণিক গল্পের প্রসঙ্গ উঠে আসে, তখন কল্পকাহিনির সামনে সত্যের দাঁড়িয়ে থাকা হয়ে যায় কঠিন। অধিকাংশ উপকথাই পুরোপুরি কাল্পনিক, তবে সেগুলোর ফাঁকফোকরে বাস্তবতা ও সত্যতার বীজ লুকিয়ে থাকে। প্রাচীনকালের মানুষ এই বাস্তব জিনিসের উপর ভিত্তি করেই সাজিয়েছিলেন এসব মুখরোচক গল্পের সম্ভার। সেজন্য দেখা যায়, উপকথায় বর্ণিত নানা জায়গার অস্তিত্ব পৃথিবীতে বাস্তবেই বিদ্যমান। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে, উপকথার এমন কিছু বাস্তব জায়গা নিয়েই আজকের এই আয়োজন।
অলিম্পাস পর্বত
গ্রিক পুরাণ সম্পর্কে যারা এক-আধটুও জানে, তারাও অলিম্পাস পর্বতের কথা শুনে থাকবে। প্রাচীন গ্রিক ধর্ম অনুসারে, স্বর্গতুল্য এই অলিম্পাস পর্বতেই বাস করতেন গ্রিক পুরাণের বারোজন প্রধান দেব-দেবী। হোমারের বিখ্যাত মহাকাব্য ইলিয়াডে অলিম্পাসকে বর্ণনা করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এক অ্যাক্রোপলিস হিসেবে, যার চূড়ায় ছিল দেবতাদের ধবধবে প্রাসাদোপম অট্টালিকা।
বাস্তব দুনিয়ায়, অলিম্পাস হলো গ্রিসের সবচেয়ে উঁচু পর্বত। এই পর্বতে চূড়ার সংখ্যা মোট ৫২টি এবং এতে গভীর গিরিখাতও রয়েছে। প্রাচীনকালে ভাবা হতো, মিটিকাস চূড়াতেই দেবতারা বসবাস করছেন। গ্রীকদের মধ্যে প্রচলিত একটি স্বভাব ছিল এমন, উঁচু পাহাড় দেখলেই তারা সেটাকে অলিম্পাস বলে ডাকত। শুধুমাত্র গ্রিসেই অলিম্পাস নামে চারটি পর্বতচূড়া বিদ্যমান; তুরস্কে এর সংখ্যা তিন, এবং সাইপ্রাসে এক। এছাড়াও উত্তর আমেরিকায় অলিম্পাস নামে মোট নয়টি পর্বতচূড়া রয়েছে। মজার ব্যাপার হলো, শুধু পৃথিবীই নয়, মঙ্গলগ্রহের এক পর্বতচূড়ার নামও অলিম্পাস!
শেরউড ফরেস্ট
হলিউডের কল্যাণে রবিন হুডের কিংবদন্তি আজ সারাবিশ্বে জনপ্রিয়। ইংরেজি লোককাহিনীতে রবিনহুড হলো এক দুঃসাহসিক চরিত্রের নাম, সব্যসাচী তলোয়ারবিদের হবার পাশাপাশি, সে ছিল দক্ষ এক তীরন্দাজ। বেশিরভাগ গল্পে দেখা যায়, ধনীদের কাছ থেকে সম্পদ চুরি করে তা গরিব-দুখীদের মাঝে বিলিয়ে দিত রবিন হুড। তবে বাস্তবে রবিনহুড চরিত্রের অস্তিত্ব ছিল কিনা, এবং কিংবদন্তির উৎসগুলো নিয়ে রয়েছে নানা রকমের বিতর্ক। ১২২৬ সালে ইংল্যান্ডের আইনী নথিপত্রে পাওয়া যায় রবার্ট হড নামে এক ব্যক্তির নাম, যার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে তাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। অনেক ঐতিহাসিক এটাও দাবি করেন যে, রবিন হুড নামটি একদল ডাকাত ছদ্মনাম হিসেবে ব্যবহার করত।
তবে রবিন হুডের সাথে সম্পৃক্ত গল্পগুলোতে বারবার ইংল্যান্ডের নটিংহামে শেরউড ফরেস্টের নাম উঠে এসেছে। বাস্তব পৃথিবীতে এই স্থানের অস্তিত্ব বিদ্যমান। ৯২৬ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই স্থানটি ন্যাশনাল ন্যাচার রিজার্ভের অধীনে রয়েছে। রবিন হুডের কিংবদন্তি দিয়ে মানুষের আকর্ষণ জাগাতে স্থানীয় পৌরসভা চমৎকার এক উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে এলাকাটি এক পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে, যার মূলে রয়েছে রবিন হুডের থিম।
ট্রয়
গ্রিক উপকথায় গ্রিস-ট্রয়ের উপাখ্যান কিংবা ট্রয়ের পতন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। প্রাচীন গ্রিক সাহিত্য ঘাঁটলে দেখা যায়, যখন দেবতা ও রাক্ষসেরা পৃথিবীতে বিচরণ করত, সেই বীরত্বপূর্ণ যুগেই ট্রয় ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী এক রাজ্য। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, গ্রিস-ট্রয় যুদ্ধের শুরুটা হয়েছিল তখন, যখন ট্রয়ের রাজা প্রায়ামের পুত্র গ্রিসে এসে হেলেনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। হেলেন ছিলেন স্পার্টার রাজা মেনেলাউসের স্ত্রী, যাকে তৎকালে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী বলা হতো। মেনেলাউস গ্রীক নেতাদের একত্র করে ট্রয় শহরে আক্রমণ করাতে রাজি করান। টানা দশ বছর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর পতন ঘটে বিখ্যাত ট্রয় নগরীর।
এটা তো গেলো গ্রিক মিথোলজিতে বর্ণিত কাহিনি। তবে, ইতিহাসের পাতা মেললে দেখা যায়, প্রাচীনকালে এশিয়ার মাইনরে সত্যি সত্যি ট্রয় নগরীর অস্তিত্ব ছিল, যা বর্তমানকালের তুরস্ককে নির্দেশ করে। উনিশ শতকের আগপর্যন্ত গ্রিস-ট্রয়ের উপাখ্যানকে পৌরাণিক কাহিনি হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। ১৮৭১ সালে এক খননকার্যের ফলে পাল্টে যায় ইতিহাস, ভাঙে সকলের ভুল ধারণা। সেই খননে এক শহরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়, যার সাদৃশ্য ছিল পুরাণে বর্ণিত ট্রয় নগরীর সাথে।
ইতিহাসবেত্তাদের ধারণা, প্রাচীন এই ট্রয় নগরী আদি তাম্র যুগ (খ্রি.পূ. ৩০০০ অব্দ – খ্রি.পূ. ২৫০০ অব্দ) থেকে বাইজেন্টাইন আমল (৩০০ খ্রি.) পর্যন্ত টিকে ছিল। আর গ্রিক উপকথায় বর্ণিত যুদ্ধকাহিনি ঘটেছিল ব্রোঞ্জ যুগের শেষ পর্যায়ে। বর্তমানে পর্যটকে মুখরিত থাকে এই ধ্বংসাবশেষ। ইউনেস্কো একে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
সাইক্লোপিয়ান দ্বীপ
ট্রয়ের পতনে যে কয়জন যোদ্ধা মূল ভূমিকা পালন করেছিল, তার মধ্যে গ্রিকবীর ওডিসিয়াস অন্যতম। বিখ্যাত সেই ট্রোজান হর্স বা কাঠের ফাঁপা ঘোড়া দিয়ে ট্রয়ের অভ্যন্তরে ঢোকার বুদ্ধিটা তার মাথাতেই এসেছিল।
তবে হোমারের ওডিসিতে ওডিসিয়াসকে নিয়ে আরও কিছু গল্প বলা আছে। ওডিসিয়াস এবং তার সঙ্গীরা তাদের দেশ ইথাকাতে কীভাবে ফিরে এসেছিল, সে রোমাঞ্চকর অভিযানের বর্ণনা দেওয়া আছে সেখানে। ওডিসিয়াস তার বাড়ি ফিরে যাওয়ার পথে যেসকল অগ্নিপরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছিল, তার মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ছিল সাইক্লোপস দ্বীপ। যাত্রার প্রথম দিকে, ওডিসিউস এবং তার বারোজন সঙ্গী একটি দ্বীপে অবতরণ করেন, যেখানে সবকিছুই ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বৃহদাকারের। সেই দ্বীপে তারা শক্তিশালী সাইক্লোপস পলিফেমাসের দেখা পেয়েছিল।
পলিফেমাস ছিল দেবতা নেপচুনের সন্তান। পলিফেমাসের হাত থেকে কোনোমতে প্রাণে বেঁচে ফিরেন ওডিসিয়াস ও তার সহযোগীরা। তারা যখন সমুদ্র পথে পালিয়ে যাচ্ছিলো তখন পলিফেমাস রাগে তাদের দিকে পাথর ছুড়তে থাকে।
পৌরাণিক গল্পে পাথর নিক্ষেপের এই কাল্পনিক কাহিনি বলা থাকলেও এমন কিছু পাথর ইতালির সিসিলির সাইক্লোপস রিভিয়েইরা দ্বীপে দেখা যায়। জনশ্রুতি অনুসারে, এই পাথরগুলোই ওডিসিয়াসের উদ্দেশ্যে ছুড়েছিল পলিফেমাস। এর আশেপাশে আরও কিছু পাথুরে দ্বীপের অস্তিত্ব রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, প্রাচীন গ্রিসে পলিফেমাস ও তার আত্মীয়রা এই দ্বীপগুলোতে বসবাস করত।
এল ডোরাডো
এল ডোরাডো কিংবদন্তি মূলত, দক্ষিণ আমেরিকার কলম্বিয়ায় বসবাসকারী মুইসকা সম্প্রদায়ের সাথে সম্পৃক্ত। এই গল্প
মনুষ্যলোভের এক করুণ কাহিনি বর্ণনা করে যায়। তবে এই কিংবদন্তি নিয়ে যথেষ্ট জল-ঘোলা হয়েছে। ষোড়শ শতাব্দীর দিকে স্প্যানিশরা এক পৌরাণিক গোত্রপ্রধানকে বোঝাতে এই শব্দ ব্যবহার করত। ওই কাহিনি অনুযায়ী, সোনার প্রতি ভীষণ লোভ ছিল তার। তাই ওই গোত্রপ্রধান নিজেকে সোনা ও জহরত দিয়ে ঢেকে গুয়াতাভিটা হ্রদে ডুবে যায়। ‘এল ডোরাডো’ একটি স্প্যানিশ শব্দ, যার অর্থ ‘স্বর্ণনির্মিত’।
ষোড়শ শতাব্দীতে স্প্যানিশরা এল ডোরাডোর খোঁজ শুরু করলেও তারা কোনো সোনা খুঁজে পায়নি। পরে লোকমুখে প্রচলিত হতে হতে এই কিংবদন্তি এক মানুষের বদলে একটি শহরে, এবং অতিরঞ্জিত হয়ে সোনায় আচ্ছাদিত এক সাম্রাজ্যে রূপ নিয়েছিল। স্প্যানিশরা সোনার রাজ্য আবিষ্কারের আশা নিয়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজেছে কলম্বিয়া, ভেনেজুয়েলা, গায়ানা এবং ব্রাজিলের বিভিন্ন স্থানে। এই কাজ করতে গিয়ে তারা নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল অসংখ্য আদিবাসীকে। কিন্তু এত কাঠখড় পোড়ানোর পরেও তারা কখনো তারা সেই আরাধ্য সোনার সাম্রাজ্যের খোঁজ পায়নি।
তবে, এই কিংবদন্তি যে পুরোপুরি মিথ্যা, সেটাও বলা যাবে না। কিছু ঐতিহাসিক পাণ্ডুলিপি নির্দেশ করে ইনকান এক আদিবাসীকে, যারা আধুনিক কলম্বিয়ার গুয়াতাভিটা হ্রদের কাছে বাস করত। তাদের সমাজের এমন এক রীতি চালু ছিল, যেখানে তাদের নেতারা হ্রদে গহনা, স্বর্ণ এবং ধনসম্পদ ফেলে দিতেন। কিংবদন্তির বদৌলতে সেই হ্রদ এখন পরিণত হয়েছে পর্যটকদের আখড়ায়। তবে, সেখানে কোনো ধনভাণ্ডার পাওয়ার আশায় গেলে অবশ্যই খালি হাতে ফিরে আসতে হবে।
ইউমি নো কুনে
এশিয়ার দেশ জাপানের রয়েছে সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্য ও নানা পৌরাণিক কাহিনি। এর মধ্যে জনপ্রিয় একটি পুরাণ হলো ‘ইউমি নো কুনে’, যা মূলত এশীয় সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কিত। এই পুরাণ অনুসারে, শুরুর দিকে মাত্র দুজন দেব-দেবী ছিলেন, যারা সকল কিছু সৃষ্টির জন্য দায়ী। একজন হলেন ইজানাগি, অপরজন হলেন তার বোন-স্ত্রী ইজানামি। ইজানামি আর ইজানাগির গভীর প্রণয়ে জন্ম নিয়েছিল বহু দেব-দেবী। অগ্নিদেবতা কাগুতসুছিকে জন্ম দিতে গিয়ে আগুনে পুরে মারা যায় ইজানামি। সহধর্মিণী হারানোর ক্ষোভে ইজানাগি পাতালপুরীতে রওয়ানা দিয়েছিলেন, তার আত্মাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে।
সেখানে গিয়ে তিনি অন্ধকার, থমথমে এবং তমসাবৃত এক জায়গা আবিষ্কার করলেন, যেখানে মৃতদেহের ভেতর আবদ্ধ হয়ে ছিল তাদের আত্মাগুলো। দেবতা ইজানাগি তার স্ত্রীকে খুঁজে পেলেন সেখানে। কিন্তু পাতাল থেকে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা শর্ত ছিল, তা হলো চলার পথে তার স্ত্রীর দিকে তাকানো যাবে না। তাহলে স্ত্রীকে আর ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন না তিনি। কিন্তু সেই নিষেধ মানতে পারেনি ইজানাগি। ফলে আবারও পাতালে আটকা পড়ে যায় ইজানামি।
এই কর্মকাণ্ডে নিজ ভাই ও স্বামীর প্রতি ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইজানামি। ইজানাগিকে পাকরাও করতে পিশাচবাহিনী পাঠায় ইজানামি। ইজানাগি কোনোভাবে তাদেরকে ফাঁকি দিয়ে পাতালপুরী থেকে পালাতে সক্ষম হয় এবং পাতালপুরীর দরজা চিরকালের জন্য ইয়োমি নো কুনে নামক বিশাল এক পাথর দিয়ে বন্ধ করে দেয়। বলা হয়ে থাকে, ইজানাগির সেই ইয়োমি নো কুনে পাথরের অস্তিত্ব রয়েছে জাপানের মাতসুয়ে এলাকায়। ইয়োমি নো কুনের প্রবেশপথ ইয়োমোতসু হিরাসাকা নামে পরিচিত। পর্যটকরা ইজানামির সমাধি এবং মন্দির দুটোই চাইলে ঘুরে আসতে পারেন।
দ্য জায়ান্ট’স কজওয়ে
দ্য জায়ান্ট’স কজওয়ের অবস্থান হলো উত্তর আয়ারল্যান্ডের অ্যান্ট্রিম কাউন্টিতে। এটা প্রায় ৪০ হাজার আগ্নেয়শীলার স্তম্ভ নিয়ে গঠিত, যেগুলো একে অপরের সাথে মিশে আছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী, প্রাচীনকালে কোনো আগ্নেয়গিরি অগ্নুৎপাতের ফলে সৃষ্টি হয়েছিল এই বাঁধ। বিজ্ঞানের কথা বাদ দিয়ে এবার আসা যাক পৌরাণিক কাহিনিতে। লোককথা অনুসারে, একের পর এক আগ্নেয়শীলা চাপিয়ে এই বাঁধ তৈরি করেছিল প্রাচীনকালের দৈত্য। ফিয়ন ম্যাক কামহ্যাইল নামে এক দৈত্য লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিল তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্কটিশ দৈত্য বেনান্ডোনারকে।
লড়াইয়ের উদ্দেশ্যে ফিয়ন নর্থ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার জন্য এক বাঁধ বানিয়েছিল, যেটা আলাদা করে রেখেছিল আয়ারল্যান্ড আর স্কটল্যান্ডকে। ফিয়ন যখন বুঝতে পারে, তার প্রতিদ্বন্দ্বী বেনান্ডোনার তার থেকে আকারে অধিক বৃহৎ ও শক্তিশালী, তখন ফিয়ন গা ঢাকা দেয়। ফিয়নের চালাক স্ত্রী সেটা বুঝতে পেরে ফিয়নকে এক শিশুতে রূপান্তর করে। বেনান্ডোনার তখন ফিয়নকে দেখে ভাবে, এই বাচ্চার এত এত ক্রোধ, তাহলে তো তারা বাবার আরও বেশি তেজ থাকার কথা। তা ভেবে সে জায়ান্ট’স কজওয়ে দিয়ে ফিরে এসেছিল স্কটল্যান্ডে।