প্রাক্তন ইন্টেলিজেন্স অফিসার থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন পুতিন, নির্বাচিত হন বরিস ইয়েলেতসিন প্রশাসনের রাশিয়ার সিকিউরিটি সার্ভিস সেক্রেটারি, পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে নির্বাচিত হন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। দুই মেয়াদে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট থাকার পর আবারও নির্বাচিত হন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী হয়ে পরিবর্তন আনেন সংবিধানে, উঠিয়ে দেন দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট না থাকার নিয়ম। পুনরায় পুতিন তৃতীয় ও চতুর্থ মেয়াদে হন প্রেসিডেন্ট।
রাশিয়ার সর্বসেবা ক্ষমতাধর হয়ে পুতিন। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে অনেকটা শিথিল হলেও পুতিনের শাসনকে অনেকে একনায়কতান্ত্রিক বলে থাকেন। সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হলেও নির্বাচন ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। নির্বাচিত হলেও রাশিয়ায় পুতিনের বিরুদ্ধমত নেই এমন নয়। কর্তৃত্ববাদী নেতারা সবসময় বিরোধী মতকে কঠোরহস্তে দমন করেন। চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালীন পুতিনের বিরোধিতার ফলে প্রাণ হারাতে হয় অনেক রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী প্রমুখকে। রাশিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রাণ হারান এমন সব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, সাবেক কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই নিবন্ধে।
আলেকজান্ডার লিটভিনেঙ্কো
রাশিয়ার এফএসবি গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। ১৯৬২ সালে রাশিয়ার ভোরোনেজ শহরে জন্ম তার। মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হন রাশিয়ান আর্মিতে, পদোন্নতি পেয়ে হন লেফটেন্যান্ট কর্নেল। গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার পর প্লাটুন কমান্ডার নির্বাচিত হন সোভিয়েত অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডিজারজিনস্কি ডিভিশনের। ১৯৮৮ সালে তিনি যোগ দেন কেজিবির কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স বিভাগে। শীঘ্রই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসে। সেখানে দায়িত্ব পান সন্ত্রাসবাদ ও সংঘবদ্ধ অপরাধের দমনের। এই বিভাগে কাজ করতে গিয়ে তাকে রাশিয়ার বিভিন্ন হটস্পটগুলোতে দায়িত্ব দেয়া হয়, পেয়েছেন বিভিন্ন পদকও।
১৯৯৮ সালে লিটভিনেঙ্কো বরিস বেরেজভস্কির মাধ্যমে পুতিনের সাথে দেখা করেন, যেদিন পুতিন বরিসের সহায়তায় এফএসবির পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। লিটভিনেঙ্কো এফএসবির দুর্নীতি পুতিনের নিকট উপস্থাপন করলে পুতিন সেটা ভালোভাবে নেননি। তাছাড়া তিনি উজবেক ড্রাগ ব্যারনে এফএসবির সংযোগ নিয়ে তদন্তের কথা জানালে পুতিন এফএসবির সুনামের কথা ভেবে তা বন্ধের উদ্যোগ নেন। একই বছর বরিস বেরেজভস্কি দাবি করেন, তাকে হত্যার জন্য এফএসবি লোক লাগিয়েছে। পরবর্তীতে লিটভিনেঙ্কো ও এফএসবির কিছু কর্মকর্তা মুখ ঢেকে প্রেস কনফারেন্স করে তা স্বীকার করেন। লিটভিনেঙ্কো গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে তিনি পালিয়ে আশ্রয় নেন লন্ডনে। সেখানে তিনি ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা MI6-এর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন।
২০০১ সালে তিনি তার বইয়ে স্বীকার করেন চেচেন যুদ্ধের জন্য কীভাবে রাশিয়া নিজে হামলা করে তার দায় চেচেনদের উপর দেয়। ২০০২ সালে আরেক বইয়ে দেখান কীভাবে আল-কায়েদাকে প্রশিক্ষণ দেয়। ২০০৬ সালে তিনি সাংবাদিক আনা পলিটকভস্কায়া হত্যার তদন্ত শুরু করেন। একই বছরে তাকে রাশিয়ার গুপ্তঘাতকের দেয়া চায়ের সাথে Polonium 210 বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়। ধারণা করা হয়, পুতিনের নির্দেশে কেজিবির এজেন্ট আন্দ্রেই লুগোভয় এবং দিমিত্রি কোভতুন তাকে এই বিষ প্রয়োগ করেন।
আনা পলিটকভস্কায়া
সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে ইউক্রেনীয় কূটনীতিক পিতা-মাতার ঘরে জন্ম নেন আনা পলিটকভস্কায়া। জন্ম ও বেড়ে ওঠা আমেরিকার নিউ ইয়র্কে। পড়াশোনা করেন মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগে। গ্রাজুয়েশন করে যোগ দেন Izvestia নামের দৈনিকে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রায়ত্ব এয়ারলাইনে চাকরি নেয়ার সুবাদে ঘুরে বেড়ান পুরো রাশিয়ায়।
সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষের দিকে গর্বাচেভ যখন সংস্কার নিয়ে আসেন, তখন রাশিয়ায় সংবাদপত্রের উপর সেন্সরশিপ কমিয়ে আনা হয়। পলিটকভস্কায়া পুনরায় সাংবাদিকতা শুরু করেন, যোগ দেন Obshchaya gazeta নামের গণতন্ত্রপন্থী সংবাদপত্রে। ১৯৯০ সালে চেচনিয়া থেকে সংবাদ প্রেরণের মাধ্যমে তার সূচনা। সংবাদের জন্য বার বার চেচনিয়া গমনের জন্য তার বিবাহবিচ্ছেদও হয়। তার রিপোর্টের দরুন ইয়েলেতসিন চেচনিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারে বাধ্য হন। পরবর্তীতে পুতিন ক্ষমতায় আসলে সাজানো বোমা হামলার দায়ে আবার সেখানে সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে সৈন্য মোতায়েন করেন। আনা সাজানো বোমা হামলার কথা তুলে ধরেন। ততদিনে তিনি Novaya gazeta–তে যোগ দেন। চেচনিয়ায় রাশিয়া কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংবাদ তুলে ধরেন।
২০০২ সালে চেচেন বিদ্রোহীরা মস্কোর একটি থিয়েটারে হামলা করে মানুষ জিম্মি রেখে সৈন্য প্রত্যাহারের দাবী জানায়। আবার, ২০০৪ সালে একটি স্কুলে হামলা করে সবাইকে জিম্মি বানিয়ে রাখে। দুটো ঘটনায় আনা ছুটে যান। ২০০৪ সালের ঘটনায় রাশিয়ান আর্মি যখন জিম্মিদের কথা তোয়াক্কা না করে বিদ্রোহীদের সাথে যুদ্ধে জড়ায়, আনা সমঝোতার জন্য ছুটে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি চা পানে অসুস্থ হয়ে যান, যাতে বিষ মেশানো ছিল।
২০০৪ সালে তিনি বই লেখেন পুতিনের কৌশল নিয়ে। ২০০৬ সালে Novaya gazeta-র একটি গল্প নিয়ে তিনি রেডিওতে ইন্টারভিউ দেন যে কীভাবে পুতিনের দোসর চেচেন প্রধানমন্ত্রীর বাহিনীর মাধ্যমে নির্যাতন চালানো হয়। এর দু’দিন পর তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার গায়ে যে বুলেট পাওয়া যায় তা রাশিয়ার বাহিনীর কন্ট্রাক্ট কিলিংয়ে ব্যবহৃত হয়। লিটভিনেঙ্কো তদন্ত করে দেখেন, তাকে হত্যার পেছনে রয়েছে এফএসবির হাত। পুতিন তদন্ত কমিটি গঠন করলেও একে ক্ষুদ্র বিষয় বলে মন্তব্য করেন। তার মৃত্যুতে পুতিনের একজন শত্রু কমলো।
বরিস নেমতসভ
তিনি একজন রাশিয়ান পদার্থবিদ, উদার রাজনীতিবিদ ও পুতিনের একজন কট্টর সমালোচক। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর তিনি ইয়াং সংস্কারবাদী নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন, ইয়েলেতসিন কর্তৃক নিযনি নোভগর্ড প্রদেশের গভর্নর। তখন তার বয়স ছিল ৩২ বছর, হয়েছিলেন রাশিয়ার সবচেয়ে কম বয়সী গভর্নর। এই প্রদেশে তার সংস্কার কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা প্রশংসিত হয়। তিনি নিয়োগ পান ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে।
তিনি সম্ভাবনাময় হয়ে ওঠেন ইয়েলেতসিনের উত্তরাধিকারী রাষ্ট্রপতি হিসেবে, কিন্তু পুতিন হয়ে যান সেই ভাগ্যবান। নেমতসভ হয়ে ওঠেন পুতিনের বিরোধী। তার দল হয়ে ওঠে বিরোধী দল। তিনি ইউক্রেনের কমলা বিপ্লবের সময় উদারপন্থীদের সমর্থন করেন, বিরোধিতা করেন পুতিনের ইউক্রেনে অভিযানের। ২০১৪ সালের ক্রিমিয়া দখলের সমালোচনা করেন নেমতসভ। ২০১৫ সালে মস্কোতে তার ইউক্রেনীয় বান্ধবীর সাথে ডিনার শেষে যখন হাঁটছিলেন, তখন তাকে পেছন থেকে কয়েকটি গুলি করা হয়। তিনি মারা গেলেও তার গার্লফ্রেন্ড অক্ষত থাকেন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়, পাঁচজন চেচেন কন্ট্রাক্ট কিলার টাকার বিনিময়ে তাকে হত্যা করে, যাদের শাস্তি দেয়া হয়। নেমতসভের বোন, যিনি ডয়চেভেলেতে চাকরি করেন, তিনি মনে করেন চেচেন নেতারা নয়, বরং এই হত্যার পেছনে তার উপরের লোকদের হাত রয়েছে। এই তদন্ত ও বিচার স্পষ্টতই সাজানো বলে ধারণা করেন অনেকে।
সের্গেই ম্যাগনিটস্কি
সের্গেই ম্যাগনিটস্কি ছিলেন একজন রাশিয়ান কর আইনজীবী ও অডিটর। জন্ম ১৯৭২ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউক্রেনে। ৯ বছর বয়সে রাশিয়ার দক্ষিণে পরিবারের সাথে স্থানান্তর হন, মেধাবী ম্যাগনিটস্কি ছোটকালেই জিতেন পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত অলিম্পিয়াড। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করেন। তারপর তিনি ফায়ারস্টোন ডানকান নামের হেমিটেজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের একটি মক্কেল প্রতিষ্ঠানে ট্যাক্স অডিটর হিসেবে যোগ দেন। হেমিটেজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানটির গলায় তখন রাশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কর ফাঁকি ও কর জালিয়াতির অভিযোগ ঝুলছে। কর অধিদপ্তর মতে অগ্রিম কর পরিশোধ করার পরও হঠাৎ মন্ত্রণালয় থেকে একদিন কিছু অফিসার এসে অফিসে অভিযান চালিয়ে হেমিটেজের রাশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও করের ডকুমেন্ট নিয়ে যায়।
এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পান সের্গেই ম্যাগনিটস্কি। তিনি প্রমাণ করেন পুলিশের অভিযান ভুল ছিল, অভিযানকে সমর্থন করতে কর জালিয়াতির নাটক সাজানো হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি সব টাকা পুনরায় দাবী করেন। তিনি রাশিয়ার ইতিহাসে সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক সবচেয়ে বড় কর জালিয়াতির তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি পুলিশের দোষ প্রমাণ করলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ম্যাগনিটস্কির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে। ১১ মাস বিনা বিচারে কারাগারে থাকার পর কোর্টে নেয়া হবে বা মুক্তি দেয়া হবে এমন শর্তের ১৩ দিন পূর্বে কারাগারে নির্যাতনের স্বীকার হয়ে মারা যান। তার মেডিকেল সেবা দরকার হলে দেয়া হয়নি। রাশিয়ান সরকার কর্তৃক হত্যা করা হয় তাকে। হেমিটেজের স্বত্বাধিকারী ব্রাউডার, যিনি পুতিনের একজন প্রতিপক্ষ, সংবাদ মাধ্যমে ম্যাগনিটস্কির হত্যার জন্য পুতিনকে দায়ী করেন। কারণ পুতিনের পশ্চিমা বিশ্বে গোপন টাকার কথাও ফাঁস করে দেন।
নাটালিয়া এস্তেমিরোভা
এস্তেমিরোভা একজন রাশিয়ান মানবাধিকার কর্মী ও রাশিয়ান মানবাধিকার সংস্থা মেমোরিয়ালের বোর্ড সদস্য। ইতিহাসে স্নাতক সম্পন্ন করার পর সাংবাদিকতা শুরু করেন রাশিয়ান ও চেচেন পিতা-মাতার সন্তান এস্তেমিরোভা। সংবাদপত্র The Voice এবং The Worker of Grozny কাজ শুরু করেন তিনি, মাঝেমধ্যে লেখেন উদারপন্থী Novaya gazeta পত্রিকায়। তিনি চেচনিয়ায় রাশিয়া সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ছিলেন সরব। গ্রোজনিতে টিভিতে কাজ করার সময় রাশিয়া সরকারের কঠিন শাস্তির শিকারদের উপর তিনি ১৩ পর্বের ডকুমেন্টারি বানিয়েছেন। তাছাড়া দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধে, যা পুতিন শুরু করেছিলেন, রাশিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় তিনি তুলে ধরেন। তিনি আনা পলিটকভস্কায়ার সাথে কাজ করেন। তার প্রকাশিত তথ্য পুতিনের রাশিয়ার জন্য দুঃসহ ছিল। ২০০৯ সালের ১৫ জুলাই তাকে নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়, পরদিনই তাকে মৃত পাওয়া যায়। মেমোরালের প্রধান দায়ী করেন চেচেনিয়ার নেতা রমজান কাদিরভকে, যিনি পুতিনের অনুগত সহকর্মী, চেচনিয়ার রাষ্ট্রপতি।
স্ট্যানিস্লাভ মার্কেলভ এবং আনাস্তাসিয়া বাবুরোভা
স্ট্যানিস্লাভ মার্কেলভ একজন মানবাধিকার আইনজীবী যিনি নাটালিয়া এস্তেমিরোভা ও আনা পলিটকভস্কায়ার সাথে একসাথে কাজ করেছেন। তিনি রুল অব ল ইন্সটিটিউটের সভাপতি ছিলেন, কাজ করেছেন নির্যাতিত চেচেনদের পক্ষে। তাছাড়া তিনি মস্কো থিয়েটার জিম্মি সংকটের শিকারদের অধিকার নিয়ে কাজ করে। অন্যদিকে আনাস্তাসিয়া বাবুরোভা একজন সাংবাদিক। Novaya gazeta’র তদন্ত সাংবাদিক হয়ে কাজ করেন নিও-নাজী গ্রুপ নিয়ে। তাকে স্ট্যানিস্লাভ মার্কেলভের সাথে একসাথে গুলি করে হত্যা করা হয়।
সের্গেই ইউশেনকভ
ইউশেনকভ একজন বর্ষীয়ান উদারপন্থী রাশিয়ান রাজনৈতিক নেতা। লিবারেল রাশিয়া নামের রাজনৈতিক দলের এই নেতা ২০০৩ সালের ১৭ এপ্রিল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ইউশেনকভ ১৯৯৯ সালের বম্বিংয়ের পেছনে ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের সংযুক্তি প্রমাণ করার প্রচেষ্টা চলান। ১৯৯৯ সালের বম্বিংয়ের জন্য চেচেনদের দোষারোপ করে দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধ শুরু করেন পুতিন।
ইয়েভজেনি প্রিগোজিন
এই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হন প্রিগোজিন। তিনি রাশিয়ান ওয়াগমার গ্রুপের নেতা। ২০১৪ সালে ইউক্রেনে পুতিনের সাপোর্টের জন্য প্রিগোজিন প্রতিষ্ঠা করেন ওয়াগনার গ্রুপ নামের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নকৃত বেসরকারি সামরিক কোম্পানি। পুতিন ২০২২ সালে ইউক্রেনে পুরোদমে আক্রমণ শুরু করেন। ওয়াগনার গ্রুপ পুতিনের হয়ে ইউক্রেনে লড়াই করে যাচ্ছিল। কিন্তু এ বছরের জুন মাসে ঘটে এক আশ্চর্যজনক ঘটনা। প্রিগোজিন করে বসলেন বিদ্রোহ। সর্বশেষ বিদ্রোহ বন্ধের ঘোষণা দিলে পুতিন তাকে বেলারুশে নির্বাসন দেন। ২৩ আগস্ট ২০২৩ অর্থাৎ এই বছরে প্রিগোজিন একটি বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান। মারা যাওয়ার পূর্বে তিনি এক ভিডিও বার্তায় তার জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। ধারণা করা হয় রাশিয়া এই বিমান দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিল, যার পেছনে রয়েছেন পুতিন।
তাছাড়া সের্গেই স্ক্রিপাল, ইউলিয়া স্ক্রিপাল এবং বরিস বেরেজভস্কি প্রমুখের মৃত্যুতে রাশিয়ার সরকার জড়িত ছিল বলা ধারণা করা হয়, যারা সবাই ছিলেন রাশিয়া ও পুতিনের সমালোচক।