- টেস্ট ম্যাচের পঞ্চম দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র ২৬ ওভারে ১৭২ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় ভারত।
- জয়ের জন্য ওভারপ্রতি ৬.৬২ রান প্রয়োজন ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
- চার উইকেট এবং চার বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
- মাত্র ৩৬ বলে পাঁচটি চার এবং চারটি ছয়ের মারে ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ভিভ রিচার্ডস।
- ১৯৮৩ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি জ্যামাইকা টেস্টের শেষদিন মাঠে গড়িয়েছিল।
২০০০ সালের ১৪ই জানুয়ারি সেঞ্চুরিয়ান টেস্টের প্রথমদিনে ৪৫ ওভার মাঠে গড়ানোর পর বৃষ্টি নামে। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন, তৃতীয় দিন এবং চতুর্থ দিনের খেলা বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। শেষ দিনে বৃষ্টি বন্ধ হলে ম্যাচ প্রাণ ফিরিয়ে আনার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিতর্কিত অধিনায়ক হ্যানসি ক্রনিয়ে ইংল্যান্ডকে এক ইনিংসের টেস্ট খেলার প্রস্তাব দেন। বৃষ্টি ভেজা মাঠে প্রথমে রাজি হয়নি ইংল্যান্ড। পরে ক্লুজনার এবং শন পোলকের ব্যাটিং দেখে ইংল্যান্ড ক্রনিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়।
পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা শেষপর্যন্ত সেঞ্চুরিয়ান টেস্টে দুই উইকেটে পরাজিত হয়। পরে ম্যাচটি নিয়ে অনেক কথা উঠলেও সেইসময়ে দর্শকদের টিকিটের পয়সা ঠিকই উসুল হয়েছিলো। মূল কথার বাইরে গিয়ে এই ম্যাচ নিয়ে এত কথা বলার কারণ হলো, ম্যাচটি নিষ্প্রাণ ড্রয়ের দিকে যাচ্ছিলো। কিন্তু ক্রনিয়ের সাহসী এবং রহস্যজনক সিদ্ধান্তে ম্যাচে প্রাণ ফিরে আসে।
এইরকম আরেকটি ম্যাচের গল্প বলা যায় ১৯৮৩ সালের ২৩-২৮ ফেব্রুয়ারি জ্যামাইকায় অনুষ্ঠিত ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচটিকে নিয়ে। তবে এই ম্যাচে কোনো সাহসী কিংবা রহস্যজনক সিদ্ধান্ত ছিলো না। ড্রয়ের পথে এগোতে থাকা জ্যামাইকা টেস্টে ঝড়ো ব্যাটিং করে দলকে জয় এনে দেন ‘কিং’ রিচার্ডস।
ম্যাচের পঞ্চম দিনে চা-বিরতিতে যাওয়ার সময় ভারতে দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেটে হাতে রেখে ১৬৪ রানে এগিয়ে ছিলো। অপরাজেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে অন্তত হারতে হচ্ছে না ভারতকে। এমনটাই অনুমান করেছিলো অনেকে। চা-বিরতির পর সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মাত্র ছয় রানের ব্যবধানে শেষ চার উইকেট তুলে নেন অ্যান্ডি রবার্টস। টেস্টের শেষ সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ২৬ ওভারে ১৭২ রান। ওভারপ্রতি রানরেট ৬.৬২! টেস্ট ক্রিকেটে ফিল্ডিংয়ে কোনোরকম বাধ্যবাধকতা থাকে না। এটা ভেবে হয়তো তখনও হারের চিন্তা মাথায় চাপেনি ভারতের ক্রিকেটারদের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জিততে হলে অবিশ্বাস্য কিছু করে দেখাতে হতো। সেই কাজটাই করলেন ভিভ রিচার্ডস। ৬৫ রানের মাথায় দলের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটলে ক্রিজে আসেন তিনি। এরপর ভারতীয় বোলারদের উপর তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র ৩৬ বলে পাঁচটি চার এবং চারটি ছয়ের মারে ৬১ রানে ঝড়ো ইনিংস খেলেন রিচার্ডস। তার ইনিংসের উপর ভর করে ২৫.২ ওভারে ছয় উইকেটে ১৭৩ রান সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অ্যান্ডি রবার্টস এবং ভিভ রিচার্ডসকে ফিরিয়ে ভারতকে ড্রয়ের স্বপ্ন দেখানো অমরনাথের খরুচে বোলিংয়েই জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অমরনাথ ২.২ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে দুই উইকেট শিকার করেছিলেন।
Featured Image: Getty Images