- একশোরও অধিক এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান পেয়েছেন নাসার গবেষকগণ।
- এক্সোপ্ল্যানেট বা বহির্গ্রহ হল এমন সব গ্রহ যেগুলো আমাদের সৌরজগৎ মিল্কি ওয়ের বাইরে অন্য কোনো নক্ষত্রকে আবর্তন করতে থাকে।
- সম্প্রতি নাসার কে২ মিশনের কেপলার মহাকাশযানের মাধ্যমে গ্রহগুলো আবিষ্কার করা হয়েছে।
- গ্রহগুলোর আকার পৃথিবীর আকার থেকে শুরু করে বৃহস্পতির আকার পর্যন্ত বলে জানিয়েছেন গবেষকগণ।
নাসার কেপলার স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে গ্রহগুলো আবিষ্কার হয়। কেপলারের বর্তমান মিশন কে২ নামে পরিচিত। জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ কেপলারের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে গ্রহগুলোর সন্ধান পেয়েছেন। ২৭৫টি গ্রহ শনাক্ত করা গেলেও এর মধ্যে ১৪৯টিকে এক্সোপ্ল্যানেট হিসেবে বিবেচনা করছেন নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। আর ৯৫টি গ্রহের ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত যে সেগুলো একেবারে নতুন এক্সোপ্ল্যানেট।
গবেষণাটির প্রধান এবং পিএইচডি অধ্যয়নরত এন্ড্রু মায়ো বলেন,
“আমরা ২৭৫টি গ্রহের বিশ্লেষণ শুরু করেছিলাম, যার মধ্যে ১৪৯টি প্রকৃত এক্সোপ্ল্যানেট হিসেবে বৈধ ছিল। এর মধ্যে ৯৫টি গ্রহ নতুন আবিষ্কারের প্রমাণ পেয়েছি।”
কে২ মিশনের জন্য ২০০৯ সালের মার্চে কেপলার মহাকাশযানটি পাঠানো হয় আমাদের বাসযোগ্য পৃথিবীর মতো আর কোনো গ্রহ আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির বাইরে আছে কিনা তা চিহ্নিত করতে। কিন্তু তার চার বছর পর ২০১৩ সালের মে মাসে যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে তা কে২ মিশনটির জন্য আর তথ্য সরবরাহ করতে পারেনি। পরবর্তীতে মিশনটির পরিচালনকারীরা সেটিকে পুনর্বিন্যস্ত করেন ও ত্রুটি সারিয়ে তোলেন।
মহাকাশযানটি যাত্রার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩,৬০০টি এক্সোপ্ল্যানেটের সন্ধান দিতে পেরেছে। একটি গ্রহ চিহ্নিত করার পর তা এক্সোপ্ল্যানেট কিনা তা জানতে এটি যে নক্ষত্রকে আবর্তন করে সেটির সৃষ্ট আলোর ফলে গ্রহটির ওপর পতিত ছায়া দ্বারা পরিমাপ করা হয়।
সেটি একটি এক্সোপ্ল্যানেট কিনা নিশ্চিত হওয়ার আগে অনেক গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। কিন্তু কাজটি বেশ কঠিন হয়ে পড়ে, কারণ গ্রহটি থেকে আসা সংকেত এবং মহাকাশের অন্যান্য সংকেত পৃথক করার জন্য বেশ জটিল প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয় বিজ্ঞানীদের।
মায়ো বলেন,
“আমরা দেখেছি যে কিছু সংকেত একাধিক তারকা সিস্টেম বা মহাকাশযান থেকে গোলমালের কারণে ঘটেছিল। কিন্তু আমরা গ্রহের সন্ধান পেয়েছি যা পৃথিবীর আকার থেকে বৃহস্পতির আকার পর্যন্ত বৃহত্তর।”
তার দল এইচডি ২১২৬৫৭ নামে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের চারপাশে দশ দিনে কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে এমন একটি গ্রহ খুঁজে পেয়েছে। উজ্জ্বল নক্ষত্রের চারপাশের গ্রহটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তাদের স্থলভিত্তিক অবজারভেটরি থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে।
মায়ো আরো বলেন:
“এক্সোপ্ল্যানেটগুলো মহাকাশ বিজ্ঞানে একটি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ ক্ষেত্র। আরো গ্রহ আবিষ্কৃত হয়, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই ধরনের গ্রহের প্রকৃতির আরও ভাল ছবি এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ করে যান, যাতে আমরা সেগুলোতে বাসযোগ্য পরিবেশ বা প্রাণের সন্ধান পাওয়া যায়।”
সর্বপ্রথম ১৯৯৫ সালে পেগাসাই বি নামের একটি বহির্গ্রহ আবিষ্কৃত হয়।
ফিচার ইমেজ : ESA/Hubble/ESO/M. Kornmesser