
লেবাননের সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় তুষারঝড়ের কবলে পড়ে ঠাণ্ডায় জমে গত তিনদিনে ১৭ জন সিরীয় শরণার্থী নিহত হয়েছেন। গতকাল লেবাননের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সূত্র এ তথ্য জানায়। তুষার ঝড়ের পর গত শুক্রবার ১৩ জন ও শনিবার আরও ২ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। রবিবার রাতে লেবাননীয় সেনারা পাহাড়ি সীমান্তে ৩০ বছর বয়সী এক নারী ও ৩ বছর বয়সী এক শিশুর মৃতদেহ খুঁজে পায়। এ পর্যন্ত নিহতদের মাঝে শিশুর সংখ্যা ৩ জন।

তুষারঝড় কবলিত শিশু; Source: Twitter
মাসনা অঞ্চল সিরিয়া থেকে লেবাননে পাড়ি দেওয়ার সবচেয়ে বড় সরকারি সীমান্ত। তুষারঝড়ের পরে গত শুক্রবার সকালে মানুষ পাচারের রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। লেবাননীয় বেসামরিক প্রতিরক্ষা দল আরও ৩ শরণার্থীকে উদ্ধার করে। মৃতদেহগুলোকে সে অঞ্চলের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নিরাপত্তা বাহিনী পথভ্রষ্ট হয়ে তুষারে আটকা পড়া আরও শরণার্থীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য তাদের খোঁজ অব্যাহত রাখে।
স্থানীয় তথ্য মতে, পাচারকারীরা তাদেরকে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় দুজন পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১১ সাল থেকে হাজার হাজার সিরীয় অধিবাসী লেবাননে পালিয়ে আসতে যে রাস্তা ব্যবহার করে আসছে, এ দলটিও সে রাস্তাই দিয়েই আসছিল।

তুষারাচ্ছাদিত লেবাননে সিরিয়ার শরণার্থী শিবির; Source: VICE News
সম্প্রতি লেবাননের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়ে ও তুষারপাত হয়। শীতকালীন ঝড় মাসনার ৩৭ মাইল উত্তরে বেকা উপত্যকায় তাবুতে বসবাসরত প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি শরণার্থীর জীবন বিপন্ন করে তুলেছে।
ইউনিসেফ এ ঘটনাকে দুঃখজনক হিসেবে মন্তব্য করেছে। ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য সংক্রান্ত পরিচালক জানান,
“সিরিয়ার অধিবাসীরা তাদের নিজেদের ও সন্তানদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মরিয়া হয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে বেড়ায়। প্রায় আট বছর ধরে চলে আসা যুদ্ধে যাদের প্রিয়জন প্রাণ হারিয়েছে তাদের পরিবারকে নিয়ে আমাদের চিন্তা রয়েছে।”
গত মাসে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানায়, লেবাননে সিরিয়ার নিবন্ধনকৃত শরণার্থীর সংখ্যা পূর্বের সাড়ে দশ লক্ষের চেয়ে কমে ৯,৯৮,০০০ জনে দাঁড়িয়েছে।
ফিচার ইমেজ: VICE News