চীনের পূর্ব উপকূলে ইরানের একটি তেলের ট্যাংকারের সাথে মালবাহী জাহাজের সংঘর্ষে দুই বাংলাদেশি সহ ৩২ জন নিখোঁজ হয়েছে। সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত তাদের কারও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
গত শনিবার সন্ধ্যায় সাংহাই থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব চীনা সাগরে ইরানী তেলের ট্যাংকার ‘সাঞ্চি’ ও চীনা মালবাহী জাহাজটির মাঝে এ সংঘর্ষ ঘটে ও সাথে সাথেই আগুন লেগে যায়। নিখোঁজ ২ বাংলাদেশি সহ বাকি সকলেই সাঞ্চির নাবিক ছিলেন বলে জানায় চীনা উপকূলবর্তী কর্তৃপক্ষ। সংঘর্ষের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে ট্যাংকারটি বিস্ফোরণের আশংকা রয়েছে। এটি প্রায় ১,৩৬,০০০ টন পরিশোধিত তেল নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছিল।
উদ্ধারকর্মীরা দ্বিতীয় দিনের মতো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজে নেমেছে। চীন চারটি উদ্ধারকারী জাহাজ ও তিনটি নৌকা এবং দক্ষিণ কোরিয়া একটি জাহাজ ও একটি হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে। এছাড়া ইউএস নেভির ৩২ জন নাবিক উদ্ধারকাজে যোগদান দিয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনীর পাঠানো একটি সামরিক বিমান প্রায় ৩,৬০০ নটিক্যাল মাইল এলাকা ঘুরেও ৩২ নাবিকের কোনো খোঁজ পায়নি। অপরদিকে মালবাহী জাহাজটির সকল নাবিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
রবিবার রাতের বৈরি আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকর্মীদের ট্যাংকে প্রবেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া তেলপোড়া বিষাক্ত গ্যাস কাজ করার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। সাধারণ অশোধিত তেলের তুলনায় এটি অনেক বেশি বিস্ফোরক ক্ষমতা সম্পন্ন হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য। কর্তৃপক্ষ জানায়, নিখোঁজ নাবিকদের উদ্ধারকার্য অগ্রাধিকার পেলেও আগুন নিয়ন্ত্রণ ও ট্যাংকারের তেলও যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়।
এদিকে সেই স্থানের পানিতে তেলের উপস্থিতির খবর পাওয়া গেছে। পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি ও পতিত তেলের পরিমাণ জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, ১৯৯১ সালের অ্যাঙ্গোলীয় উপকূলের দুর্ঘটনার পর সম্ভাব্য সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা এটি। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের দক্ষিণের কিছু দ্বীপ পূর্ব চীনা সাগরের অংশীদার। ট্যাংকটি কোনদিকে ধাবিত হবে, তা এ সকল দেশের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে সাংহাই মেরিটাইম ব্যুরো নেভিগেশন বিভাগ জানিয়েছে, সংঘর্ষটির কারণে সাংহাইয়ের পথে যান চলাচলে কোন সমস্যা হয়নি।
ফিচার ইমেজ: XINHUA/REX/SHUTTERSTOCK