- প্রথমবারের মতো যুদ্ধক্ষেত্রে নারী যোদ্ধাদেরকে ব্যবহার করছে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএস।
- সম্প্রতি আইএসের প্রচারণামূলক একটি ভিডিওতে পাঁচ নারী যোদ্ধাকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে দেখা যায়।
- বিশ্লেষকদের ধারণা, বিভিন্ন এলাকায় পরাজিত হয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ায় আইএস এখন সর্বশেষ সম্বল হিসেবে নারীদেরকেও যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছে।
1 ) BREAKING: For the first time that #ISIS official vid shows women in battle & praises women for fighting against Kurdish forces in #Syria. Not surprising. I wrote an article in November analyzing the group’s new calls for women to enter the battlefield https://t.co/wCLYJp8Iso pic.twitter.com/hRpBTKbi9S
— Rita Katz (@Rita_Katz) February 7, 2018
তথাকথিত খিলাফত ঘোষণার পর থেকে গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে এই প্রথম আইএস নারীদেরকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়েছে এবং সেই ভিডিও প্রচার করেছে। আইএসের প্রচারণামূলক চ্যানেল আল-হায়াত মিডিয়া সেন্টার থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিওর বরাত দিয়ে এ সংবাদ জানিয়েছে দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট, স্পুটনিক সহ বিভিন্ন গণমাধ্যম।
ভিডিওতে পাঁচ নারী যোদ্ধাকে আপাদমস্তক বোরকা পরিধান করে এবং আইএসের কালো পতাকা হাতে নিয়ে পিকআপ ট্রাকে চড়ে যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে দেখা যায়। যুদ্ধক্ষেত্রে এক নারীকে অন্যান্য পুরুষ যোদ্ধাদের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সিরিয়ার ইউফ্রেটিস উপত্যকায় কুর্দি অধিকৃত এলাকার দিকে লক্ষ্য করে অটোমেটিক রাইফেল থেকে গুলিবর্ষণ করতে দেখা যায়।
ভিডিওতে এক বর্ণনাকারী পুরুষ যোদ্ধাদের প্রশংসা করেন এই বলে যে, তারা ‘জিহাদের ডাকে’ সাড়া দিয়ে জেগে উঠেছে। সেই সাথে নারীদের প্রশংসা করা হয় এই বলে যে, ‘পবিত্র মুজাহিদ নারীরা’ পুরুষদেরকে অনুসরণ করে যুদ্ধ করতে এসেছে তাদের ধর্মকে রক্ষার জন্য এবং ‘কাফের কুর্দিদের’ হাতে গ্রেপ্তার হওয়া তাদের বোনদের সম্মানের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।
Isis has released footage showing female militants fighting for the first time in a lengthy new propaganda video
It hinted at policy reversal while losing territory in Iraq and Syria last year, calling on women to take up arms in battle and terror attacks https://t.co/debMBnOt3B
— Lizzie Dearden (@lizziedearden) February 7, 2018
উল্লেখ্য, সিরিয়াতে আইএস বিরোধী যুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছিল ওয়াইপিজি কুর্দিদের নেতৃত্বাধীন কুর্দি এবং আরব জোট, এসডিএফ (সিরিয়া ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস)। গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় তারা আইএসকে পরাজিত করে সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল তাদের হাত থেকে মুক্ত করে। আইএসের তথাকথিত রাজধানী রাক্বাও আইএসের হাত থেকে মুক্ত করে এসডিএফ।
একদিকে কুর্দিদের হাতে, অন্যদিকে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর হাতে এবং ইরাকে ইরাকি সেনাবাহিনীর হাতে পরাজিত আইএসের হাতে বর্তমানে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য শহরের দখল নেই। অবশিষ্ট যেসব এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে, সেগুলোতেও নিয়মিতভাবে আক্রমণ করছে বিভিন্ন বাহিনী।
Yes, #ISIS latest video showing women fighting is big, But those claiming it’s a first by the group are plain wrong. Women played an active role in the last days of the #Sirte campaign in #Libya, including by conducting suicide bombing when granted safe passage with families. pic.twitter.com/sX7AwIxS5G
— Oded Berkowitz (@Oded121351) February 8, 2018
আইএসের কর্মকান্ড নজরদারি করেন এমন বিশ্লেষকদের মতে, আইএসের শরিয়ার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, নারীদের শুধুমাত্র চরম প্রয়োজনের মুহূর্তেই অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার অনুমতি আছে। এর বাইরে অন্যান্য সময় তাদের ঘরে অবস্থান করে সন্তান লালন-পালন করার কথা। এ থেকে বোঝা যায়, আইএসের হাতে এখনও অস্ত্রের মজুদ থাকলেও বিভিন্ন যুদ্ধে তাদের লোকবলের সংখ্যা এত বেশি পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে যে, তারা নারীদেরকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছে।
আইএসে নারী যোদ্ধাদের অস্তিত্ব অবশ্য এবারই প্রথম নয়। ইরাক এবং সিরিয়াতে আইএসের অধিকৃত এলাকাগুলোতে নারী নিরাপত্তারক্ষীদের অস্তিত্ব ছিল। এছাড়াও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায় ইরাকের মসুলে এবং সিরিয়ার দেইর আজ্জুরে স্নাইপার নারীদের অস্তিত্বের কথা শোনা গিয়েছিল। লিবিয়াতে আইএসের কিছু নারী আত্মঘাতী হামলাকারীর প্রতিবেনও এসেছিল। কিন্তু আইএসের পক্ষ থেকে সরাসরি নারী যোদ্ধার অস্তিত্ব স্বীকার করা এবং সেটা প্রচার করার ঘটনা এবারই প্রথম।
ফিচার ইমেজ- Twitter