সিরিয়ার বিদ্রোহীদের হাতে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ভূপাতিত, পাইলট নিহত

  • সিরিয়ার বিদ্রোহীরা রাশিয়ার একটি যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত করেছে এবং এর পাইলটকে হত্যা করেছে।
  • গতকাল শনিবার সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে এ ঘটনা ঘটে। বিদ্রোহীদের এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থাগুলো এ সংবাদ প্রকাশ করে।
  • ঘটনার পরপরই রাশিয়া প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিদ্রোহীদের উপর আরও বিমান হামলা করে এবং অন্তত ৩০ জনকে হত্যা করে।
  • যদিও এর আগে আইএস এবং বিদ্রোহীরা রাশিয়ার একাধিক হেলিকপ্টার ধ্বংস করেছিল, কিন্তু সিরিয়ার যুদ্ধে বিদ্রোহীদের হাতে রাশিয়ার কোনো যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশের আকাশে রাশিয়ার একটি সুখয়-২৫ (Sukhoi-25) যুদ্ধবিমানে বিদ্রোহীদের নিক্ষেপ করা বহনযোগ্য এয়ার ডিফেন্স মিসাইল আঘাত করে। আঘাতের পরপরই পাইলট প্যারাস্যুট নিয়ে প্লেন থেকে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু মাটিতে নামার পর তাকে গ্রেপ্তার করতে চাইলে তাদের সাথে সংঘর্ষে পাইলটের মৃত্যু হয়।

ইদলিব সিরিয়ার বিদ্রোহীদের হাতে থাকা সর্বশেষ ঘাঁটিগুলোর মধ্যে অন্যতম। রাশিয়া-ইরান-তুরস্ক এই ত্রিদেশীয় শান্তি আলোচনা অনুযায়ী ইদলিবকে সংঘর্ষ মুক্ত এলাকায় পরিণত করার পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবে সিরিয়ার সেনাবাহিনী এবং রাশিয়ার বিমানবাহিনী সেখানে প্রতিনিয়ত বিমান হামলা করে আসছে। গত দু’মাস ধরে এই আক্রমণ আরো তীব্রতা পেয়েছে। সুখয়-২৫ প্লেনটি শনিবারে ইদলিবের মাসরান শহরে বিমান হামলা করছিল। পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর বক্তব্য অনুযায়ী, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগের ২৪ ঘন্টায় ঐ এলাকায় কয়েক ডজন বিমান হামলা সংঘটিত হয়েছিল।

এক বিবৃতির মাধ্যমে হাইআত তাহরির আল-শাম, যারা সংক্ষেপে তাহরির আল-শাম নামেই বেশি পরিচিত, তারা বিমান ধ্বংসের দায় স্বীকার করেছে। তাহরির আল-শাম হচ্ছে ইসলামপন্থী বিদ্রোহী সংগঠনগুলোর একটি জোট, যাদের নেতৃত্বে আছে আল-কায়েদার সাবেক সিরীয় শাখা জাবহাত আল-নুসরার সদস্যরা। বিবৃতিতে তারা দাবি করে, প্লেনটি নিকটবর্তী সারাকেব শহরে আক্রমণ করছিল এবং সেই আক্রমণে পলায়নরত অন্তত সাতজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছিল। এর পরপরই তারা প্লেনটি লক্ষ্য করে মিসাইল নিক্ষেপ করলে তা লক্ষ্যভেদ করে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে প্লেনটিতে মিসাইল আঘাত হানার দৃশ্য এবং পাইলটের প্যারাস্যুট নিয়ে নেমে আসতে থাকার দৃশ্য দেখা যায়। পৃথক ভিডিওতে ভূমিতে বিধ্বস্ত প্লেনটি এবং রক্তমাখা ইউনিফর্ম পরা পাইলটের মৃতদেহের দৃশ্য ধরা পড়ে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্লেনটির ধ্বংস এবং পাইলটের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করার পরপরই রাশিয়া ঐ এলাকায় আরো কিছু বিমান হামলা করে। এসব হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা TASS এর পক্ষ থেকে জানানো হয়।

রাশিয়ার কয়েকজন সংসদ সদস্য এই হামলায় ব্যবহৃত মিসাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আসতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হেদার নাওয়ার্ট দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার কোনো বাহিনীর কাছেই মানুষের দ্বারা বহন করা সক্ষম, এরকম মিসাইল সরবরাহ করেনি। তিনি এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহারে উদ্বেগও প্রকাশ করেন।

ফিচার ইমেজ- OMAR HAJ KADOUR/ REUTERS

Related Articles

Exit mobile version