- কিউবায় শুরু হচ্ছে নির্বাচন।
- অবশেষে দেশটিতে ক্যাস্ট্রো শাসনের অবসান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
- বজায় থাকছে একদলীয় ব্যবস্থা।
১৯৫৯ সালে বিপ্লবের পর এবার প্রথম ফিদেল ক্যাস্ট্রোর পরবর্তী উত্তরসূরি হয়ে সমাজতন্ত্র শাসিত কিউবাতে আসতে চলেছে নতুন কেউ। এই একদলীয় ভোটের ফলাফল জানা যাবে সামনের মাসে। সরকার এই ভোটকে প্রতি পাঁচ বছর পরপর সংঘটিত একটি কর্মকান্ড বলে জানিয়েছে, যেখানে কিউবাবাসীদের সম্ভ্যাব্য প্রতিযোগীদের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের জন্য দুটি অফিসিয়াল তালিকা দিতে বলা হয়েছে।
এই বছর ৮৬ বছর বয়সী রাউল ক্যাস্ট্রোকে সরিয়ে সদ্যগঠিত জাতীয় পরিষদ আগামী ১৯ই এপ্রিল নতুন একজন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবে। এর পূর্বে প্রায় ছয় যুগ ধরে রাউল ক্যাস্ট্রো তার ভাই ফিদেল ক্যাস্ট্রোর সাথে ক্যারিবিয়ান এই দ্বীপটিকে শাসন করেন। তাদের প্রভাব এখানে সবসময় থাকলেও রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৫৭ বছর বয়সী ভাইস প্রেসিডেন্ট মিগেল ডিয়েজ ক্যানেলের নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি। সেক্ষেত্রে, নতুন প্রেসিডেন্টের কাজ করা এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা খুব একটা সহজ হবে না। জনগণের নিরাপত্তা, সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ভাবতে হবে তাকে আরো বেশি। মিত্রশক্তি ভেনিজুয়েলা থেকে আসা সাহায্য একদিকে কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও সম্পর্ক ভালো নয়। সব মিলিয়ে বেশ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে এবার নতুন রাষ্ট্রপতিকে।
এর আগে কিউবাবাসীদের কাছে ভোট দেওয়া না দেওয়ার মধ্যে কোনো পার্থক্য ছিল না। তবে এবারই প্রথম পরিবর্তন আসতে চলেছে। অফিসিয়াল দুটি তালিকার মাধ্যমে ১৪টি প্রাদেশিক পরিষদের ১,২৬৫ জন এবং জাতীয় পরিষদের ৬০৫ জনকে নির্বাচিত করতে পারবে তারা। সবচাইতে বড় ব্যাপার হল, এদের সবাইকে কমিউনিস্ট পার্টির হতে হবে এমন নয়। সংসদীয় প্রার্থীদের মধ্যে রাউল ক্যাস্ট্রো এবং তার সাথে বিপ্লবে অংশ নেওয়া আরো দুজন আছেন। তবে দ্বিতীয় পঞ্চবছর শাসনের পর এপ্রিল মাসে এমনিতেও ক্ষমতা থেকে চলে যাবেন বলে জানান রাউল ক্যাস্ট্রো। সবাই নতুন কিছু চাইছে। একটা পরিবর্তন দরকার।
প্রতিপক্ষহীন নির্বাচন
কিউবায় নির্বাচনের যাত্রা শুরু হয় গত বছরে, যেখানে দুই বা ততোধিক প্রার্থীর মধ্যে কিউবাবাসী প্রায় ১২,৫১৫ জন ওয়ার্ড প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পায়। জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের প্রার্থীদের ৫০ শতাংশ ওয়ার্ড প্রতিনিধি। আর বাকিরা এসেছেন শিল্প, সাহিত্য, খেলাধুলা ও অন্যান্য বিভাগ থেকে। প্রতিযোগীদের নামের তালিকায় কিউবার একদলীয় ব্যবস্থার প্রতিপক্ষ কেউ নেই। অবশ্য ভোটারদের কাছে ভোট না দেওয়ার উপায়ও আছে। সেক্ষেত্রে তাদেরকে নিজেদের ভোটের স্থান খালি রাখতে হবে বা নষ্ট করে ফেলতে হবে। অনেকের মতে, এই পদ্ধতিতে ভোট না দিয়ে মানুষের করার খুব বেশি কিছু থাকে না। একদলীয় নির্বাচনের সমর্থকেরা অবশ্য এই নির্বাচনকে দেশের ব্যবস্থার প্রতি নিজেদের সমর্থন প্রকাশের মাধ্যম বলে মনে করেন।
ফিচার ইমেজ: HuffPost Maghreb