- বিখ্যাত পদার্থবিদ ও জ্যোতির্বিদ স্টিফেন হকিং আজ ১৪ই মার্চ মৃত্যুবরণ করেছেন।
- মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
- স্টিফেন হকিংয়ের পরিবার তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মোটর নিউরন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্টিফেন হকিং শারীরিকভাবে অচল ছিলেন। শারীরিক অচলাবস্থা সত্ত্বেও মস্তিষ্কের প্রবল ক্ষমতায় পদার্থবিজ্ঞান ও বিশ্বসৃষ্টিতত্ত্বে তিনি রেখেছিলেন বিশাল অবদান।
১৯৮৮ সালে আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম লিখে হকিং বিশ্বব্যাপী একইসাথে নন্দিত ও বিতর্কিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালে দ্য গ্র্যান্ড ডিজাইন লিখে আবারো তিনি আলোচনায় আসেন এবং আরো গুরুতরভাবে বিতর্কিত হন। এসব বইয়ের মাধ্যমে তিনি বিখ্যাত হলেও তার মূল্যবান অবদান হলো পদার্থবিজ্ঞান ও জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের গবেষণাগুলো।
স্টিফেন হকিংয়ের মৃত্যুর পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রদান করা হয়। বিবৃতিতে তার কন্যা লুসি হকিং বলেন, “আমাদের প্রাণপ্রিয় বাবার মৃত্যুতে আমরা আমরা অত্যন্ত মর্মাহত”।
১৯৪২ সালের ৮ই জানুয়ারি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন স্টিফেন হকিং। ১৯৫৯ সালে ন্যাচারাল সায়েন্স নিয়ে পড়ার জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। এরপর ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন হকিং।
১৯৬৩ সালে হকিং মোটর নিউরন ডিজিজে আক্রান্ত হন এবং তাকে বলা হয়, তিনি বেশি হলে আর মাত্র ২ বছর বাঁচবেন। ১৯৭৪ সালে তার বিখ্যাত ‘হকিং বিকিরণ তত্ত্ব’ প্রকাশিত হয়। এখানে তিনি বলেন, পদার্থবিজ্ঞানের বিশেষ কিছু নিয়মের অধীনে ব্ল্যাকহোল থেকেও বিকিরণ নিঃসরিত হতে পারে। উল্লেখ্য, ব্ল্যাকহোল সকল প্রকার বিকিরণই নিজের দিকে টেনে নেয়। কোনোকিছুই এর আকর্ষণ থেকে ফিরে আসতে পারে না। সেক্ষেত্রে কোন প্রপঞ্চে সেখান থেকে বিকিরণ বের হতে পারে তা হকিং ব্যাখ্যা করেছেন।
১৯৮৮ সালে তার লিখিত বই আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম প্রকাশিত হয়, যেটির ১০ মিলিয়নেরও বেশি পরিমাণ কপি বিক্রি হয়েছিল। ২০১৪ সালে তার জীবনের উপর ভিত্তি করে দ্য থিওরি অব এভরিথিং নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। এখানে তার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন এডি রেডমাইন। এই চরিত্রে অভিনয় করে সেবার অস্কার পুরষ্কারও জিতে নিয়েছিলেন রেডমাইন।
His passing has left an intellectual vacuum in his wake. But it’s not empty. Think of it as a kind of vacuum energy permeating the fabric of spacetime that defies measure. Stephen Hawking, RIP 1942-2018. pic.twitter.com/nAanMySqkt
— Neil deGrasse Tyson (@neiltyson) March 14, 2018
সারা জীবন ধরে মহাবিশ্বের রহস্যকে অনুধাবন করতে চেয়েছিলেন হকিং। তার গবেষণায় জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে প্রভূত অগ্রগতি সাধিত হয়েছিল। হকিংয়ের মৃত্যুতে এ মহাবিশ্ব যেন তার এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারালো।
Featured Image: Metro