প্রত্যাবাসনের আগে মিয়ানমারের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থী নেতাদের দাবি

বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নেতারা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর পূর্বে মিয়ানমার সরকারের কাছে তাদের দাবির একটি তালিকা তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরে পাঠানোর জন্য উদ্যোগ নিলেও এ আবেদন তাদের এই উদ্যোগের প্রতি একটি চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত দেয়। রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর সহিংসতায় আতঙ্কিত। তারা মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে ‘অস্থায়ী শিবিরে’ দীর্ঘদিন অবস্থান করা নিয়েও শঙ্কিত।

কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে ছয় জন বয়োজ্যেষ্ঠ রোহিঙ্গা একজন রয়টার্স সাংবাদিককে তাদের দাবির একটি তালিকা দেখান। তাদের মতে তারা রাখাইনের ৪০টি গ্রামের প্রতিনিধিত্ব করছেন। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সাড়ে ছয় লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর অধিকাংশই কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছে। বার্মিজ ভাষায় হাতে লেখা এ আবেদনে বলা হয়, দাবি মানা না হলে কোনো মুসলিম রোহিঙ্গা প্রধানত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মিয়ানমারে ফিরে যাবে না।

শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গা; Source: The Japan Times

আবেদনে দাবি করা হয়, মিয়ানমার সরকারকে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিতে হবে যে রোহিঙ্গাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে অস্বীকৃত নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এবং দেশের স্বীকৃত সংখ্যালঘু দলের তালিকাভুক্ত করা হবে। শরণার্থীরা অধিকৃত জায়গাগুলো তাদের ফেরত দিতে হবে এবং তাদের বাড়ি-ঘর, বিদ্যালয় ও মসজিদ পুনর্নির্মাণ করতে হবে।

আরও দাবি করা হয়, সামরিক বাহিনীকে তাদের হত্যা, লুট ও ধর্ষণের জন্য দায়ী করতে হবে এবং পাল্টা অভ্যুত্থানের কারণে আটককৃত নির্দোষ রোহিঙ্গাদের মুক্তি দিতে হবে।

আবেদনে আরও বলা হয় যে, তারা চায় সরকারি গণমাধ্যম ও ফেসবুক পেজে তাদেরকে ছবিসহ ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা বন্ধ করতে হবে।

মিয়ানমার সরকারের সংবাদপত্রগুলো এ সপ্তাহে ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’র সদস্য হিসেবে অভিযুক্তদের ছবিসহ একটি তালিকা সম্বলিত ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।

সামরিক বাহিনী জানায়, তারা শুধু বৈধ কার্যপ্রণালী পরিচালনা করেছিল। তারা কোনো ধরনের যৌন নিপীড়নের কথা অস্বীকার করে।

কিন্তু গত সপ্তাহে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর চারজন সদস্য মংডুর নিকটস্থ ইন ডিন গ্রামের দশজন রোহিঙ্গা হত্যার সাথে জড়িত রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেনাবাহিনীর এক প্রতিবেদনে। তবে নিহত ১০ রোহিঙ্গাকে সেনা সদস্যরা ‘সন্ত্রাসী’ বলে দাবি করেছে।

ফিচার ইমেজ: DNA India

Related Articles

Exit mobile version