ব্রেকিং: মে মাসেই জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করছে যুক্তরাষ্ট্র

  • আগামী মে মাসেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে অবস্থিত দেশটির দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করতে যাচ্ছে।
  • আগামী ১৪ মে, ইসরায়েলের ৭০তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে দূতাবাস স্থানান্তরের এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।
  • উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছে বার্তাসংস্থা এপি এবং ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ জানায়, প্রাথমিকভাবে জেরুজালেমের অ্যারনোনা এলাকায় অস্থায়ী মার্কিন দূতাবাস চালু করা হবে। অ্যারনোনাতে আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের একটি কনস্যুলার শাখা আছে, যেখান থেকে পাসপোর্ট তৈরি, ভিসা প্রদানসহ বিভিন্ন ধরনের কনস্যুলার সেবা প্রদান করা হয়। সেই কনস্যুলার ভবনের একটি অংশকেই আপাতত দূতাবাস পর্যায়ে উন্নীত করা হবে।

ওদিকে মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন গতকাল বৃহস্পতিবার দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর সংক্রান্ত একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন। এর পরপরই আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, নতুন দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে ২০১৮ সালের ১৪ মে, ইসরায়েলের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন।

পরিকল্পনানুযায়ী ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রাইডম্যান এবং তার সাথে ছোট একটি দল আগামী ১৪ মে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু করবেন। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে দূতাবাসের কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো হবে এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদেরকেও জেরুজালেমে নিয়ে আসা হবে। নতুন অস্থায়ী দূতাবাসটিকে পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসে পরিণত করার পূর্বে তার জন্য জেরুজালেমের সুবিধাজনক কোনো স্থানে নতুন জায়গা বাছাই করা হতে পারে।

ইসরায়েলের যোগাযোগমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ আজ শুক্রবার দূতাবাস স্থানান্তর করার সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জেরুজালেমকে ‘ইসরায়েলের রাজধানী’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন,

ইসরায়েলের ৭০তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে মার্কিন দূতাবাসকে আমাদের রাজধানীতে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্তের জন্য আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানাতে চাই। এর চেয়ে বড় আর কোনো উপহার হতে পারে না। এটা হচ্ছে সবচেয়ে ন্যায়পরায়ণ এবং সঠিক পদক্ষেপ। ধন্যবাদ, বন্ধু।

মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি আরো জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দূতাবাস স্থানান্তরের খরচ বাবদ রিপাবলিকান দলের বিখ্যাত দাতা শেলডন অ্যাডেলসনের কাছ থেকে অনুদান গ্রহণের সিদ্ধান্ত বিবেচনা করছে। শেলডন অ্যাডেলসন নতুন দূতাবাস চালুর আংশিক খরচের যোগান দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দূতাবাস সংক্রান্ত কাজে ব্যক্তিগতভাবে কারো অনুদান গ্রহণের ব্যাপারে আইনী কোনো জটিলতা আছে কিনা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনজীবীরা তা খতিয়ে দেখছেন।

উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ব জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে ইসরায়েলে অবস্থিত দেশটির দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, জেরুজালেমের উপর ইসরায়েলের দখলদারিত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। এখন পর্যন্ত যেসব রাষ্ট্রেের সাথে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে, তাদের সবার দূতাবাস রাজধানী তেল আবিবে অবস্থিত।

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী চার সদস্যেই সে সময় এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে তা কার্যকর হয়নি। পরবর্তীতে সাধারণ পরিষদেও বিপুল ভোটে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হয়, তবে সে সিদ্ধান্ত মানার কোনো বাধ্য বাধকতা যুক্তরাষ্ট্রের নেই। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মাঝামাঝি দূতাবাস স্থানান্তরের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই প্রায় এক বছর এগিয়ে এনে আগামী মে মাসেই দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

ফিচার ইমেজ- Ahmad Gharabli/AFP/Getty Images

Related Articles

Exit mobile version