প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষা নিষিদ্ধ করেছে ইরান। একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকা গত রবিবার এ খবর প্রকাশ করে।
অল্প বয়সে ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণের ফলে পশ্চিমা সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের পথ খুলে যায়- ইসলামিক নেতাদের এই হুঁশিয়ারির পর উদ্যোগটি নেয় ইরান সরকার। ইরানের উচ্চ শিক্ষা পরিষদের প্রধান মেহদি নাভিদ-আধাম বলেন, “আনুষ্ঠানিক পাঠ্য তালিকায় সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ইংরেজি শিক্ষা দেওয়া আইন বিরোধী।” তিনি আরও জানান যে, শিক্ষার্থীদের ইরানি সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ শেখানোর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। তাই এ সময় ফারসি ও ইরানি সংস্কৃতি উন্নীত করা উচিত।
সাধারণত ইরানে ইংরেজি শিক্ষা দেওয়া হয় মাধ্যমিক পর্যায়ে, ১২-১৪ বছর বয়সে। কিন্তু কিছু কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এর চেয়ে কম বয়সী শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ক্লাস নেওয়া হয়। কিছু শিক্ষার্থী স্কুলের পরে বেসরকারি ভাষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায়। আবার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের সুবিধাপ্রাপ্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরাও ইংরেজি শিক্ষালাভ করে থাকে।
ইরানের ইসলামিক নেতারা প্রায়ই সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ব্যাপারে সতর্ক করতেন। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইরানের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নার্সারি পর্যায়ে ইংরেজি শিক্ষা ছড়িয়ে পড়ায় পুরো ২০১৬ সাল জুড়ে ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেন। তার মতে, এটি দেশের শিশু, তরুণ ও যুবকদের মধ্যে বিদেশী সংস্কৃতি উত্তরণের মাধ্যম।
উল্লেখ্য, দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ৮০টি শহরে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে ২১ জন নিহতের ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে এই ঘোষণা দিলো ইরান। কিন্তু এ ধরনের বিক্ষোভের সাথে ঘোষণাটির কোনো সম্পর্কের উল্লেখ ছিল না। বিক্ষোভটির কারণ হিসেবে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করছে। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও সৌদি আরব এর সাথে সম্পর্কিত।
বিক্ষোভ থেমে গেলেও সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতায় সীমারেখা টানার জন্য প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি দেশের কট্টরপন্থীদের দ্বারা চাপের মুখে আছেন। ২০১৩ সালে তিনি ক্ষমতায় আসার পরে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্বাধীনতা সম্প্রসারিত করেন।
ফিচার ইমেজ- Atta Kenare/AFP/Getty Images