“চলচ্চিত্রে এডিটিংয়ের ভূমিকা: যেভাবে শুরু হলো ফিল্ম এডিটিং” নামক লেখার দ্বিতীয় ভাগ এটি। আগের লেখায় আমরা জানতে পেরেছি কী করে ইতিহাসের প্রথম চলচ্চিত্র তৈরির ২০ বছরের মধ্যে লুমিয়ার ব্রাদার্স থেকে শুরু করে এডউইন এস পোর্টার ফিল্মে এডিটিং কৌশল ব্যবহার করে একে একটি মঞ্চায়িত শিল্প থেকে টেলিভিশন উপযোগী করেছেন।
যেমনটি আগে বলা হয়েছে, এতদিন এডিটিং বলতে চলচ্চিত্রে বোঝাতো আলাদা আলাদা ক্যামেরা শট নিয়ে তাদেরকে পর্যায়ক্রমে সাজানো। এক্ষেত্রে শটই মুখ্য ছিল। কিন্তু কালজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা ডেভিড ওয়ার্ক গ্রিফিথ (ডি ডব্লিউ গ্রিফিথ) সর্বপ্রথম উপলব্ধি করলেন যে, চলচ্চিত্র নির্মাণে ক্যামেরাও একটি অসামান্য ভূমিকা রাখে।
তার আবিষ্কৃত এডিটিং এবং চলচ্চিত্র পরিচালনা কৌশলগুলো সিনেমা নির্মাণ শিল্পের নকশা চিরদিনের জন্য বদলে দেয়। আমেরিকাতে কাজ করলেও তার ফিল্মের সাফল্য অন্যান্য দেশ, যেমন- সোভিয়েত ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি ইত্যাদি দেশের নির্মাতাদের অনুপ্রাণিত করে। চলুন, কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই এমন কী করেছিলেন গ্রিফিথ।
গ্রিফিথের পারিবারিক জীবন ও শৈশব
১৮৭৫ সালে আমেরিকার কেন্টাকি স্টেটের ওল্ডহ্যাম কাউন্টিতে জন্ম হয় গ্রিফিথের। তার বাবা জ্যাকব ওয়ার্ক গ্রিফিথ স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনফেডারেট আর্মির একজন কর্নেল ছিলেন। কিন্তু গ্রিফিথ যখন ১০ বছরের বালক, তখনি তিনি বাবাকে হারান। এরপরে মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনার পরেই তার পরিবার অর্থকষ্টে পড়ে।
পড়া ছেড়ে দিয়ে ১৮ বছর বয়সে গ্রিফিথ জীবিকার্জনে নেমে পড়েন। বাড়ি বাড়ি জ্ঞানকোষ বিক্রি করতেন তিনি। নিয়েছিলেন এক বইয়ের দোকানে কেরানির কাজ, লিফটম্যানও ছিলেন কিছুদিন। কিন্তু তিনি স্বপ্ন দেখতেন লেখক হওয়ার।
বন্ধুর পরামর্শে সেই সময়ে গজিয়ে উঠা ফিল্ম প্রোডাকশন কোম্পানিগুলোর জন্য ‘দৃশ্য’ কল্পনা করে লিখে দিতেন গ্রিফিথ, যদিও তার একটি লেখাও কেউ গ্রহণ করেনি। নিয়তিতে ছিল বলেই তিনি ঠিক করলেন নিউ ইয়র্কে গিয়ে এডিসন কোম্পানির পরিচালক এডউইন এস. পোর্টারকে তার লেখা দৃশ্য বিক্রি করবেন। কিন্তু পোর্টার বললেন, গ্রিফিথের লেখায় নাকি একটু বেশিই দৃশ্য ছিল!
কিন্তু তিনি এই তরুণকে হতাশ করলেন না। ১৯০৮ সালে পোর্টারের নির্মিত নির্বাক শর্টফিল্ম ‘রেস্কিউড ফ্রম অ্যান ঈগল’স নেস্ট’-এ গ্রিফিথকে একটি সামান্য চরিত্র দেয়া হয়। এভাবেই হলো গ্রিফিথের চলচ্চিত্রে অভিষেক।
বায়োগ্রাফ কোম্পানি: গ্রিফিথের গবেষণাগার
পোর্টারের শর্টফিল্মে অভিনয়ের পর গ্রিফিথ একটি প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রোডাকশন কোম্পানি ‘বায়োগ্রাফ’ এ পরিচালকের কাজ পান। ১৯০৮ সালে নিজের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অব ডলি’ নামের একটি ফিল্ম তিনি বানান, যা দর্শকরা খুবই পছন্দ করে।
তাই বায়োগ্রাফ কোম্পানির সাথে গ্রিফিথ ১৯১১ সাল পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ হন। এই ৩ বছরে গ্রিফিথ ৪৫০টির বেশি শর্টফিল্ম তৈরি করেন। জীবনের শুরুর দিকে তিনি এসব কাজে নিজের ছদ্মনাম লরেন্স গ্রিফিথ ব্যবহার করলেও ধীরে ধীরে তিনি নিজের একটি স্বতন্ত্র এডিটিং কৌশল তৈরি করে নিলেন।
গ্রিফিথের অনন্য অবদান এটিই ছিল। তিনি আগের ট্যাবলু মানসিকতা থেকে মানুষকে বের করে আনেন। ট্যাবলু মানে হচ্ছে একটি ঘটনা যেভাবে ঘটে ঠিক সেভাবে ধারাবাহিকতা মেনে চলা। বায়োগ্রাফ কোম্পানিতে তিনি শুধু ফিল্ম বানিয়েই ক্ষান্ত হলেন না, বরং প্রতিটি ফিল্মে তিনি শট আর ক্যামেরা চলাচল নিয়ে গবেষণা করতে লাগলেন।
‘কন্টিনিউটি এডিটিং’: গ্রিফিথ চলচ্চিত্রে নিয়ে এলেন নাটকীয়তা
জর্জ মেলিয়েঁ বা এডউইন এস পোর্টার- কেউই তাদের চলচ্চিত্রে কোনো নাটকীয়তা দেখাননি। পোর্টার শুধু একটি সাজানো, নিরবচ্ছিন্ন ঘটনা বলতে চাইলেন, কিন্তু দর্শককে গল্পে আকৃষ্ট করতে পারলেন না। সে কাজটিই করলেন গ্রিফিথ। পাগলাটে স্বভাবের ছিলেন গ্রিফিথ, ছিলেন কিছুটা স্বপ্নকাতুরে। তাই ক্যামেরাকে স্থির রাখার নিয়ম ভাঙলেন তিনি।
তিনি আবিষ্কার করলেন ‘কন্টিনিউটি এডিটিং’। এর অর্থ প্রত্যেকটি শটকে এমনভাবে কাটা এবং ধারণ করা, যেন তা একটি ধারাবাহিক কাজকে নির্দেশ করে। ঠিক মেলিয়েঁর স্টপ মোশান ফটোগ্রাফির মতো। এছাড়াও গ্রিফিথ আরও যা যা ‘আবিষ্কার’ করেলেন তা হলো-
১) কাট ইন শট
ফিল্মের ক্ষেত্রে ‘কাট ইন’ শটের অর্থ হচ্ছে যখন একটি দৃশ্য সম্পূর্ণ দেখানোর পরে ঐ দৃশ্যে থাকা কোনো একটি বস্তুর উপর ফোকাস করে শুধু ঐ বস্তুকেই দেখানো হয়।
এই নতুন কৌশলটি গ্রিফিথ তার ফিল্ম দ্য গ্রিসার’স গটলেট (১৯০৮) এ প্রথম ব্যবহার করেন। সেখানে দেখা যায়, প্রথম একটি দৃশ্যে একটি গাছ ভেঙে পড়ছে, যার নিচে একজন নারী ও একজন পুরুষ দাঁড়িয়ে আছেন। দর্শক দেখে বুঝতেই পারছে যে এখন গাছটি তাদের উপর ভেঙে পড়বে। কিন্তু পরের দৃশ্যে দেখা যায় গাছটি নিচে পড়ে আছে আর পুরুষটি নারীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে।
সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারণা দর্শক পেল। বোঝা গেল যে, নারী পুরুষটিকে শেষ মুহূর্তে বাঁচিয়েছেন, যদিও এমন কোনো দৃশ্য দেখানো হয়নি।
২) ক্রস কাটিং বা ইন্টারকাটিং শট
এই একটি শট আমরা যে কত নতুন চলচ্চিত্রে দেখছি তার হিসেব নেই। কিন্তু গ্রিফিথের আগে কেউ এই শটের কথা ভাবেনি। ক্রস কাটিং বা ইন্টারকাটে দুটি ভিন্ন স্থানে, দুটি ভিন্ন কাজকে একইসাথে হতে দেখা যায়। টেনিসনের কবিতা ‘এনোক আর্ডেন’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে গ্রিফিথ একটি ফিল্ম বানান আফটার ম্যানি ইয়ার্স (১৯০৮), যেখানে প্রথম এই শট ব্যবহার করা হয়।
এতে দেখা যায়, জাহাজ ভেঙে দ্বীপে আটকে থাকা এক লোকের অবস্থা। একইসাথে পর পর শটের মাধ্যমে দেখা যায় তার বাড়িতে রেখে আসা স্ত্রী তাকে না পেয়ে কী কী করছে। ক্রস কাটিং পদ্ধতি সময় আর অতিরিক্ত শটের ঝামেলা দূর করে দিল। এখন এমন কোনো চলচ্চিত্র পাওয়া যাবে না যেখানে ক্রস কাটিং ব্যবহার করা হয় না।
যা-ই হোক, বায়োগ্রাফের বাকি নির্মাতারা এই নতুন আবিষ্কারে নাখোশ ছিলেন। তারা ভাবলেন, এভাবে পর পর দুই রকম কাজ দেখালে দর্শক কাহিনী বুঝতে পারবে না, খেই হারিয়ে ফেলবে। এটি ভুল প্রমাণিত হয়, যখন দর্শক আফটার ম্যানি ইয়ার্সকে খুবই পছন্দ করে। তাই পরের বছর ‘দ্য লোনলি ভিলা’ (১৯০৯) তে গ্রিফিথ ২টি নয়, ৩টি কাজ সমান্তরালে দেখালেন।
ফিল্মটিতে থাকে ৩টি পক্ষ- একদল ডাকাত যারা একটি বাড়ি আক্রমণ করতে যাচ্ছে, সেই বাড়িতে আটকে থাকা একজন মহিলা ও তার বাচ্চারা, আর মহিলার স্বামী যিনি অফিস থেকে ছুটে আসছেন তাদের বাঁচাতে। এই ত্রিপক্ষের পর্যায়ক্রমিক শট দর্শকের মধ্যে একটি চাপা উত্তেজনা তৈরি করলো, যা গ্রিফিথের আগে কেউ করতে পারেনি।
সময়ের সাথে সাথে গ্রিফিথ ক্যামেরার চলাচল আর শটের সিকোয়েন্স বদলাতে বদলাতে প্রতিনিয়তই দর্শককে নতুন কিছু উপহার দিতে লাগলেন। কিন্তু বায়োগ্রাফ ছিল একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, যাদের দর্শক ‘হারানোর’ ভয় ছিল। ফলে একসময় গ্রিফিথ এই কোম্পানি থেকে সরে গিয়ে নিজেই কিছু স্বাধীন চলচ্চিত্র বানানো শুরু করলেন।
দ্য বার্থ অব অ্যা নেশন (১৯১৫)
১৯১৩ সালে বায়োগ্রাফ থেকে সরে গিয়ে গ্রিফিথ নিজের একটি প্রোডাকশন কোম্পানি খোলেন, ‘ডেভিড ডব্লিউ. গ্রিফিথ কর্পোরেশন’ নামে। নিজের প্রোডাকশন কোম্পানির মাধ্যমে তিনি ইতিহাসের প্রথম সফল মোশান পিকচার তৈরি করেন- দ্য বার্থ অব অ্যা নেশন (১৯১৫)।
দ্য বার্থ অব অ্যা নেশন (১৯১৫) এ গ্রিফিথ তার আবিষ্কৃত যাবতীয় এডিটিং কৌশল ব্যবহার করলেন। বার্থ অব অ্যা নেশনের কাহিনী ছিল আমেরিকার গৃহযুদ্ধ ও প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের হত্যাকাণ্ড। এই চলচ্চিত্রকে বলা হয় সিনেমা জগতের প্রথম ‘ব্লকবাস্টার’ সিনেমা, যা বক্স অফিসের অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিল। এই মুভির প্রধান চরিত্র অভিনেত্রী লিলিয়ান গিশ একটি সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, “এই মুভিটি কত টাকা কামিয়েছিল এর হিসেবও তারা গুলিয়ে ফেলেছিলেন!”
এই মুভিতে গ্রিফিথ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শট ব্যবহার করেন-
৩) ক্লোজ আপ শট
গ্রিফিথকে অনেক সময় ক্লোজ আপ শটেরও জনক বলা হয়। বার্থ অব অ্যা নেশন মুভিতে গ্রিফিথ হত্যার কয়েক মুহূর্ত আগে লিংকন, তার দেহরক্ষী এবং হত্যাকারীর চেহারা ক্লোজ আপ শটের মাধ্যমে দেখান। এতে যেমন ভয়াবহ এক নাটকীয়তা আর সাসপেন্স তৈরি হয়, তেমনি প্রতিটি চরিত্রের মানসিক অবস্থা সম্পর্কেও দর্শক ধারণা পায়।
ক্যামেরার কলাকৌশলের অভিনবত্বের জন্য দর্শকমহলে দ্য বার্থ অব অ্যা নেশন অনেক স্বীকৃতি পায়, তবে সেই সাথে কুড়ায় প্রচুর বদনামও। গ্রিফিথ তার প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য বেছে নিয়েছিলেন এমন একটি গল্প যেখানে শ্বেতাঙ্গদের দেখানো হয়েছে নায়ক বা ভালো মানুষ হিসেবে। আর কৃষ্ণাঙ্গদেরকে হেয় করা হয়েছে। তাই দ্য ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব কালারড পিপল (এনএএসিপি) এই মুভিটির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়। কিছু দেশে এই মুভিটিকে বাজেয়াপ্তও ঘোষণা করা হয়। তাই বার্থ অব অ্যা নেশনকে সিনেমার জগতে প্রথম সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর মুভিও বলা হয়।
ইনটলারেন্স (১৯১৬)
বার্থ অব অ্যা নেশন-এ মানুষের অত্যধিক সমালোচনার শিকার হয়ে গ্রিফিথ ভাবলেন আরেকটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এর জবাব দেবেন। ১৯১৬ সালে তিনি নির্মাণ করলেন প্রায় আড়াই ঘণ্টার এক সিনেমা- ইনটলারেন্স। এই মুভিতেও ক্যামেরা ও সেট ডিজাইনের মাধ্যমে খুবই নান্দনিকভাবে গ্রিফিথ দেখালেন কী করে যুগের পর যুগ মানুষ সমাজের কুসংস্কার আর পাপাচার সহ্য করে আসছে।
এই মুভিতে তিনি আরেকটি কালজয়ী শট প্রথমবারের মতো ব্যবহার করেন-
৪) ফ্ল্যাশ ব্যাক শট
বর্তমান ঘটনা দেখাতে দেখাতে হঠাৎ অভিনেতাদের পুরনো কিছু মনে পড়লে দেখবেন সাদা-কালো ফ্রেমে তাদের অতীত দেখায়। এটিই ফ্ল্যাশ ব্যাক শট। এটি প্রথম ব্যবহার করেন গ্রিফিথ ইনটলারেন্স মুভিটিতে। ক্লোজ আপ ও ফ্ল্যাশ ব্যাক শট এত জনপ্রিয়তা লাভ করে যে পরবর্তীতে অন্যান্য সব দেশের নির্মাতারা তাদের চলচ্চিত্রে এই শটগুলো ব্যবহার করতে লাগলেন।
গ্রিফিথ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
উপরে উল্লিখিত কাজ ছাড়াও গ্রিফিথ আরও এমন অনেক কাজ করেছেন যার মাধ্যমে চলচ্চিত্র শিল্প চিরদিনের জন্য বদলে গেছে। আজ আমরা যে ধরনের চলচ্চিত্র দেখি, সেটি সম্ভব হতো না যদি ডি. ডব্লিউ. গ্রিফিথ এডিটিং আমাদের শিখিয়ে না দিতেন।
গ্রিফিথের আগে সব সিনেমাই নিউ ইয়র্কে ধারণ করা হতো। কিন্তু একমাত্র গ্রিফিথই একদিন ক্যালিফোর্নিয়ার ‘হলিউড’ নামের একটি গ্রাম খুঁজে পেলেন। সেখানেই তিনি তার সব সিনেমার শুটিং করেছেন। নিউ ইয়র্ক থেকে চলচ্চিত্রকে হলিউডে নিয়ে যান বলে গ্রিফিথকে বলা হয় হলিউডের জনক।
১৯১২ সালে ‘দ্য মাস্কেটিয়ার্স অব পিগ অ্যালি’ নামের গ্রিফিথের মুভিটিকে বলা হয় ইতিহাসের প্রথম ‘গ্যাংস্টার’ ফিল্ম। তার থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই মারটিন স্করসেইজি তার বিখ্যাত গ্যাংস্টার ফিল্ম ‘গুডফেলাস’ (১৯৯০) তৈরি করেন।
বার্থ অব অ্যা নেশন যতটা জনপ্রিয় হয়েছিল গ্রিফিথের পরবর্তী কোনো ফিল্মই সেই চূড়াটি ধরতে পারেনি। ইনটলারেন্স ব্যবসায়িকভাবে ব্যর্থ একটি চলচ্চিত্র ছিল, যার ঋণ শোধ করতে গিয়েই গ্রিফিথ কপর্দকশূন্য হয়ে পড়েন। মড়ার উপর খরার ঘা হয়ে এলো নতুন নতুন প্রযুক্তি। মানুষ আরও ভালো প্রযুক্তি পেয়ে ভুলে যেতে থাকলো গ্রিফিথকে।
শব্দের প্রযুক্তি যোগ হওয়ার পর গ্রিফিথ কেবল দুটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন- আব্রাহাম লিংকন (১৯৩০) ও দ্য স্ট্রাগল (১৯৩১)। এটিই ছিল মৃত্যুর আগে তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র।