প্রতিটি গণতান্ত্রিক দেশেই রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় রাজনীতি আবর্তিত হয়। আবার প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই কিছু মূলনীতি বা আদর্শ থাকে যেগুলোকে কেন্দ্র করে সে দলগুলো আবর্তিত হয়। সব গণতান্ত্রিক দেশেই একদলীয়, দ্বিদলীয় বা বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
গণতান্ত্রিক দেশে জনগণের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভোটে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শাসনকর্তা নির্বাচিত হয়ে থাকে। শাসনক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্য বা বিদ্যমান শাসকগোষ্ঠীকে পরাজিত করতে অনেক সময় কয়েকটি রাজনৈতিক দল মিলে একটি জোট গঠন করে। জোট রাজনীতির চর্চা একমাত্র বহুদলীয় গণতান্ত্রিক দেশগুলোতেই হয়ে থাকে।
বাঙালির প্রথম জোট
বাংলাদেশ তথা পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা প্রথম যে রাজনৈতিক জোটের সাথে পরিচিত হয়েছিল সেটি ছিল ‘যুক্তফ্রন্ট’। সদ্য সৃষ্ট পাকিস্তানের পূর্বাংশে মুসলিম লীগ মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানেই নিজেদের জনপ্রিয়তা হারায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগকে পরাজিত করার অভিপ্রায়ে ১৯৫৩ সালের ১৪ নভেম্বর যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই বছর ৪ ডিসেম্বর মাওলানা ভাসানীর ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের ‘কৃষক শ্রমিক পার্টি’, হাজী দানেশ ও মাহমুদ আলী সিলেটীর ‘গণতন্ত্রী দল’, মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামীর ‘নেজামে ইসলাম পার্টি’ ও রব্বানীর ‘খিলাফত দল’ মিলে সম্মিলিত জোট ‘যুক্তফ্রন্ট’ গঠন করে। পাঁচ দলের জোট হলেও মাওলানা ভাসানী, একে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীই ছিলেন জোটের প্রধান নেতা।
সোহরাওয়ার্দী ছিলেন পুরো পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি; আর, মাওলানা ভাসানী ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি। শেরে বাংলা কৃষক শ্রমিক পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। গণতন্ত্রী দল ছিল বামপন্থী ও অসাম্প্রদায়িক ভাবধারার। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একই বছর ১৯ জানুয়ারি। একদমই নতুন একটি দল। এ ফ্রন্ট সর্বসাধারণের কাছে হক-ভাসানীর যুক্তফ্রন্ট নামেই পরিচিতি পেয়েছিল। ১৯৫৪ সালের নির্বাচন উপলক্ষে যুক্তফ্রন্ট ২১ দফার একটি ইশতেহার প্রকাশ করেছিল যার সবগুলো দাবিই পূর্ব পাকিস্তানের অধিকার ও মুক্তির সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট ছিল। এ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রতীক ছিল নৌকা; মুসলিম লীগের ছিল হারিকেন।
১৯৫৪ সালের ৮-১২ মার্চ অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ৩০৯টি আসনের মধ্যে নির্ধারিত ২৩৭টি মুসলিম আসনে যুক্তফ্রন্ট লাভ করেছিল ২২৩টি আসন। ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ পেয়েছিল মাত্র ৯টি আসন। নির্বাচনে ভূমিধ্বস পরাজয়ে পশ্চিমের শাসকগোষ্ঠী নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়। শেরে বাংলাকে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করা হয় ফ্রন্ট থেকে। ৩ এপ্রিল তিনি চার সদস্যের যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা গঠন করেন। ১৫ এপ্রিল পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীপরিষদ গঠন করা হয়। এ পরিষদে শেখ মুজিবুর রহমানও ছিলেন।
তার মাত্র দুই সপ্তাহের মাথায় গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রীসভা বাতিল করে দিয়ে শাসনতন্ত্রের ৯২ (ক) ধার অনুযায়ী প্রদেশে গভর্নরের শাসন প্রবর্তন করেন। যুক্তফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় করা হয়। বাঙালিরা চরম নৈরাশ্যের শিকার হয়। পাকিস্তানের প্রতি অবিশ্বাস ও ঘৃণার জন্ম হয় তাদের মনে।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে জোট রাজনীতি
’৭০ এর নির্বাচনে বিজয়ী জনপ্রতিনিধিগণই স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে সরকার গঠন করে। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ। নির্বাচনের আগে ও পরে সরকারবিরোধী এবং সরকারপক্ষীয় দুই ধরনের জোটই গঠিত হয়েছিল। স্বাধীনতার পরে প্রথম জোট গঠন করা হয়েছিল ১৯৭২ সালের ২৯ ডিসেম্বর। মাওলানা ভাসানীকে সভাপতি করে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয় যেটি সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। জোটের অংশীদাররা ছিল যথাক্রমে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ-ভাসানী), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট ইউনিয়ন, বাংলাদেশ সোশ্যালিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (লেলিনবাদী), শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল ও বাংলা জাতীয় লীগ।
১৫ দফা ভিত্তিক এ জোটের প্রধান দাবিগুলো ছিল– বঙ্গবন্ধু সরকারের পদত্যাগ, সর্বদলীয় সরকারের গঠন এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা। জোটের ভেতরের টানাপোড়ন ও নব সরকারবিরোধী দল জাসদের উত্থানের সাথে সাথে এটির কার্যক্রম ক্রমশ স্তিমিত হয়ে পড়ে। প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ভাসানীর নেতৃত্বে সাত দলীয় জোট গঠিত হয়। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দেড় মাসের মাথায় ৩ দফা দাবিতে ভাসানীকে নেতা করে আরেকটি জোট গঠন করা হয়। এ জোটে ছিল জাসদ, ন্যাপ ভাসানী, বাংলা জাতীয় লীগ, বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি, শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (লেলিনবাদী) ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ।
এর কিছুদিন আগে ১৯৭৩ সালের ২০ এপ্রিল সিরাজ শিকদার সমমনা ১১টি সংগঠনকে সাথে নিয়ে গঠন করে ‘জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট’। পরের বছর ১৪ এপ্রিল ভাসানীকে চেয়ারম্যান করে ‘সর্বদলীয় যুক্তফ্রন্ট’ নামীয় আরেকটি জোট গঠিত হয়েছিল।
এ তো গেল সরকারবিরোধী জোটের কথা। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এককভাবে দেশের বৃহত্তম দল হলেও স্বাধীনতা লাভের কিছুদিনের ভেতরই দলটি ‘একলা চলো’ নীতি থেকে বের হয়ে আসে। বাকশাল গঠনের পূর্বেই সরকারপক্ষীয় জোটের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পরে আওয়ামীলীগের সাথে ন্যাপ (মোজাফফর) ও সিপিবির একটি সমঝোতা তৈরি হয় এবং একই বছর অক্টোবর মাসের ১৪ তারিখে তারা গঠন করে ‘গণঐক্যজোট’। একেই বাকশালের পূর্বসূরি ধরা হয়।
বঙ্গবন্ধু–পরবর্তী বাংলাদেশে জোটের উত্থান–পতন
পঁচাত্তরে জাতির জনকের সপরিবার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরে দেশে অপ্রত্যক্ষভাবে সেনাশাসন চালু হয়। প্রত্যক্ষ সেনাশাসন চালুর একপর্যায়ে সিএমএলএ জিয়াউর রহমান ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসেন। তিনি পূর্বসূরি আইয়ুব শাহীর অনুকরণে রাজনৈতিক দল গঠনে মন দেন। সমাজের বিভিন্ন স্তরীয় ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের মানুষদের নিয়ে জাগদল গঠন করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে জাগদল, মুসলিম লীগ (শাহ আজিজ), ন্যাপ ভাসানী, ইউনাইটেড পিপলস পার্টি-ইউপিপি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও বাংলাদেশ তফসিল জাতি ফেডারেশনের সমন্বয়ে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন করে জেনারেল জিয়া স্বয়ং ফ্রন্টের চেয়ারম্যান হন।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ, সিপিবি, জাতীয় জনতা পার্টি, ন্যাপ (মোজাফফর), গণআজাদি লীগ ও পিপলস পার্টির সমন্বয়ে গঠিত হয় ‘গণতান্ত্রিক ঐক্যজোট’। এ জোট থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী করা হয় জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে। ১৯৭৮ সালের ৩ জুন অনুষ্ঠিত সে নির্বাচনে জেনারেল জিয়া বিজয়ী হন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরে তিনি জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টকে বিলুপ্ত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠন করেন।
জিয়ার আমলেই পাঁচটি বামপন্থী দলের সমন্বয়ে মোহাম্মদ তোয়াহা একটি জোট গঠন করেন এবং আওয়ামী লীগ দশ দলের সমন্বয়ে আরেকটি জোট গঠন করে। কিন্তু এ দুটি জোট রাজনীতি বা সরকার বিরোধী আন্দোলনে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।
এরশাদের শাসনামলে জোট রাজনীতি
জেনারেল জিয়া নিহত হওয়ার পরে দেশে রাজনৈতিক টানাপোড়ন সৃষ্টি হয়। বিরোধীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলার দরুন শক্তিশালী কোনো জোটের আবির্ভাব হয়নি সেসময়। আবির্ভাব হয়েছিল আরেক স্বৈরাচারের। জেনারেল হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের। জিয়া মারা যাওয়ার প্রায় বছর খানেকের মাথায় ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ শাসনক্ষমতার কেন্দ্রে আবির্ভূত হন নব সিএমএলএ জেনারেল এরশাদ। এরশাদের বিরুদ্ধে ১৯৮৩ সালেই বিরোধী দলগুলোর জোটে মেরুকরণ ঘটা শুরু হয়। একদিকে আওয়ামী লীগ সমমনা ১৫টি দলের সমন্বয়ে জোট গঠন করে, অন্যদিকে বিএনপি গঠন করে সাত-দলীয় জোট।
১৫ দলীয় জোটে শরিক দলগুলো ছিল যথাক্রমে আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ (মিজান), আওয়ামী লীগ (ফরিদ গাজী), জাসদ, বাসদ, গণআজাদী লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি, ন্যাপ (হারুণ), ন্যাপ (মোজাফফর), সিপিবি, সাম্যবাদী দল (তোয়াহা), সাম্যবাদী দল (নগেন), জাতীয় একতা পার্টি, শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল ও জাতীয় মজদুর পার্টি। এ জোট থেকে মিজান চৌধুরী একপর্যায়ে বের হয়ে যান, সাম্যবাদী দুই দল ও ন্যাপের দুই গ্রুপ এক হয়ে যায়, বাসদ ও ওয়ার্কার্স পার্টিতে ভাঙন দেখা দেয়। ফলত, জোটে শরিকের সংখ্যা কোনো সময় বেড়েছে আবার কোনো সময় কমেছে।
৭ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো ছিল যথাক্রমে বিএনপি, ইউপিপি, গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ন্যাপ (নুরু) কৃষক শ্রমিক পার্টি ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ। উভয় জোটেই ভাঙা-গড়ার খেলা চলেছে সমানতালে। কখনো জোটে শরিকের সংখ্যা বেড়েছে, কখনো কমেছে।
প্রথম থেকেই দুটো জোটই স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে যুগপৎ অংশগ্রহণ করেছে। ১৯৮৪ সালের ১৪ অক্টোবর ঢাকায় গণসমাবেশের ঘোষণা দেয় উভয় জোট ও জামায়াত। জামায়াত তখন দেশীয় রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় এবং একটি গোছানো দল। তাদের দাবি ছিল সামরিক আইন প্রত্যাহার ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। এরশাদ ১৯৮৬ সালের ৭ মে সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে ১৫ দলীয় জোটে টানাপোড়ন সৃষ্টি হয়।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জোটের একটি অংশ (৮ দল) নির্বাচনে অংশ নেয়। বাকি ৭ দল জোট থেকে বেরিয়ে আসে। বিএনপির নেতৃত্বে থাকা ৭ দলীয় জোট এবং জামায়াত নির্বাচন বর্জন করে। হাসানুল হক ইনুর জাসদ ও রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কাস পার্টি সহ কয়েকটি বাম ঘরানার দল মিলে পাঁচ দলীয় জোট গঠন করে। এ বামজোটও নির্বাচন বর্জন করে।
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট, বামজোট এবং জামায়াত মিলে এরশাদের পদত্যাগের এক দফা এক দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এই দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ছয়জন নিহত হয়। পরের দিন শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করা হয়।
গৃহপালিত বিরোধী দল
এরশাদ সরকার পুনরায় ১৯৮৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সংসদ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে। পরে সেটি পিছিয়ে ৩ মার্চ করা হয়। প্রধান বিরোধী জোটসমূহ, বামজোট এবং অন্যান্যরা নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের ওপর বাইরে থেকে চাপ আসা শুরু হয়। তখন এরশাদ সরকার সুকৌশলে সে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যর্থ হয়। সরকার আ স ম আব্দুর রবের নেতৃত্বে ১৪০ দলের সমন্বয়ে সরকারবিরোধী জোট (কপ) গঠনে মদদ দান করে। দলগুলোর প্রায় সবই ছিল নামসর্বস্ব বা প্যাডসর্বস্ব। একটি হাস্যকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। এ জোট ব্যাপকভাবে ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’ নামে পরিচিতি পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেনারেল এরশাদকে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে দেশের জাতীয় দৈনিকগুলোতে কলাম লেখা হয়।
বিরোধী জোটগুলো ১৯৯০ সালের জুলাইয়ের শেষদিকে আবার ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে সরকারের বিরুদ্ধে। ছাত্র সংগঠনগুলোও ফুঁসে ওঠে। ২২টি ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’ নামীয় ছাত্রজোট। দেশের প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে এদের তৎপরতা বেড়ে যায়। ছাত্র আন্দোলনে কোণঠাসা হয়ে পড়ে সরকার। রাজনৈতিক দলগুলোকেও চাপে রাখে ছাত্র সংগঠনগুলো। একপর্যায়ে ১৯৯০-এর ১৯ নভেম্বর তিন প্রধান জোট এরশাদের ক্ষমতা হস্তান্তরের রূপরেখা ঘোষণা করে। তারই ধারাবাহিকতায় ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগে বাধ্য হন জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।